সন্তানসম্ভবা মহিলাদের প্রচুর পরিমানে খেজুর বা খুরমা খাওয়া প্রয়োজন
, ২১ যিলক্বদ শরীফ, ১৪৪৪ হিজরী সন, ১২ আউওয়াল, ১৩৯১ শামসী সন , ১১ জুন, ২০২৩ খ্রি:, ২৯ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) মহিলাদের পাতা
খেজুর একটি মিষ্টি জাতীয় ফল। যা মরুভূমি অঞ্চলে ব্যাপকভাবে চাষ করা হয়। বিশেষভাবে পবিত্র মদীনা শরীফ খেজুরের জন্য বিখ্যাত। পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে, “সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছাহ ছিদ্দীক্বাহ আলাইহাস সালাম উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “যে ঘরে খেজুর নেই, সেই ঘরের অধিবাসীগণ ক্ষুধার্ত অর্থাৎ সেই ঘরে যেন কোন খাবারই নেই। ” (আবূ দাউদ শরীফ: হাদীছ শরীফ নং ৩৮৩১)
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি প্রতিদিন খেজুর খেতেন। এর মাধ্যমে আমরা বুঝতে পারি যে, আমাদেরও প্রতিদিন খেজুর খাওয়া প্রয়োজন। এটা অত্যন্ত উপকারী ও পুষ্টিকর। খেজুরকে শুকানো হলে শুষ্ক হয়ে যায়, একে খুরমা খেজুর বলে। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি গর্ভধারণকারিণী মায়েদের খেজুর খাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। এ প্রসঙ্গে পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে, সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুল আউওয়াল কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম উনার থেকে বর্ণিত, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “তোমাদের সন্তান সম্ভাবা আহলিয়াদেরকে তাজা খেজুর খাওয়াও, যদি তাজা খেজুর না পাওয়া যায় তাহলে অন্তত খুরমা খেজুর যেন খেতে দেয়া হয়। জেনে রেখো, মহান আল্লাহ পাক উনার নিকট সেই বৃক্ষের চেয়ে উত্তম কোন বৃক্ষ নেই, যে বৃক্ষের নীচে হযরত উম্মু রূহিল্লাহ আলাইহাস সালাম তিনি অবতরণ করেছিলেন। ” (আবূ ইয়ালা শরীফ ১ম খন্ড ৩৫৩ পৃষ্ঠা: হাদীছ শরীফ নং- ৪৫৫; তাফসীরে ইবনে আবী হাতিম; সূরা মারইয়াম শরীফ)
অর্থাৎ সেই বৃক্ষ হচ্ছে খেজুর বৃক্ষ। মূলত খেজুর মায়ের বুকের দুধের পুষ্টিগুণ আরও বাড়িয়ে দেয় এবং শিশুর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। অন্তঃসত্ত্বা নারীর সন্তান জন্মের সময় জরায়ুর গোশত পেশীর দ্রুত সংকোচন প্রসারণ ঘটিয়ে, সন্তান ভূমিষ্ঠ হতে সাহায্য করে এবং প্রসব পরবর্তী কোষ্ঠকাঠিন্য ও রক্তক্ষরণ কমিয়ে দেয়। সুবহানাল্লাহ!
এছাড়াও খেজুরে রয়েছে আরো অনেক উপকারিতা। যেমন, খেজুরে খাদ্যশক্তি থাকায় শারীরিক দূর্বলতা দূর হয়, স্নায়ুবিক শক্তি বৃদ্ধি করে, খেজুরে অনেক গ্লুকোজ থাকায় গ্লুকোজের ঘাটতি পূরণ হয়, রক্ত উৎপাদনকারী, হজম শক্তি বর্ধক, যকৃৎ ও পাকস্থলীর শক্তিবর্ধক, রুচি বাড়ায়, ত্বক ভালো রাখে, আঁশ কোলেষ্টেরল কমাতে সাহায্যকারী, পক্ষাঘাত এবং সব ধরনের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ অবশকারী রোগের জন্য উপকারী, ফুসফুসের সুরক্ষার পাশাপাশি মুখগহ্বরের ক্যান্সার রোধ করে, গলা ব্যথা, সর্দি ও যেকোন জ্বরে খেজুর খুবই উপকারী। সুবহানাল্লাহ!
মহান আল্লাহ পাক তিনি ও উনার হাবীব নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনারা বান্দা-বান্দীদেরকে সমস্ত উপকারী জিনিসগুলো সুন্নতী খাবার হিসেবে হাদিয়া মুবারক করেছেন। সুবহানাল্লাহ! মুসলমান হিসেবে আমাদের দায়িত্ব-কর্তব্য হচ্ছে সুন্নতী খাবার সম্পর্কে জেনে সুন্নতী খাবার গ্রহণ করা। তাহলে আমরা অবশ্যই জাহেরী ও বাতেনী উভয়দিক থেকেই সুস্থতা লাভ করবো ইনশাআল্লাহ!
মহান আল্লাহ পাক তিনি যেন আমাদের সকলকে সুন্নতী খাবার গ্রহণ করার ও প্রতিদিন খেজুর খাওয়ার তাওফীক্ব দান করেন। আমীন!
-আহমদ ফাতেমা আক্তার।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
কাফের বিশ্বে নারীরা শুধু কি এখন নির্যাতনের শিকার হচ্ছে?
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
একজন দ্বীনদার পরহেযগার আল্লাহওয়ালী মহিলা উনার পর্দা পালনের বেমেছাল দৃষ্টান্ত
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
প্রসঙ্গ মহিলা জামাত নাজায়িজ
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
পিতা-মাতার প্রতি সন্তানের দায়িত্ব-কর্তব্য
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
শৈশবকাল থেকেই সন্তানকে দ্বীনদার হওয়ার শিক্ষা দান করতে হবে
২০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
সম্মানিতা মহিলা আউলিয়া-ই কিরাম উনাদের পরিচিতি
১৯ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
স্বচক্ষে দেখা কিছু কথা
১৯ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
পারিবারিক তা’লীমের গুরুত্ব ও তারতীব
১৮ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
সুন্নতী খাবার সম্পর্কিত হাদীছ শরীফ : মেথি
১৮ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
খাবার বিষয়ে মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন
১৮ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
জন্মের প্রথম মাস
১৭ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের অনুসরণে মু’মীনদের জীবন গড়ে তোলা দায়িত্ব-কর্তব্য
১৭ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার)