শৈতপ্রবাহে চরম দুর্ভোগে উত্তরাঞ্চলের লাখ লাখ মানুষ
তীব্র শীতের কবলে পড়া জেলাগুলোতে কখনোই সময় মতো শীতবস্ত্র সরবরাহ করা হয় না। সরকারের উচিত, শীতার্ত মানুষের দুর্ভোগ লাঘবে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা।
, ২৪ জুমাদাল ঊখরা শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ০৯ সামিন, ১৩৯১ শামসী সন , ০৭ জানুয়ারি, ২০২৪ খ্রি:, ২৩ পৌষ, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) সম্পাদকীয়
উত্তরবঙ্গের জেলাগুলোতে বইছে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ। পঞ্চগড় জেলার গতকালের তাপমাত্রা ৭ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
এদিকে, গতকাল রংপুরে ১২.১, কুড়িগ্রামে ১২.৮, দিনাজপুরে ১০.০, সৈয়দপুরে ৯.০, নীলফামারীর ডিমলায় ১১.৫, গাইবান্ধায় ১২.৫, লালমনিরহাট ১২.৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল।
পৌষের মাঝামাঝি এসে শীতের তীব্রতা টের পেতে শুরু করেছে বাংলাদেশ। মাঝারি মানের শৈত্যপ্রবাহে জবুথবু অবস্থা বিরাজ করছে। রাজধানী ঢাকাসহ দেশের উত্তরাঞ্চলে শীতের দাপট বেড়েছে। এমন শীতল তাপমাত্রা আরও তিন থেকে চারদিন থাকার কথা জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
এদিকে জানুয়ারিতে দুই থেকে তিনটি শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। এরমধ্যে দুটি তীব্র শৈত্যপ্রবাহে (৪ থেকে ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস) রূপ নিতে পারে।
হিমেল হাওয়া ও তীব্র শৈত্যপ্রবাহ দরিদ্র জনগোষ্ঠী অধ্যুষিত অঞ্চলে বিরূপ প্রভাব ফেলে। হতদরিদ্র অনেক মানুষেরই নেই ন্যূনতম শীতবস্ত্র, খাদ্যদ্রব্য, ওষুধ ও উপযুক্ত বাসস্থান। শীতের তুলনায় মানুষের প্রস্তুতি অপ্রতুল, বিশেষ করে গরিব মানুষের। শীতে তাদের অনেককে খোলা আকাশের নিচে রাত যাপন করতে হয়। বস্তিবাসী ও ছিন্নমূল অসহায় মানুষকে খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারনের চেষ্টা করতে দেখা যায়।
বর্তমান শৈতপ্রবাহে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছে দিন আনা দিন খাওয়া মানুষগুলো। ভোরে এলাকার বিভিন্ন মোড়ে ও চায়ের দোকানের সামনে শীত নিবারণের চেষ্টায় আগুন জ্বালিয়ে উত্তাপ নিতে দেখা গেছে নিম্নআয়ের মানুষকে। পেটের দায়ে সকালে রিক্সা নিয়ে বের হলেও যাত্রীর দেখা না পেয়ে হতাশ হতে হচ্ছে তাদের। সকালে তীব্র শীত অনুভূত হওয়ায় কাজে যেতে পারছে না শ্রমজীবীরা। এরপরও পরিবারের সদস্যদের দু’বেলা খাবার আর এনজিওগুলোর কিস্তির চাপে তীব্র শীত উপেক্ষা করেই কাজে নামছে তারা।
শীত বাড়ার সাথে সাথে কৃষকের কপালে দুশ্চিন্তার ভাঁজ দেখা দিয়েছে। ঘন কুয়াশায় অনেক ধরনের ফসলের ক্ষতি হয়। বিশেষ করে আলু ও টমেটোর অনেক ক্ষতি হয়। বোরো বীজতলাতেও সমস্যা হয়।
দেশের উত্তরাঞ্চলে শীতের কারণে ডায়রিয়া, শ্বাসকষ্টজনিত রোগে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। চিকিৎসকদের মতে, প্রচন্ড ঠান্ডায় নিউমোনিয়া, শ্বাসকষ্ট, সর্দি, কাশি বেড়ে যায়। আগে থেকে যারা অ্যাজমা, ব্রঙ্কাইটিস শ্বাসরোগে ভুগছে তাদের রোগ শীতে জটিল হয়ে ওঠে। উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন জেলায় প্রচ- শীতে প্রায় স্থবির হয়ে পড়েছে গরিব-দুঃখী মানুষের জীবনযাত্রা। খুব প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের হচ্ছে না মানুষ। শীতে প্রতিবারের মতো এবারও গরম কাপড়ের অভাবে সবচেয়ে বিপাকে পড়েছে হতদরিদ্র ও ছিন্নমূল মানুষ।
বলাবাহুল্য, প্রতিবছরই শীতে কষ্ট পাচ্ছে লাখ লাখ লোক। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি হচ্ছে। কিন্তু এর কোন পরিবর্তন হচ্ছে না। প্রতি বছর দেখা যাচ্ছে, শৈতপ্রবাহ শেষ হয়ে গেলে এরপর বিভিন্ন সংস্থা ও সরকার সংশ্লিষ্টদের তরফ থেকে শীতবস্ত্র বিতরণ করা হয়।
বলার অপেক্ষা রাখেনা, প্রতিবছর শীতবস্ত্রের অভাবে অসহনীয় দুর্ভোগ পোহাচ্ছে শীতার্তরা। যা চরম মর্মান্তিক ও অমানবিক। সরকারসহ দেশের অবস্থাসম্পন্নরা যদি একটু মানবিক হয়, তাহলে শীতের কারণে কোনো মানুষকে কষ্ট পেতে হবে না।
শীতার্ত মানুষের কষ্ট লাঘবে অবিলম্বে সরকারকে তৎপর হতে হবে। পাশাপাশি বেসরকারি সংস্থা, সামাজিক ও সমাজের বিত্তবান গোষ্ঠীসহ সকলের মানবিক ভূমিকাও এ ক্ষেত্রে বলার অপেক্ষা রাখেনা। সরকারসহ সকলের ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টা থাকলে শীতজনিত কারণে কোনো দুর্ভোগ পোহাতে হবে না উত্তরের অসহায় দরিদ্র জনগোষ্ঠীকে।
মূলত, এটা তখনই সম্ভব যখন জনগণের মাঝে সম্মানিত দ্বীন ইসলামী চেতনার প্রসার ঘটবে। এছাড়া কেউ শীতবস্ত্র প্রদান করলে তা হয় শুধু লোক-দেখানো বা ছবি তোলা ভিত্তিক কার্যক্রম। উল্লেখ্য পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বস্ত্রহীনকে (শীত বস্ত্র হীনও এক্ষেত্রে অন্তর্ভুক্ত) বস্ত্র দানের অনেক ফযীলত বর্ণনা করা হয়েছে। এক্ষেত্রে দেশের নামধারী মালানাদের কোন ভূমিকা নেই বললেই চলে। অথচ পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র সুন্নাহ শরীফ উনাদের আবেদন অনেক।
হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বর্ণনা মুবারক করেন। আমি মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে ইরশাদ মুবারক করতে শুনেছি, যে কোনো মুসলমান অন্য কোনো মুসলমানকে একটি কাপড় পরাবে, সে মহান আল্লাহ পাক উনার হিফাযত মুবারকে থাকবে, যে পর্যন্ত কাপড়ের একটি টুকরাও তার গায়ে থাকবে। (তিরমিযী শরীফ)
হযরত আবূ সাঈদ খুদরী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বর্ণনা মুবারক করেন, মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, যে কোনো মুসলমান অন্য কোনো মুসলমানকে তাহার বস্ত্রহীনতায় কাপড় পরাবে মহান আল্লাহ পাক তিনি তাকে বেহেশতী সবুজ পোশাক মুবারক পরিধান করাবেন। (আবু দাউদ শরীফ ও তিরমিযী শরীফ)
বলাবাহুল্য, পবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে ও পবিত্র সুন্নাহ শরীফ উনাদের মধ্যে বস্ত্রহীন তথা শীতার্তকে শীতবস্ত্র দানের এরূপ ফযীলতের কথা বহু প্রসঙ্গে বহুবার বলা হয়েছে। যার চেতনা শতকরা ৯৮ ভাগ মুসলমানের এদেশে সব আহাজারিই দূর করতে পারে।
সরকারকে সে জন্য উদ্যোগী হতে হবে। এটা সরকারেরই কাজ। বলা হয়, বর্তমান সরকারের সদিচ্ছার কারণে রংপুরের শতাব্দী পুরনো ‘মঙ্গা’র বিলুপ্তি ঘটেছে। একইভাবে সরকার শৈত্যপ্রবাহের কবল থেকে উত্তরাঞ্চলের অসহায় মানুষদের রক্ষা করার ব্যবস্থা নিতে পারে। দু’ভাবে এখানে কাজ করা যেতে পারে। এক, শীতের সময় দরিদ্র মানুষের জন্য পর্যাপ্ত শীতবস্ত্র সরবরাহ শতভাগ নিশ্চিত করে। দুই, নিম্ন আয়ের মানুষ, দিনমজুর, হত-দরিদ্রদের আর্থিক অবস্থা উন্নয়নে বিভিন্ন প্রকল্প গ্রহণ করে। যাতে তারা নিজেদের প্রয়োজনীয় শীতবস্ত্রের ব্যবস্থা নিজেরাই করতে পারে।
ছহিবে সাইয়্যিদি সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ, রাজারবাগ শরীফ উনার মামদূহ মুর্র্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার নেক ছোহবত মুবারক-এ কেবলমাত্র তা লাভ করা সম্ভব। খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাদেরকে তা নছীব করুন। (আমীন)
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
আজ সুমহান বরকতময় মহাপবিত্র ২১শে জুমাদাল উলা শরীফ। সুবহানাল্লাহ! আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, রবীবাতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ছহিবাতুল ইয্যাহ্- সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মী বা’দা উম্মী আছ ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম উনার মহাপবিত্র বিছালী শান মুবারক প্রকাশ দিবস। সুবহানাল্লাহ!
২৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
ব্যাংক গ্রাহকদের খালি হাতে বা নাম মাত্র অর্থে ফেরানো যাবে না কথিত অন্তর্বর্তী সরকারকেই নিশ্চয়তার পাশাপাশি যথাযথ ব্যবস্থা প্রদান করতে হবে ইনশাআল্লাহ
২৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
বিশ্বে জ্বালানীর দাম এমনেই কমছে পাশাপাশি শুধুমাত্র কাঠামো সংস্কারই ১৫ টাকা কমানো সম্ভব হলেও সেদিকে নজর দিচ্ছে না কেন অন্তর্বর্তী সরকার? জ্বালানী তেলের দাম কমালে দ্রব্যমূল্যের দাম সহজেই কমবে
২৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
বাংলাদেশে মিডিয়াগুলো ইহুদীদের অদৃশ্য ইশারায় দেশে পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার বিরূপ পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে চাইছে। বাংলাদেশের মুসলমানদের উচিত- দেশের সব মিডিয়া বর্জন করে আলাদাভাবে সম্মানিত ইসলামী মিডিয়া গঠন করা।
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
বাংলাদেশের জন্য মারাত্মক হুমকী স্বরূপ আরাকান আর্মিকে এক্ষুনি প্রতিহত করতে হবে ইনশাআল্লাহ
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
দেশে সাড়ে ৩ কোটি শুধু শিশুই সিসার বিষক্রিয়ায় আক্রান্ত এবং সব প্রাপ্ত বয়স্করাও ক্ষতিগ্রস্থ সিসার ক্ষতি থেকে বাঁচতে সুন্নতী তৈজসপত্র ব্যবহার এবং আন্তর্জাতিক সুন্নত প্রচার কেন্দ্রের জিনিস ক্রয়ে নিবেদিত হতে হবে ইনশাআল্লাহ
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে মহাব্যার্থ অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সশস্ত্র বাহিনীকে আরো ক্ষমতা দিয়ে প্রতিকার পাওয়া যেতে পারে
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
জ্বালানী তেলের দাম এক্ষুনি কমাতে হবে ইনশাআল্লাহ
২০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
অনেক কিছু করার প্রচারনা চালালেও জিডিপি এবং দেশের উন্নয়নের মূল ভিত্তি অর্থনীতির লাইফ লাইন এসএমই উদ্যোক্তাদের জন্য অন্তর্বর্তী সরকার কিছুই করছে না
২০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
প্রসঙ্গ: রাষ্ট্রদ্বীন ইসলাম, মুসলমানের দ্বীনি অধিকার, পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনাকে পালনের আবহ এবং রাষ্ট্রযন্ত্রের দায়।
১৯ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সিঙ্গাপুর, রাশিয়াসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে সন্ত্রাসী সংগঠন ইসকন নিষিদ্ধ বাংলাদেশেও বিভিন্ন মহলে ইসকন নিষিদ্ধের দাবী জোরদার হচ্ছে, সংস্কারের দাবীদার সরকার কী করে নির্বিকার থাকতে পারে?
১৯ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
ব্যাপকভাবে বাড়ছে সাইবার নিরাপত্তা ঝুঁকি ও হয়রানী জান-মাল এবং সম্মান হিফাজতে সরকারকে এক্ষুনি পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নিতে হবে ইনশাআল্লাহ
১৮ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার)