সম্মানিত খিলাফত আলা মিনহাজিন নুবুওওয়াহ্ মুবারক ক্বায়িম হওয়ার অর্থই হলো দুনিয়ার যমীন ইনছাফ দ্বারা পরিপূর্ণ হয়ে যাওয়া
, ০৩রা জুমাদাল ঊলা শরীফ, ১৪৪৬ হিজরী সন, ০৯ সাদিস, ১৩৯২ শামসী সন , ০৬ নভেম্বর, ২০২৪ খ্রি:, ২১ কার্তিক, ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে পরিপূর্ণ অনুসরণ মুবারক করেই হযরত খুলাফায়ে রাশিদীন আলাইহিমুস সালাম উনারা সম্মানিত খিলাফত আলা মিনহাজিন নুবুওওয়াহ্ মুবারক পরিচালনা করেছেন। সুবহানাল্লাহ! যার কারণে তখন পৃথিবীবাসী প্রকৃত সম্মানিত ইনছাফ বা ন্যায়বিচার লাভ করতে পেরেছিলো। সুবহানাল্লাহ! যেমন-
(২)
সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার চতুর্থ খালীফা, ইমামুল আউওয়াল সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম তিনি তখন সম্মানিত খিলাফত মুবারক উনার মসনদে সমাসীন। সিফ্ফীনের জিহাদ মুবারক-এ উনার বর্মখানা হারিয়ে যায়। একদা তিনি কুফার বাজারে এক ইহুদীর নিকট উনার সেই হারানো বর্মখানা দেখতে পেলেন। তিনি ইহুদীকে বললেন যে, ‘এটা আমার বর্ম। কিছুদিন আগে জিহাদে হারিয়েছি। ’ ইহুদী বললো যে, ‘এটা তার বর্ম। ’
ইমামুল আউওয়াল সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম তিনি ইচ্ছা করলে বর্মখানা ইহুদীর কাছ থেকে জোর করে নিতে পারতেন। কারণ তিনি নিশ্চিত ছিলেন যে, এটা উনারই বর্ম। কিন্তু তিনি তা করেননি। তিনি তরতীব অনুযায়ী ইহুদীর বিরুদ্ধে কাজী ছাহেবের নিকট বিচার প্রার্থী হন। কাজী ছাহেবও ছিলেন অত্যন্ত ন্যায় বিচারক। তিনি ইমামুল আউওয়াল সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম উনার দাবীর সমর্থনে প্রমাণ চাইলেন। ইমামুল আউওয়াল সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম উনার নিকট তিনি জানতে চাইলেন ‘আপনার কাছে কোনো প্রমাণ আছে কি, এটা আপনার বর্ম?’ ইমামুল আউওয়াল সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম তিনি বললেন ‘আমার দুই ছেলে সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছানী মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি এবং সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছালিছ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি অর্থাৎ উনারা সাক্ষ্য দিবেন যে, এটা আমার বর্ম’। কাজী ছাহেব বললেন যে, ‘না; তা হবে না। ছেলের সাক্ষ্য বাবার পক্ষে গ্রহণযোগ্য নয়’। এবার কাজী ছাহেব ফিরলেন ইহুদীর দিকে। জিজ্ঞাস করলেন ‘তোমার কি কোনো সাক্ষী আছে নাকি তুমি ক্বসম করে বলবে এটা তোমার বর্ম?’ ইহুদী জবাব দিল ‘আমি ক্বসম করে বলছি এটা আমার বর্ম’। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার একখানা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ- “কেউ কোনো অভিযোগ নিয়ে আসলে তাকে সাথে প্রমাণও আনতে হবে, আর যার বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হবে সে হয় প্রমাণ আনবে অথবা ক্বসম করে বলবে। ”
এই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার ভিত্তিতে কাজী ছাহেব রায় দিলেন। যেহেতু ইমামুল আউওয়াল সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম তিনি কোনো প্রমাণ পেশ করতে পারেননি আর ইহুদী যেহেতু ক্বসম করে বলেছে এটা তার। তাই সম্মানিত শরীয়ত উনার ফায়ছালা অনুযায়ী ইহুদী সেই বর্মটা পাচ্ছে’।
ইমামুল আউওয়াল সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম তিনি চুপচাপ রায় মেনে নিলেন। বললেন ‘ঠিক আছে’। আর এদিকে ইহুদী ব্যক্তি অবাক! সাথে সাথে সে বলে উঠলো-
اَشْهَدُ اَنْ لَّآ اِلٰهَ اِلَّا اللهُ وَاَشْهَدُ اَنَّ مُحَمَّدًا عَبْدُهٗ وَرَسُوْلُهٗ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ
‘আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, মহান আল্লাহ পাক তিনি ব্যতীত কোনো মা’বূদ নেই আরো সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, নিশ্চয়ই নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মহান আল্লাহ পাক উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব মাহবূব এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম’।
যেই সম্মানিত দ্বীন ইসলাম এরূপ সততার সাথে রায় দেন, নিশ্চয়ই তা সত্য দ্বীন! কাজী ছাহেব! আসলে সম্মানিত খলীফা তিনিই সত্য কথা বলছিলেন, এটা উনারই বর্ম। জিহাদের ময়দান থেকে এটা আমি কুড়িয়ে পেয়েছিলাম। এটা উনারই পাওয়া উচিত’। ইহুদীর কথা শুনে ইমামুল আউওয়াল সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম তিনি মুচকি হাসি মুবারক দিলেন। তিনি বললেন, ‘আপনি যেহেতু এখন মুসলমান হয়ে গেছেন, কাজেই বর্মের আমার আর দরকার নেই। এটা আমি আপনাকে হাদিয়া করলাম। সুবহানাল্লাহ!
-মুহাদ্দিছ মুহম্মদ মুঈনুদ্দীন।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ঝুটা মুবারক খাওয়ার ফলে বরকত মুবারক লাভ
০৬ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুল বারাকাত মুবারক উনার ফলে কূপের পানি সবচেয়ে অধিক সুপেয় ও সুমিষ্ট হয়ে যাওয়া
০৬ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বগল মুবারক উনার শুভ্রতা মুবারক
০৬ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার শান মুবারক সম্পর্কিত সংশ্লিষ্ট কতিপয় আয়াত শরীফ (৩)
০৬ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
সম্মানিত খিলাফত আলা মিনহাজিন নুবুওওয়াহ্ মুবারক ক্বায়িম হওয়ার অর্থই হলো দুনিয়ার যমীন ইনছাফ দ্বারা পরিপূর্ণ হয়ে যাওয়া
০৫ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কুলি মুবারক করা পানি কূপে পতিত হওয়ার কারণে কুপ থেকে মেশকের চেয়ে অধিক সুঘ্রাণ ছড়িয়ে পড়া
০৫ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুন আলা নূর মুবারক উনার মাঝে দায়িমীভাবে নূর মুবারক চমকানো
০৫ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাসি মুবারককালে পাশ্ববর্তী দেয়ালসমূহ আলোকিত হয়ে যাওয়া
০৫ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বুলন্দী শান মুবারক সম্পর্কিত সংশ্লিষ্ট কতিপয় আয়াত শরীফ (২)
০৫ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কথা মুবারক বলার সময় নূর মুবারক বিচ্ছুরিত হওয়া
০৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুত ত্বীব মুবারক থেকে নূর মুবারক সৃষ্টি হওয়া
০৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বুলন্দী শান মুবারক সম্পর্কিত সংশ্লিষ্ট কতিপয় আয়াত শরীফ (১)
০৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার)