নছীহতে কায়িম মাকামে উম্মাহাতুল মু’মীনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল উমাম আলাইহাস সালাম
যারা দুনিয়া হাছিলের প্রতিযোগীতায় লিপ্ত হবে তারা ধ্বংসপ্রাপ্ত হবে
৬ই সফর, ১৪৪২ হিজরী (ইয়াওমুল খমীস)
, ০৪ জুমাদাল ঊখরা শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ১৯ সাবি’ ১৩৯১ শামসী সন , ১৮ ডিসেম্বর, ২০২৩ খ্রি:, ০৩ পৌষ, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) মহিলাদের পাতা
عَنْ عَمْرِو بْنِ عَـوْفٍ رَضِىَ اللّٰهُ تَـعَالٰى عَـنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللّٰهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَـوَاللّٰهِ لَا الْفَقْرُ أَخْشٰى عَلَـيْكُمْ وَلٰكِنْ أَخْشٰى عَلَيْكُمْ أَنْ تُــبْسَطَ عَلَـيْكُمُ الدُّنْــيَا كَمَا بُسِطَتْ عَلٰى مَنْ كَانَ قَــبْـلَكُمْ فَــتَــنَافَسُوْهَا كَمَا تَــنَافَسُوْهَا وَتُـهْـلِكَكُمْ كَمَا أَهْلَكَـتْـهُمْ. (متفق عليه)
হযরত আমর বিন আউফ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, মহান আল্লাহ পাক উনার রসূল নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, মহান আল্লাহ পাক উনার কসম! আমি তোমাদের (জন্য) দারিদ্রতার ভয় করি না বরং দুনিয়াকে তোমাদের উপর প্রশস্ত করে দেয়ার ভয় করি; যেমন তোমাদের পূর্ববর্তীদের উপর প্রশস্ত (বৃদ্ধি) করে দেয়া হয়েছিল। (তখন) তোমরা তা লাভ করার জন্য প্রতিযোগীতায় লিপ্ত হবে, যেমন তোমাদের পূর্ববর্তীরা লিপ্ত হয়েছিল। তারপর এই দুনিয়া তোমাদেরকে ধ্বংস করে দিবে যেমন তাদেরকে ধ্বংস করে দেয়া হয়েছিল। নাঊযুবিল্লাহ!
[বুখারী ও মুসলিম শরীফ]
উল্লেখ্য, দুনিয়া হলো ‘দারুল গুরুর’ তথা ধোঁকা বা প্রতারণার ঘর। দুনিয়া প্রশস্ত হলে মানুষ দুনিয়ার দিকে ঝুঁকে গিয়ে তা লাভ করার প্রতিযোগীতায় লিপ্ত হবে। তারপর সে মহান আল্লাহ পাক উনাকে ভুলে যাবে এবং ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এজন্য নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বলেছেন যে, আমি তোমাদের দারিদ্রতার ভয় করি না, তোমাদের উপর দুনিয়া প্রশস্ত হওয়ার ভয় করি।
বর্তমানে মানুষ দুনিয়ার নাম-ধাম, সুনাম-সুখ্যাতি অর্জনের জন্য প্রতিযোগীতায় লিপ্ত। কে কয়টি বাড়ি-ঘর করতে পারে, জায়গা-জমি কিনতে পারে, সম্পদ বৃদ্ধি করতে পারে, ছেলে-মেয়েদেরকে ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, উকিল, ব্যারিস্টার বানাতে পারে এই প্রতিযোগীতায় লিপ্ত থাকে; এগুলোই হলো দুনিয়া। কেননা এগুলো তাদেরকে মহান আল্লাহ পাক উনার থেকে গাফিল করে রাখে। প্রকৃতপক্ষে, বান্দার জন্য দায়িত্ব-কর্তব্য বা ফরয হলো মহান আল্লাহ পাক উনার মুহাব্বত-মা’রিফত, তায়াল্লুক-নিসবত, কুরবত, সন্তুষ্টি মুবারক হাছিল করার প্রতিযোগীতায় লিপ্ত থাকা।
পবিত্র হাদীছ শরীফে বর্ণিত রয়েছে,
عَنْ عَـبْدِ اللّٰهِ بْنِ مَسْعُوْدٍ رَضِىَ اللّٰهُ تَـعَالٰى عَـنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللّٰهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَا تَــتَّخِذُوا الضَّـيْـعَةَ فَــتَـرْغَـبُـوْا فِـي الدُّنْـيَا. (رواه الترمذي وأحـمد)
হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসঊদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, মহান আল্লাহ পাক উনার রসূল নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, তোমরা ক্ষেত-খামার, জায়গা-জমি ইত্যাদি গ্রহণ করো না, তাহলে দুনিয়ার প্রতি ঝুঁকে পড়বে বা আকৃষ্ট হয়ে পড়বে।
[তিরমিযী শরীফ, আহমাদ শরীফ]
অর্থাৎ যদি তোমরা দুনিয়ার দিকে ঝুঁকে পড়ে জায়গা-জমি, ক্ষেত-খামার ইত্যাদি নিয়ে ব্যস্ত থাকো তাহলে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া ছাড়া আর কোনো উপায় থাকবে না। কারণ দুনিয়া ধ্বংস প্রাপ্ত, ফলে দুনিয়াকে যারা গ্রহণ করবে তারাও ধ্বংস হবে। তবে শরীয়ত মুতাবিক পর্দার সাথে থাকার জন্য বাড়ি-ঘরের প্রয়োজন আছে আর মহান আল্লাহ পাক উনার পথে খরচ করার জন্য জায়গা-জমি, ক্ষেত-খামারেরও প্রয়োজন আছে। তাই পরকালে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া থেকে বেঁচে থাকতে হলে, এসব দুনিয়াবী সম্পত্তি গড়ার প্রতিযোগীতায় লিপ্ত হয়ে মহান আল্লাহ পাক উনার স্মরণ থেকে গাফিল হওয়া যাবে না। বরং বাড়ি-ঘর, জায়গা-জমি, ক্ষেত-খামার ইত্যাদি সবই মহান আল্লাহ পাক উনার ইবাদত-বন্দেগীর জন্য কাজে লাগাতে হবে।
মহান আল্লাহ পাক তিনি যেন আমাদেরকে দুনিয়ার মুহাব্বত থেকে হিফাযত করে মহান আল্লাহ পাক এবং উনার হাবীব নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের মা’রিফত, মুহাব্বত, তায়াল্লুক, নিসবত, কুরবত মুবারক হাছিল করার তাওফীক্ব দান করেন। (আমীন)
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম উনার একখানা বিশেষ স্বপ্ন মুবারক
২৫ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনারা অন্য কারো মতো নন; উনারা বেমেছাল শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত মুবারক উনার অধিকারিণী
২৫ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
কিভাবে প্রথম মাসে আপনার শিশুর বিকাশে সাহায্য করবেন?
২৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
‘ই’জায শরীফে সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল উমাম আলাইহাস সালাম
২৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
সন্তানদের ও পরিবারের সকলকে সালাম দেয়া শিক্ষা দান করুন
২৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের বেমেছাল দানশীলতা মুবারক (৪)
২৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
কাফের বিশ্বে নারীরা শুধু কি এখন নির্যাতনের শিকার হচ্ছে?
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
একজন দ্বীনদার পরহেযগার আল্লাহওয়ালী মহিলা উনার পর্দা পালনের বেমেছাল দৃষ্টান্ত
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
প্রসঙ্গ মহিলা জামাত নাজায়িজ
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
পিতা-মাতার প্রতি সন্তানের দায়িত্ব-কর্তব্য
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
শৈশবকাল থেকেই সন্তানকে দ্বীনদার হওয়ার শিক্ষা দান করতে হবে
২০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
সম্মানিতা মহিলা আউলিয়া-ই কিরাম উনাদের পরিচিতি
১৯ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার)