সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার ইতিহাসে সমৃদ্ধশীল ও গুরুত্বপূর্ণ নৌবন্দরসমূহ
, ১০ রমাদ্বান শরীফ, ১৪৪৪ হিজরী সন, ০২ হাদি ‘আশির, ১৩৯০ শামসী সন , ০২ এপ্রিল, ২০২৩ খ্রি:, ১৯ চৈত্র, ১৪২৯ ফসলী সন, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) ইতিহাস
মাহদীয়া: ফাতেমী সালতানাতের প্রতিষ্ঠাতা ৩০০ হিজরীতে আফ্রিকার উপকূলে মাহদীয়া বন্দর নির্মাণ করে। স্বীয় স্বাতন্ত্র্য বৈশিষ্ট্যে খ্যাতিমান বন্দর ছিলো। উপকূলের পাথর কেটে নির্মিত হয়েছিলো। ্এখানে একটি সুন্দর প্রবেশপথ ছিলো। এটি শিকল দিয়ে বাধা থাকতো। জাহাজ ভিড়ার সময় শিকল খুলে ফেলে পুনরায় তা বেঁধে দেয়া হতো।
তিউনিস: এই নৌবন্দরটি অতি সুপ্রাচীন। আব্দুল মালিক ইবন মারওয়ান তিউনিস বন্দরকে জাহাজ নির্মাণের জন্য নির্বাচন করেছিলেন। মুসলমানদের জাহাজ নির্মাণ শিল্পে এই বন্দরটি বিশিষ্ট ভূমিকা পালন করেছিলো। বলতে গেলে, এখান থেকেই মুসলমানদের জাহাজ নির্মাণ ও নৌ চালনার অভিযাত্রা শুরু হয়েছিলো। এই বন্দরটি ছিলো অতি সুরক্ষিত ও একটি সুন্দর। এখানে জাহাজ ভিড়ার পর সম্পূর্ণ নিরাপদ হয়ে যেতো। কোনো ঝড়-তুফানের আশঙ্কা থাকতো না। এর সন্নিকটে দুটি প্রকান্ড ঝিল ছিলো। একটির নাম বারাযতা ও আরেকটি নাম হালকুল ওয়াদ। দুই ঝিলের মাঝখানে একটি ভূখন্ড ছিলো। এই ভূখন্ডটি কেটে ঝিল দুটিকে মিলিয়ে দিলে তিউনিস এমন এক সুবিস্তৃত নৌবন্দর হতে পারতো যেখানে ভূমধ্যসাগরের সকল নৌযান একত্রে থাকা সম্ভব ছিলো।
শহর রশীদ: হিজরী তৃতীয় শতকের শেষভাগে মিসরের তিউনিস সাগরের বড় বড় জাহাজ চলাচল করতো। এখানে শহর রশীদ নামে একটি বর্ণোজ্জ্বল নৌবন্দর ছিলো। এর অন্যতম বৈশিষ্ট ছিলো নীল নদের পানি সাগরে পতিত হওয়ার দরুণ সাগরের জাহাজ অনায়াসেই নীল নদে প্রবেশ করতে পারতো।
শহর কাওস: মামলুক সালতানাতের আমলে এই বন্দরটি খুবই সরগরম ছিলো। এট্ িমস্তবড় উপকূলীয় শহর। মিসরের বন্দর সাঈদ নামে খ্যাত। দক্ষিণ দেশ থেকে শূর নদ দিয়ে জাহাজযোগে আগত মুসলিম বণিকগণ এখানে থামতেন। এডেন বন্দরের ব্যবসায়ীরাও এখানে থামতেন। নৌ বানিজ্যের কারণে এই বন্দরটি অনেক গুরুত্বপূর্ণ ছিলো।
দামিয়াত: এই বন্দরটির একপ্রান্ত নীল নদের সাথে এবং অপর প্রান্ত ভূমধ্যসাগরের সাথে যুক্ত ছিলো। এটি মিসরের সুবৃহৎ বন্দর ছিলো। এখানে নৌযুদ্ধের মহড়া অনুষ্ঠিত হতো মুসলমানদের। দামিয়াতে দুটি মিনার ছিলো। মিনার দুটির সাতে লোহার মোটা শিকল টানা থাকতো। ফলে মুসলিম শাসকের বিনা অনুমতিতে কেউ বন্দরে নোঙ্গর করতে পারতো না।
আলেকজান্দ্রিয়া: আলেকজান্দ্রিয়া মিসরের প্রাচীন নামকরা নৌবন্দরসমূহের অন্যতম। আলেকজান্দ্রিয়া মুসলিম আমলে বিখ্যাত নৌবন্দর ছিলো।
বলাবাহুল্য, যে সব দেশের কাছে নৌবন্দর নেই তারা শক্তিশালী হতে পারে না। ব্যবসা-বাণিজ্য ও সামরিক শক্তির জন্য নৌবন্দর, জাহাজ নির্মাণ ও নৌ চালনা শিক্ষা অপরিহার্য। যেহেতু মুসলমানরাই আধুনিক নৌ-চালনার প্রবক্তা তাই ইতিহাসে নৌ যুদ্ধ কিংবা নৌ বাণিজ্যের ইতিহাস মুসলমানদেরই হাতে লেখা। মহান আল্লাহ পাক সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার উছীলা মুবারকে বিশ্ব মুসলিমকে আবারও নৌ শক্তিতে পূর্বের সক্ষমতা, দক্ষতা এবং পরিপূর্ণতা দান করুন। আমিন!
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
আজকের নগরসভ্যতার জনক মুসলমানগণই
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
আফগানিস্তানেও উগ্রতাবাদী ওহাবী-সালাফীদের অনুপ্রবেশের অপচেষ্টা
২৮ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
ঐতিহাসিক হেজাজ রেলওয়ে” যে রেলপথকে বলা হয় ‘বিশ্বের সব মুসলমানের সম্পত্তি’
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
মুসলমানগণই আধুনিক কাগজ শিল্পের প্রতিষ্ঠাতা
১৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
ইতিহাস চর্চা ও সংরক্ষণে মুসলমানদের অবদান
১০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে যেসব পদক্ষেপ নিয়েছিলেন সুলতান আলাউদ্দিন খিলজি
০৭ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
মুসলিম সোনালী যুগের পাঠাগার
০৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
আগলাবী সালতানাতের মুসলিম নৌবহর (১)
৩১ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
কায়রোর ঐতিহাসিক আল আযহার জামে মসজিদ ও বিশ্ববিদ্যালয়
২৯ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
স্বর্ণালী যুগে মুসলমানদের বিজয় রহস্য এবং বিধর্মীদের স্বীকারোক্তি (১)
২৯ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
পারস্যের এক গভর্নরের সম্মানিত দ্বীন ইসলাম গ্রহণের ঘটনা
২৩ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
পবিত্র আযানের জন্য ২২ জন মুসলমানের শহীদ হওয়ার ঈমানদীপ্ত ঘটনা
১২ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার)