সন্তানের প্রতি মা-বাবার হক্ব:
শৈশবকাল থেকেই সন্তানকে ব্যক্তিত্ব বা আত্মসম্মানবোধ সম্পন্ন হওয়ার শিক্ষা দান করতে হবে
, ৩০ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০:০০ এএম ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) মহিলাদের পাতা
সৃষ্টির শ্রেষ্ঠ জীব, আশরাফুল মাখলূক্বাত মানুষ। মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “নিশ্চয়ই আমি আদম সন্তানকে সম্মানিত, মর্যাদাবান করেছি। ” (পবিত্র সূরা বানী ইসরাঈল শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ৭০)
তবে মানুষদের মাঝে কতক আছে যারা সৃষ্টির সর্বাপেক্ষা নিকৃষ্ট। মহান আল্লাহ পাক তিনি ইশাদ মুবারক করেন, “ওরা চতুষ্পদ জন্তুর মত। বরং চতুষ্পদ জন্তুর থেকেও নিকৃষ্ট। ” (পবিত্র সূরা আ’রাফ শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ১৭৯)
যারা মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার রসূল, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আর উলিল আমর তথা হযরত আউলিয়ায়ে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনাদের ইত্বায়াত তথা অনুসরণ-অনুকরণকারী উনারাই হচ্ছেন সৃষ্টির শ্রেষ্ঠজীব, আশরাফুল মাখলূক্বাত। উনারাই সমস্ত মর্যাদা-মর্তবা, ইজ্জত সম্মানের অধিকারী।
মহান আল্লাহ পাক তিনি উনাদের প্রসঙ্গে ইরশাদ মুবারক করেন, “সমস্ত ইজ্জত-সম্মানের অধিকারী হচ্ছেন মহান আল্লাহ পাক তিনি এবং উনার রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি। আর হচ্ছেন মু’মিন-মু’মিনাগণ উনারা। কিন্তু মুনাফিকরা এ ব্যাপারে অজ্ঞ, অনবহিত। ” (পবিত্র সূরা মুনাফিকূন: পবিত্র আয়াত শরীফ ৮)
মু’মিন-মু’মিনাগণ উনাদের এই নিয়ামত প্রাপ্তির শুকরিয়া আদায়কল্পে নিয়ামতের বর্ণনা দেয়া কিংবা তার প্রকাশ ঘটানো অহঙ্কার নয়। বরং তা শোকরগোজারী বা কৃতজ্ঞতার অন্তর্ভুক্ত। যে জাতি নিজের অতীত ইতিহাস জানে না, সে জাতি কখনোই কামিয়াবী বা সফলতা লাভ করতে পারে না। আর তারাই কাফির-মুশরিক, বেদ্বীন-বদদ্বীনদের গোলামী করে এবং তাদের মতাদর্শ ও কার্যকলাপ অনুসরণ করে নিজেদেরকে জাহান্নামের ইন্ধন বানায়।
কাজেই, প্রত্যেক মাতা-পিতার দায়িত্ব-কর্তব্য হচ্ছে, নিজের সন্তানকে শিশুকাল থেকে ব্যক্তিত্বসম্পন্ন করে গড়ে তোলা, আত্ম সম্মান বোধ জাগ্রত করা। হীনম্মন্যতা মনুষত্বের খিলাফ। যারা হীনম্মন্যতায় ভোগে তারা কখনো ব্যক্তিত্বসম্পন্ন হতে পারে না।
মহান আল্লাহ পাক এবং উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনারা যেমন দাম্ভিক বা অহঙ্কারীকে পছন্দ করেন না তেমনি যারা হীনম্মন্যতায় ভোগে তাদেরকেও পছন্দ করেন না। ব্যক্তিত্ব বা আত্মসম্মানবোধ, ব্যক্তি জীবনের জীবনী শক্তি। এই জীবনী শক্তি যখন লোপ পায় তখন একজন মানুষ এবং জড় পদার্থের মধ্যে কোন পার্থক্য থাকে না। ব্যক্তিত্ব বা আত্মসম্মানবোধ অহঙ্কার নয়। যা সত্য কিংবা যা সত্যের অনুকুলে তা প্রকাশ করা অহঙ্কার নয়। ইহা ব্যক্তিত্ব বা আত্মবিশ্বাস। ইহা প্রকাশ করাটাই মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার রসূল, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের নির্দেশ। মহান আল্লাহ পাক তিনি বলেন, “আপনার মহান রব তিনি যে সমস্ত নিয়ামতরাজী দান করেছেন তার বহিঃপ্রকাশ ঘটান। ” (পবিত্র সূরা দ্বুহা শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ১১)
যার আত্ম বিশ্বাস যতবেশি তার আত্ম শক্তি ততোধিক সমৃদ্ধ। সমৃদ্ধশীল আত্মাই মানুষের মধ্যে আত্মসম্মানবোধ সৃষ্টি করে। আত্মসম্মানবোধ ব্যতীত কোন মানুষ কখনো প্রকৃত মানুষ হতে পারে না। যার যতটুকু মহানুভবতা এবং শক্তি আছে সে যদি তার প্রকাশ ঘটায় তবে অন্যায় নয়। বরং নিয়ামতরাজীর প্রকাশ মাত্র। আমরা হক্ব বা সত্যকে সম্মান করবো। মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার হাবীব সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের ইতায়াত বা অনুসরণ-অনুকরণ করে নিজেদের জীবনকে সার্থক করবো। আমরা আশরাফুল মাখলূক্বাত, সৃষ্টির শ্রেষ্ঠ জীব।
পক্ষান্তরে কাফির, মুশরিক, বেদ্বীন, বদদ্বীন এবং দুনিয়ালোভী, অর্থলোভী তথা উলামায়ে ‘সূ’ তারা সৃষ্টির সর্বাপেক্ষা নিকৃষ্ট জীব।
কাজেই, আমাদের আত্ম বিশ্বাস থাকবে, আত্মসম্মানবোধ থাকবে, ব্যক্তিত্ব থাকবে। তবে অহঙ্কার থাকতে পারে না। আর যেখানে প্রতিক্ষেত্রে পরিপুর্ণরূপে ইত্বায়াত, অনুসরণ-অনুকরণ থাকে সেখানে অহঙ্কার থাকে না। সেখানে থাকে ব্যক্তিত্ব বা আত্মসম্মান বোধ, আত্মবিশ্বাস। অর্থাৎ যারা মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার রসূল নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আর উলিল আমর তথা হযরত আউলিয়ায়ে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনাদেরকে জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে প্রতিক্ষণে, পরিপূর্ণরূপে অনুসরণ-অনুকরণ করেন তাদের মধ্যে কখনো অহঙ্কার স্থান পায় না। অপরপক্ষে যারা তার বিপরীত তারাই অহঙ্কারী, তারাই দাম্ভিক। তারাই সৃষ্টির নিকৃষ্ট জীব, কাফির।
মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “নিশ্চয়ই সৃষ্টির মধ্যে সর্বাপেক্ষা নিকৃষ্ট হচ্ছে কাফির, যারা ঈমান আনে না। (পবিত্র সূরা আনফাল শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ৫৫)
-সাইয়্যিদ মুহম্মদ আব্দুল হালিম।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
সন্তানদের ও পরিবারের সকলকে সালাম দেয়া শিক্ষা দান করুন
২৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের বেমেছাল দানশীলতা মুবারক (৪)
২৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
কাফের বিশ্বে নারীরা শুধু কি এখন নির্যাতনের শিকার হচ্ছে?
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
একজন দ্বীনদার পরহেযগার আল্লাহওয়ালী মহিলা উনার পর্দা পালনের বেমেছাল দৃষ্টান্ত
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
প্রসঙ্গ মহিলা জামাত নাজায়িজ
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
পিতা-মাতার প্রতি সন্তানের দায়িত্ব-কর্তব্য
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
শৈশবকাল থেকেই সন্তানকে দ্বীনদার হওয়ার শিক্ষা দান করতে হবে
২০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
সম্মানিতা মহিলা আউলিয়া-ই কিরাম উনাদের পরিচিতি
১৯ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
স্বচক্ষে দেখা কিছু কথা
১৯ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
পারিবারিক তা’লীমের গুরুত্ব ও তারতীব
১৮ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
সুন্নতী খাবার সম্পর্কিত হাদীছ শরীফ : মেথি
১৮ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
খাবার বিষয়ে মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন
১৮ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার)