শুধুমাত্র সংরক্ষণে উদ্যোগী হলেই পেঁয়াজ আমদানীর প্রয়োজন হয় না পেঁয়াজ সংরক্ষণে এখন এয়ার ফ্লো মেশিনের মতো অনেক অভিনব পদ্ধতি বের হয়েছে
সরকারের উচিত যথাযথ পৃষ্ঠপোষকতা করা
, ০৪ রজবুল হারাম শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ১৯ সামিন, ১৩৯১ শামসী সন , ১৭ জানুয়ারি, ২০২৪ খ্রি:, ০২ মাঘ, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) সম্পাদকীয়
পেঁয়াজ উৎপাদনে বিশ্বে বর্তমানে বাংলাদেশের অবস্থান তৃতীয়। যা আগে ছিল দশম। দেশে বছরে পেঁয়াজের চাহিদা ৩৫ থেকে ৩৬ লাখ মেট্রিক টন। সেখানে গত বছর দেশে পেঁয়াজ উৎপাদন হয়েছে ৩২ লাখ মেট্রিক টন। গত এক বছরে দেশে পেঁয়াজ উৎপাদন বেড়েছে প্রায় ৮ লাখ মেট্রিক টন।
বারির মসলা গবেষণা কেন্দ্র এখন পর্যন্ত বিভিন্ন ফসলের ৪৭টি জাত উদ্ভাবন করেছে। যার মধ্যে পেঁয়াজের জাত ছয়টি। প্রতি বছর দেশে প্রায় ১০ লাখ মেট্রিক টন পেঁয়াজ আমদানি করতে হয়। যা মোট মসলা আমদানির অর্ধেক।
বাংলাদেশ তিন ধরনের পেঁয়াজ উৎপাদন করে। বাল্ব পেঁয়াজ (বারি পেঁয়াজ-১, বারি পেঁয়াজ-৪ এবং লালতীর কিং), অল্প পরিমাণ গ্রীষ্মকালীন বারি পেঁয়াজ-৫ এবং স্থানীয় জাতের মুড়িকাটা পেঁয়াজ। এভাবে বিভিন্ন জাতের পেঁয়াজ চাষ করেও চাহিদা মেটানো যাচ্ছে না। এর প্রধান কারণ দেশে চাল ও গম সংরক্ষণের জন্য সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে প্রচুর গুদাম রয়েছে। আলু রাখার জন্য রয়েছে হিমাগার। কিন্তু পেঁয়াজ সংরক্ষণের জন্য এখন পর্যন্ত দেশে কোনো হিমাগার বা সংরক্ষণাগার গড়ে ওঠেনি। ফলে সংরক্ষণের সময় অতিবৃষ্টি হলে পেঁয়াজে ছত্রাক লেগে এবং শিকড় গজিয়ে তা দ্রুত নষ্ট হয়ে যায়। কৃষি খাতসংশ্লিষ্টরা মনে করছেন মূলত সংরক্ষণ দুর্বলতা পেঁয়াজ উৎপাদনের সাফল্যকে মলিন করে দিচ্ছে। তাই চাহিদার চেয়ে উৎপাদন অনেক বেশি হলেও প্রতি বছরই পেঁয়াজ আমদানি করতে হচ্ছে। কৃষি মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ২০২২-২৩ অর্থবছরে ৩৬ লাখ মেট্রিক টন পেঁয়াজ উৎপাদিত হয়। ২০২২-২৩ অর্থবছরে উৎপাদিত হয়েছে ৩৫ লাখ টন পেঁয়াজ। পেঁয়াজের সংগ্রহ থেকে শুরু করে ভোক্তা পর্যন্ত পৌঁছাতে বিভিন্ন ধাপে অপচয় ২৫ থেকে ৩০ শতাংশ বাদে গত বছর নিট উৎপাদন হয়েছে ২৪ লাখ ৫৩ হাজার মেট্রিকটন। বাংলাদেশে পেঁয়াজের চাহিদা বছরে প্রায় ২৮ থেকে ৩০ লাখ মেট্রিক টন। সূত্রমতে, বাড়তি উৎপাদন করলেও সংরক্ষণের অভাবে ৩০ শতাংশ পেঁয়াজ নষ্ট হয়ে যায়। ফলে সেই ঘাটতি পূরণ করতে সরকারকে আমদানি করতে হয়। অনেক কৃষকরা তাদের নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় পেঁয়াজ সংরক্ষণ করলেও তা বেশি দিন রাখা যায় না। পেঁয়াজ সংরক্ষণের জন্য যে তাপমাত্রা দরকার সেটা না পাওয়ায় পেঁয়াজ পচে যায়। তখন তাদের লোকসানে পড়তে হয়। এ কারণে উৎপাদন মৌসুমে অনেক সময় কম দামে সব পেঁয়াজ বিক্রি করে দেন কৃষকরা। এ ক্ষেত্রে পেঁয়াজ নিয়ে সঠিক গবেষণা, সম্প্রসারণ, পরিকল্পনা ও সমন্বয়ের অভাবকে দায়ী করছে কৃষি বিজ্ঞানীরা। তথ্য মতে, ভারত, চীন, মিসরের পেঁয়াজ দুই থেকে তিন মাসের বেশি সংরক্ষণ করা যায় না। সেখানে বাংলাদেশের পেঁয়াজ পাঁচ থেকে সাত মাস পর্যন্ত সংরক্ষণ করা যায়।
এ বছর ভেজাল বীজের কারণে একটা সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে। কৃষক পেঁয়াজ তুলে দেখেছেন ১২-১৫টায় এক কেজি হয়ে যাচ্ছে। সাধারণত ফরিদপুর বা আশপাশের জেলাগুলোতে এ জাতের পেঁয়াজ তো কৃষকরা চাষ করে না। বীজের মধ্যে হয়তো মিশ্রণ রয়েছে। তবে সার্বিকভাবে পেঁয়াজ উৎপাদনের সুফল পেতে হলে আমাদের তথ্যের ক্ষেত্রে আরো শক্তিশালী হতে হবে। তথ্য সংগ্রহকারী সংগঠনগুলোর মধ্যে তথ্যের অনেক তফাত থাকে। এ কারণে সঠিকভাবে পলিসি নেয়া যায় না। সঠিক তথ্য পেলে বছরে কতটুকু আমদানি করতে হবে বা কখন করতে হবে সেটার সিদ্ধান্ত নেয়া যায়। আর ভেজাল বীজ ঠেকাতে মনিটরিং বাড়াতে হবে। যারা ভেজাল বীজ কৃষকদের হাতে তুলে দিচ্ছে তাদের শাস্তির আওতায় আনতে হবে। ’
কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা বলছে, গড়ে ৩০ শতাংশ অপচয় হলেও রাজশাহীতে উৎপাদনের প্রায় ৫০ শতাংশই নষ্ট হয়ে যায় সঠিকভাবে সংরক্ষণ করতে না পারার কারণে। কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের কৃষক পর্যায়ে পেঁয়াজ ও রসুন সংরক্ষণ পদ্ধতি আধুনিকায়ন এবং বিপণন কার্যক্রম উন্নয়ন প্রকল্পের সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছে, বাংলাদেশে যখন পেঁয়াজ মাঠ থেকে তোলা হয় তখন তাপমাত্রা ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াস থাকে। কোল্ড স্টোরেজে রাখতে হলে এর তাপমাত্রা মাইনাস ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসে রাখতে হবে। একটি কোল্ড স্টোরেজকে এই তাপমাত্রা নামিয়ে আনতে ২০ থেকে ২৫ দিন সময় লাগে। এতে বিদ্যুৎ খরচ বেশি হবে। যা ব্যয়বহুলও। সাধারণত বাজারে নতুন পেঁয়াজ ওঠার পরই দাম কমতে থাকে। এ জন্য কিছুদিন সংরক্ষণ না করতে পারলে পেঁয়াজ চাষির লাভ মেলে না। প্রচলিত পদ্ধতিতে বাঁশের মাচা বা চাঙে পেঁয়াজ সংরক্ষণে অধিক তাপমাত্রায় ঘেমে যাওয়া, ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ, অতিরিক্ত পানীয় বাষ্পে পচন ধরা, রং নষ্ট হওয়াসহ নানা সমস্যার সম্মুখীন হতো তারা।
কয়েকটি উপজেলায় থেকে প্রাপ্ত তথ্যে জানা গেছে, ছাদযুক্ত টিনের কিংবা ইটের ঘরের মেঝেতে ইট দিয়ে মাচা তৈরির পর ছিদ্রযুক্ত মাদুর বা বানা দিয়ে ঢেকে তার মধ্যে সাড়ে ছয় ফুট লম্বা ও ১৪ ইঞ্চি চওড়া একটি ভার্টিকাল সিলিন্ডার বসানো হয়েছে। এক হর্স পাওয়ারের একটি বৈদ্যুতিক মোটর যুক্ত করে পাখার সাহায্যে ওপর থেকে বাতাস টেনে নিয়ে নামিয়ে নেয়ার পর আটকে থাকা বাতাস পেঁয়াজের মধ্য দিয়ে বের হচ্ছে। ছোট্ট একটি কক্ষে এভাবে বাতাস প্রবাহ করে মজুতের পেঁয়াজ সংরক্ষণ করা হচ্ছে।
তারা ‘এয়ার ফ্লো মেশিন’-এর নাম দিয়েছে ‘কৃষকের এসি’। এই নাম দেয়ার কারণ, এই মেশিনে দীর্ঘ সময় ধরে পেঁয়াজ সংরক্ষণ করে রাখা যায়। পচে কম, পেঁয়াজের গুণগত মানও থাকে ভালো।
তবে মোট উৎপাদনের তুলনায় এই সংরক্ষণ খুবই নগণ্য। এভাবে সারাদেশে প্রয়োজনীয় সংখ্যক মডেল ঘর তৈরি করা দরকার।
কৃষি বিজ্ঞানীরা বলছে, পেঁয়াজ সংরক্ষণ করতে না পারায় আমদানি-নির্ভর হতে হচ্ছে। সঠিকভাবে সংরক্ষিত করা গেলে আমদানি করার প্রয়োজন হবে না। পাশাপাশি আবাদ বৃদ্ধিতে সঠিক কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ ও ভালো মানের বীজ উৎপাদন করার পরামর্শও দিয়েছে।
সংশ্লিষ্ট মহল মনে করেন, আমদানি করা না হলে আগামী দুই বছরের মধ্যে উৎপাদন ৪০ লাখ টনে নিয়ে যাওয়া সম্ভব। তিনি বলেন, আমদানি করা হলে কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তাই উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ হতে আমদানি বন্ধ করতে হবে।
প্রসঙ্গত আমরা মনে করি, ‘পেঁয়াজের মতো কৃষিপণ্য আমদানি না করাই ভালো। আমদানীর পরিবর্তে সংরক্ষণে এবং সম্প্রসারণে উদ্যোগী হতে হবে ইনশাল্লাহ। সরকারের উচিত যেসব পণ্য দেশে ভালো উৎপাদন হয় তার আমদানি একেবারেই বন্ধ করে দেয়া।
ছহিবে সাইয়্যিদি সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ, রাজারবাগ শরীফ উনার মামদূহ মুর্র্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার নেক ছোহবত মুবারক-এ কেবলমাত্র তা লাভ করা সম্ভব। খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাদেরকে তা নছীব করুন। আমীন!
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
ব্যাংক গ্রাহকদের খালি হাতে বা নাম মাত্র অর্থে ফেরানো যাবে না কথিত অন্তর্বর্তী সরকারকেই নিশ্চয়তার পাশাপাশি যথাযথ ব্যবস্থা প্রদান করতে হবে ইনশাআল্লাহ
২৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
বিশ্বে জ্বালানীর দাম এমনেই কমছে পাশাপাশি শুধুমাত্র কাঠামো সংস্কারই ১৫ টাকা কমানো সম্ভব হলেও সেদিকে নজর দিচ্ছে না কেন অন্তর্বর্তী সরকার? জ্বালানী তেলের দাম কমালে দ্রব্যমূল্যের দাম সহজেই কমবে
২৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
বাংলাদেশে মিডিয়াগুলো ইহুদীদের অদৃশ্য ইশারায় দেশে পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার বিরূপ পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে চাইছে। বাংলাদেশের মুসলমানদের উচিত- দেশের সব মিডিয়া বর্জন করে আলাদাভাবে সম্মানিত ইসলামী মিডিয়া গঠন করা।
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
বাংলাদেশের জন্য মারাত্মক হুমকী স্বরূপ আরাকান আর্মিকে এক্ষুনি প্রতিহত করতে হবে ইনশাআল্লাহ
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
দেশে সাড়ে ৩ কোটি শুধু শিশুই সিসার বিষক্রিয়ায় আক্রান্ত এবং সব প্রাপ্ত বয়স্করাও ক্ষতিগ্রস্থ সিসার ক্ষতি থেকে বাঁচতে সুন্নতী তৈজসপত্র ব্যবহার এবং আন্তর্জাতিক সুন্নত প্রচার কেন্দ্রের জিনিস ক্রয়ে নিবেদিত হতে হবে ইনশাআল্লাহ
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে মহাব্যার্থ অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সশস্ত্র বাহিনীকে আরো ক্ষমতা দিয়ে প্রতিকার পাওয়া যেতে পারে
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
জ্বালানী তেলের দাম এক্ষুনি কমাতে হবে ইনশাআল্লাহ
২০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
অনেক কিছু করার প্রচারনা চালালেও জিডিপি এবং দেশের উন্নয়নের মূল ভিত্তি অর্থনীতির লাইফ লাইন এসএমই উদ্যোক্তাদের জন্য অন্তর্বর্তী সরকার কিছুই করছে না
২০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
প্রসঙ্গ: রাষ্ট্রদ্বীন ইসলাম, মুসলমানের দ্বীনি অধিকার, পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনাকে পালনের আবহ এবং রাষ্ট্রযন্ত্রের দায়।
১৯ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সিঙ্গাপুর, রাশিয়াসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে সন্ত্রাসী সংগঠন ইসকন নিষিদ্ধ বাংলাদেশেও বিভিন্ন মহলে ইসকন নিষিদ্ধের দাবী জোরদার হচ্ছে, সংস্কারের দাবীদার সরকার কী করে নির্বিকার থাকতে পারে?
১৯ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
ব্যাপকভাবে বাড়ছে সাইবার নিরাপত্তা ঝুঁকি ও হয়রানী জান-মাল এবং সম্মান হিফাজতে সরকারকে এক্ষুনি পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নিতে হবে ইনশাআল্লাহ
১৮ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
পাচারকৃত ১৭ লাখ কোটি টাকা ফেরত আনতে শামুকের মত ধীর গতি বরদাশতের বাইরে
১৮ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার)