রোহিঙ্গা ক্যাম্পের নিরাপত্তা নিয়ন্ত্রণ দিন দিন কঠিনতর হচ্ছে?
এ বিষয়ে গৃহীত কর্মসূচী আরো ব্যাপক এবং পরিকল্পনা মাফিক করতে হবে। পাশাপাশি বিশ্ব জনমত গড়ে তুলে রোহিঙ্গাদের দ্রুত মিয়ানমারে ফিরে যাওয়া নিশ্চিত করতে হবে।
, ০৯ মুহররমুল হারাম শরীফ, ১৪৪৪ হিজরী সন, ২৯ ছানী, ১৩৯১ শামসী সন , ২৮ জুলাই, ২০২৩ খ্রি:, ১৩ শ্রাবণ, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) সম্পাদকীয়
পুলিশের পরিসংখ্যান বলছে, ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট থেকে চলতি বছরের ২৩ অক্টোবর পর্যন্ত টেকনাফ ও উখিয়া থানায় ৮৯ জন রোহিঙ্গা খুন হয়েছেন।
২০১৭ সালে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য থেকে তাতমাদাও ও তাদের দোসরদের জেনোসাইডের শিকার হয়ে প্রায় ১ মিলিয়ন রোহিঙ্গা বাংলাদেশের কক্সবাজার সীমান্তে চলে আসে। বাংলাদেশের কাছে তারা জীবন বাঁচানোর তাগিদে আশ্রয় চায়।
বাংলাদেশ সরকার মানবিক হয়ে তাদেরকে কক্সবাজারের বিভিন্ন এলাকায় আশ্রয় দেয়। একটা আশা সবসময় ছিল এবং আছে, খুব দ্রুতই সমাধানের দিকে যাবে রোহিঙ্গা সংকট এবং রোহিঙ্গারা তাদের নিজেদের দেশে ফেরত যাবে। কিন্তু বিগত সাড়ে চার বছরের ব্যবধানেও একজন রোহিঙ্গাকে ফেরত নেয়নি মিয়ানমার সরকার। ২০১৭ সালের নভেম্বরের বাংলাদেশের এবং মিয়ানমারের সরকারের মধ্যে রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধান এবং প্রত্যাবর্তনের জন্য একটি চুক্তি সই হয়। তবে মিয়ানমার সরকার এবং বিভিন্ন শক্তিশালী রাষ্ট্রগুলোর অসহযোগিতার কারণে সেই চুক্তি আলোর মুখ দেখেনি। বিগত সাড়ে চার বছর এবং সাম্প্রতিক সময়ের বিভিন্ন ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ঝুঁকি ও নিরাপত্তার শঙ্কা উদ্বেগের সাথে লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলো দিন দিন অস্থিতিশীল হয়ে উঠছে। সেখানে প্রতিনিয়ত হত্যা, মানব পাচার, মাদক ও অস্ত্র চোরাচালান, গুম, অপহরণ ও মুক্তিপন দাবী এবং অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটছে। এসব কারনে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ও সশস্ত্র হামলার ঘটনাগুলো নিরাপত্তার দিক থেকে অত্যন্ত উদ্বেগজনক। রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন চলমান না থাকলে নিরাপত্তা ঝুঁকি তৈরি হবে এটা বিশ্ব সম্প্রদায়কে বাংলাদেশ প্রথম থেকেই জানিয়ে আসছে। প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির প্রতিবেদনে রোহিঙ্গা ক্যাম্প এলাকায় আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মিসহ (আরসা) ১০টি দুর্বৃত্ত দল ও সশস্ত্র গুষ্টি সক্রিয় রয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দলগুলো প্রায়ই মুখোমুখি সংঘর্ষে লিপ্ত হয় এবং হত্যাকা-ের ঘটনা ঘটে।
ক্যাম্পগুলোতে রোহিঙ্গা জনসংখ্যার ঘনত্বের কারনেও এসব সহিংস ঘটনা ঘটছে। ক্যাম্প এলাকায় প্রতি বর্গকিলোমিটারে প্রায় ৭০ হাজারেরও বেশি রোহিঙ্গা বসবাস করছে। বর্তমানে সাড়ে ১২ লাখ রোহিঙ্গা এই ক্যাম্পগুলোতে রয়েছে। একটা ছোট এলাকায় বিপুল পরিমান মানুষের বসবাস থাকলে স্বাভাবিকভাবেই সেখানে মাঝে মাঝে বিভিন্ন ধরনের সংঘাতময় পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে।এর পাশাপাশি বেকারত্ব, শিক্ষার অভাব, অর্থনৈতিক চাপ এবং অনৈতিক কাজের প্রলোভন ও সুযোগ মিলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনের বাইরে চলে যেতে পারে। এসব স্থানে সন্ত্রাসীদের দমন, গ্রেপ্তার এবং অস্ত্র উদ্ধার করার জন্য ক্যাম্পগুলোর ভেতরে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনী অভিযান চালালে জনঘনত্বের কারনে অনেক সাধারণ রোহিঙ্গাও ক্ষতিগ্রস্ত হবে যা সবসময় বিবেচনায় রাখতে হবে। রোহিঙ্গা ক্যাম্পে অগ্নিকা-ের কারণ উৎঘাটনে গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে অগ্নিকা-ের ঘটনা পরিকল্পিত নাশকতা বলে প্রকাশিত হয়েছে। প্রতিবেদনে অগ্নিকা-ের ঘটনায় মামলা, নিয়মিত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযান ও গোয়েন্দা তৎপরতা বাড়ানোসহ ১০টি সুপারিশ করা হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রোহিঙ্গা ক্যাম্পের প্রতিটি ব্লকের রাস্তা আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী ও ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি চলাচলের জন্য প্রশস্ত করতে হবে। আগুন নিয়ন্ত্রণে ব্লকের পাশে পানির চৌবাচ্চা তৈরী, অপেক্ষাকৃত কম দাহ্য পদার্থ দিয়ে তৈরি ত্রিপল বা অন্য কিছু দিয়ে ক্যাম্পগুলো বানাতে হবে। রোহিঙ্গা ক্যাম্পের জন্য পৃথক ফায়ার সার্ভিস ইউনিট গঠন করতে হবে। আগুন লাগলে নেভানোর কাজে রোহিঙ্গাদের স্বতস্ফুর্ত অংশ গ্রহণের জন্য নিয়মিত প্রশিক্ষণ ও সচেতনতা তৈরি করতে হবে। ক্যাম্পের ভেতরে অপরিকল্পিতভাবে দোকানপাট তৈরি করা যাবে না এবং যানবাহন চলাচলের সুবিধার জন্য প্রবেশ পথে লে-আউট স্থাপন করতে হবে। ক্যাম্পের জনঘনত্ব কমানো গেলেই কেবলমাত্র এ ধরনের কার্যক্রম নেয়া সম্ভব। এজন্য কিছু রোহিঙ্গাকে ক্যাম্প থেকে অন্যত্র স্থানান্তর করতে হবে। সেইসাথে এসব পরিকল্পনা বাস্তবায়ন বেশ ব্যয়বহুল ও সময়সাপেক্ষ। বাংলাদেশের একার পক্ষে এই চাপ নেয়া সম্ভব না। সন্ত্রাসী কর্মকা- নিয়ন্ত্রন, পরিবেশ বিপর্যয় এবং কক্সবাজারের আশ্রয়শিবিরগুলোর ওপর থেকে চাপ কমাতে বাংলাদেশ সরকার ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের স্থানান্তর কার্যক্রম হাতে নিয়েছে যা একটি দূরদর্শী ও সময়োপযোগী পদক্ষেপ। এ পর্যন্ত প্রায় ৩০ হাজার ৫০০ রোহিঙ্গাকে ভাসানচরে স্থানান্তর করা হয়েছে। সবমিলিয়ে এক লাখ রোহিঙ্গাকে সেখানে নেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। রোহিঙ্গাদেরকে কক্সবাজার থেকে ভাসানচরে নিতে বন্ধুরাষ্ট্র ও আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর সহায়তা চেয়ে দুটি প্রস্তাব দিয়েছে বাংলাদেশ সরকার। প্রথম প্রস্তাব হলো রোহিঙ্গাদের কক্সবাজার থেকে ভাসানচরে নেওয়ার খরচ বহন করা। আর দ্বিতীয় প্রস্তাবটি হলো, রোহিঙ্গাদের জন্য ভাসানচরে আরও নতুন অবকাঠামো নির্মাণ করা। ভাসানচরে আর ও ৭০ হাজার রোহিঙ্গাকে স্থানান্তর করা দরকার, এই স্থানান্তর ব্যয়বহুল। বাংলাদেশের সাথে কাজ করা বন্ধুরাষ্ট্রগুলো কক্সবাজার থেকে ভাসানচরে নেওয়ার খরচ বহনে সহায়তা করবে বলে বাংলাদেশ আশা করে। ভাসানচরে যে জমি আছে, তার তিন ভাগের এক ভাগ ব্যবহার করা হয়েছে বাকি দুই ভাগ জায়গাতেও অবকাঠামো নির্মিত হলে আরও রোহিঙ্গাকে সেখানে নেওয়া যাবে। বাংলাদেশ সেখানে নতুন অবকাঠামো নির্মাণে বন্ধু রাষ্ট্রগুলোর কাছে সহায়তা চেয়েছে। বন্ধুপ্রতিম রাষ্ট্রগুলো এই সমস্যা সমাধানে এগিয়ে আসলে ক্যাম্পের পরিস্থিতির উন্নতি হবে আশা করা যায়।
দ্রুত প্রত্যাবাসনের পক্ষে জনমত গড়ে তুলে রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফিরে যাওয়া নিশ্চিত করতে হবে। এর পাশাপাশি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ও আঞ্চলিক দেশগুলোর সহযোগিতা নিয়ে আঞ্চলিক নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখার প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে। দ্রুততম সময়ের মধ্যে রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠাতে না পারলে সামনের দিনগুলোতে বাংলাদেশের জাতীয় নিরাপত্তা হুমকির সম্মুখীন হবে।
ছহিবে সাইয়্যিদি সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ, রাজারবাগ শরীফ উনার মামদূহ মুর্র্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার নেক ছোহবত মুবারক-এ কেবলমাত্র তা লাভ করা সম্ভব। খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাদেরকে তা নছীব করুন। (আমীন)
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
বাংলাদেশে মিডিয়াগুলো ইহুদীদের অদৃশ্য ইশারায় দেশে পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার বিরূপ পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে চাইছে। বাংলাদেশের মুসলমানদের উচিত- দেশের সব মিডিয়া বর্জন করে আলাদাভাবে সম্মানিত ইসলামী মিডিয়া গঠন করা।
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
বাংলাদেশের জন্য মারাত্মক হুমকী স্বরূপ আরাকান আর্মিকে এক্ষুনি প্রতিহত করতে হবে ইনশাআল্লাহ
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
দেশে সাড়ে ৩ কোটি শুধু শিশুই সিসার বিষক্রিয়ায় আক্রান্ত এবং সব প্রাপ্ত বয়স্করাও ক্ষতিগ্রস্থ সিসার ক্ষতি থেকে বাঁচতে সুন্নতী তৈজসপত্র ব্যবহার এবং আন্তর্জাতিক সুন্নত প্রচার কেন্দ্রের জিনিস ক্রয়ে নিবেদিত হতে হবে ইনশাআল্লাহ
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে মহাব্যার্থ অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সশস্ত্র বাহিনীকে আরো ক্ষমতা দিয়ে প্রতিকার পাওয়া যেতে পারে
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
জ্বালানী তেলের দাম এক্ষুনি কমাতে হবে ইনশাআল্লাহ
২০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
অনেক কিছু করার প্রচারনা চালালেও জিডিপি এবং দেশের উন্নয়নের মূল ভিত্তি অর্থনীতির লাইফ লাইন এসএমই উদ্যোক্তাদের জন্য অন্তর্বর্তী সরকার কিছুই করছে না
২০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
প্রসঙ্গ: রাষ্ট্রদ্বীন ইসলাম, মুসলমানের দ্বীনি অধিকার, পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনাকে পালনের আবহ এবং রাষ্ট্রযন্ত্রের দায়।
১৯ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সিঙ্গাপুর, রাশিয়াসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে সন্ত্রাসী সংগঠন ইসকন নিষিদ্ধ বাংলাদেশেও বিভিন্ন মহলে ইসকন নিষিদ্ধের দাবী জোরদার হচ্ছে, সংস্কারের দাবীদার সরকার কী করে নির্বিকার থাকতে পারে?
১৯ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
ব্যাপকভাবে বাড়ছে সাইবার নিরাপত্তা ঝুঁকি ও হয়রানী জান-মাল এবং সম্মান হিফাজতে সরকারকে এক্ষুনি পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নিতে হবে ইনশাআল্লাহ
১৮ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
পাচারকৃত ১৭ লাখ কোটি টাকা ফেরত আনতে শামুকের মত ধীর গতি বরদাশতের বাইরে
১৮ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
সোনার বাংলার আরেক সোনালী অর্থনীতি- মৎস্য সম্পদ এর সমৃদ্ধির সুফল জনগণের হাতে যথাযথভাবে তুলে দিতে হবে ইনশাআল্লাহ
১৭ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
ছুটির দিনেও ঢাকার বাতাস এখন জীবনের জন্য হুমকিস্বরূপ নারিকেল দ্বীপ বাঁচানোর মিথ্যা প্রচারণার আগে সত্যিকার অর্থে ঢাকাকে বাঁচাতে হবে। ইনশাআল্লাহ!
১৭ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার)