সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন, ক্বায়িম মাক্বামে হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম, মুতহ্হারাহ্, মুতহ্হিরাহ্, সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল উমাম আলাইহাস সালাম উনার মহামূল্যবান নছীহত মুবারক:
“গাইরুল্লাহর উদ্দেশ্যে হজ্জ করা কবীরা গুনাহ” (পর্ব-১)
, ২৩ যিলক্বদ শরীফ, ১৪৪৪ হিজরী সন, ১৪ আউওয়াল, ১৩৯১ শামসী সন , ১৩ জুন, ২০২৩ খ্রি:, ৩০ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) মহিলাদের পাতা
اَتـِمُّوْا الْحَجَّ وَ الْعُمْرَةَ لِلّهِ
অর্থ: “তোমরা মহান আল্লাহ পাক উনার জন্য হজ্জ ও উমরা আদায় কর।” (পবিত্র সূরা বাক্বারা শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ- ১৯৬)
আরো ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
وَ لِلّهِ عَلَى النَّاسِ حِجُّ الْبَيْتِ مَنِ اسْتَطَاعَ اِلَيْهِ سَبِيْلاً
অর্থ: “মহান আল্লাহ পাক উনার সন্তুষ্টি মুবারক হাছিলের জন্যেই মানুষের প্রতি হজ্জ ফরয করা হয়েছে, যার পাথেয় ও পথের নিরাপত্তার ব্যবস্থা রয়েছে।” (পবিত্র সূরা আলে ইমরান শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ- ৯৭)
অর্থাৎ যার পাথেয় ও পথের নিরাপত্তার ব্যবস্থা রয়েছে তার জন্যই একমাত্র মহান আল্লাহ পাক উনার সন্তুষ্টি মুবারক হাছিলের লক্ষ্যে হজ্ব ফরয করা হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
عَنْ حَضْرَتْ اِبْنِ عَبَّاسٍ رَضِىَ اللّهُ تَعَالَى عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللّه صلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَ سَلَّمَ ياَيُّهَا النَّاسُ اِنَّ اللهَ كَتَبَ عَلَيْكُمُ الْحـَجَّ فَقَامَ الْاَقْرَعُ بْنُ حَابِسٍ رَضِىَ اللّهُ تَعَالَى عَنْهُ فَقَالَ أَ فِىْ كُلِّ عَامٍ يَا رَسُوْلُ اللّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَ سَلَّمَ فَسَكَتَ حَتّىٰ قَالـَهَا ثَلاَثاً قَالَ لَوْ قُلْتُهَا نَعَمْ لَوَجَبَتْ وَ لَوْ وَجَبَتْ لَمْ تَعْمَلُوْا بـِهَا وَ لَـمْ تَسْتَطِيْعُوْا وَ الْـحَجَّ مَرَّةً فَمَنْ زَادَ فَتَطَوُّعٌ
অর্থ: “হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “হে মানুষেরা! নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ পাক তিনি আপনাদের উপর হজ্জ ফরয করেছেন। অতঃপর আকরা ইবনে হাবিস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি দাঁড়িয়ে বললেন, ইয়া রসূলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! প্রতি বৎসরই কি হজ্জ ফরয? এভাবে তিনি তিনবার বললেন। তখন তিনি বললেন, আমি যদি হ্যাঁ বলতাম; তাহলে ফরয হয়ে যেত। আর যদি তা ফরয হয়ে যেত তাহলে আপনারা উনার উপর আমল করতে পারতেন না এবং আপনারা সক্ষমও হতেনা। আর হজ্জ হলো (জীবনে) একবার (ফরয)। যদি কেউ এর অতিরিক্ত করে তাহলে তা হবে নফল।” (আহমদ শরীফ, দারিমী শরীফ, নাসাঈ শরীফ)
উল্লেখিত আয়াত শরীফ ও হাদীছ শরীফ দ্বারা প্রতীয়মান হয়, যে ব্যক্তির পাথেয় ও পথের নিরাপত্তা রয়েছে তার উপর একমাত্র মহান আল্লাহ পাক উনার সন্তুষ্টি মুবারক হাসিলের লক্ষ্যে জীবনে একবার হজ্জ করা ফরয।
স্মরণীয় যে, এখানে পাথেয় বলতে হজ্জে যাওয়া এবং ফিরে আসা পর্যন্ত নিজের এবং পরিবারের সকলের ব্যয় বহনে সক্ষম হওয়াকে বুঝানো হয়েছে। আর পথের নিরাপত্তা বলতে বুঝানো হয়েছে, যানবাহনের সুষ্ঠু ব্যবস্থা থাকা এবং ঈমান-আমলের নিরাপত্তা থাকা। এ প্রসঙ্গে পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
عَنْ حَضْرَتْ اِبْنِ عُمَرَ رَضِىَ اللّهُ تَعَالى عَنْهُ قَالَ جَاءَ رَجُلٌ اِلَى النَّبِىِّ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ يَا رَسُوْلَ اللهُ صلى لله عليه و سلم فَقَالَ يَا رَسُوْلَ الله صلى الله عليه و سلم مَا يُوْجِبُ الْـحَجَّ فَقَالَ اَلزَّادُ وَالرَّاحِلَةُ.
অর্থ: “হযরত ইবনে উমর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, এক ব্যক্তি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নিকট আসলেন। অতঃপর বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! কোন বিষয় হজ্জকে ওয়াজীব করে? তিনি বললেন, পাথেয় এবং বাহন।” (তিরমিযী শরীফ, ইবনে মাজাহ শরীফ)
অপরদিকে সম্মানিত কালামুল্লাহ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
فَمَنْ فَرَضَ فِىْهِنَّ الْحَجَّ فَلاَ رَفَثَ وَ لاَ فُسُوْقَ وَ لاَ جِدَالَ فِىْ الْحَجِّ وَمَا تَفْعَلُوْا مِنْ خَيْرٍ يَعْلَمْهُ اللهُ وَ تَزَوَّدُوْا فَاِنَّ خَيْرَ الزَّادِ التَّقْوى وَاتَّقُوْنِ ياُولِى الْاَلْبَابِ
অর্থ: “হজ্বের মাস সমূহের মধ্যে যে ব্যক্তির উপর হজ্ব ফরয; সে ব্যক্তি হজ্বের মধ্যে অশ্লীল-অশালীন কাজ, ফাসেকী কাজ ও ঝগড়া-বিবাদ করবেনা। আর তোমরা যা নেক আমল কর তা মহান আল্লাহ পাক তিনি জানেন। তোমরা পাথেয় সংগ্রহ কর। আর উত্তম পাথেয় হল তাক্বওয়া। হে জ্ঞানীগণ ! তোমরা আমাকে ভয় কর।” (পবিত্র সূরা বাক্বারা শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ- ১৯৭)
এখানে, আয়াত শরীফ দ্বারা বুঝা যাচ্ছে যে, যার উপর হজ্জ ফরয সেই ব্যক্তি হজ্জ করতে গিয়ে অশ্লীল-অশালীন কাজ, নাফরমানীমূলক কাজ ও ঝগড়া-বিবাদ করতে পারবে না। কিন্তু বর্তমানে দেখা যাচ্ছে, পুরুষ-মহিলা উভয়ে একত্রে হজ্জ করার কারণে, হজ্জের কার্যাবলী সম্পাদনের ক্ষেত্রে পুরুষ-মহিলা উভয়ের আলাদা ব্যবস্থা না থাকায় ইচ্ছা-অনিচ্ছায় ‘রফাছ’ তথা অশালীন কাজ হয়ে যাচ্ছে। এছাড়াও দেখা যাচ্ছে, হজ্জে গিয়ে অনেকে বিভিন্ন কারণে পারস্পারিক ঝগড়াবিবাদেও লিপ্ত হচ্ছে। অথচ মহান আল্লাহ পাক তিনি বলেন, ‘তোমরা পাথেয় সংগ্রহ কর। আর উত্তম পাথেয় হচ্ছে তাক্বওয়া।’
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
মহিলাদের জন্য ইলম অর্জন ফরজ, তবে পর্দার সহিত, বেপর্দা হয়ে নয়
১৮ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
সহশিক্ষা, সহচাকরীর ভয়াবহতা: অহরহ ঘটছে অশালীন হয়রানি
১৭ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
‘ছেলেদের সাথে সহশিক্ষা, সহচাকরী পছন্দ করে না মার্কিন মেয়েরা’ : বৃটিশ কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা
১৭ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের অনুসরণে মু’মিনদের জীবন গড়ে তোলা দায়িত্ব-কর্তব্য
১৭ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
ডিশ এন্টেনার প্রভাব : বাড়ছে বিবাহ বিচ্ছেদ, ৭৫ শতাংশ ডিভোর্সই দিচ্ছেন নারীরা
১৬ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
সন্তান প্রতিপালনে মা-বাবা, অভিভাবকদের যে বিষয়গুলোর প্রতি লক্ষ্য রাখা জরুরী (২)
১৬ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
ঘটনা: দুনিয়ার বদলা বনাম পরকালের বদলা
১৫ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
মহান আল্লাহ পাক তিনি তওবাকারীকে পছন্দ করেন
১৫ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
নিকাহ বা বিবাহের ফযীলত (১৬)
১৪ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
শিশুর দেহ ও মন গঠনে নজর দিতে হবে
১৩ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
মহিলা ও পুরুষদের চোখের দৃষ্টির পর্দা সম্পর্কে জানার কিছু বিষয় (১)
১৩ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
হাক্বীক্বী পর্দা না করার কারণেই মহিলারা লাঞ্ছিত হয়, কষ্ট পায়
১২ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার)