সম্মানিত খিলাফত মুবারক ক্বায়িম হওয়ার অর্থই হলো পৃথিবীটা জান্নাতে পরিণত হয়ে যাওয়া (২)
, ০৬ জুমাদাল ঊলা শরীফ, ১৪৪৬ হিজরী সন, ১২ সাদিস, ১৩৯২ শামসী সন , ০৯ নভেম্বর, ২০২৪ খ্রি:, ২৪ কার্তিক, ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ
হযরত কছাব রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, “হযরত উমর ইবনে আব্দুল আযীয রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার সম্মানিত খিলাফত মুবারককালে বাঘ ও ছাগল এক সাথে চরতে দেখে বললাম- ‘সুবহানাল্লাহ! বাঘ-বকরি একত্রে থেকেও কোনো ক্ষতি হচ্ছে না। ’ এই কথা শুনে রাখাল বললো- ‘মাথা বিশুদ্ধ হলে শরীরের কোনো ক্ষতি হয় না’। ” সুবহানাল্লাহ! (তারীখুল খুলাফা ২০১ নং পৃষ্ঠা)
হযরত মালিক ইবনে দীনার রহমতুল্লহি আলাইহি তিনি বলেন, “হযরত উমর ইবনে আব্দুল আযীয রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি খলীফা মনোনীত হওয়ার পর জনৈক রাখাল বিস্ময় প্রকাশ করে বলে, এমন কোন্ ব্যক্তিত্ব মুবারক খলীফা মনোনীত হয়েছেন যে, বাঘ আমার ছাগলের ক্ষতি করে না! সুবহানাল্লাহ! (তারীখুল খুলাফা ২০১ নং পৃষ্ঠা)
অর্থাৎ হযরত উমর ইবনে আব্দুল আযীয রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার সম্মানিত খিলাফত মুবারককালে সিংহ, বাঘ, ছাগল, ভেড়া, মেষ এবং অন্যান্য হিং¯্রপ্রাণী একই চারণভূমিতে অবস্থান করতো। সিংহ, বাঘ এবং হিং¯্রপ্রাণীগুলো ছাগল, ভেড়া, মেষকে কখনো আক্রমণ করতো না। সুবহানাল্লাহ!
যদি বনের প্রাণীদের মাঝে এরূপ সুখ-শান্তি, ইতমিনান ও ইনছাফ বিরাজ করে, তাহলে মানুষের মাঝে কতটুকু সুখ-শান্তি, ইতমিনান, সুশৃঙ্খলতা ও সম্মানিত ইনছাফ মুবারক প্রতিষ্ঠিত ছিলো, সেটা চিন্তা-ফিকিরের বিষয়। সুবহানাল্লাহ!
তাহলে সম্মানিত খিলাফত মুবারক মানব জাতির জন্য, গোটা কায়িনাতবাসী সকলের জন্য কতটুকু সুখ-শান্তি ও ইতমিনানের কারণ, তা অত্যন্ত সহজেই অনুমেয়। সুবহানাল্লাহ!
সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত খিলাফত মুবারককালে একবার ভূমিকম্প হচ্ছিলো, যমীন কাঁপছিলো। তখন সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম তিনি যমীনের উপর ৩ বার সজোরে বেত্রাঘাত করে বললেন, ‘হে যমীন! তুমি স্থির হও। তুমি কাপছো কেন, আমি কি তোমার উপর ইনছাফ করিনি?’ তখন সাথে সাথে ভূমিকম্প বন্ধ হয়ে যায়। সুবহানাল্লাহ!
তাহলে এখান থেকে স্পষ্ট হয়ে যায়, সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম তিনি কতটুকু ইনছাফ মুবারক প্রতিষ্ঠা করেছেন যে, বনের পশু-পাখি; এমনকি যমীনসহ যমীনের উপর যা কিছু ছিলো সকলেই উনার সম্মানিত নির্দেশ মুবারক অনুযায়ী চলতো। সুবহানাল্লাহ! এ সম্পর্কে কিতাবে বর্ণিত রয়েছেন, সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম তিনি ফেটে চৌচির হয়ে যাওয়া মিশরের শুষ্ক নীলনদের প্রতি ফরমান লিখে পাঠিয়েছিলেন। যেখানে লেখা ছিলোÑ
بِسْمِ اللهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِيْمِ
مِنْ عَبْدِ اللهِ عُمَرَ اَمِيْرِ الْمُؤْمِنِيْنَ اِلـٰى نِيْلِ اَهْلِ مِصْرَ اَمَّا بَعْدُ فَاِنْ كُنْتَ اِنَّـمَا تَـجْرِىْ مِنْ قِبَلِكَ وَمِنْ اَمْرِكَ فَلَا تَـجْرِ فَلَا حَاجَةَ لَنَا فِيْكَ وَاِنْ كُنْتَ اِنَّـمَا تَـجْرِىْ بِاَمْرِ اللهِ الْوَاحِدِ الْقَهَّارِ وَهُوَ الَّذِىْ يُـجْرِيْكَ فَنَسْاَلُ اللهَ تَعَالٰى اَنْ يُّـجْرِيَكَ
বিস্মিল্লাহির রহমানির রহীম
“এই চিঠি মহান আল্লাহ পাক উনার বান্দা, আমীরুল মু’মিনীন হযরত উমর ইবনে খাত্তাব আলাইহিস সালাম উনার পক্ষ হতে মিশরের নীলনদের প্রতি। হে নীলনদ! তুমি যদি নিজের ইচ্ছায় প্রবাহিত হয়ে থাকো, তাহলে তোমার পানি আমাদের কোনো দরকার নেই। আর যদি তুমি ওয়াহিদুল ক্বহ্হার মহান আল্লাহ পাক উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নির্দেশ মুবারক-এ প্রবাহিত হয়ে থাকো, তাহলে মহান আল্লাহ পাক উনার নিকট আমরা আরযু করছি, তিনি যেন তোমাকে প্রবাহিত করান। ”
চিঠিটি ছিলো কাগজের মতো পাতলা চামড়ার মধ্যে লিখা। চিঠিটি নীলনদের উপর নিক্ষেপ করার পর এটি হেলতে দুলতে আস্তে আস্তে নীলনদের ফেটে চৌচির হয়ে যাওয়া শুষ্ক যমীন স্পর্শ করলো। মুখতালিফ বর্ণনা- ইতিহাস সাক্ষী রয়েছে, চিঠিখানা নীলনদের যমীন স্পর্শ করার সাথে সাথে একটি বিকট আওয়ায হয়ে এক লাফে ১৬ হাত পানি হয়ে যায়। সুবহানাল্লাহ!
বিশেষ করে সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার তৃতীয় খলীফা, খলীফাতুল মুসলিমীন, আমীরুল মু’মিনীন সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত খিলাফত মুবারককালে সম্মানিত মুসলমান উনারা এতোই অধিক সুখ-শান্তি, আরাম-আয়েশ, স্বচ্ছলতা ও প্রাচুর্যতার মধ্যে ছিলেন যে, তখন পবিত্র যাকাত গ্রহণ করার মত কোনো লোক খুঁজে পাওয়া যেতো না। অর্থাৎ সবাই এতো অধিক ধনী ছিলেন যে, সবাই পবিত্র যাকাত প্রদান করতেন। পবিত্র যাকাত গ্রহণ করার মতো কেউ ছিলেন না। সুবহানাল্লাহ!
-মুহাদ্দিছ মুহম্মদ আল আমীন।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
সাইয়্যিদুল খুলাফা, আবুল খুলাফা, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মামদূহ মুুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম তিনিই হচ্ছেন মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত মহান খলীফা হযরত আস সাফফাহ্ আলাইহিস সালাম (২)
২৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
এক নযরে রবীবাতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মী বা’দা উম্মী আছ ছানিয়াহ্ আলাইহাস সালাম উনার মহাপবিত্র ও মহাপবিত্র পরিচিতি মুবারক
২৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
‘উম্মী’ শব্দ নিয়ে বাতিলপন্থীদের মিথ্যাচারের চূড়ান্ত জবাব (৮)
২৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার শান মুবারক সম্পর্কিত সংশ্লিষ্ট কতিপয় আয়াত শরীফ (২১)
২৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
সাইয়্যিদুল খুলাফা, আবুল খুলাফা, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মামদূহ মুুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম তিনিই হচ্ছেন মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত মহান খলীফা হযরত আস সাফফাহ্ আলাইহিস সালাম (১)
২৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত ‘আন নাবিয়্যিল উম্মিয়্যি’ উনার হাক্বীক্বী অর্থ ও তাফসীর মুবারক এবং এ বিষয়ে বদ আক্বীদাহধারীদের কুফরীমূলক বক্তব্যের দলীলভিত্তিক খন্ডনমূলক জবাব (৮)
২৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
‘উম্মী’ শব্দ নিয়ে বাতিলপন্থীদের মিথ্যাচারের চূড়ান্ত জবাব (৭)
২৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার শান মুবারক সম্পর্কিত সংশ্লিষ্ট কতিপয় আয়াত শরীফ (২০)
২৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত মহাসম্মানিত ১২ খলীফা আলাইহিমুস সালাম (৪)
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত ‘আন নাবিয়্যিল উম্মিয়্যি’ উনার হাক্বীক্বী অর্থ ও তাফসীর মুবারক এবং এ বিষয়ে বদ আক্বীদাহধারীদের কুফরীমূলক বক্তব্যের দলীলভিত্তিক খন্ডনমূলক জবাব (৭)
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
‘উম্মী’ শব্দ নিয়ে বাতিলপন্থীদের মিথ্যাচারের চূড়ান্ত জবাব (৬)
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার শান মুবারক সম্পর্কিত সংশ্লিষ্ট কতিপয় আয়াত শরীফ (১৯)
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার)