নছীহতে কায়িম মাকামে উম্মাহাতুল মু’মীনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল উমাম আলাইহাস সালাম
সম্মানিত হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের ফযীলত মুবারক: (৫)
, ০৯ রবীউল আউওয়াল শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ২৭ রবি’ ১৩৯১ শামসী সন , ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ খ্রি:, ১০ আশ্বিন, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) মহিলাদের পাতা
عَنْ حَضْرَتْ اَبـِىْ لَيْلٰی رَضِىَ اللّٰهُ تَـعَالـٰى عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللّٰهِ صَلَّى اللّٰهُ عَلَـيْهِ وَسَلَّمَ لَا يُــؤْمِـنُ عَـبْدٌ حَتّٰى اَكُوْنَ اَحَبَّ اِلَـيْـهِ مِنْ نَــفْـسِــهٖ وَاَهْـلِـىْ اَحَبَّ اِلَـيْــهِ مِنْ اَهْـلِـهٖ وَ عِـتْــرَتِــىْ اَحَبَّ اِلَـيْــهِ مِنْ عِتْــرَتِـهٖ وَذَاتِـىْ اَحَبَّ اِلَـيْــهِ مِنْ ذَاتِــهٖ. (معجم الاوسط)
হযরত আবূ লায়লা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু হতে বর্ণিত। কোনো বান্দা ততক্ষন পর্যন্ত মুমিন হতে পারবে না যতক্ষন পর্যন্ত না তার নফস থেকে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া ওয়া সাল্লাম উনাকে বেশি মুহাব্বত করতে পারবে এবং তার পরিবার থেকে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পরিবারকে অধিক মুহাব্বত করবে এবং তার বংশধর যারা আছে তাদের থেকে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পরিবারকে অধিক মুহাব্বত করবে এবং উনার জাত বা সত্তা মুবারককে তার নিজের সত্তা থেকে বেশি মুহাব্বত করবে।
[মু’জামুল আওসাত্ব]
এ থেকে প্রতিভাত হয় যে, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সন্তুষ্টি মুবারক পেতে হলে এবং পরিপূর্ণ ঈমানদার হতে হলে উনাকে আমাদের নিজ সত্তা, পরিবার, বংশধর থেকেও বেশি মুহাব্বত করার পাশাপাশি সম্মানিত হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকেও সর্বক্ষেত্রে অধিক মুহাব্বত করতে হবে। কেননা উনাদেরকে মুহাব্বত করা ব্যতীত নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার হাক্বীক্বী মুহাব্বত ও সন্তুষ্টি মুবারক হাছিল করা এবং মু’মিন হওয়া কখনোই সম্ভব হবে না।
পবিত্র হাদীছ শরীফে আরো ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
عَنْ حَضْرَتْ عَلِــيٍّ عَلَــيْـهِ السَّلَامُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللّٰهِ صَلَّى اللّٰهُ عَلَـيْـهِ ٖوَسَلَّمَ أَهْـلُ بَــيْــتِــيْ أَمَانٌ لِأَهْلِ الْأَرْضِ كَــمَا أَنَّ النُّـجُـوْمَ أَمَانٌ لِأَهْلِ السَّمَاءِ فَــوَيْــلٌ لِمَنْ خَذَلَـهُمْ وَعَانَـدَهُـمْ.
সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, আমার সম্মানিত হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনারা হচ্ছেন সমস্ত যমীনবাসীর জন্য নিরাপত্তাদানকারী যেমন তারকারাজিরা আসমানবাসীর জন্য নিরাপত্তাদানকারী। সুবহানাল্লাহ! সুতরাং যারা আমার সম্মানিত হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের থেকে দূরে সরে যাবে, মানহানী করবে এবং উনাদের বিরোধিতা করবে, তারা ধ্বংস হয়ে যাবে। নাঊযুবিল্লাহ!
[তারতীবুল আমালী ১/২০০, আল ঈমা ৫/১৭৮]
অপর বর্ণনায় রয়েছে,
اَلنُّجُوْمُ اَمَانٌ لِّاَهْـلِ السَّمَاءِ وَاَهْـلُ بَــيْــتِـــىْ اَمَانٌ لِّاَهْلِ الْاَرْضِ فَاِذَا ذَهَبَ اَهْـلُ بَــيْــتِــىْ ذَهَبَ اَهْلُ الْاَرْضِ.
তারকারাজিরা আসমানবাসীর জন্য নিরাপত্তাদানকারী। আর আমার সম্মানিত হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনারা হচ্ছেন যমীনবাসীর জন্য নিরাপত্তাদানকারী। যখন আমার সম্মানিত হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনারা বিদায় নিবেন, তখন সমস্ত যমীনবাসী সকলেই ধ্বংস হয়ে যাবে।
[ফাদ্বায়িলুছ ছাহাবাহ ২/৬৭১, আছ ছওয়ায়িকুল মুহরিক্বহ ২/৬৭৫, আল মু’জাম ১/৪০৪, মিরক্বাত শরীফ ৯/৩৯৮৮, যাখায়িরুল ‘উক্ববাহ ১/১৭, সুবুলুল হুদা ওয়ার রশাদ ১১/৭]
প্রকৃতপক্ষে সম্মানিত হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনারা হচ্ছেন তারকারাজিসহ আসমানবাসী-যমীনবাসী, সমস্ত কুল কায়িনাতের জন্য নিরাপত্তাদানকারী। সম্মানিত হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের উসীলায় ক্বিয়ামত পর্যন্ত সমস্ত কায়িনাতবাসী নিরাপত্তা লাভ করবে। সুবহানাল্লাহ! উক্ত হাদীছ শরীফ হতে আরো বুঝা যায় যে, ক্বিয়ামত পর্যন্ত সবসময় দুনিয়ার যমীনে সম্মানিত হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনারা অবস্থান মুবারক করবেন। আর উনাদের সম্মানার্থেই ক্বিয়ামত পর্যন্ত সমস্ত কায়িনাত টিকে থাকবে। অতঃপর যখনই উনারা দুনিয়ার যমীন থেকে বিদায় নিবেন, তখনই সমস্ত কায়িনাত ধ্বংস হয়ে যাবে।
পবিত্র হাদীছ শরীফে আরো ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
اِجْعَلُوْا اَهْلَ بَـيْـتِـىْ مِنْكُمْ مَكَانَ الرَّأْسِ مِنَ الْـجَسَدِ وَمَكَانَ الْعَيـْـنَـيـْـنِ مِنَ الرَّأْسِ وَلَا يَـهْتَـدِىْ الرَّأْسِ اِلَّا بِالْعَـيْـنَـيـْنِ. (رواه البيهقى فى شعب الايـمان)
শরীর থেকে মাথার স্থান ও মাথা থেকে দুই চোখের স্থান যেমন গুরুত্বপূর্ণ তেমন তোমরা আমার আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে গুরুত্বপূর্ণ মনে করো। যেমন দুই চোখ ব্যতীত মাথা সঠিক পথে চলতে পারে না। সুবহানাল্লাহ!
[বাইহাক্বী শরীফ]
এভাবে আরো অসংখ্য পবিত্র হাদীছ শরীফ ও ক্বওল শরীফে হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের গুরুত্ব সম্পর্কে বর্ণনা করা হয়েছে।
সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুল খমিস মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বলেন,
اِنَّا اَهْلُ الْـبَـــيْــتِ لَا يُـــقَاسُ بِــنَا اَحَدٌ مَنْ قَاسَ بِــنَا اَحَدًا فَــقَـدْ كَــفَــرَ.
নিশ্চয়ই আমরা সম্মানিত হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম। আমাদের সাথে অন্য কারো ক্বিয়াস বা তুলনা করা যাবে না। যে ব্যক্তি আমাদের সাথে অন্য কাউকে তুলনা করবে, সে কুফরী করবে।
অর্থাৎ উনারা হচ্ছেন আমাদের জন্য উত্তম আদর্শ, উনাদের সাথে কারো তুলনা করা যায় না। সুবহানাল্লাহ! উনারাই হচ্ছেন মহান আল্লাহ পাক এবং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদেরকে হাছিল করার একমাত্র উসীলা বা মাধ্যম। উনারা ব্যতীত খলিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক এবং উনার হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদেরকে হাছিল করার দ্বিতীয় কোনো উসীলা বা মাধ্যম নেই। সুবহানাল্লাহ!
এ প্রসঙ্গে সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুস সাদিস মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বলেন,
نَـحْـنُ اٰلُ بَـــيْــتِ رَسُـوْلِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ (نَـحْنُ اَهْلُ بَـــيْـتِ رَسُـوْلِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَـيْـهِ وَسَلَّمَ) وَنَــحْنُ اَلْوَسِـيْــلَـةُ اِلَـى اللهِ وَلَا وَسِـيْــلَـةَ اِلَـى اللهِ اِلَّا عَنْ غَــيْــرِ طَرِيْـــقِــنَا اَوْ مِنْ سِـوَانَـا.
আমরা সম্মানিত হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম। আমরা মহান আল্লাহ পাক উনাকে পাওয়ার একমাত্র উসীলা মুবারক। আমাদের পথ বা আমরা ব্যতীত মহান আল্লাহ পাক এবং উনার হাবীব নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদেরকে পাওয়ার দ্বিতীয় কোনো উসীলা বা মাধ্যম নেই। সুবহানাল্লাহ!
[শরহে আক্বাইদে ত্বহাবী]
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
কিভাবে প্রথম মাসে আপনার শিশুর বিকাশে সাহায্য করবেন?
২৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
‘ই’জায শরীফে সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল উমাম আলাইহাস সালাম
২৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
সন্তানদের ও পরিবারের সকলকে সালাম দেয়া শিক্ষা দান করুন
২৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের বেমেছাল দানশীলতা মুবারক (৪)
২৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
কাফের বিশ্বে নারীরা শুধু কি এখন নির্যাতনের শিকার হচ্ছে?
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
একজন দ্বীনদার পরহেযগার আল্লাহওয়ালী মহিলা উনার পর্দা পালনের বেমেছাল দৃষ্টান্ত
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
প্রসঙ্গ মহিলা জামাত নাজায়িজ
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
পিতা-মাতার প্রতি সন্তানের দায়িত্ব-কর্তব্য
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
শৈশবকাল থেকেই সন্তানকে দ্বীনদার হওয়ার শিক্ষা দান করতে হবে
২০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
সম্মানিতা মহিলা আউলিয়া-ই কিরাম উনাদের পরিচিতি
১৯ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
স্বচক্ষে দেখা কিছু কথা
১৯ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
পারিবারিক তা’লীমের গুরুত্ব ও তারতীব
১৮ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার)