সাইয়্যিদাতুন নিসায়ি ‘আলাল আলামীন, মালিকুদ দুনিয়া ওয়াল আখিরাহ্, মালিকুল কায়িনাত, উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আস সাদিসাহ্ আলাইহাস সালাম উনার সংক্ষিপ্ত জীবনী মুবারক
, ০৪ ছফর শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ২২ ছালিছ, ১৩৯১ শামসী সন , ২১ আগস্ট, ২০২৩ খ্রি:, ০৬ ভাদ্র শ্রাবণ, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) মহিলাদের পাতা
উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আস সাদিসাহ্ আলাইহাস সালাম তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে মহাসম্মানিত নুবুওওয়াত ও রিসালত মুবারক প্রকাশের ১৭ বছর পূর্বে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ২৫শে মুহাররমুল হারাম শরীফ ইয়াওমুল জুমু‘আহ্ শরীফ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মক্কা শরীফ উনার কুরাইশ বংশে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ! উনার মহাসম্মানিত পিতা হচ্ছেন- যাদুর রিকাব সাইয়্যিদুনা হযরত আবূ উমাইয়্যাহ হুযাইফাহ্ ইবনে মুগীরহ্ আলাইহিস সালাম। সুবহানাল্লাহ! তিনি ছিলেন সম্মানিত কুরাইশ বংশ উনার বিশেষ শাখা বনূ মাখ্যূম গোত্রের একজন অনুসরণীয়-অনুকরণীয় সম্মানিত বিশেষ ব্যক্তিত্ব মুবারক এবং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ফুফা উনাদের অন্তর্ভুক্ত। সুবহানাল্লাহ!
উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আস সাদিসাহ্ আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত মাতা হচ্ছেন- সাইয়্যিদাতুনা হযরত ‘আতিকাহ্ বিনতে ‘আমির আলাইহাস সালাম। সুবহানাল্লাহ! তিনি ছিলেন বনূ কিনানাহ্ গোত্রের। সুবহানাল্লাহ!
উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আস সাদিসাহ্ আলাইহাস সালাম তিনি উনার মহাসম্মানিত পিতা আলাইহিস সালাম উনার দিক থেকে ৮ম পুরুষে এবং মহাসম্মানিত মাতা আলাইহাস সালাম উনার দিক থেকে ১২তম পুরুষে যেয়ে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে মিলিত হয়েছেন। সুবহানাল্লাহ!
উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আস সাদিসাহ্ আলাইহাস সালাম তিনি সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার সূচনালগ্নেই সম্মানিত দ্বীন ইসলাম গ্রহণ করেন। সুবহানাল্লাহ! আনুষ্ঠানিকভাবে মহাসম্মানিত নুবুওওয়াত ও রিসালত মুবারক প্রকাশ পাওয়ার ৫ম বৎসরের সম্মানিত রজবুল হারাম শরীফ মাসে উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আস সাদিসাহ্ আলাইহাস সালাম তিনি, বিনতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, উম্মু আবীহা সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছানিয়াহ্ আলাইহিস সালাম তিনি, সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাঈন আলাইহিস সালাম তিনি, সাইয়্যিদুনা হযরত আবূ সালামাহ্ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি অর্থাৎ উনারাসহ একদল হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনারা সম্মানিত হাবশায় হিজরত মুবারক করার উদ্দেশ্যে বের হন। উনারা দীর্ঘ এক মাস পর সম্মানিত শা’বান শরীফ মাসে হাবশায় যেয়ে পৌঁছেন। সুবাহানল্লাহ!
উনারা সেখানে যেয়ে নিরাপদে মহান আল্লাহ পাক উনার ইবাদাত-বন্দেগী করতে থাকেন এবং তা’লীম-তালক্বীন মুবারক ও সম্মানিত ছোহবত মুবারক দানের মাধ্যমে লোকদেরকে সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার দিকে আহ্বান করতে থাকেন। সুবহানাল্লাহ! উনাদের আহ্বানে বহু লোক সম্মানিত ঈমান এনে মুসলমান হয়ে যান। সুবহানাল্লাহ!
তিনি হাবশায় দুই বার সম্মানিত হিজরত মুবারক করেন। তারপর তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মদীনা শরীফ সম্মানিত হিজরত মুবারক করেন। সুবহানাল্লাহ!
কিতাবে বর্ণিত রয়েছেন, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মদীনা শরীফ হিজরতকারী সর্বপ্রথম মহাসম্মানিত মহিলা হচ্ছেন উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আস সাদিসাহ্ আলাইহাস সালাম তিনি। সুবহানাল্লাহ! ! (সুবুলুল হুদা ওয়ার রশাদ শরীফ ১১/১৮৭)
উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আস সাদিসাহ্ আলাইহাস সালাম উনার প্রথম শাদী মুবারক হয় উনার চাচাতো ভাই সাইয়্যিদুনা হযরত আবূ সালামাহ্ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার সাথে। সুবহানাল্লাহ! যিনি ছিলেন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আপন ফুফাতো ভাই এবং সম্মনিত দুধ ভাই উনাদের অন্তর্ভুক্ত। সুবহানাল্লাহ!
উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আস সাদিসাহ্ আলাইহাস সালাম তিনি বলেন, একদিন সাইয়্যিদুনা হযরত আবূ সালামাহ্ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি খুব খুশী মনে নূরে মুুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ছোহবত মুবারক থেকে সম্মানিত হুজরা শরীফ-এ আসেন। তারপর বলতে থাকেন, আজ আমি নূরে মুুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার একখানা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ শুনেছি, যা আমাকে খুবই খুশি করেছেন। তিনি ইরশাদ মুবারক করেছেন, কোনো বিপদগ্রস্থ মুসলমান যদি বিপদের মধ্যে মহান আল্লাহ পাক উনার দিকে রুজু হয়ে বলেন, আয় বারে এলাহী, মহান আল্লাহ পাক! আপনি আমাকে এই বিপদে সাহায্য করুন এবং আমাকে এর উত্তম প্রতিদান দান করুন। তাহলে মহান আল্লাহ পাক তিনি উনার দু‘আ ক্ববূল করেন। সুবহানাল্লাহ! সুতরাং হযরত আবূ সালামাহ্ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার মহাসম্মানিত বিছালী শান মুবারক প্রকাশের পর আমিও ঐ দু‘আ মুবারক করলাম যে,
اللَّهُمَّ أْجُرْنِي فِي مُصِيبَتِي وَاخْلُفْنِي خَيْرًا مِنْهُ
‘আয় বারে এলাহী, মহান আল্লাহ পাক! আপনি আমাকে এই বিপদে সাহায্য করুন এবং আমাকে সাইয়্যিদুনা হযরত আবূ সালামাহ্ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার পরিবর্তে উনার থেকে উত্তম উত্তরাধিকারী দান করুন!’ সুবহানাল্লাহ!
কিন্তু আমি আবার আমার মনে মনে বললাম যে, সাইয়্যিদুনা হযরত আবূ সালামাহ্ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার পরিবর্তে উনার থেকে উত্তম আর কে হতে পারেন? আমার সম্মানিত ইদ্দত মুবারক অতিক্রান্ত হওয়ার পর যখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পক্ষ থেকে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নিসবতে ‘আযীম শরীফ উনার সম্মানিত প্রস্তাব মুবারক আসেন, তখন আমি বুঝলাম মহান আল্লাহ পাক তিনি উত্তম বিনিময়ের ব্যবস্থা করেছেন।” সুবহানাল্লাহ! (মুসনাদে আহমাদ ৪/১২৭)
একাধিক বর্ণনায় বর্ণিত রয়েছেন। এক বর্ণনা মতে, স্বয়ং যিনি খ্বালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার পক্ষ থেকে মহাসম্মানিত ওহী মুবারক প্রাপ্ত হয়ে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি নিজেই উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আস সাদিসাহ্ আলাইহাস সালাম উনার নিকট মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নিসবতে ‘আযীম শরীফ মুবারক উনার প্রস্তাব মুবারক নিয়ে যান। সুবহানাল্লাহ! আরেক বর্ণনা মতে, স্বয়ং যিনি খ্বালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার পক্ষ থেকে সম্মানিত ওহী মুবারক প্রাপ্ত হয়ে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম উনার মাধ্যমে উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আস সাদিসাহ্ আলাইহাস সালাম উনার নিকট মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নিসবতে ‘আযীম শরীফ উনার প্রস্তাব মুবারক দেন। সুবহানাল্লাহ! আরেক বর্ণনা মতে, স্বয়ং যিনি খ্বালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার পক্ষ থেকে সম্মানিত ওহী মুবারক প্রাপ্ত হয়ে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আস সাদিসাহ্ আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত আওলাদ সাইয়্যিদুনা হযরত উমর রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার মাধ্যমে উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আস সাদিসাহ্ আলাইহাস সালাম উনার নিকট মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নিসবতে ‘আযীম শরীফ উনার প্রস্তাব মুবারক দেন। সুবহানাল্লাহ!
তারপর ৪র্থ হিজরী শরীফ উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ২৪শে শাওওয়াল শরীফ লাইলাতু সাইয়্যিদি সাইয়্যিদিল আইয়্যাম শরীফ নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আস সাদিসাহ্ আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নিসবতে ‘আযীম শরীফ অনুষ্ঠিত হন। সুবহানাল্লাহ! উনার মহাসম্মানিত মোহরানা মুবারক ছিলেন- ৫০০ দিরহাম। সুবাহনাল্লাহ! তখন দুনিয়াবী দৃষ্টিতে উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আস সাদিসাহ্ আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত বয়স মুবারক ছিলেন ৩৩ বছর ৯ মাস। সুবহানাল্লাহ! তিনি ৬ বছর ৪ মাস ১৮ দিন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দেন। সুবহানাল্লাহ!
হুদায়বিয়ার সন্ধির সময় উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আস সাদিসাহ আলাইহাস সালাম তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে সফর মুবারক-এ ছিলেন। এই সন্ধির অনেক শর্তাবলী বাহ্যিকভাবে মুসলমানদের স্বার্থ বিরোধী ছিল। এ কারণে সাধারণভাবে হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুম উনারা কাফিরদের উপর মনক্ষুন্ন ছিলেন। উনারা সন্ধি শর্তগুলির পরিবর্তন কামনা করছিলেন। কিন্তু সন্ধির শর্ত অনুসারে যেহেতু কারোই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মক্কা শরীফে যাওয়ার উপায় ছিল না। তাই নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আমভাবে ঘোষণা মুবারক করে দেন, সবাই যেন হুদায়বিয়ায় নিজ নিজ আনিত পশুগুলি কুরবানী করে দেয়। পর পর তিন বার তিনি ঘোষণা মুবারক দেন, কিন্তু হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুম উনাদের মধ্যে নির্দেশ পালনের কোনো লক্ষণ দেখা গেল না। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি এ ব্যাপারে উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আস সাদিসাহ আলাইহাস সালাম উনার সাথে পরামর্শ মুবারক করলেন। উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আস সাদিসাহ আলাইহাস সালাম তিনি বললেন, দয়া করে আপনি হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুম উনাদের উপর অসন্তুষ্ট হবেন না। দয়া করে আপনি কাউকে কিছু না বলে বাহিরে গিয়ে নিজের সম্মানিত কুরবানী মুবারক করুন এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুল হুদা মুবারক (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মাথা মুবারক) উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুল ফাতাহ্ মুবারক (মহাসম্মানিত ও মহপবিত্র চুল মুবারক) মু-ন করুন এবং সম্মানিত ইহরাম উনার কাপড় মুবারক খুলুন। তাহলে আপনার অনুসরণ মুবারক করে সকলেই কুরবানী করবেন, মাথার চুল মু-ন করবেন এবং ইহ্রামের কাপড়ও খুলে ফেলবেন। মহাসম্মানিত ওহী মুবারক প্রাপ্ত হয়ে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আস সাদিসাহ্ আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত পরামর্শ মুবারক অনুযায়ী তাই করলেন। তখন উনার অনুসরণ মুবারক করে হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুম উনারা সকলেই তৎক্ষণাৎ নিজ নিজ কুরবানী করেন, মাথার চুল মু-ন করেন এবং ইহরামের কাপড় খুলে ফেললেন। সুবহানাল্লাহ! উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আস সাদিসাহ্ আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত পরামর্শ মুবারক উনার মাধ্যমে মূহূর্তের মধ্যে একটি কঠিন সমস্যার সামাধান হয়ে গেল। সুবহানাল্লাহ!
৬১ হিজরী শরীফ-এ সংঘটিত কারবালার হৃদয় বিদারক মার্মান্তিক ঘটনায় সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছালিছ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় শাহাদাতী শান মুবারক প্রকাশ উনার কারণে তিনি এতই চিন্তিত ও মর্মাহত হন যে, এতে উনার বেহুশী শান মুবারক প্রকাশ পান।
৬৩ হিজরী শরীফ-এ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মদীনা শরীফ উনার মধ্যে সংঘটিত র্হারা-এর হৃদয় বিদারক ঘটনাও তিনি প্রত্যক্ষ করেছিলেন।
উনার পুরো মহাসম্মানিত জিন্দেগী মুবারকই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার অন্তর্ভুক্ত। তবে রাবীগণ উনার থেকে মাত্র ৩৭৮ খানা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ বর্ণনা করতে পেরেছেন। অর্থাৎ বারীগণ উনার থেকে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ বর্ণনা করে নিজেদেরকে ধন্য করেছেন। সুবহানাল্লাহ! মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের মধ্য থেকে উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছাহ সাইয়্যিদাতুনা হযরত ছিদ্দীক্বাহ্ আলাইহাস সালাম উনার পর উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আস সাদিসাহ আলাইহাস সালাম উনার থেকে সবচেয়ে বেশি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ বর্ণিত রয়েছেন। সুবহান্নাল্লাহ!
তিনি অত্যন্ত বিশুদ্ধভাবে সুস্পষ্ট কন্ঠে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কুরআন শরীফ তিলাওয়াত মুবারক করতেন এবং উনার উচ্চারণ পদ্ধতি মুবারক ঠিক নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার উচ্চারণ পদ্ধতি মুবারক উনার অনুরূপ সুস্পষ্ট হতেন। সুবহানাল্লাহ! অর্থাৎ তিনি সবাইকে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কুরআন শরীফ তিলাওয়াত করার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সুন্নতী তরতীব মুবারক বর্ণনা মুবারক করেছেন এবং সম্মানিত তা’লীম মুবারক দিয়েছেন। সুবহানাল্লাহ!
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার কয়েকখানা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুল ফাতাহ্ মুবারক (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র চুল মুবারক) তিনি নিজের নিকট বরকত স্বরূপ সংরক্ষণ মুবারক করে রেখেছিলেন। সুবহানাল্লাহ! উনার একখানা রূপার পাত্র মুবারক ছিলেন, তাতে তিনি তা সংরক্ষণ মুবারক করেছিলেন। হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুম উনাদের কেউ কোনো দুঃখ-কষ্ট পেলে এক পেয়ালা পানি এনে উনার সামনে রাখতেন। তখন তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুল ফাত্হ মুবারক সেই পানিতে ডুবিয়ে দিতেন। সেই মহাসম্মানিত পানি মুবারক উনার বরকতে হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুম উনাদের সকল দুঃখ-কষ্ট দূরিভূত হয়ে যেত। সুবহানাল্লাহ! (আনসাবুল আশরাফ)
উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আস সাদিসাহ্ আলাইহাস সালাম তিনি ৬৪ হিজরী শরীফ উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ৫ই সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিশ শুহূরিল আ’যম শরীফ সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আইয়্যাম শরীফ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ! তিনি দুনিয়ার যমীনে ৯৩ বছর ১ মাস ১০ দিন সম্মানিত অবস্থান মুবারক করেন। সুবহানাল্লাহ! মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের মধ্যে তিনিই সর্বশেষ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ! হযরত আবূ হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি উনার মহাসম্মানিত জানাযা মুবারক উনার নামায মুবারক পড়ান। সুবহানাল্লাহ! উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র রওযা শরীফ মহাসম্মানিত জান্নাতুল বাক্বী শরীফ উনার মধ্যে অবস্থিত। সুবহানাল্লাহ!
উল্লেখ্য যে, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আস সাদিসাহ্ আলাইহাস সালাম তিনিসহ সমস্ত মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের একমাত্র হাক্বীক্বী পরিপূর্ণ ক্বায়িম মাক্বাম হচ্ছেন- মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল উমাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত আম্মা হুযূর ক্বিবলা ছল্লাল্লাহু আলাইহা ওয়া সাল্লাম তিনি। সুবহানাল্লাহ! তাই কেউ যদি উনাদের হাক্বীক্বী মুহাব্বত-মা’রিফত, নিসবত-কুরবত, রেযামন্দি-সন্তুষ্টি মুবারক হাছিল করতে চায়, তাদের জন্য ফরযে আইন হচ্ছে, উম্মুল উমাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত আম্মা হুযূর ক্বিবলা ছল্লাল্লাহু আলাইহা ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত তা’যীম-তাকরীম মুবারক করা, উনার সম্মানিত গোলামী মুবারক উনার আনজাম মুবারক দেয়া, উনার সম্মানিত ছানা-ছিফত মুবারক করা। সুবহানা হযরত উম্মুল উমাম ছল্লাল্লাহু আলাইহা ওয়া সাল্লাম!
মহান আল্লাহ পাক তিনি আহলু বাইতে রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ক্বায়িম মাক্বামে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানার্থে আমাদের সবাইকে কবুল করুন। আমীন!
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
সন্তানদের ও পরিবারের সকলকে সালাম দেয়া শিক্ষা দান করুন
২৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের বেমেছাল দানশীলতা মুবারক (৪)
২৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
কাফের বিশ্বে নারীরা শুধু কি এখন নির্যাতনের শিকার হচ্ছে?
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
একজন দ্বীনদার পরহেযগার আল্লাহওয়ালী মহিলা উনার পর্দা পালনের বেমেছাল দৃষ্টান্ত
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
প্রসঙ্গ মহিলা জামাত নাজায়িজ
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
পিতা-মাতার প্রতি সন্তানের দায়িত্ব-কর্তব্য
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
শৈশবকাল থেকেই সন্তানকে দ্বীনদার হওয়ার শিক্ষা দান করতে হবে
২০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
সম্মানিতা মহিলা আউলিয়া-ই কিরাম উনাদের পরিচিতি
১৯ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
স্বচক্ষে দেখা কিছু কথা
১৯ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
পারিবারিক তা’লীমের গুরুত্ব ও তারতীব
১৮ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
সুন্নতী খাবার সম্পর্কিত হাদীছ শরীফ : মেথি
১৮ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
খাবার বিষয়ে মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন
১৮ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার)