সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ পালনে বিশেষ সুসংবাদ প্রাপ্তি
সম্মানিত সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ পালনকারী উম্মতগণ সম্মানিত রহমত, বরকত, সাকীনাহ্ এবং বিশেষ দীদার মুবারক লাভে ধন্য হয়ে থাকেন
, ০৬ রবীউল আউওয়াল শরীফ, ১৪৪৬ হিজরী সন, ১৩ রবি , ১৩৯২ শামসী সন , ১০ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রি:, ২৬ ভাদ্র , ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ
কিতাবে বর্ণিত রয়েছেন, “ফখরুল ইসলাম কাযী হযরত ইমাম আবুল মাহাসিন আব্দুল ওয়াহিদ ইবনে ইসমাঈল রূইয়ানী শাফিয়ী রহমতুল্লাহি আলাইহি (বিলাদত শরীফ ৪১৫ হিজরী শরীফ : বিছাল শরীফ ৫০২ হিজরী শরীফ) তিনি বর্ণনা করেন, মিশরে একজন বুযূর্গ ব্যক্তি ছিলেন। তিনি মাওলিদুন্নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মাহফিল মুবারক করতেন। সুবহানাল্লাহ! উনার একজন ইহুদী প্রতিবেশী ছিলো। একদিন এই ইহুদী ব্যক্তির আহলিয়া তাকে বললো- আমাদের মুসলিম প্রতিবেশী উনার কি হলো যে, তিনি এই (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র রবীউল আউওয়াল শরীফ) মাসে অনেক মাল-সম্পদ বিলিয়ে দেন, খরচ করেন? তখন (ঐ মহিলার পাশে থাকা) তার চাচাতো ভাই বললো, ‘নিশ্চয়ই উনার যিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নবী-রসূল, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি এই (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র রবীউল আউওয়াল শরীফ) মাসে বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেছেন। তাই তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার জন্য খুশি মুবারক প্রকাশ করেন, উনার সম্মানার্থে এবং উনার মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ উপলক্ষে মাহফিল মুবারক করেন। ’ সুবহানাল্লাহ! তখন ঐ মহিলা বললো, ‘সম্মানিত মু’মিন উনাদের কতই না উত্তম তর্য-ত্বরীক্বা!’ বর্ণনাকারী বলেন, তারপর সেই মহিলা চুপ হয়ে গেলো এবং ঐ রাতে ঘুমিয়ে গেলো। তখন সে স্বপ্নে দেখতে পেলো যে, একজন বেমেছাল সৌন্দর্য ও মর্যাদা সম্পন্ন ব্যক্তিত্ব মুবারক তিনি তাদের মুসলিম প্রতিবেশী উনার ঘরে তাশরীফ মুবারক নিয়েছেন। আর উনার চারপাশে উনার একদল হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুম উনারা রয়েছেন এবং উনাকে উনারা সম্মান ও তা’যীম-তাকরীম মুবারক করছেন। সুবহানাল্লাহ! তখন ঐ মহিলা একজন হযরত ছাহাবী রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনাকে জিজ্ঞাসা করলো, এই মর্যাদাবান ব্যক্তিত্ব মুবারক কে? তখন তিনি বললেন-
هٰذَا رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ دَخَلَ هٰذَا الْـمَنْـزِلَ لِــيُسَلِّمَ عَلـٰى اَهْلِهٖ وَيَــزُوْرَهُمْ لِـفَرْحِهِمْ بِهٖ
‘উনি হচ্ছেন মহান আল্লাহ পাক উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র রসূল, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। তিনি এই বাড়িতে তাশরীফ মুবারক নিয়েছেন এই বাড়ির অধিবাসী উনাদেরকে রহমত, বরকত, সাকীনাহ্ দান করার জন্য এবং উনার মহাসম্মানিত দীদার মুবারক দান করার জন্য। সুবহানাল্লাহ! কারণ এই বাড়ির অধিবাসীগণ উনারা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার জন্য খুশি মুবারক প্রকাশ করেন, উনার সম্মানার্থে সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ পালন করেন। ’ সুবহানাল্লাহ!
অতঃপর ঐ মহিলা বললো- যদি আমি উনার সাথে কথা বলি, তাহলে তিনি কি আমার সাথে কথা মুবারক বলবেন? ঐ ছাহাবী রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি তাকে বললেন, হ্যাঁ; অবশ্যই। এরপর ঐ মহিলা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নিকট এসে উনাকে সম্বোধন মুবারক করলে তিনি দয়া করে তার ডাকে সাড়া দিয়ে বললেন- ‘লাব্বাইক!’ তখন ঐ মহিলা বললো, আপনি কি আমার ন্যায় একজনকে ‘লাব্বাইক’ বলে সাড়া দিচ্ছেন; অথচ আমি বিধর্মী এবং আপনার শত্রু? নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি তাকে বললেন, ‘ঐ মহান আল্লাহ পাক উনার ক্বসম! যিনি আমাকে সত্যসহ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নবী হিসেবে পাঠিয়েছেন, আমি জানি যে, নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ পাক তিনি তোমাকে সম্মানিত হিদায়াত দান করবেন, তাই আমি ‘লাব্বাইক’ বলে তোমার ডাকে সাড়া দিয়েছি। ’ তখন ঐ মহিলা বললেন, ‘নিশ্চয়ই আপনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নবী-রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এবং নিশ্চয়ই আপনি সুমহান চরিত্র মুবারক উনার অধিকারী। যে ব্যক্তি আপনার কোনো বিষয় মুবারক উনার বিরোধিতা করে, সে ধ্বংস হোক! যে ব্যক্তি আপনার মহাসম্মানিত মর্যাদা মুবারক সম্পর্কে অজ্ঞ, সে বিফল হোক! (ইয়া রাসূলাল্লাহ, ইয়া হাবীবাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! দয়া করে) আপনি আপনার নূরুল মাগফিরাত মুবারক (হাত মুবারক) প্রসারিত করে দিন-
فَاَنَا اَشْهَدُ اَنْ لَّا اِلٰهَ اِلَّا اللهُ وَاَشْهَدُ اَنَّ مُحَمَّدًا رَّسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ
‘আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, মহান আল্লাহ পাক তিনি ব্যতীত কোনো ইলাহ নেই এবং আমি আরো সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, নিশ্চয়ই আপনি মহান আল্লাহ পাক উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। ’
আর ঐ মহিলা তিনি মনে মনে বললেন, সকাল হলেই তিনি সম্মানিত দ্বীন ইসলাম গ্রহণ করার খুশিতে এবং স্বপ্নে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত দীদার মুবারক লাভ করার কারণে শুকরিয়া স্বরূপ উনার মালিকানায় থাকা সমস্ত মাল-সম্পদ বিলিয়ে দিয়ে মাওলিদুন্নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অর্থাৎ মহাসম্মানিত সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ মাহফিল মুবারক করবেন। সুবহানাল্লাহ! তারপর যখন সকাল হলো, তখন ঐ মহিলা দেখলেন- উনার আহাল তিনি সুমহান নেক আগ্রহ নিয়ে একটি ওলীমা মুবারক অর্থাৎ বিশেষ মেহমানদারীর আয়োজন করছেন। সুবহানাল্লাহ! তখন ঐ মহিলা তিনি অত্যন্ত আশ্চর্যান্বিত হয়ে উনার আহাল উনাকে বললেন, আমি কি আপনাকে নেক আগ্রহ-উদ্দিপনায় মশগূল দেখতে পাচ্ছি? (এটা কিসের জন্য?) তিনি উনার আহলিয়াকে বললেন, ‘গত রাতে আপনি যেই সম্মানিত রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নূরুল মাগফিরাত মুবারক-এ (হাত মুবারক-এ) সম্মানিত ইসলাম গ্রহণ করেছেন, উনার সম্মানার্থে। সুবহানাল্লাহ! অর্থাৎ মহাসম্মানিত সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ উনার সম্মানার্থে আমি এই বিশেষ মেহমানদারীর আয়োজন করেছি। ’ সুবহানাল্লাহ! তখন ঐ মহিলা তিনি উনার আহালকে বললেন- ‘এই সংরক্ষিত গোপন বিষয়টি আপনার নিকট কে প্রকাশ করলেন? এই ব্যাপারে আপনাকে কে জানিয়েছেন?’ ঐ ব্যক্তি তিনি উনার আহলিয়াকে বললেন, ‘আমিই সেই ব্যক্তি যিনি আপনার পরে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত নূরুল মাগফিরাত মুবারক-এ সম্মানিত দ্বীন ইসলাম গ্রহণ করেছি’। ” সুবহানাল্লাহ! (তাযকিরাতুল ওয়ায়িযীন ১২৪-১২৫ পৃষ্ঠা)
-০-
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
সম্মানিত খিলাফত আলা মিনহাজিন নুবুওওয়াহ্ মুবারক ক্বায়িম হওয়ার অর্থই হলো দুনিয়ার যমীন ইনছাফ দ্বারা পরিপূর্ণ হয়ে যাওয়া
০৬ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ঝুটা মুবারক খাওয়ার ফলে বরকত মুবারক লাভ
০৬ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুল বারাকাত মুবারক উনার ফলে কূপের পানি সবচেয়ে অধিক সুপেয় ও সুমিষ্ট হয়ে যাওয়া
০৬ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বগল মুবারক উনার শুভ্রতা মুবারক
০৬ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার শান মুবারক সম্পর্কিত সংশ্লিষ্ট কতিপয় আয়াত শরীফ (৩)
০৬ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
সম্মানিত খিলাফত আলা মিনহাজিন নুবুওওয়াহ্ মুবারক ক্বায়িম হওয়ার অর্থই হলো দুনিয়ার যমীন ইনছাফ দ্বারা পরিপূর্ণ হয়ে যাওয়া
০৫ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কুলি মুবারক করা পানি কূপে পতিত হওয়ার কারণে কুপ থেকে মেশকের চেয়ে অধিক সুঘ্রাণ ছড়িয়ে পড়া
০৫ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুন আলা নূর মুবারক উনার মাঝে দায়িমীভাবে নূর মুবারক চমকানো
০৫ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাসি মুবারককালে পাশ্ববর্তী দেয়ালসমূহ আলোকিত হয়ে যাওয়া
০৫ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বুলন্দী শান মুবারক সম্পর্কিত সংশ্লিষ্ট কতিপয় আয়াত শরীফ (২)
০৫ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কথা মুবারক বলার সময় নূর মুবারক বিচ্ছুরিত হওয়া
০৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুত ত্বীব মুবারক থেকে নূর মুবারক সৃষ্টি হওয়া
০৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার)