সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল উমাম আলাইহাস সালাম উনার নছীহত মুবারক
, ০১ রমাদ্বান শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ১৩ আশির, ১৩৯১ শামসী সন , ১২ মার্চ, ২০২৪ খ্রি:, ২৮ ফাল্গুন, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) মহিলাদের পাতা
মহান আল্লাহ পাক তিনি পবিত্র কালামুল্লাহ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক করেন,
وَقَرْنَ فِي بُيُوتِكُنَّ وَلَا تَبَرَّجْنَ تَبَرُّجَ الْجَاهِلِيَّةِ الْأُولَىٰ
অর্থ: “তোমরা (মহিলারা) ঘরে অবস্থান করো এবং আইয়্যামে জাহিলীয়াতের ন্যায় সৌন্দর্য প্রদর্শন করে বাইরে বেরিওনা। ” (পবিত্র সূরা আহযাব শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ-৩৩)
এখানে মহান আল্লাহ পাক তিনি খাছভাবে মহিলাদের পর্দার কথা বলেছেন। মূলত পুরুষের কর্মস্থল হচ্ছে বাইরে। আর মহিলাদের কর্মস্থল হচ্ছে ঘর। তাই মহিলারা দায়েমীভাবে পর্দার সহিত ঘরে অবস্থান করে যাবতীয় কার্যাবলী সম্পাদন করবে অর্থাৎ সন্তান লালন-পালন করবে, শরীয়তের যাবতীয় শিক্ষাদানের মাধ্যমে সন্তানকে আল্লাহওয়ালী-আল্লাহওয়ালা বানাবে এবং পরিবারের সকলকে সুস্থ রাখার জন্য চিকিৎসা বিষয়ে বিশেষ জ্ঞান রাখবে। এটা তার জন্য ফরয তথা মহান আল্লাহ পাক উনার নির্দেশ মুবারক। কিন্তু অনেক সময় দেখা যায় মহিলাদের দায়েমীভাবে এই পর্দা রক্ষা করাটা অত্যন্ত কঠিন হয়ে পড়ে। কিভাবে কঠিন হয়ে পড়ে আমরা যদি বিষয়টি ফিকির করি তাহলে বুঝতে সহজ হবে। যেমন- একজন মহিলা, সে সব সময় পর্দার ভিতরে অবস্থান করে এবং কোনভাবেই কোন অবস্থায়ই সে বেপর্দা হয় না বরং মহান আল্লাহ পাক উনাকে ভয় করে পর্দা রক্ষা করে চলে। কিন্তু দেখা গেল হঠাৎ করে হয়ত সে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ল বা সন্তান আগমনের সময় হলো অথবা কোন কারণে মায়ের অবস্থা জটিল আকার ধারণ করল, তখন সে চিকিৎসার জন্য কোথায় যাবে? স্বাভাবিকভাবে তাকে অপারগ হয়ে হাসপাতালে যেতে হয় এবং বেপর্দাও হতে হয়। যেমন: ওয়েটিং রুমে অপেক্ষা করার সময় পুরুষ মহিলা একসাথে অপেক্ষা করা, সিরিয়াল ধরা এছাড়া সিজার করা হলে পুরুষ ডাক্তার থাকা ইত্যাদি।
সুতরাং দেখা যাচ্ছে যে, সে একজন পর্দানশীন মহিলা হওয়া সত্ত্বেও পর্দার সুব্যবস্থা সম্পন্ন হাসপাতাল না থাকার কারণে বা খোঁজ না পাওয়ার কারণে সে নিজেকে বেপর্দা থেকে হিফাযত করতে পারে না। আমরা যদি লক্ষ্য করি বর্তমানে বাংলাদেশসহ গোটা পৃথিবীতে এমন কোন হাসপাতাল নেই যেখানে বড় বড় রোগের অপারেশনের ক্ষেত্রে পুরুষ ব্যতিত শুধুমাত্র মহিলা দ্বারা অপারেশন করা হয়। এমনকি অপারেশনের জন্য যে এ্যনেস্থেশিয়া দেয়া হয় সেটাও পুরুষ ব্যতিত মহিলারা দেয় না।
কিন্তু মহান আল্লাহ পাক উনার যমীনে এমন একটি হাসপাতাল রয়েছে, যেখানে মহিলাদের যাবতীয় চিকিৎসা শুধুমাত্র মহিলা ডাক্তারের মাধ্যমেই করানো হয়। এমনকি বড় কোন অপারেশনের ক্ষেত্রেও পুরুষ ডাক্তার ব্যতীতই মহিলা ডাক্তারের মাধ্যমেই চিকিৎসা হয়ে থাকে। আর সেই সম্মানিত ঈমান হিফাজতকারী, খাছ পর্দার সাথে শরীয়ত সম্মতভাবে যাবতীয় চিকিৎসার সুব্যবস্থা সম্পন্ন হাসপাতালটিই হচ্ছে, ৫/১ আউটার সার্কুলার রোড, রাজারবাগ শরীফ,ঢাকা-১২১৭, আল মুতমাইন্নাহ মা ও শিশু হাসপাতাল। (দোতলা)
উল্লেখ্য যে, একজন স্বর্ণকার স্বর্ণ চিনে, কামার কখনো স্বর্ণ চিনে না। ঠিক তদ্রুপ যে পর্দা করে, সে পর্দার মূল্য বুঝে এবং মহান আল্লাহ পাক উনাকে ভয় করে। যে নিজের ইজ্জত-সম্মান ও পর্দা রক্ষা করতে চায় সে ইজ্জত-সম্মান রক্ষা করার জন্য অবশ্যই আল-মুতমাইন্নাহ হাসপাতালে আসবে। আর যে পর্দা করে না, তার কাছে পর্দার কোন মূল্যই নেই তথা মহান আল্লাহ পাক উনাকে সে ভয় করে না।
এখানে একটি ঘটনার দ্বারা বিষয়টি সহজেই উপলব্ধি করা যাবে। যেমন- একজন মহিলা কোন কারণে আল মুতমাইন্নাহ মা ও শিশু হাসপাতালে আসে এবং হাসপাতালে পর্দার এত সুব্যবস্থা দেখে সে মুগ্ধ হয়ে যায় এবং আফসোস করে বলে, আদ-দ্বীন হাসপাতালে সে তার সব ইজ্জত রেখে এসেছে। কারণ স্বরূপ সে বলে, চার বছর পূর্বে তার একটি সন্তান হয়। সেই সন্তান আগমনের সময় যখন সিজার করা হয়, তখন তার সিজারের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সবই পুরুষদের মাধ্যমে করানো হয়। এরপর সে বলে যদি সে জানত এরকম একটি হাসপাতাল এখানে আছে, তাহলে সে অবশ্যই এখানে আসত। সুবহানাল্লাহ!
এখন যদি কেউ এই রহমতপূর্ণ খাছ পর্দার সাথে চিকিৎসার সুব্যবস্থা সম্পন্ন সম্মানিত হাসপাতাল ব্যতীত অন্য কোন হাসপাতালে গিয়ে বেপর্দা হয়ে চিকিৎসা নেয় এবং বলে যে, সে নিরুপায় হয়ে চিকিৎসা গ্রহণ করেছে, তার এই অজুহাত গ্রহণযোগ্য হবে না বরং পরকালে এর জন্য মহান আল্লাহ পাক উনার নিকট জবাবদিহি করতে হবে।
মূলতঃ আল মুতমাইন্নাহ মা ও শিশু হাসপাতাল হচ্ছেন- সকল মহিলাদের জন্য মহান আল্লাহ পাক উনার তরফ থেকে এক বিশেষ নিয়ামত মুবারক। আর মহান আল্লাহ পাক তিনি সূরা ইবরাহীম শরীফ উনার ৭নং পবিত্র আয়াত শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক করেন,
لَئِن شَكَرْتُمْ لَأَزِيدَنَّكُمْ ۖ وَلَئِن كَفَرْتُمْ إِنَّ عَذَابِي لَشَدِيدٌ .
অর্থ: “যদি তোমরা শুকরিয়া আদায় কর, তাহলে তোমাদের নিয়ামত মুবারক বৃদ্ধি করে দেওয়া হবে, আর যদি তোমরা অস্বীকার কর অর্থাৎ শুকরিয়া না কর, তাহলে নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ পাক উনার আযাব অত্যন্ত কঠিন। ”
অতএব, মুসলমান হিসেবে আমাদের প্রত্যেক মহিলাদের জন্য এবং আহালের জন্য ফরয হ চ্ছে তার আহলিয়াকে মহান আল্লাহ পাক উনার ও উনার হাবীব নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের রেযামন্দি-সন্তুষ্টি মুবারক হাছিলের লক্ষ্যে খাছ পর্দার সাথে শরীয়তসম্মতভাবে আল মুতমাইন্নাহ মা ও শিশু হাসপাতাল থেকে সু-চিকিৎসা গ্রহণ করা।
মহান আল্লাহ পাক তিনি পবিত্র ইয়াছিন শরীফ উনার ১৭নং পবিত্র আয়াত শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক করেন,
وَمَا عَلَيْنَا إِلَّا الْبَلَاغُ الْمُبِينُ .
অর্থ: আমাদের দায়িত্ব হলো পৌঁছিয়ে দেওয়া। ”
সুতরাং, উপরোক্ত আলোচনা থেকে আমাদের সকলের জন্য ইবরত-নছীহতের বিষয় হলো খাছ পর্দার সাথে চিকিৎসা গ্রহণ করে ইজ্জত-সম্মান হিফাযত করে দুনিয়া ও পরকালে কামিয়াবি হাছিল করা।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
সন্তানদের ও পরিবারের সকলকে সালাম দেয়া শিক্ষা দান করুন
২৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের বেমেছাল দানশীলতা মুবারক (৪)
২৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
কাফের বিশ্বে নারীরা শুধু কি এখন নির্যাতনের শিকার হচ্ছে?
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
একজন দ্বীনদার পরহেযগার আল্লাহওয়ালী মহিলা উনার পর্দা পালনের বেমেছাল দৃষ্টান্ত
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
প্রসঙ্গ মহিলা জামাত নাজায়িজ
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
পিতা-মাতার প্রতি সন্তানের দায়িত্ব-কর্তব্য
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
শৈশবকাল থেকেই সন্তানকে দ্বীনদার হওয়ার শিক্ষা দান করতে হবে
২০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
সম্মানিতা মহিলা আউলিয়া-ই কিরাম উনাদের পরিচিতি
১৯ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
স্বচক্ষে দেখা কিছু কথা
১৯ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
পারিবারিক তা’লীমের গুরুত্ব ও তারতীব
১৮ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
সুন্নতী খাবার সম্পর্কিত হাদীছ শরীফ : মেথি
১৮ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
খাবার বিষয়ে মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন
১৮ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার)