সম্মানিত খিলাফত মুবারক ক্বায়িম হওয়ার অর্থই হলো পৃথিবীটা জান্নাতে পরিণত হয়ে যাওয়া (৩)
, ০৭ জুমাদাল ঊলা শরীফ, ১৪৪৬ হিজরী সন, ১৩ সাদিস, ১৩৯২ শামসী সন , ১০ নভেম্বর, ২০২৪ খ্রি:, ২৫ কার্তিক, ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ
কিতাবে বর্ণিত রয়েছেন,
كَثُرَ الْمَالُ فِىْ زَمَنِ سَيِّدِنَا حَضْرَتْ عُثْمَانَ عَلَيْهِ السَّلَامُ حَتّٰى بِيْعَتْ جَارِيَةٌ بِوَزْنِهَا وَفَرَسٌ بِمِائَةِ اَلْفِ دِرْهَمٍ وَنَخْلَةٌ بِاَلْفِ دِرْهَمٍ
অর্থ: “সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম উনার যামানায় ধন-সম্পদের প্রাচুর্যতা এতো অধিক বৃদ্ধি পেয়েছিলো যে, দাস-দাসী বিক্রি করা হতো স্বর্ণ-রৌপ্যের ওযনে (অর্থাৎ এক দিকে দাস-দাসী অন্য দিকে স্বর্ণ-রৌপ্য), একটি ঘোড়া বিক্রি করা হতো এক লক্ষ দিরহামের বিনিময়ে এবং একটি খেজুর বৃক্ষ বিক্রি করা হতো এক হাজার দিরহামের বিনিময়ে। ” সুবহানাল্লাহ! (আল ইস্তিআব ১/৩২০, আল আওয়াছিম মিনাল ক্বাওয়াছিম ১/৭০, আর রিয়াদুন নাদ্বরাহ্ ১/২১৭, তারীখু মাদীনাতিল মুনাওওয়ারাহ্ ২/১৩৪, নিহায়াতুল আরব ১৯/৩১৭ ইত্যাদি)
হযরত আবূ হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি বর্ণনা করেন যে, “তখন সম্মানিত মুসলমান উনাদের এতো অধিক স্বচ্ছলতা ছিলো যে, উনারা পৃথিবীর সবচেয়ে দামি কাপড়, কাত্তানের কাপড় দিয়ে নাক মুবারক পরিষ্কার করতেন। ” সুবহানাল্লাহ!
এতো দামি কাপড় দিয়ে যদি নাক মুবারক পরিষ্কার করা হয়, তাহলে সম্মানিত মুসলমান উনারা কত অধিক স্বচ্ছলতা ও সুখ-শান্তির মধ্যে ছিলেন, তা চিন্তা-ফিকিরের বিষয়। সুবহানাল্লাহ!
তখন হযরত আবূ হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনিসহ আরো অনেক হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুম উনারা কান্নাকাটি করতেন যে, এতো অধিক সুখ-শান্তি! উনাদের সমস্ত বদলা কি দুনিয়াতেই দেয়া হয়ে গেলো? সুবহানাল্লাহ!
ঠিক একই অবস্থা ৮ম খলীফা হযরত উমর ইবনে আব্দুল আযীয রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার সময়ও ছিলো। সুবহানাল্লাহ! এই প্রসঙ্গে হযরত আবূ মুহম্মদ আব্দুল্লাহ ইবনে আব্দুল হাকাম মিশরী রহমতুল্লাহি আলাইহি (বিছাল শরীফ ২১৪ হিজরী শরীফ) তিনি উনার বিশ্বখ্যাত কিতাব ‘সীরাতু উমর ইবনে আব্দিল আযীয আলা মা রওয়াহু ইমাম মালিক ইবনু আনাস ওয়া আছহাবুহূ’ কিতাবের ১ম খ-ের ৬৫ পৃষ্ঠায় উল্লেখ করেন,
قَالَ حَضْرَتْ يَـحْيَـى بْنُ سَعِيْدٍ رَحْمَةُ اللهِ عَلَيْهِ بَعَثَنِـىْ حَضْرَتْ عُمَرُ بْنُ عَبْدِ الْعَزِيْزِ رَحْمَةُ اللهِ عَلَيْهِ علـٰى صَدَقَاتِ اِفْرِيْقِيَّةَ فَاقْتَضَيْتُهَا وَطَلَبْتُ فُقَرَاءَ نُعْطِيْهَا لَـهُمْ فَلَمْ نَـجِدْ بِـهَا فَقِيْرًا وَلَـمْ نَـجِدْ مَنْ يَّأْخُذُهَا مِنِّىْ قَدْ اَغْنٰـى حَضْرَتْ عُمَرُ بْنُ عَبْدِ الْعَزِيْزِ رَحْمَةُ اللهِ عَلَيْهِ اَلنَّاسَ فَاشْتَرَيْتُ بِـهَا رِقَابًا فَاَعْتَقْتُهُمْ
অর্থ: “হযরত ইয়াহ্ইয়া ইবনে সা‘ঈদ রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, আমাকে হযরত ওমর ইবনে আব্দুল আযীয রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি আফ্রিকায় পবিত্র যাকাত আদায়ের দায়িত্বে নিযুক্ত করেন। আমি পবিত্র যাকাত আদায় করে ফক্বীর-ফুক্বারা, গরীব-অস্বচ্ছল লোকদের সন্ধানে বের হলাম, যাদের মধ্যে পবিত্র যাকাত উনার এই অর্থ বিতরণ করতে পারি। কিন্তু (আশ্চর্যের বিষয়) একজন ফক্বীর বা গরীব লোকও আমরা পেলাম না এবং এমন একজন লোকেরও সাক্ষাৎ পেলাম না যিনি আমার থেকে পবিত্র যাকাত গ্রহণ করবেন।
قَدْ اَغْنٰـى حَضْرَتْ عُمَرُ بْنُ عَبْدِ الْعَزِيْزِ رَحْمَةُ اللهِ عَلَيْهِ اَلنَّاسَ فَاشْتَرَيْتُ بِـهَا رِقَابًا فَاَعْتَقْتُهُمْ
‘হযরত ওমর ইবনে আব্দুল আযীয রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি সবাইকে ধনী বানিয়ে দিয়েছিলেন। অতঃপর পবিত্র যাকাত উনার অর্থ দ্বারা আমি কিছু গোলাম ক্রয় করে তাদেরকে মুক্ত করে দেই’। ” সুবহানাল্লাহ!
তাহলে তখন সম্মানিত মুসলমান উনারা কত অধিক সুখ-শান্তিতে ছিলেন, তা ফিকিরের বিষয়। মূলত, তখন দুনিয়াটা হয়েছিলো সম্মানিত জান্নাত মুবারক উনার একখানা অংশ। সুবহানাল্লাহ! সম্মানিত দ্বীন ইসলাম ছড়িয়ে পড়েছিলেন বিশ্বময়। সমগ্র পৃথিবীর বুকে ছিলো সম্মানিত মুসলমান উনাদের একক আধিপত্য। সম্মানিত মুসলমান উনাদের নাম মুবারক শুনলে কাফির-মুশরিকদের অন্তরাত্মা কেঁপে উঠতো। কাফির-মুশরিকরা সম্মানিত মুসলমানগণ উনাদের গোলামে পরিণত হয়েছিলো। সুবহানাল্লাহ!
কিন্তু অত্যন্ত আফসোস ও দুঃখের বিষয় এই যে, মুসলমানরা সেই ‘সম্মানিত খিলাফত মুবারক’ ছেড়ে দিয়ে কাফির মুশরিকদের প্রণিত গণতন্ত্র, রাজতন্ত্র, সমাজতন্ত্র ইত্যাদি কুফরী তন্ত্র-মন্ত্র মতবাদের মধ্যে মশগূল হয়ে গেছে। যার কারণে পৃথবীর বুকে মুসলমানরা আজ লাঞ্ছিত হচ্ছে, অপমানিত হচ্ছে। সারা বিশ্বে চলছে কাফির-মুশরিকদের পূর্ণ শয়তানী আস্ফালন। তাদের নাপাক হাতে শহীদ হচ্ছেন বিশ্বের কোটি কোটি মুসলমান উনারা। ইয্যত-সম্ভ্রম নষ্ট হচ্ছে অসংখ্য মুসলমান মা-বোন উনাদের। চলছে সম্মানিত মুসলমান উনাদের উপর অবর্ণনীয় যুলুম-নির্যাতন। পৃথিবীর কোথাও সম্মানিত মুসলমান উনারা স্বাধীনভাবে সম্মানিত দ্বীন ইসলাম পালন করতে পারছেন না।
মূল কথা হলো- কাফির-মুশরিকরা সারা বিশ্ব থেকে সম্মানিত দ্বীন ইসলাম ও সম্মানিত মুসলমান উনাদের নাম-নিশানা মুবারক চির তরে মুছে দিয়ে ইবলিসী সা¤্রাজ্য ক্বায়িমের জন্য বদ্ধপরিকর। কত বড় স্পর্ধা তাদের! না‘ঊযুবিল্লাহ! এই কঠিন নাজুক অবস্থা থেকে মুক্তি পাওয়ার একটাই পথ, তার নাম হচ্ছে খিলাফত। বিশ্ববাসীর জন্য আবশ্যক হচ্ছে সেই খিলাফত মুবারক উনার জন্য কোশেশ করা।
-মুহাদ্দিছ মুহম্মদ আল আমীন।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
সাইয়্যিদুল খুলাফা, আবুল খুলাফা, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ আলাইহিস সালাম তিনি সারা পৃথিবীতে, সারা কায়িনাতে সম্মানিত খিলাফত আলা মিনহাজিন নুবুওওয়াহ্ মুবারক প্রতিষ্ঠা করবেনই করবেন ইনশাআল্লাহ
২৬ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
এক নযরে সাইয়্যিদাতুন নিসায়ি আলাল আলামীন, আফযালুন নাস ওয়ান নিসা বা’দা রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আস সাবি‘আহ্ আত্বওয়ালু ইয়াদান আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত পরিচিতি মুবারক
২৬ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম তিনি হচ্ছেন হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের পর সর্বশ্রেষ্ঠ ব্যক্তিত্ব মুবারক
২৫ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
সাইয়্যিদুল খুলাফা, আবুল খুলাফা, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ আলাইহিস সালাম তিনি সারা পৃথিবীতে, সারা কায়িনাতে সম্মানিত খিলাফত আলা মিনহাজিন নুবুওওয়াহ্ মুবারক প্রতিষ্ঠা করবেনই করবেন ইনশাআল্লাহ
২৫ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
‘উম্মী’ শব্দ নিয়ে বাতিলপন্থীদের মিথ্যাচারের চূড়ান্ত জবাব (১৮)
২৫ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
সাইয়্যিদুল খুলাফা, আবুল খুলাফা, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ আলাইহিস সালাম তিনি সারা পৃথিবীতে, সারা কায়িনাতে সম্মানিত খিলাফত আলা মিনহাজিন নুবুওওয়াহ্ মুবারক প্রতিষ্ঠা করবেনই করবেন ইনশাআল্লাহ
২২ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মাঝে ফানা সারা কায়িনাত
২২ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি শুধু মহান আল্লাহ পাক নন; এ ছাড়া সকল মর্যাদা ও মাক্বাম উনার অধিকারী
২২ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
অনুসরণীয় চার মাযহাব উনাদের ফতওয়া মুতাবিক সাইয়্যিদুল আম্বিয়া ওয়াল মুরসালীন, রহমাতুল্লিল আলামীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে নিয়ে ব্যঙ্গচিত্র প্রকাশকারী, কটাক্ষকারী, অবমাননাকারীদেরকে শরঈ শাস্তি প্রদান করা ওয়াজিব
২২ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
সাইয়্যিদুল খুলাফা, আবুল খুলাফা, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ আলাইহিস সালাম তিনি সারা পৃথিবীতে, সারা কায়িনাতে সম্মানিত খিলাফত আলা মিনহাজিন নুবুওওয়াহ্ মুবারক প্রতিষ্ঠা করবেনই করবেন ইনশাআল্লাহ
২১ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মাঝে ফানা সারা কায়িনাত
২১ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
সাইয়্যিদুল খুলাফা, আবুল খুলাফা, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ আলাইহিস সালাম তিনি সারা পৃথিবীতে, সারা কায়িনাতে সম্মানিত খিলাফত আলা মিনহাজিন নুবুওওয়াহ্ মুবারক প্রতিষ্ঠা করবেনই করবেন ইনশাআল্লাহ
২০ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার)