সরকারি হাসপাতালের রোগী ভাগিয়ে নেয়া হচ্ছে মানহীন বেসরকারি হাসপাতাল-ক্লিনিকগুলোতে। কোটি কোটি টাকার মুনাফা লুটছে অসৎ সিন্ডিকেট ও হাসপাতাল মালিকরা। ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে সাধারণ মানুষ। সরকারি হাসপাতালগুলোর বেহাল অবস্থার কারণেই এমন সিন্ডিকেটের সূচনা হয়েছে। সরকারের উচিত, সরকারি স্বাস্থ্যসেবা উন্নত করে এসব সিন্ডিকেট নির্মূল করা।
, ১৩ রমাদ্বান শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ২৫ আশির, ১৩৯১ শামসী সন , ২৪ মার্চ, ২০২৪ খ্রি:, ১০ চৈত্র, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) সম্পাদকীয়
রাজধানীসহ জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে সরকারি হাসপাতালের সামনে ও আশপাশে ব্যাঙের ছাতার মতো গজিয়ে উঠেছে মানহীন ও নিম্নমানের বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার। আর এসব প্রতিষ্ঠানগুলো সবই দালালনির্ভর। নিয়োজিত দালালরা সরকারি হাসপাতালের রোগীদের ভাগিয়ে নিচ্ছে এসব হাসপাতালগুলোতে। সারা দেশেই এমন রোগী বেচাকেনার হাট জমে উঠেছে। দালালদের ফ্রন্টলাইনে রেখে সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত হাসপাতালের এক শ্রেণির দুর্নীতিবাজ চিকিৎসক, নার্স ও ওয়ার্ড বয় ভয়ংকর চক্র গড়ে তুলে এর নেপথ্যে কলকাঠি নাড়ছে।
ভাগিয়ে নিয়ে রোগীদের বেসরকারি ক্লিনিকে ভর্তি করার পর নেমে আসে চরম দুর্ভোগ। চিকিৎসা সেবার নামে তো কিছুই হয় না, উল্টো দরিদ্র রোগীদের ভিটামাটি বিক্রি করে হাসপাতালের বিল পরিশোধ করতে হয়। সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের নিয়ে বাণিজ্য করে অধিকাংশ ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মালিক ও দালালরা কোটি কোটি টাকার মালিক হয়েছে।
পর্যবেক্ষক মহলের তথ্যমতে, মানহীন বেসরকারি হাসপাতাল-ক্লিনিকে রোগী নিতে পারলেই এক থেকে দুই হাজার টাকা কমিশন পায় অ্যাম্বুলেন্স চালকরা। যেসব চিকিৎসক, নার্স কিংবা ওয়ার্ড বয় এ রোগীকে ভাগিয়ে সেখানে পাঠায় তারা পায় ৩-৫ হাজার টাকা। আর যার মধ্যস্থতায় রোগীকে এক হাসপাতাল থেকে অন্য হাসপাতালে ভর্তি করানো হয় সে পায় রোগীর চিকিৎসার মোট বিলের ৩০ থেকে ৩৫%। এভাবে রোগী ভর্তি করানোকে বলা হয় ‘রোগী বেচাকেনা’।
উল্লেখ্য, রোগী যখন সিরিয়াস অবস্থায় থাকে, তখন তার জন্য বিশেষ ওষুধ, ইনজেকশন, স্যালাইন, অক্সিজেন বা আরও বেশি কিছু সাপোর্ট সিস্টেমের প্রয়োজন। এজন্য রোগীকে দ্রুত মানসম্মত হাসপাতাল বা ক্লিনিকে চিকিৎসা সেবা দেওয়া জরুরি। অথচ এসব রোগী দ্রুত নিকটস্থ সরকারি হাসপাতালে যাওয়ার পর সেখানে ওঁৎ পেতে থাকা সংঘবদ্ধ চক্র তাকে টাকার বিনিময়ে কৌশলে দালালদের হাতে তুলে দেয়। পরে তারা তাদের নিয়ে বেসরকারি হাসপাতাল-ক্লিনিকে বিক্রির জন্য এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় ঘুরতে থাকে। দরদামে পোষালেই তবে রোগী বেচাকেনা করে। এতে মুমুর্ষু রোগীর এক থেকে দেড় ঘণ্টা, কখনো দুই-তিন ঘণ্টা সময় পেরিয়ে যায়। ফলে গুরুতর অসুস্থ অনেক রোগী অনেক কষ্ট পেয়ে মারা যায়।
রোগী ভাগিয়ে নেয়ার বিষয়ে সাধারণ মানুষের তেমন ধারণা না থাকলেও হাসপাতাল-ক্লিনিক ব্যবসার সঙ্গে জড়িতদের কাছে এটি ওপেন-সিক্রেট। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থার কাছে বিভিন্ন সময় এ সংক্রান্ত শত শত অভিযোগ জমা পড়েছে। সংশ্লিষ্ট প্রশাসন এ ব্যাপারে কোনো পদক্ষেপ না নেওয়ায় রোগী বেচাকেনার সঙ্গে জড়িতরা বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। তারা বেসরকারি ও ব্যক্তি মালিকানাধীন হাসপাতালের সেলস অফিসার, মার্কেটিং ম্যানেজার, মার্কেটিং জিএম-এজিএম পদের সাইন বোর্ড লাগিয়ে রোগী ভাগিয়ে আনার মতো জঘন্য কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। তাদের সঙ্গে প্রশাসনের গোপন আঁতাত থাকারও অভিযোগ পাওয়া গেছে।
বলাবাহুল্য, দালালদের এই সিন্ডিকেট মূলত সৃষ্টিই হয়েছে সরকারি হাসপাতালগুলোর বেহাল চিকিৎসা সেবার কারণে। গত ৫০ বছরে দেশের স্বাস্থ্য খাতের বিরুদ্ধে সব থেকে বড় অভিযোগ হচ্ছে ‘অব্যবস্থাপনা’। সত্যিকার অর্থেই দেশে পেশাদার একটি স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা গড়ে ওঠেনি। তৃণমূল থেকে যত ওপরে যাওয়া যায় সর্বত্রই একই দৃশ্য প্রতীয়মান হয়। অধিকাংশ হাসপাতালে এখনো পর্যাপ্ত চিকিৎসক, নার্স ও অন্যান্য জনবল নেই। কোথাও কোথাও যন্ত্রপাতি আছে তো টেকনিশিয়ান নেই। বহির্বিভাগে একজন কনসালট্যান্টের চিকিৎসা ও কিছু ওষুধ পাওয়া ছাড়া তেমন সেবা মিলছে না। সরকারিভাবে চিকিৎসা সেবা যেহেতু পর্যাপ্ত নয়, তাই চাহিদার প্রেক্ষাপটে বিভিন্ন জায়গায় মানহীন ও নিম্নমানের হাসপাতাল বা ক্লিনিকগুলো হচ্ছে। আর সাধারণ মানুষ সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা না পাওয়ায় দালাল চক্রের মাধ্যমে সেখানে ভিড় করছে।
প্রসঙ্গত, স্বাস্থ্য খাত অত্যন্ত স্পর্শকাতর একটি বিষয়। ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর ইত্যাদি দেশগুলোতে জনসাধারণ অসুস্থবোধ করলে সর্বপ্রথম তাদের মাথায় আসে সরকারি হাসপাতাল। কারণ রাষ্ট্রীয়ভাবে আগে সরকারি স্বাস্থ্যসেবাকে সেখানে উন্নত ও শক্তিশালী করা হয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশে তার ঠিক উল্টো পরিস্থিতি। সরকারি হাসপাতালের দুর্ভোগের কথা চিন্তা করলে ভীত হয়ে পড়ে সাধারণ মানুষ। যা চলতে থাকলে রাষ্ট্রীয় স্বাস্থ্য সেবার উপর থেকে আস্থা হারিয়ে ফেলবে জনগণ। বেসরকারি এবং কর্পোরেট সিন্ডিকেট দেশের মানুষের জনস্বাস্থ্য নিয়ে ব্যবসার পসরা সাজিয়ে বসবে।
সরকারের উচিত, ইসলামী আদর্শে সরকারি হাসপাতালের স্বাস্থ্য সেবার মান উন্নত ও আধুনিক করা। জনবান্ধব করা। জনগণ যাতে সরকারি হাসপাতালে গিয়ে ভোগান্তিবিহীন এবং স্বল্পমূল্যে পর্যাপ্ত চিকিৎসা গ্রহণ করতে পারে তার ব্যবস্থা করা। দালাল নির্মূল করা। দালালী সিন্ডিকেটের সাথে জড়িত চিকিৎসক, ওয়ার্ড বয়, নার্স, কর্মচারীদের আইনের আওতায় নিয়ে এসে শাস্তি প্রদান করা। এসব দুর্নীতি মনিটরিং এবং নিয়ন্ত্রন ও নির্মূলের জন্য আলাদা গোয়েন্দা সংস্থা, আলাদা পুলিশ বাহিনী ও বিশেষ ট্রাইব্যুনাল করা উচিত। এতে করে রাষ্ট্রীয় স্বাস্থ্য সেবা ব্যবস্থাপনার উপর মানুষের আস্থা আবারও ফিরে আসবে। ইনশাআল্লাহ!
ছহিবে সাইয়্যিদি সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ, রাজারবাগ শরীফ উনার মামদূহ মুর্র্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার নেক ছোহবত মুবারক-এ কেবলমাত্র তা লাভ করা সম্ভব। খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাদেরকে তা নছীব করুন। আমীন!
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
ব্যাংক গ্রাহকদের খালি হাতে বা নাম মাত্র অর্থে ফেরানো যাবে না কথিত অন্তর্বর্তী সরকারকেই নিশ্চয়তার পাশাপাশি যথাযথ ব্যবস্থা প্রদান করতে হবে ইনশাআল্লাহ
২৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
বিশ্বে জ্বালানীর দাম এমনেই কমছে পাশাপাশি শুধুমাত্র কাঠামো সংস্কারই ১৫ টাকা কমানো সম্ভব হলেও সেদিকে নজর দিচ্ছে না কেন অন্তর্বর্তী সরকার? জ্বালানী তেলের দাম কমালে দ্রব্যমূল্যের দাম সহজেই কমবে
২৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
বাংলাদেশে মিডিয়াগুলো ইহুদীদের অদৃশ্য ইশারায় দেশে পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার বিরূপ পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে চাইছে। বাংলাদেশের মুসলমানদের উচিত- দেশের সব মিডিয়া বর্জন করে আলাদাভাবে সম্মানিত ইসলামী মিডিয়া গঠন করা।
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
বাংলাদেশের জন্য মারাত্মক হুমকী স্বরূপ আরাকান আর্মিকে এক্ষুনি প্রতিহত করতে হবে ইনশাআল্লাহ
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
দেশে সাড়ে ৩ কোটি শুধু শিশুই সিসার বিষক্রিয়ায় আক্রান্ত এবং সব প্রাপ্ত বয়স্করাও ক্ষতিগ্রস্থ সিসার ক্ষতি থেকে বাঁচতে সুন্নতী তৈজসপত্র ব্যবহার এবং আন্তর্জাতিক সুন্নত প্রচার কেন্দ্রের জিনিস ক্রয়ে নিবেদিত হতে হবে ইনশাআল্লাহ
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে মহাব্যার্থ অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সশস্ত্র বাহিনীকে আরো ক্ষমতা দিয়ে প্রতিকার পাওয়া যেতে পারে
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
জ্বালানী তেলের দাম এক্ষুনি কমাতে হবে ইনশাআল্লাহ
২০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
অনেক কিছু করার প্রচারনা চালালেও জিডিপি এবং দেশের উন্নয়নের মূল ভিত্তি অর্থনীতির লাইফ লাইন এসএমই উদ্যোক্তাদের জন্য অন্তর্বর্তী সরকার কিছুই করছে না
২০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
প্রসঙ্গ: রাষ্ট্রদ্বীন ইসলাম, মুসলমানের দ্বীনি অধিকার, পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনাকে পালনের আবহ এবং রাষ্ট্রযন্ত্রের দায়।
১৯ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সিঙ্গাপুর, রাশিয়াসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে সন্ত্রাসী সংগঠন ইসকন নিষিদ্ধ বাংলাদেশেও বিভিন্ন মহলে ইসকন নিষিদ্ধের দাবী জোরদার হচ্ছে, সংস্কারের দাবীদার সরকার কী করে নির্বিকার থাকতে পারে?
১৯ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
ব্যাপকভাবে বাড়ছে সাইবার নিরাপত্তা ঝুঁকি ও হয়রানী জান-মাল এবং সম্মান হিফাজতে সরকারকে এক্ষুনি পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নিতে হবে ইনশাআল্লাহ
১৮ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
পাচারকৃত ১৭ লাখ কোটি টাকা ফেরত আনতে শামুকের মত ধীর গতি বরদাশতের বাইরে
১৮ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার)