সরকারি হাসপাতালের রোগী ভাগিয়ে নেয়া হচ্ছে মানহীন বেসরকারি হাসপাতাল-ক্লিনিকগুলোতে। কোটি কোটি টাকার মুনাফা লুটছে অসৎ সিন্ডিকেট ও হাসপাতাল মালিকরা। ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে সাধারণ মানুষ।
সরকারি হাসপাতালগুলোর বেহাল অবস্থার কারণেই এমন সিন্ডিকেটের সূচনা হয়েছে। সরকারের উচিত, সরকারি স্বাস্থ্যসেবা উন্নত করে এসব সিন্ডিকেট নির্মূল করা।
, ০৬ যিলক্বদ শরীফ, ১৪৪৪ হিজরী সন, ২৭ ছানী ‘আশার, ১৩৯০ শামসী সন , ২৭ মে, ২০২৩ খ্রি:, ১৪ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) সম্পাদকীয়
সমস্ত প্রশংসা মুবারক খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার জন্য; যিনি সকল সার্বভৌম ক্ষমতার মালিক। সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হযরত নবী আলাইহিমুস সালাম উনাদের নবী, হযরত রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি অফুরন্ত পবিত্র দুরূদ শরীফ ও সালাম মুবারক।
রাজধানীসহ জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে সরকারি হাসপাতালের সামনে ও আশপাশে ব্যাঙের ছাতার মতো গজিয়ে উঠেছে মানহীন ও নিম্নমানের বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার। আর এসব প্রতিষ্ঠানগুলো সবই দালালনির্ভর। নিয়োজিত দালালরা সরকারি হাসপাতালের রোগীদের ভাগিয়ে নিচ্ছে এসব হাসপাতালগুলোতে। সারা দেশেই এমন রোগী বেচাকেনার হাট জমে উঠেছে। দালালদের ফ্রন্টলাইনে রেখে সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত হাসপাতালের এক শ্রেণির দুর্নীতিবাজ চিকিৎসক, নার্স ও ওয়ার্ড বয় ভয়ংকর চক্র গড়ে তুলে এর নেপথ্যে কলকাঠি নাড়ছে।
ভাগিয়ে নিয়ে রোগীদের বেসরকারি ক্লিনিকে ভর্তি করার পর নেমে আসে চরম দুর্ভোগ। চিকিৎসা সেবার নামে তো কিছুই হয় না, উল্টো দরিদ্র রোগীদের ভিটামাটি বিক্রি করে হাসপাতালের বিল পরিশোধ করতে হয়। সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের নিয়ে বাণিজ্য করে অধিকাংশ ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মালিক ও দালালরা কোটি কোটি টাকার মালিক হয়েছে।
পর্যবেক্ষক মহলের তথ্যমতে, মানহীন বেসরকারি হাসপাতাল-ক্লিনিকে রোগী নিতে পারলেই এক থেকে দুই হাজার টাকা কমিশন পায় অ্যাম্বুলেন্স চালকরা। যেসব চিকিৎসক, নার্স কিংবা ওয়ার্ড বয় এ রোগীকে ভাগিয়ে সেখানে পাঠায় তারা পায় ৩-৫ হাজার টাকা। আর যার মধ্যস্থতায় রোগীকে এক হাসপাতাল থেকে অন্য হাসপাতালে ভর্তি করানো হয় সে পায় রোগীর চিকিৎসার মোট বিলের ৩০ থেকে ৩৫%। এভাবে রোগী ভর্তি করানোকে বলা হয় ‘রোগী বেচাকেনা’।
উল্লেখ্য, রোগী যখন সিরিয়াস অবস্থায় থাকে, তখন তার জন্য বিশেষ ওষুধ, ইনজেকশন, স্যালাইন, অক্সিজেন বা আরও বেশি কিছু সাপোর্ট সিস্টেমের প্রয়োজন। এজন্য রোগীকে দ্রুত মানসম্মত হাসপাতাল বা ক্লিনিকে চিকিৎসা সেবা দেওয়া জরুরি। অথচ এসব রোগী দ্রুত নিকটস্থ সরকারি হাসপাতালে যাওয়ার পর সেখানে ওঁৎ পেতে থাকা সংঘবদ্ধ চক্র তাকে টাকার বিনিময়ে কৌশলে দালালদের হাতে তুলে দেয়। পরে তারা তাদের নিয়ে বেসরকারি হাসপাতাল-ক্লিনিকে বিক্রির জন্য এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় ঘুরতে থাকে। দরদামে পোষালেই তবে রোগী বেচাকেনা করে। এতে মুমুর্ষু রোগীর এক থেকে দেড় ঘণ্টা, কখনো দুই-তিন ঘণ্টা সময় পেরিয়ে যায়। ফলে গুরুতর অসুস্থ অনেক রোগী অনেক কষ্ট পেয়ে মারা যায়।
রোগী ভাগিয়ে নেয়ার বিষয়ে সাধারণ মানুষের তেমন ধারণা না থাকলেও হাসপাতাল-ক্লিনিক ব্যবসার সঙ্গে জড়িতদের কাছে এটি ওপেন-সিক্রেট। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থার কাছে বিভিন্ন সময় এ সংক্রান্ত শত শত অভিযোগ জমা পড়েছে। সংশ্লিষ্ট প্রশাসন এ ব্যাপারে কোনো পদক্ষেপ না নেওয়ায় রোগী বেচাকেনার সঙ্গে জড়িতরা বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। তারা বেসরকারি ও ব্যক্তি মালিকানাধীন হাসপাতালের সেলস অফিসার, মার্কেটিং ম্যানেজার, মার্কেটিং জিএম-এজিএম পদের সাইন বোর্ড লাগিয়ে রোগী ভাগিয়ে আনার মতো জঘন্য কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। তাদের সঙ্গে প্রশাসনের গোপন আঁতাত থাকারও অভিযোগ পাওয়া গেছে।
বলাবাহুল্য, দালালদের এই সিন্ডিকেট মূলত সৃষ্টিই হয়েছে সরকারি হাসপাতালগুলোর বেহাল চিকিৎসা সেবার কারণে। গত ৫০ বছরে দেশের স্বাস্থ্য খাতের বিরুদ্ধে সব থেকে বড় অভিযোগ হচ্ছে ‘অব্যবস্থাপনা’। সত্যিকার অর্থেই দেশে পেশাদার একটি স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা গড়ে ওঠেনি। তৃণমূল থেকে যত ওপরে যাওয়া যায় সর্বত্রই একই দৃশ্য প্রতীয়মান হয়। অধিকাংশ হাসপাতালে এখনো পর্যাপ্ত চিকিৎসক, নার্স ও অন্যান্য জনবল নেই। কোথাও কোথাও যন্ত্রপাতি আছে তো টেকনিশিয়ান নেই। বহির্বিভাগে একজন কনসালট্যান্টের চিকিৎসা ও কিছু ওষুধ পাওয়া ছাড়া তেমন সেবা মিলছে না। সরকারিভাবে চিকিৎসা সেবা যেহেতু পর্যাপ্ত নয়, তাই চাহিদার প্রেক্ষাপটে বিভিন্ন জায়গায় মানহীন ও নিম্নমানের হাসপাতাল বা ক্লিনিকগুলো হচ্ছে। আর সাধারণ মানুষ সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা না পাওয়ায় দালাল চক্রের মাধ্যমে সেখানে ভিড় করছে।
প্রসঙ্গত, স্বাস্থ্য খাত অত্যন্ত স্পর্শকাতর একটি বিষয়। ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর ইত্যাদি দেশগুলোতে জনসাধারণ অসুস্থবোধ করলে সর্বপ্রথম তাদের মাথায় আসে সরকারি হাসপাতাল। কারণ রাষ্ট্রীয়ভাবে আগে সরকারি স্বাস্থ্যসেবাকে সেখানে উন্নত ও শক্তিশালী করা হয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশে তার ঠিক উল্টো পরিস্থিতি। সরকারি হাসপাতালের দুর্ভোগের কথা চিন্তা করলে ভীত হয়ে পড়ে সাধারণ মানুষ। যা চলতে থাকলে রাষ্ট্রীয় স্বাস্থ্য সেবার উপর থেকে আস্থা হারিয়ে ফেলবো জনগণ। বেসরকারি এবং কর্পোরেট সিন্ডিকেট দেশের মানুষের জনস্বাস্থ্য নিয়ে ব্যবসার পসরা সাজিয়ে বসবে।
সরকারের উচিত, ইসলামী আদর্শে সরকারি হাসপাতালের স্বাস্থ্য সেবার মান উন্নত ও আধুনিক করা। জনবান্ধব করা। জনগণ যাতে সরকারি হাসপাতালে গিয়ে ভোগান্তিবিহীন এবং স্বল্পমূল্যে পর্যাপ্ত চিকিৎসা গ্রহণ করতে পারে তার ব্যবস্থা করা। দালাল নির্মূল করা। দালালী সিন্ডিকেটের সাথে জড়িত চিকিৎসক, ওয়ার্ড বয়, নার্স, কর্মচারীদের আইনের আওতায় নিয়ে এসে শাস্তি প্রদান করা। এসব দুর্নীতি মনিটরিং এবং নিয়ন্ত্রন ও নির্মূলের জন্য আলাদা গোয়েন্দা সংস্থা, আলাদা পুলিশ বাহিনী ও বিশেষ ট্রাইব্যুনাল করা উচিত। এতে করে রাষ্ট্রীয় স্বাস্থ্য সেবা ব্যবস্থাপনার উপর মানুষের আস্থা আবারও ফিরে আসবে। ইনশাআল্লাহ!
ছহিবে পবিত্র সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ, রাজারবাগ শরীফ উনার সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার নেক ছোহবত মুবারক-এ কেবলমাত্র তা লাভ করা সম্ভব। খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাদেরকে তা নছীব করুন। (আমীন)
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
খাবারে ঢুকছে প্লাস্টিক কণা, বিপর্যয়ের মুখে জনস্বাস্থ্য। স্থায়ী বিকলাঙ্গতা ও স্বাস্থ্যহানির শঙ্কায় দেশের জনগণ। বিষয়টি ভয়াবহ- সত্বর গুরুত্বের সাথে নজর দিন।
২২ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
নাটক-সিনেমার মাধ্যমে মুসলিম প্রজন্মকে দ্বীন ইসলাম থেকে দূরে সরিয়ে দেয়া হচ্ছে। পরকালের কথা স্বরণ করে মুসলিম উম্মাহকে বিধর্মীদের এসব ষড়যন্ত্র থেকে বের হয়ে আসতে হবে।
২২ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
গৎবাঁধা আবহে আবদ্ধ থাকার কারণে অতীতের মত বর্তমান সরকারও রপ্তানী বহুমুখীকরণের উদ্যোগ নিচ্ছে না। কেবলমাত্র খিলাফত আলা মিনহাজিন নুবুওওয়াহ্র পরিক্রমায় রপ্তানী বহুমূখীকরণের প্রজ্ঞা নেয়া সম্ভব ইনশাআল্লাহ।
২১ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
বর্তমান সরকারের অরাজাকতায় মধ্যবিত্তরাও এখন পুষ্টি সঙ্কটে ভূগছে মহান আল্লাহ পাক উনার রহমতমূখী প্রবণতার অভাবই এর মূল কারণ কেবলমাত্র খিলাফত আলা মিনহাজিন নুবুওওয়াহ্র পরিক্রমায় খোদায়ী রহমতে সব কিছুতে সচ্ছলতা হাছিল সম্ভব ইনশাআল্লাহ
২১ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
দেশের ১০ কোটিরও বেশী শীতার্ত দরিদ্র জনসাধারণের জন্য মাত্র ১৫ কোটি টাকার কম্বল বরাদ্দ করা চরম বৈষম্য এবং মানবাধিকার লঙ্ঘন পাশাপাশি বৈষম্য বিরোধী ছাত্র জনতার আন্দোলনের চেতনার সাথে চরম সাংঘর্ষিক খিলাফত আলা মিনহাজিন নুবুওওয়াহ্র চেতনা ও জজবা ধারণ করে এর অবসান ঘটাতে হবে ইনশাআল্লাহ
২০ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
ঢাকা শহরে ২ কোটি ভাড়াটিয়া বাড়ি ভাড়া বৃদ্ধির জুলুমে জর্জরিত তন্ত্র-মন্ত্রের সরকারের পর অন্তর্বর্তী সরকারও নীরব দর্শক কেবলমাত্র খিলাফত আলা মিনহাজিন নুবুওওয়াহ্র পরিক্রমায়ই বাড়ি ভাড়া বৃদ্ধির জুলুমবাজি বন্ধ হওয়া সম্ভব ইনশাআল্লাহ
২০ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
মহা ভুল পরিকল্পনার এবং মহা বিড়ম্বনার উড়াল সেতু বা ফ্লাইওভার নির্মাণেরও বিচার করতে হবে এবং শাস্তি দিতে হবে। কেবলমাত্র খিলাফত আলা মিনহাজিন নুবুওওয়াহ্র চেতনায়ই সঠিক পরিকল্পনা সম্ভব। সে পথেই চলতে হবে ইনশাআল্লাহ
১৯ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
নিজেদের ক্যাশিয়ারদের সুযোগ করে দেয়ার জন্য পতিত সরকার দেশের চিনি শিল্পকে ধ্বংস করেছিল। (নাউযুবিল্লাহ) যথাযথ পৃষ্ঠপোষকতা করলে অতীতের মত চিনি রফতানী করা যাবে ইনশাআল্লাহ খিলাফত আলা মিনহাজিন নুবুওওয়াহ্র পরিক্রমায় চললেই সে প্রজ্ঞা পাওয়া সম্ভব ইনশাআল্লাহ
১৯ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
বাজারে বিদেশী পণ্যের আধিপত্য। সরকারের উচিত বাজারে শতভাগ দেশীয় পণ্যের নিয়ন্ত্রণ নিশ্চিত করা।
১৮ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
শিক্ষার্থীদের মাঝে ব্যাপক আত্মহত্যা প্রবণতারোধে সরকারকে কার্যকরী পদক্ষেপ নিতে হবে
১৮ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
মহান বিজয় দিবসে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সত্যিকার উপলব্ধি জাগ্রত হোক সবার অন্তরে। সংস্কারের দাবীদার সরকারকে উপলব্ধিতে সক্ষমতা আনতেই হবে- যে, সত্যিকার ইসলামী অনুপ্রেরণাই মুক্তিযুদ্ধের চেতনা এবং সংস্কারের পরিক্রমা
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিশ শুহূরিল আ’যম, মহাসম্মানিত রবীউল আউওয়াল শরীফ মাস উনার মহিমান্বিত, মহাপবিত্র ১২ তারিখ উনার সাথে সম্পর্কযুক্ত মহাসম্মানিত ১২ই জুমাদাল উখরা শরীফ আজ। সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার শান মান মুবারক অনুভব করা, মর্যাদা-মর্তবা মুবারক জানা, দয়া-ইহসান মুবারক উপলব্ধি করা সর্বোপরি নেক ছায়াতলে উপনীত হওয়া বর্তমান যামানায় সবার জন্যই ফরজ।
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার)