শুধু গ্রেফতার করলে আর জেলে পুরলেই কিশোর গ্যাং নির্মূল হবে না কিশোর গ্যাংকে সমুন্নত কিশোর সমাজে পরিণত করতে হলে প্রয়োজন ইসলামী মূল্যবোধের জাগরণ প্রয়োজন শিক্ষা সিলেবাসে, সংস্কৃতিতে ইসলামী আদর্শের প্রতিফলন
, ২২ শাবান শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ০৫ আশির, ১৩৯১ শামসী সন , ০৪ মার্চ, ২০২৪ খ্রি:, ২০ ফাল্গুন, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) সম্পাদকীয়
কোনোভাবেই নিয়ন্ত্রণে আনা যাচ্ছে না কিশোর গ্যাং। সারা দেশেই তারা অপরাধ করে বেড়াচ্ছে। সম্প্রতি চট্টগ্রাম মহানগরী ও ফেনীর বিভিন্ন এলাকায় বিশেষ অভিযান চালিয়ে ছয় কিশোর গ্যাং গ্রুপের প্রধানসহ ২৮ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। বুধবার রাতভর অভিযান পরিচালনা করে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
গত ৫ বছরে ঢাকায় কিশোর অপরাধীদের হাতে ১২০ জন খুন হয়েছে। এর মধ্যে গত ২ বছরে ৩৪ জন খুন হয়েছে। এসব ঘটনায় চার শতাধিক কিশোরকে আসামি করা হয়েছে।
২০১৭ সালের জানুয়ারিতে উত্তরায় আদনান কবির হত্যার পর কিশোর গ্যাংয়ের কর্মকা- আলোচনায় আসে। ওই সময় রাজধানীসহ সারা দেশে কিশোর গ্যাংয়ের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু হয়। এর কিছুদিন পর অভিযানে ঢিলেঢালা ভাব শুরু হয়।
জানা গেছে, ঢাকায় শতাধিক কিশোর গ্যাং সক্রিয়। ঢাকার মিরপুর ও উত্তরা এলাকায় সবচেয়ে বেশি কিশোর গ্যাং সক্রিয়। এ দুই এলাকায় প্রায় অর্ধশত কিশোর গ্যাং সক্রিয়। কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা খুনাখুনি, মাদক, চাঁদাবাজি ও ছিনতাইয়ের মতো অপরাধের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ছে। বিশেষ করে মিরপুর এলাকার কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা স্থানীয় রাজনৈতিক নেতাদের ছত্রছায়ায় ভয়ংকর সব অপরাধে জড়িয়ে পড়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় কিশোর গ্যাং কালচার ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে।
তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে এক গ্রুপের সদস্যরা অন্য গ্রুপের সদস্যদের খুন করতেও দ্বিধাবোধ করছে না।
প্রসঙ্গত, কিশোর-যুবকরা যেকোনো সমাজের কিংবা রাষ্ট্রের ভবিষ্যৎ শক্তি এবং তাদের বিকাশে সমাজ বিকশিত হয়, এই সত্য এড়ানোর কোনো পথ নেই। আমরা জানি, শৈশব থেকে যৌবনে উত্তরণের মাঝের ধাপ হলো কৈশোর। এ সময়ে শারীরিক বিকাশের সঙ্গে সঙ্গে মানসিক বিকাশও ঘটে এবং পরিবর্তন হয় দৃষ্টিভঙ্গির। আজকের কিশোর-কিশোরী যারা দেশ-জাতির ভবিষ্যৎ তাদের একাংশের বিপথে পা বাড়ানো আমাদের উদ্বিগ্ন না করে পারে না।
এর দায় রাজনীতিক, জনপ্রতিনিধি এবং সর্বোপরি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দায়িত্বশীলরা এড়াতে পারে না।
সমস্যার গভীরে দৃষ্টি দিতে হবে এবং সম্ভাবনাময় জীবনগুলোকে যারা বিপথে ঠেলে দিয়ে কিশোর গ্যাংয়ের কাতারে নিয়ে যাচ্ছে তাদের চিহ্নিত করে যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা নিতেই হবে। কেউ অপরাধী হয়ে জন্মায় না। প্রশাসন, সামাজিক ও রাজনৈতিক শক্তির যূথবদ্ধ প্রচেষ্টায় এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের পথ বের করতে হবে। রাজনীতির নামে অপরাজনীতির ছায়া সমাজে কম ক্ষত সৃষ্টি করেনি। কিশোর গ্যাং তৈরির প্রেক্ষাপটের পেছনে অপরাজনীতির দায় সর্বাংশে। সুনীতি ও সু-আচার এ বিষয়গুলোর ওপর জোর দিয়ে স্বচ্ছ রাজনৈতিক কর্মকা- পরিচালিত করার পাশাপাশি দায়িত্বশীল প্রত্যেকের জবাবদিহি নিশ্চিত করা আরও জরুরি। আমাদের অভিজ্ঞতায় আছে, যখন রাজনৈতিক অস্থিরতা বাড়ে তখন স্বার্থান্বেষীরা সমাজের অবহেলিত অংশের কিশোর-যুবকদের লক্ষ্য করে প্রলোভনে ফেলে ব্যবহার করে। বিদ্যমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে এরই পুনরাবৃত্তি ঘটল কি না, তা-ও খতিয়ে দেখা দরকার।
এছাড়াও কিছু পদক্ষেপ নেয়া যায়, কিশোর ও তরুণদের সঠিক পথে রাখার জন্য পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্র কিছু উদ্যোগ গ্রহণ করতে পারে যেমন: তাদের দ্রুত কর্মমুখী করা, রাস্তায় দলবদ্ধ হয়ে বসতে না দেয়া, চুলের স্টাইল করতে না দেয়া, হলুদ অনুষ্ঠান বর্জন করা, সহশিক্ষা মুক্ত রাখা, নারী-পুরুষদের অবাধে মিশতে না দেয়া, নেশা জাতীয় পণ্য সরবরাহ না করা, সাংস্কৃতি করা, নাটক সিনেমা তথা অনৈসলামিক সংস্কৃতি বন্ধ প্রদর্শন না করা।
তবে পুলিশী কায়দায় কিশোর দলের অপরাধ দমন করলেই চলবে না। প্রয়োজন হচ্ছে এদের সংশোধন করা এবং অপরাধী যেন তৈরি না হয়, সে ব্যবস্থা গ্রহণ করা। সম্মানিত দ্বীন ইসলাম মূলত মানুষে যেন অপরাধ না করতে পারে, সে ব্যাপারে আবহ ও পরিবেশ তথা পটভূমিকা তৈরি করে। কিশোর গ্যাংয়ের অপরাধ দমনে পবিত্র কুরআন শরীফে বর্ণিত হযরত লোকমান হেকিমের সন্তানের জন্য দেয়া উপদেশগুলো বেশ কার্যকর যেমনÑ হে প্রিয় পুত্র, মহান আল্লাহ পাক উনার সাথে শিরক করো না। কেননা, শিরক হচ্ছে অত্যন্ত বড় জুলুম (পবিত্র সূরা লুকমান শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ১৩)। হে বৎস, কোনো বস্তু যদি সরিষার দানা পরিমাণও হয়, অতঃপর তা যদি থাকে প্রস্তর গর্ভে অথবা আকাশে অথবা ভূগর্ভে, তবে মহান আল্লাহ পাক তিনি তাও উপস্থিত করবেন। নিশ্চয়ই আল্লাহ পাক তিনি গোপন ভেদ জানেন, সবকিছুর খবর রাখেন (পবিত্র সূরা লুকমান শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ৩১:১৬)।
অহংকারবশে তুমি মানুষকে অবজ্ঞা করো না (পবিত্র সূরা লুকমান শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ৩১:১৮)। এবং পৃথিবীতে গর্বভরে পদচারণ করো না। নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ পাক তিনি কোনো দাম্ভিক অহংকারীকে পছন্দ করেন না (পবিত্র সূরা লুকমান শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ৩১:১৮)। হে পুত্র, নামাজ কায়েম কর (পবিত্র সূরা লুকমান শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ১৭)। এবং ভালো কাজের আদেশ কর আর অন্যায় ও পাপ কাজ থেকে বিরত রাখ (পবিত্র সূরা লুকমান শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ১৭)। যা কিছু দুঃখ-কষ্ট-লাঞ্ছনা আসবে, এ কাজে তাহা সব উদারভাবে বরদাশত করো। কেননা, এমন কাজ, যা সম্পন্ন করার একান্তই জরুরি ও অপরিহার্য (পবিত্র সূরা লুকমান শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ১৭)। মধ্যমনীতি অবলম্বন করে মাঝামাঝি ধরনের চালচলন অবলম্বন করো (পবিত্র সূরা লুকমান শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ১৯)। তোমার কণ্ঠধ্বনি নিচু করো, সংযত ও নরম করো, কেননা সবচেয়ে ঘৃণ্য হচ্ছে গর্দভের কর্কশ আওয়াজ (পবিত্র সূরা লুকমান শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ১৯)। হে মহান আল্লাহ পাক, আমাদের স্ত্রীদের ও সন্তানদের দিক থেকে চোখের শীতলতা দান করো এবং আমাদের পরহেজগার লোকদের নেতা বানাও (পবিত্র সূরা ফুরকান শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ৭৪)।
উল্লেখ্য, সম্মানিত দ্বীন ইসলামে শাস্তির বিধান তিন ধরনের, যারা কিশোর অপরাধে জড়িয়ে পড়েছে তাদের সংশোধন ও দমনে সম্মানিত দ্বীন ইসলামের এ শাস্তির বিধান প্রয়োগ জরুরি। ইসলাম অপরাধের ক্ষেত্রভেদে বেত্রাঘাত, রজম ও শিরোচ্ছেদের বিধান দেয়। এগুলো কঠোর ও কঠিন শাস্তি। এ শাস্তি জনসমক্ষে দিতে হয়। যাতে সবাই শাস্তির কঠোরতা দেখে অপরাধ থেকে বিরত থাকে। ইরশাদ মুবারক হয়েছে, হে বুদ্ধিমানগণ! কেসাসের মধ্যে তোমাদের জন্যে জীবন রয়েছে, যাতে তোমরা সাবধান হতে পার (পবিত্র সূরা বাকারা শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ২:১৭৯ )।
তবে শুধু পবিত্র সূরা লুকমান শরীফই নয় মূলত: সামগ্রিকভাবে কুরআন, সুন্নাহ শরীফের প্রতিফলনই এ বিষয়ে অনিবার্য। তবে এক্ষেত্রে শিক্ষা সিলেবাস কোর্সে অনৈসলামিক অনুষঙ্গ বাদ দিয়ে ইসলামী ইলম অন্তর্ভূক্ত করতে হবে।
ছহিবে সাইয়্যিদি সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ, রাজারবাগ শরীফ উনার মামদূহ মুর্র্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার নেক ছোহবত মুবারক-এ কেবলমাত্র তা লাভ করা সম্ভব। খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাদেরকে তা নছীব করুন। (আমীন)
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
পাঁচ হাজার পৃষ্ঠার বিশাল নথিতে ২ লাখ ৫৭ হাজার একর বনভূমি দখলদার ১ লাখ ৬০ হাজার নাম এসেছে শুধু নাম সর্বস্ব না করে বনভূমি উদ্ধারের বাস্তব নজীর চাই
০৬ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
ফুটপাতের প্রান্তিক হকারদের কাছ থেকে অসৎ ও লুটেরা মহল প্রতি মাসে চাঁদা আদায় করছে শত শত কোটি টাকা; অথচ সরকারি ব্যবস্থাপনায় এ অর্থ দিয়ে বারবার উচ্ছেদ হওয়া হকারদের পুনর্বাসন সম্ভব; অন্যদিকে এই অর্থ যোগ হতে পারে জাতীয় অর্থনীতিতে। সরকারের আশু নজর কাম্য।
০৬ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
দ্রব্যমূল্যের আগুনে ঝলসে যাচ্ছে মানুষ। মূল্যস্ফীতির চাপে পিষ্ট হচ্ছে জনসাধারণ। সরকারের কর্তাব্যক্তিদের রকমফের চটকদার কথার পরিবর্তে এক্ষনি মূল্যস্ফীতিকে সংকুচিত করে দেশবাসীকে বাঁচাতে হবে ইনশাআল্লাহ।
০৫ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
৭ হাজার ৮০০ মিলিয়ন টন কয়লা মজুদের দেশে কয়লার ঘাটতিতে বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র বন্ধ কেন? বিগত মাফিয়া সরকারের পথ থেকে সরে এসে কয়লা উত্তোলন শুরু করুন।
০৫ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
প্রসঙ্গঃ মোবাইল ফোনের ব্যবহার ও অপব্যবহার।
০৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
হোল্ডিং ট্যাক্স ছাড়, তাপ মুক্তি নিরাপদ ফল-সবজি প্রাপ্তি, পরিবেশ উন্নয়ন প্রক্রিয়ায় শহরের প্রতিটি বাড়ির ছাদ হোক একটুকরো বাগান
০৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
৪০ শতাংশের বেশি ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প বন্ধ হয়েছে যথাযথ পৃষ্ঠপোষকতা করলে ইনশাআল্লাহ ঘুরে দাঁড়াবে ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প
০৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
মুদি দোকান, স্টেশনারি দোকান, শপিং মল, পার্লার, সুপার শপ সবখানেই ভেজাল কসমেটিক্স। মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে ব্যবহারকারীরা। সরকারের কঠোর নজরদারী ও নিয়ন্ত্রণ প্রয়োজন।
০২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
দেশের ৪ কোটি মানুষ না খেয়ে থাকে। অথচ দেশে মাথাপিছু খাদ্য অপচয় হয় প্রায় ৯০ কেজি। বছরে ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ৩৫ হাজার কোটি টাকা।
০২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
আজ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ২৮শে রবীউছ ছানী শরীফ! সাইয়্যিদাতুনা উম্মুর রদ্বাআহ আল ঊলা আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত আওলাদ, আখু রসূলিল্লাহ মিনার রদ্বাআহ সাইয়্যিদুনা হযরত মাসরূহ্ আলাইহিস সালাম উনার বিছালী শান মুবারক প্রকাশ দিবস। সুবহানাল্লাহ!
০১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
শিক্ষা খাতে পতিত সরকারের বাজেটে নিম্নবিত্ত-মধ্যবিত্তদের স্বার্থ সংরক্ষিত হয়নি শিক্ষার্থীরা যাতে ঝরে না পড়ে- শিক্ষা উপকরণের দাম কমিয়ে বর্তমান সরকারকে তা নিশ্চিত করতে হবে ইনশাআল্লাহ
৩১ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
শব্দ দূষণ এখন শব্দ সন্ত্রাস ও নীরব ঘাতকে পরিণত হয়েছে। নারিকেল দ্বীপ নয় শব্দ দূষণে বিপর্যস্থ ঢাকাকে উপযোগী করার জন্য ঢাকার জনযট সারাদেশে ছড়িয়ে দিতে হবে।
৩১ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার)