মৃত ব্যক্তির কবরে তালক্বীন দেয়া খাছ সুন্নত মুবারক (২)
, ২০ শাওওয়াল শরীফ, ১৪৪৪ হিজরী সন, ১১ ছানী ‘আশির, ১৩৯০ শামসী সন , ১১ মে, ২০২৩ খ্রি:, ২৮ বৈশাখ, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) মহিলাদের পাতা
وكيفيته أن يقال يا فلان ابن فلان أذكر دينك الذي كنت عليه في دار الدنيا بشهادة أن لا إله إلا الله وأن محمدا رسول الله صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ
অর্থ: তালক্বীন করার নিয়ম হলো- কোনো একজন, মৃত ব্যক্তিকে উদ্দেশ্য করে বলবে-
“হে অমুকের সন্তান অমুক” (তুমি এই সময় স্বরণ করো/বলো) দুনিয়ায় থাকাকালীন অবস্থায় তুমি যার উপর কায়িম ছিলে অর্থাৎ মহান আল্লাহ্ পাক তিনি ব্যতীত কোন মা’বুদ নেই, আর অবশ্যই আখিরী রসূল, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মহান আল্লাহ পাক উনার রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। (মারাকিউল ফালাহ বি ইমদাদিল ফাত্তাহ শরহে নূরুল ইযাহ ওয়া নাজাতিল আরওয়াহ ১/২২৪)
তালক্বীন দেয়া প্রসঙ্গে কিতাবে আরো বর্ণিত রয়েছে যে, মৃতের দাফনের পরে তার কোন পরহেযগার আত্মীয় বা বন্ধু তার বক্ষ বরাবর দাঁড়িয়ে নিম্নোক্ত দোয়া তালক্বীন করবে-
يا عبد الله قل اشهد ان لا اله الا الله وان محمدا رسول الله صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ان الجنة حق والنار حق والبعث حق وان الساعة اتية لا ريب فيها وان الله يبعث من فى القبور وقل رضيت بالله ربا وبالاسلام دينا وبمحمد صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ نبيا وبالقران اماما وبالكعبة قبلة وبالمؤمنين اخوانا.
অর্থ: “হে মহান আল্লাহ্ পাক উনার বান্দা! তুমি বলো, আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, মহান আল্লাহ্ পাক তিনি ব্যতীত কোন ইলাহ্ (মা’বুদ) নেই। আর নিশ্চয়ই নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মহান আল্লাহ্ পাক উনার রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। নিশ্চয়ই জান্নাত সত্য, জাহান্নাম সত্য, মৃত্যুর পর পুনরুত্থান সত্য। আর নিশ্চয়ই ক্বিয়ামত সংঘটিত হবেই এতে কোন প্রকার সন্দেহ নেই; এবং নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ্ পাক তিনি কবরবাসীকে উঠাবেন।
সুতরাং তুমি বলো, আমি মহান আল্লাহ্ পাক উনাকে রব হিসেবে, পবিত্র ইসলাম উনাকে দ্বীন হিসেবে, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে সম্মানিত নবী ও রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হিসেবে, পবিত্র কুরআন শরীফ উনাকে পথ প্রদর্শক হিসেবে, পবিত্র কা’বা শরীফ উনাকে ক্বিবলা হিসেবে এবং মু’মিনগণকে ভাই হিসেবে সন্তুষ্ট চিত্তে মেনে নিয়েছি। (আল আযকারুন নবুবিয়্যাহ)
কিতাবে আরো বর্ণিত রয়েছে-
يا عبد الله قل الله ربى ومحمد صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ نبى والاسلام دينى والقران امامى والكعبة قبلتى والمؤمنون اخوانى وانا اشهد ان لا اله الا الله وحده لاشريك له واشهد ان محمدا عبده ورسوله.
অর্থ: “হে মহান আল্লাহ্ পাক উনার বান্দা! তুমি বলো, মহান আল্লাহ্ পাক তিনি আমার রব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আমার সম্মানিত নবী ও রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, সম্মানিত ইসলাম আমার দ্বীন, পবিত্র কুরআন শরীফ আমার পথ প্রদর্শক, পবিত্র কা’বা শরীফ আমার ক্বিবলা এবং মু’মিনগণ আমার ভাই। আর আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, মহান আল্লাহ্ পাক তিনি ব্যতীত কোন ইলাহ্ (মা’বুদ) নেই, তিনি একক, উনার কোন শরীক নেই এবং আমি আরো সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, নিশ্চয়ই নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মহান আল্লাহ্ পাক উনার সম্মানিত হাবীব ও রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম।” (মাওয়াহিবুল জালীল লি শারহি মুখতাছিরুল খলীল)
“তালক্বীন” সম্পর্কে হাফিযুল হুফ্ফায, সুলত্বানুল আরিফীন হযরত ইমাম জালালুদ্দীন সুয়ূতী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বর্ণনা করেন,
“যখন মৃত ব্যক্তিকে তালক্বীন করবে তখন তার মায়ের নাম নিয়ে বলবে, হে অমুকের সন্তান অমুক! তুমি বলো। আর যদি মায়ের নাম জানা না থাকে তাহলে উম্মুল বাশার হযরত হাওওয়া আলাইহাস্ সালাম উনার নাম মুবারক ধরে বলবে যে, হে অমুকের সন্তান অমুক! তুমি বলো- ربى الله (রব্বিইয়াল্লাহ্)- “আমার রব হচ্ছেন মহান আল্লাহ্ পাক তিনি।” ودينى الاسلام. (ওয়া দ্বীনিয়্যাল ইসলাম) “আমার দ্বীন হচ্ছেন ইসলাম”। نبى محمد رسول الله صلى الله عليه وسلم. (নাবিয়্যী মুহাম্মাদুর রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) “আমার সম্মানিত নবী ও রসূল হচ্ছেন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি।”
আর কোন কোন বর্ণনায় উল্লেখ করা হয়েছে যে, প্রথমে তিনবার لَا إلَهَ إلَّا اللَّهُ (লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু) বলবে এবং কোন কোন বর্ণনায় আছে তিনবার -لَا إلهَ إلَّا اللَّهُ مُحَمَّد رَسُولُ اللَّه صلى الله عليه وسلم (লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রসূলুল্লাহ্ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলে উপরোক্ত কথাগুলো বলবে।
তালক্বীন করার নিয়ম হলো-
মাইয়্যেতকে দাফন করার পর উপস্থিত ব্যক্তিবর্গ থেকে একজন প্রশ্ন করবে- من ربك. (মার রব্বুকা) তোমার রব কে? অন্যান্য সকলেই বলবে- ربى الله. (রব্বিইয়াল্লাহ) আমার রব মহান আল্লাহ পাক তিনি।
এরপর বলবে- ومن نبيك.(ওয়া মান নাবিয়্যুকা) তোমার সম্মানিত নবী কে? অন্যান্য সকলেই বলবে- نبى محمد رسول الله صلى الله عليه وسلم (নাবিয়্যী মুহাম্মাদুর রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমার সম্মানিত নবী হচ্ছেন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি।
অতঃপর বলবে- وما دينك. (ওয়ামা দ্বীনুকা) তোমার সম্মানিত দ্বীন কি? সকলেই বলবে- دينى الاسلام. (দ্বীনিয়্যাল ইসলাম) আমার দ্বীন হচ্ছেন পবিত্র ইসলাম।
এভাবে তিন বার বলবে অতঃপর ছাওয়াব রেসানী করে দোয়া মুনাজাত করবে। (চলবে)
-হাফিযুল হাদীছ মুহম্মদ ফজলুল হক্ব
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
কিভাবে প্রথম মাসে আপনার শিশুর বিকাশে সাহায্য করবেন?
২৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
‘ই’জায শরীফে সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল উমাম আলাইহাস সালাম
২৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
সন্তানদের ও পরিবারের সকলকে সালাম দেয়া শিক্ষা দান করুন
২৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের বেমেছাল দানশীলতা মুবারক (৪)
২৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
কাফের বিশ্বে নারীরা শুধু কি এখন নির্যাতনের শিকার হচ্ছে?
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
একজন দ্বীনদার পরহেযগার আল্লাহওয়ালী মহিলা উনার পর্দা পালনের বেমেছাল দৃষ্টান্ত
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
প্রসঙ্গ মহিলা জামাত নাজায়িজ
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
পিতা-মাতার প্রতি সন্তানের দায়িত্ব-কর্তব্য
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
শৈশবকাল থেকেই সন্তানকে দ্বীনদার হওয়ার শিক্ষা দান করতে হবে
২০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
সম্মানিতা মহিলা আউলিয়া-ই কিরাম উনাদের পরিচিতি
১৯ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
স্বচক্ষে দেখা কিছু কথা
১৯ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
পারিবারিক তা’লীমের গুরুত্ব ও তারতীব
১৮ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার)