সম্মানিত খিলাফত মুবারক ক্বায়িম হওয়ার অর্থই হলো পৃথিবীটা জান্নাতে পরিণত হয়ে যাওয়া (১)
, ০৫ জুমাদাল ঊলা শরীফ, ১৪৪৬ হিজরী সন, ১১ সাদিস, ১৩৯২ শামসী সন , ০৮ নভেম্বর, ২০২৪ খ্রি:, ২৩ কার্তিক, ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ
সম্মানিত খিলাফত মুবারক কায়িম হওয়ার অর্থই হলো পৃথিবীটা জান্নাতে পরিণত হয়ে যাওয়া। সুবহানাল্লাহ! জগতবাসী এই বিষয়টি হাক্বীক্বীভাবে উপলব্ধি করেছে হযরত খুলাফায়ে রাশেদীন আলাইহিমুস সালাম উনাদের সম্মানিত খিলাফত মুবারককালে। সুবহানাল্লাহ! খলীফাতুল মুসলিমীন, আমীরুল মু’মিনীন, খলীফায়ে ছানী সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “আমার সম্মানিত খিলাফত মুবারককালে সুদূর ফুরাতের তীরে যদি একটি কুকুরও না খেয়ে মারা যায়, তাহলে এজন্য আমি হযরত উমর ইবনুল খত্তাব আলাইহিস সালামকে কিয়ামতের দিন মহান আল্লাহ পাক উনার নিকট জবাবদিহি করতে হবে। ” সুবহানাল্লাহ!
অপর বর্ণনায় রয়েছেন,
لَوْ مَاتَتْ سَخْلَةٌ عَلٰى شَاطِئِ الْفُرَاتِ ضَيَاعًا لَخَشِيْتُ اَنْ يَّسْاَلَنِىَ اللهُ عَنْهَا
অর্থ: “সুদূর ফুরাতের তীরে যদি একটি মেষশাবকও অবহেলায়, অযতেœ বা না খেয়ে মারা যায়, তাহলে আমি ভয় করি যে, অবশ্যই মহান আল্লাহ পাক তিনি এই বিষয়ে আমাকে জিজ্ঞাসাবাদ করবেন। ” সুবহানাল্লাহ! (বাইহাক্বী, আনসাবুল আশরাফ, মুছান্নাফ ইবনে আবী শায়বাহ্ ইত্যাদি)
এরূপ আরো অনেক বর্ণনা রয়েছেন।
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মদীনা শরীফ থেকে ফুরাতের তীর অনেক দূরে অবস্থিত। এখানে সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম তিনি স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দিয়েছেন যে, সুদূর ফুরাতের তীরে যদি একটি কুকুরও না খেয়ে মারা যায়, তাহলে এজন্য সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম উনাকে কিয়ামতের দিন মহান আল্লাহ পাক উনার নিকট জবাবদিহি করতে হবে। এর মানে বুঝা গেলো যে, খলীফাতুল মুসলিমীন, আমীরুল মু’মিনীন সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত খিলাফত মুবারককালে মানুষ এবং জিন তো পূর্ণ নিরাপত্তা, পূর্ণ শান্তি, পূর্ণ ইতমিনান পেয়েছিলোই; শুধু তাই নয়, এমনকি পশু-পাখীরাও পেয়েছে পূর্ণ নিরাপত্তা, পূর্ণ শান্তি, পূর্ণ ইতমিনান। উনার সম্মানিত খিলাফত মুবারককালে মানুষ তো দূরের কথা কোনো পশু-পাখিও না খেয়ে মারা যায়নি। সুবহানাল্লাহ!
তাহলে খলীফাতুল মুসলিমীন, আমীরুল মু’মিনীন সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত খিলাফত মুবারককালে মানুষ কতটুকু সুখ-শান্তি, সমৃদ্ধি, ইতমিনান ও সম্মানিত ইনছাফ মুবারক উনার মধ্যে ছিলেন, তা এখান থেকেই অত্যন্ত সুস্পষ্টভাবে ফুটে উঠে। সুবহানাল্লাহ!
খলীফাতুল মুসলিমীন, আমীরুল মু’মিনীন সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত খিলাফত মুবারককালে বাঘ ও মহিষ একই ঘাটে এক সাথে পানি পান করতো। তাদের মাঝে কোনো প্রকার বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হতো না। বাঘ মহিষকে আক্রমণও করতো না। সুবহানাল্লাহ!
এরূপ অবস্থা ৮ম খলীফা হযরত উমর ইবনে আব্দুল আযীয রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার সময়ও ছিলো। হযরত মূসা ইবনে আয়মন রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন,
كَانَتِ الْاَسَدُ وَالْغَنَمُ وَالْوَحْشُ تُرْعٰى فِىْ خِلَافَةِ حَضْرَتْ عُمَرَ بْنِ عَبْدِ الْعَزِيْزِ رَحْمَةُ اللهِ عَلَيْهِ فِىْ مَوْضَعٍ وَاحِدٍ فَعَرَضَ ذَاتَ يَوْمٍ لِشَاةٍ مِنْهَا ذِئْبٌ فَقُلْتُ اِنَّا لِلّٰهِ مَا اَرَى الرَّجُلَ الصَّالِحَ اِلَّا قَدْ هَلَكَ قَالَ فَحَسَبْنَاهُ فَوَجَدْنَاهُ قَدْ هَلَكَ فِىْ تِلْكَ اللَّيْلَةِ
অর্থ: “হযরত উমর ইবনে আব্দুল আযীয রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার সম্মানিত খিলাফত মুবারককালে সিংহ, ছাগল, ভেড়া, মেষ এবং অন্যান্য হিং¯্রপ্রাণী একই চারণভূমিতে অবস্থান করতো। সুবহানাল্লাহ! একদিন একটি বাঘ একটি মেষের পিছু নিলো। তখন আমি ‘ইন্না লিল্লাহ্’ পড়ে ভাবলাম, আমার তো মনে হয়- মহান আল্লাহ পাক উনার সেই নেক বান্দা অর্থাৎ হযরত উমর ইবনে আব্দুল আযীয রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি সম্মানিত বিছাল শরীফ গ্রহণ করেছেন। তিনি বলেন, আমরা দিন গণনা করে হিসাব করে দেখলাম, হযরত উমর ইবনে আব্দুল আযীয রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি সেই রাতেই সম্মানিত বিছাল শরীফ গ্রহণ করেছেন। ” (মুখতাছারু তারীখে দিমাশক্ব ৬/৮২, আল বিদায়াহ্ ওয়ান নিহায়াহ্ ৯/২২৮)
অপর বর্ণনায় রয়েছেন,
كُنَّا نَرْعَى الشَّاءَ بِكِرْمَانَ فِىْ خِلَافَةِ حَضْرَتْ عُمَرَ بْنِ عَبْدِ الْعَزِيْزِ رَحْمَةُ اللهِ عَلَيْهِ فَكَانَتِ الشَّاةُ وَالذِّئْبُ تُرْعٰى فِىْ مَكَانٍ وَاحِدٍ فَبَيْنَا نَحْنُ ذَاتَ لَيْلَةٍ اِذْ عَرَضَ الذِّئْبُ لِلشَّاةِ قُلْتُ مَا نَرَى الرَّجُلَ الصَّالِحَ اِلَّا قَدْ هَلَكَ فَحَسَبُوْهُ فَوَجَدُوْهُ مَاتَ تِلْكَ اللَّيْلَةَ
অর্থ: “হযরত উমর ইবনে আব্দুল আযীয রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার সম্মানিত খিলাফত মুবারককালে আমরা কিরমানে ছাগল চরাতাম। সেই সময় বাঘ ও বকরী একত্রে থাকতো। কিন্তু বাঘ বকরীর উপর আক্রমন করতো না। সুবহানাল্লাহ! এক রাতে বকরীর উপর বাঘকে হামলা করতে দেখে বললাম, মনে হয় আজ সেই ন্যায়পরায়ণ ব্যক্তিত্ব মুবারক তিনি সম্মানিত বিছাল শরীফ গ্রহণ করেছেন। অতঃপর উনারা দিন গণনা করে হিসাব করে দেখলেন, হযরত উমর ইবনে আব্দুল আযীয রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি সেই রাতেই সম্মানিত বিছাল শরীফ গ্রহণ করেছেন। ” সুবহানাল্লাহ! (তারীখুল খুলাফা ২০১ নং পৃষ্ঠা)
-মুহাদ্দিছ মুহম্মদ আল আমীন।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
আলোচনায় বা লেখনীতে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ইসমে যাত বা নাম মুবারক বারবার বলা ও লেখা সম্পূর্ণ আদবের খিলাফ (১)
১৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
কাফির মুশরিকদের বিরুদ্ধে যখন আমি বদদো‘আ করি, প্রতিদিন আমি দেখতে পাই যে, তখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনি তো আছেনই, হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনারাও খুব খুশি মুবারক প্রকাশ করেন। উনারা বলেন যে, ‘এদের বিরুদ্ধে ধ্বংসের জন্য আরো দো‘আ করা হোক’
১২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানার্থে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ পালন করা মহান আল্লাহ পাক উনার দায়িমী শান মুবারক (২)
১২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার শান মুবারক সম্পর্কিত সংশ্লিষ্ট কতিপয় আয়াত শরীফ (৯)
১২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সম্মানিত খিলাফত মুবারক ক্বায়িম হওয়ার অর্থই হলো পৃথিবীটা জান্নাতে পরিণত হয়ে যাওয়া (৪)
১১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানার্থে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ পালন করা মহান আল্লাহ পাক উনার দায়িমী শান মুবারক (১)
১১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার শান মুবারক সম্পর্কিত সংশ্লিষ্ট কতিপয় আয়াত শরীফ (৮)
১১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
সম্মানিত খিলাফত মুবারক ক্বায়িম হওয়ার অর্থই হলো পৃথিবীটা জান্নাতে পরিণত হয়ে যাওয়া (৩)
১০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুদ দারাজাত মুবারক উনার পরশে ঝর্ণা প্রবাহিত হওয়া
১০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুদ দারাজাত মুবারক উনার পরশে পাথর নরম হয়ে যাওয়া
১০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার শান মুবারক সম্পর্কিত সংশ্লিষ্ট কতিপয় আয়াত শরীফ (৭)
১০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
সম্মানিত খিলাফত মুবারক ক্বায়িম হওয়ার অর্থই হলো পৃথিবীটা জান্নাতে পরিণত হয়ে যাওয়া (২)
০৯ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার)