ইতিহাস
মুসলমানগণই আধুনিক কাগজ শিল্পের প্রতিষ্ঠাতা
, ১১ ই জুমাদাল ঊলা শরীফ, ১৪৪৬ হিজরী সন, ১৭ সাদিস, ১৩৯২ শামসী সন , ১৪ নভেম্বর, ২০২৪ খ্রি:, ২৯ কার্তিক, ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) ইতিহাস
মানুষের দৈনন্দিন জীবনে কাগজ অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। আধুনিক সভ্যতার বিকাশে যার ভূমিকা অপরিসীম। আর মুসলমানদের হাতেই সূচনা হয় আধুনিক কাগজশিল্পের। ইতিহাসমতে, বাগদাদে কাগজ উৎপাদন শুরু হলে তা সর্বসাধারণের নাগালে আসে এবং কাগজের বহুল ব্যবহার শুরু হয়। মুসলিমরাই আফ্রিকা ও ইউরোপ মহাদেশের মানুষকে কাগজের ব্যবহার শিখিয়েছেন।
আব্বাসীয় শাসক আল-মানসুর সর্বপ্রথম সালতানাতের সব কাজে কাগজ ব্যবহারের নির্দেশ দেন। বাদশাহ হারুনুর রশিদের সময় ৭৯৪ সালে বাগদাদে মতান্তরে সমরকান্দে মুসলিম বিশ্বের প্রথম কাগজের কল প্রতিষ্ঠিত হয়। হারুনুর রশিদ তাঁর প্রধানমন্ত্রী ফজল ইবনে ইয়াহইয়াকে এই দায়িত্ব অর্পণ করেন। এরপর ধীরে ধীরে দামেস্ক, ত্রিপলি, কায়রো, কর্ডোভা, হামা, মানবিজসহ অন্যান্য শহরেও কাগজের কল প্রতিষ্ঠিত হয়।
মিসরের মুসলিম শাসকরা ৮৫০ সালে কায়রোতে আফ্রিকার প্রথম কাগজ কল প্রতিষ্ঠা করেন এবং ৯৫০ সালে মুসলিম স্পেনে প্রতিষ্ঠিত কাগজ কলটিও ছিল ইউরোপের মাটিতে প্রথম কাগজ কল। প্রকৃতপক্ষে দ্বাদশ শতাব্দীর আগে ইউরোপে কাগজে লেখা কোনো বইয়ের অস্তিত্ব পাওয়া যায় না।
দশম খ্রি: রচিত ‘হুদুদুল আলম’ নামক গ্রন্থে কাগজ উৎপাদনে সমরকান্দের শ্রেষ্ঠত্ব দাবি করা হয়েছে। লেখকের মতে, সমকালীন মুসলিম বিশ্বের সবচেয়ে উন্নত কাগজ সমরকান্দে উৎপাদিত হতো এবং সেখান থেকে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে রপ্তানি হতো। কাগজ উৎপাদনে সমরকান্দের পর ছিল দামেস্কের স্থান। ইউরোপের কাগজের প্রধান উৎস ছিল দামেস্ক।
বাগদাদে কাগজ উৎপাদন শুরু হওয়ার আগে মুসলিম বিশ্বে জ্ঞানচর্চায় ‘পার্চমেন্ট’ (চামড়া থেকে তৈরি কাগজবিশেষ) ছিল জ্ঞানচর্চা ও গ্রন্থ রচনার প্রধান অবলম্বন। বাগদাদে কাগজ কল স্থাপিত হওয়ার পর জ্ঞানচর্চায় কাগজের ব্যাপক ব্যবহার শুরু হয়। আল্লামা ইবনে খালদুন বলেন, অষ্টম খ্রি: জ্ঞানচর্চায় পার্চমেন্টের ব্যবহার বিরল হয়ে যায়। মুসলিমরাই প্রথম কাগজের তৈরি, মলাট বিশিষ্ট ও এক পাশে বাঁধাই করা বই উৎপাদন শুরু করেন। ৫০০ পৃষ্ঠার কাগজের সমষ্টিকে যে ‘রিম’ বলা হয় তা-ও আরবি ‘রিজমা’ শব্দ থেকে এসেছে। সাধারণ বই-পুস্তকের মতো পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র হাদীছ শরীফ কিতাবও কাগজে লেখা হতো। এখন পর্যন্ত আবিষ্কৃত পবিত্র কালামুল্লাহ শরীফ উনার কাগজের অনুলিপিটি ৯৭১ সালে আলী ইবনে সাদান আর-রাজি প্রস্তুত করেন।
-মুহম্মদ শাহ জালাল।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
ইতিহাস চর্চা ও সংরক্ষণে মুসলমানদের অবদান
১০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে যেসব পদক্ষেপ নিয়েছিলেন সুলতান আলাউদ্দিন খিলজি
০৭ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
মুসলিম সোনালী যুগের পাঠাগার
০৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
আগলাবী সালতানাতের মুসলিম নৌবহর (১)
৩১ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
কায়রোর ঐতিহাসিক আল আযহার জামে মসজিদ ও বিশ্ববিদ্যালয়
২৯ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
স্বর্ণালী যুগে মুসলমানদের বিজয় রহস্য এবং বিধর্মীদের স্বীকারোক্তি (১)
২৯ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
পারস্যের এক গভর্নরের সম্মানিত দ্বীন ইসলাম গ্রহণের ঘটনা
২৩ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
পবিত্র আযানের জন্য ২২ জন মুসলমানের শহীদ হওয়ার ঈমানদীপ্ত ঘটনা
১২ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
সুলতান আব্দুল হামিদ ছানী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার ইহুদীবাদী ইসরাইলের বিরুদ্ধে দৃঢ়চিত্ততা (বিস্তারিত)
০৯ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
যুগে যুগে পবিত্র সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ পালনের ইতিহাস (২)
২৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
যুগে যুগে পবিত্র সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ পালনের ইতিহাস (১)
২৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
নেপোলিয়নের সম্মানিত দ্বীন ইসলাম গ্রহণ এবং ১২ই শরীফ পালন নিয়ে ঐতিহাসিক তথ্য
২৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার)