নছীহতে কায়িম মাকামে উম্মাহাতুল মু’মীনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল উমাম আলাইহাস সালাম
সম্মানিত হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের ফযীলত মুবারক: (১)
, ০৪ রবীউল আউওয়াল শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ২২ রবি’ ১৩৯১ শামসী সন , ২০ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ খ্রি:, ০৫ আশ্বিন, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) মহিলাদের পাতা
اِنَّـمَا يُرِيْدُ اللهُ لِيُذْهِبَ عَـنْكُمُ الرِّجْسَ اَهْلَ الْـبَــيْـتِ وَيُـطَهِّـرَكُمْ تَـطْهِـيْــرًا ﴿৩৩﴾ سورة الاحزاب
নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ পাক তিনি চান হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের সমস্ত প্রকার অপবিত্রতা থেকে পবিত্র করার মতো পবিত্র করতে অর্থাৎ উনাদেরকে পবিত্র করার মতো পবিত্র করেই মহান আল্লাহ পাক তিনি সৃষ্টি করেছেন। সুবহানাল্লাহ! [সূরা আহযাব শরীফ: ৩৩]
এই আয়াত শরীফে মহান আল্লাহ পাক তিনি হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের পবিত্রতার কথা ঘোষণা মুবারক করেছেন। আর হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেছেন,
فَاَنَا وَاَهْلُ بَـيْتِىْ مُطَهَّرُوْنَ مِنَ الذُّنُـوْبِ. (رواه ترمذی، طبرنی، بیهقی)
আমি এবং আমার হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম, আমরা সকলেই যুনূব তথা সমস্ত প্রকার কবীরা-ছগীরা এবং যাবতীয় অপছন্দনীয় কাজ থেকে পূতপবিত্র। সুবহানাল্লাহ!
[তিরমিযী, ত্ববারানী, বাইহাক্বী শরীফ]
উপরোক্ত আয়াত শরীফ ও হাদীস শরীফ থেকে বুঝা যায় যে, হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনারা বেমেছাল পবিত্রতার অধিকারী। এখানে আরও ফিকিরের বিষয় হলো, হযরত নবী রসূল আলাইহিমুস সালাম উনারা হচ্ছেন মা’ছূম (নিষ্পাপ) ও হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা হচ্ছেন মাহফূয (সংরক্ষিত) আর হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের শান মুবারক হলো মুত্বহহার-মুত্বহহির (পূতপবিত্র ও পবিত্রতা দানকারী)।
জানা আবশ্যক যে, সম্মানিত হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনারা কারা? এ সম্পর্কে পবিত্র হাদীছ শরীফে আরো ইরশাদ মুবারক হয়েছে সাইয়্যিদুল আম্বিয়া ওয়াল মুরসালীন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
عَنْ حَضْـرَتْ أُمِّ سَلَمَـةَ عَلَيْهَا السَّلاَمُ أَنَّ النَّـبِـىَّ صَلَّى اللّٰهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ جَلَّلَ عَلَى الْـحَـسَـنِ عَلَـيْـهِ السَّلاَمُ وَالْـحُـسَـيـْنِ عَلَـيْـهِ السَّلاَمُ وَعَلِــىٍّ عَلَـيْـهِ السَّلاَمُ وَفَاطِمَةَ عَلَـيْـهَا السَّـلاَمُ كِـسَاءً ، ثُــمَّ قَالَ اَللّٰهُمَّ هٰؤُلَاءِ اَهْـلُ بَــيْـتِـىْ وَخَاصَّـتِـىْ اِذْهَـبْ عَـنْـهُـمُ الرِّجْـسَ وَطَهِّـرْهُـمْ تَـطْهِـيْــرًا ، فَــقَالَـتْ حَضْـرَتْ أُمُّ سَلَمَـةَ عَلَـيْـهَا السَّلاَمُ وَأَنَا مَـعَـهُـمْ يَا رَسُوْلَ اللّٰهِ صَلَّى اللهُ عَلَـيْـهِ وَسَلَّـمَ؟ قَالَ : مَكَانُـكِ إِنَّـكِ إِلَـىَّ خَـيْــرٌ. (رواه الترمذى، هذا حديث حسن صحيح)
হযরত উম্মুল মু’মিনীন আস সাদিসা আলাইহাস সালাম থেকে বর্ণিত।নিশ্চয়ই নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইমামুছ ছানী হযরত হাসান আলাইহিস সালাম উনাকে, ইমামুছ ছালিছ হযরত হুসাইন আলাইহিস সালাম উনাকে, ইমামুল আউওয়াল হযরত আলী কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম উনাকে এবং হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম উনাকে একখানা চাদর মুবারকে আবৃত করে নিলেন। অতঃপর বললেন, আয় বারে ইলাহী! উনারা আমার সম্মানিত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম এবং আমার খাছ ব্যক্তিত্ব। উনাদের থেকে সব অপবিত্রতা দূর করুন এবং উনাদেরকে পবিত্র করার মত পবিত্র করুন। তখন উম্মুল মু’মিনীন হযরত আস সাদিসা আলাইহাস সালাম তিনি বললেন, ইয়া রসূলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আমিও উনাদের অন্তর্ভুক্ত? তিনি বললেন, আপনার অবস্থান আমার নিকট আরও উত্তম।
[তিরমিযী শরীফ]
পবিত্র হাদীছ শরীফে আরো বর্ণিত রয়েছে, হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি সাইয়্যিদুল আম্বিয়া ওয়াল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে জিজ্ঞাসা করলেন, ইয়া রসূলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আপনার সম্মানিত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনারা কারা? যে সমস্ত ব্যক্তিত্ব মুবারক উনাদের খিদমত মুবারক করা আমাদের জন্য আবশ্যক (ফরয-ওয়াজিব করা হয়েছে)। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করলেন, হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম, হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম এবং উনার পূতপবিত্র সম্মানিত সন্তানদ্বয় আলাইহিমাস সালাম উনারা হলেন আমার সম্মানিত হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম। সুবহানাল্লাহ! [ত্ববারানী শরীফ]
বিশিষ্ট রাবী হযরত যায়িদ ইবনে আরকাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু
উনাকে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল, হে যায়িদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু! নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পরিবার কারা? হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালামগণ কি উনার পরিবার নয়? তিনি বললেন, নিশ্চয়ই উনারা আহলু বাইত শরীফের অন্তর্ভুক্ত। উনার পরিবার হচ্ছেন, উনার বিছালী শান মুবারক প্রকাশের পর যাদের জন্য সদকা গ্রহণ করা হারাম। তিনি বললেন, উনারা কারা? তিনি বলেন, উনারা হচ্ছেন- হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহু আলাইহিস সালাম উনার বংশধর, হযরত আব্বাস আলাইহিস সালাম উনার বংশধর, হযরত জাফর আলাইহিস সালাম উনার বংশধর, হযরত আকীল আলাইহিস সালাম উনার বংশধর। তিনি বললেন, উনাদের সকলের জন্য কি সদকা গ্রহণ হারাম? তিনি বললেন, হ্যাঁ। [মুসনাদে আহমাদ, মুসলিম শরীফ]
উপরোক্ত বর্ণনা থেকে বুঝা যায় যে, হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহু আলাইহিস সালাম, হযরত আব্বাস আলাইহিস সালাম, হযরত জাফর আলাইহিস সালাম, হযরত আকীল আলাইহিস সালাম, হযরত হারিছ বিন আব্দুল মুত্তালিব আলাইহিস সালাম উনারাসহ উনাদের বংশধরগণও নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম তথা সম্মানিত পরিবার-পরিজন আলাইহিমুস সালাম। সুবহানাল্লাহ!
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
মেয়ে সন্তান জন্মগ্রহণ মহান আল্লাহ পাক উনার দয়া ইহসান মুবারক
২৭ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
মহাসম্মানিত সুন্নত মুবারক উনার অনুসরণই সম্মানিত দ্বীন ইসলাম
২৭ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
ঝগড়া-বিবাদের কু-স্বভাবটি পরিহার করা অপরিহার্য কর্তব্য
২৬ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
পিতা-মাতার প্রতি সন্তানের দায়িত্ব-কর্তব্য
২৬ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
যেভাবে দ্বীন ইসলাম উনার দুইজন সম্মানিত খলীফা সাইয়্যিদুনা হযরত ছিদ্দীকে আকবর আলাইহিস সালাম তিনি এবং সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইসি সালাম উনারা মনোনীত হয়েছিলেন
২৫ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন, সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল উমাম আলাইহাস সালাম উনার নছীহত মুবারক:
২২ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
মহিলাদের জামায়াতের জন্য মসজিদে ও ঈদগাহে যাওয়া হারাম ও কুফরী (২)
২১ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের বেমেছাল দানশীলতা মুবারক (৮)
২১ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
শিরক কি? শিরক সম্পর্কে আলোচনা
২০ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
শোকরগোযারী দ্বারা নিয়ামত বৃদ্ধি পায় শোকর গোযার না করলে নিয়ামত বন্ধ হয়
২০ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
শিরক কি? শিরক সম্পর্কে আলোচনা
১৯ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
শোকরগোযারী দ্বারা নিয়ামত বৃদ্ধি পায় শোকর গোযার না করলে নিয়ামত বন্ধ হয়
১৯ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার)