ইতিহাস
মুসলমানদের শক্তিশালী সামরিক বিভাগের সমৃদ্ধ ইতিহাস
, ১৯ যিলহজ্জ শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ২৮ আউওয়াল, ১৩৯২ শামসী সন , ২৬ জুন, ২০২৪ খ্রি:, ১২ আষাঢ়, ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) ইতিহাস
ইসলামী ইতিহাসের একটি বৃহৎ অংশ অধিকার করে আছে সামরিক বিভাগ। সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার সূচনা মুবারক থেকেই সামরিক খাতে অসামান্য পারদর্শিতা এবং সফলতা দেখিয়েছেন মুসলমানরা।
৬৭২ হিজরীর বিভিন্ন ঘটনাবলি থেকে বোঝা যায়, যুদ্ধক্ষেত্রে মুসলমানরা সপ্তম শতাব্দি থেকেই কামানের সাথে পরিচিত। তখন থেকেই যুদ্ধক্ষেত্রে বারুদ ধেকে উৎসারিত বোমার ব্যবহারে অভ্যস্ত ছিল মুসলিম বাহিনী।
মামলুক সালতানাতের শাসনামলেও প্রচুর পরিমাণে কামানের ব্যবহারের তথ্য পাওয়া যায়। উনারা নানা শক্তির, নানা বৈশিষ্ট্যের কামান আবিষ্কার করতে সক্ষম হন। এর মধ্যে কিছু ছিল ছোট প্রকৃতির, আর কিছু বড় প্রকৃতির কামান। সুবহুল আ’শা গ্রন্থে বিখ্যাত সমরবিদ আল কালকাশান্দি রহমাতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, সেই কামান ছিল নানা প্রকৃতির। কিছু কামান থেকে বড় আকারে তির বা গোলা ছোড়া হতো। যা পাথরকে পর্যন্ত ভেদ করতে পারতো। আর কিছু কামান থেকে মিশরে প্রচলিত রিতিল মতে দশ রিতিল থেকে শুরু করে একশ রিতিল পরিমাণ ওজনের লৌহধাতু নিক্ষেপ করা হতো।
আশরাফী সালতানাতের আমির সালাহউদ্দিন ইবনে আরামের সহযোগী শাবান ইবনে হুসাইনের শাসনামলে আলেকজান্দ্রিয়ায় তামা ও সিসা দিয়ে বিশেষ এক ধরণের কামান তৈরি করা হতো, যা লোহার শিকল দিয়ে বেষ্টিত ছিল। একটি উন্মুক্ত প্রান্তুরে তা থেকে বিশাল আকারে ভারী গোলা ছোড়া হতো যা আলেকজান্দ্রিয়ায় অবস্থিত বাবুল বাহার নামক কবরস্থানের বাহিরে অবস্থিত বাহরুস সিলাসিলা নামক সাগরের একবারে গভীরে গিয়ে পড়ত। যার দূরত্ব অনেক বেশি ছিলো।
উনার বিবৃতি থেকে বোঝা যায়, সে সময় দুই ধরনের কামানের প্রচলন ছিল। একপ্রকার কামান থেকে বিশাল আকারের তির ছোড়া হতো যা ক্ষিপ্র গতিতে লক্ষ্যভেদ করতো। আরেক প্রকার কামান থেকে জ্বলন্ত লৌহ ধাতুর গোলা নিক্ষেপ করা হতো। উভয় প্রকার কামানই তীব্র গতিতে দূরবর্তী গন্তব্যে আঘাত হানতো। কালকাশান্তি রহমাতুল্লাহি আলাইহি তিনি নিজেই ওই ঘটনা প্রত্যক্ষ করেছেন সেই ৭৭৫ হিজরীতে। এ থেকেই বোঝা যায়, মুসলমানরা নানা যুদ্ধ সরঞ্জাম ও ক্ষেপণাস্ত্র আবিষ্কার করে সেগুলো প্রয়োগ করে আসছেন বহু আগে থেকেই।
মুসলমানরা শক্তি-সামর্থ্য ও সেনাবাহিনীর সংখ্যার বিচারে এগিয়ে থাকা অনেক সামরিক শক্তিকে আকাশ থেকে মাটিতে নামিয়ে পৃথিবীর মানচিত্র থেকে তাদের নামনিশানা মুছে দিয়েছেন। মুসলমানদের ইতিহাস, ঐতিহ্য, বিজয়ের উপাখ্যান সম্পর্কে যারা অবগত আছেন তারা এই বিষয়টি ভালোভাবেই জানেন। এখান থেকেই বোঝা যায়, বুদ্ধিবৃত্তিক সমন্বয় রক্ষা, দূরদর্শী পরিকল্পনা প্রণয়ন, সামরিক প্রস্তুতি ও অত্যাধুনিক সমরাস্ত্র উদ্ভাবনের বিচারে সম্মানিত ইসলামী শাসনগুলোতে মুসলিম সেনাবাহিনীর ভাবমর্যাদা কতটা উজ্জ্বল ছিলো!
-মুহম্মদ শাহজালাল।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
সম্মানিত খিলাফত মুবারক উনার সময়কার একটি ঈমানদীপ্ত ঘটনা
২১ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশে ভারতীয় লুটেরা সেনাবাহিনীর নজীরবিহীন লুটপাটের ইতিহাস
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার ইতিহাসে স্বর্ণ পরিশোধন ও রফতানি
১২ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
দিল্লির সুলতান হযরত শামসুদ্দীন আলতামাশ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার গুনাহমুক্ত জীবন
০৬ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
তাতার বিরোধী যুদ্ধে হযরত আমীর খসরু দেহলভী চিশতী রহমতুল্লাহি আলাইহি
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
আজকের নগরসভ্যতার জনক মুসলমানগণই
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
আফগানিস্তানেও উগ্রতাবাদী ওহাবী-সালাফীদের অনুপ্রবেশের অপচেষ্টা
২৮ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
ঐতিহাসিক হেজাজ রেলওয়ে” যে রেলপথকে বলা হয় ‘বিশ্বের সব মুসলমানের সম্পত্তি’
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
মুসলমানগণই আধুনিক কাগজ শিল্পের প্রতিষ্ঠাতা
১৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
ইতিহাস চর্চা ও সংরক্ষণে মুসলমানদের অবদান
১০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে যেসব পদক্ষেপ নিয়েছিলেন সুলতান আলাউদ্দিন খিলজি
০৭ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
মুসলিম সোনালী যুগের পাঠাগার
০৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার)