মুরগির খামারিদের জন্য প্রতারণার ফাঁদ ‘কন্ট্রাক্ট ফার্মিং’
, ০৩ রমাদ্বান শরীফ, ১৪৪৪ হিজরী সন, ২৬ ‘আশির, ১৩৯০ শামসী সন , ২৬ মার্চ, ২০২৩ খ্রি:, ১২ চৈত্র, ১৪২৯ ফসলী সন, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) দেশের খবর
নিজস্ব প্রতিবেদক:
সাম্প্রতিক বাজার পরিস্থিতি আমলে নিয়ে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর থেকে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে একটি প্রতিবেদন পাঠানো হয়েছে। এতে বলা হয়, দেড় থেকে দুই মাসের ব্যবধানে ব্রয়লার মুরগির দাম হয়েছে দ্বিগুণ। এ দাম অযৌক্তিক। কারণ, খাবারসহ অন্য ব্যয় বাড়ার পরও এক কেজি ব্রয়লার মুরগির উৎপাদন খরচ করপোরেট প্রতিষ্ঠান পর্যায়ে ১৩৫ থেকে ১৪০ টাকা। প্রান্তিক খামারি পর্যায়ে খরচ ১৫০ থেকে ১৬০ টাকা।
এমন পরিস্থিতিতে ভোক্তাদের প্রশ্ন, মুরগির অযৌক্তিক দাম কার্যকর করছে কারা। কারা সমন্বয় করে সারা দেশের মুরগির ব্যবসায়ীদের। কার ইশারায় চলছে বাজার। আর কোথায় যাচ্ছে মানুষের পকেট কেটে লুটে নেওয়া বাড়তি হাজার হাজার কোটি টাকা!
বাংলাদেশ পোল্ট্রি অ্যাসোসিয়েশনের দাবি, এখন প্রান্তিক খামারিদের কাছে মুরগি নেই। মুরগির বাজারের দুই-তৃতীয়াংশ সরবরাহ হচ্ছে করপোরেট প্রতিষ্ঠান ও প্রতিষ্ঠানগুলোর চুক্তিবদ্ধ খামারিদের মাধ্যমে।
সংগঠনটি বলছে, দেশের প্রান্তিক খামারিরা মুরগি ও ডিমের দাম না পেয়ে খামার বন্ধ করে দিয়েছে। এক লাখ ৬০ হাজার খামারের মধ্যে চালু আছে ৬০ হাজার। তারপরও সব খামারে মুরগি নেই।
সরাসরি মুরগি উৎপাদনে করপোরেট কোম্পানিগুলোর শেয়ার রয়েছে ২০-২৫ শতাংশ। তবে বাচ্চা, ফিড ও অন্য উপকরণ তাদের শতভাগ দখলে। এসব উপকরণ ব্যবহার করে যখন তারা গোশত ও ডিম উৎপাদনে যাচ্ছে, তখন সাধারণ খামারিরা টিকতে পারছে না। এর মধ্যে আবার করপোরেট কোম্পানিগুলো বন্ধ হওয়া খামারে কম মূল্যে ফিড ও বাচ্চা দিয়ে কন্ট্রাক্ট ফার্মিং করছে। সেজন্য নিয়ন্ত্রণ চলে যাচ্ছে তাদের হাতে বলে দাবি করছেন খামারিরা।
প্রতারণার ফাঁদ ‘কন্ট্রাক্ট ফার্মিং’:
গাজীপুরের খামারি সালাম মিয়া বলেন, নিজে মুরগি তুললে ৬৫ থেকে ৮৫ টাকা পর্যন্ত দাম দিয়ে বাচ্চা কিনতে হবে এখন। কন্ট্রাক্টে করলে কম দামে বাচ্চা-খাবার-ওষুধ সব দেবে কোম্পানি। পুঁজি স্বল্পতা ও বড় লোকসানের ভয়ে সবাই বাধ্য হয়ে কন্ট্রাক্ট ফার্মিং করছে।
তিনি জানান, বর্তমানে বাচ্চা ও ফিডের দামও এ যাবৎকালের সর্বোচ্চ। সে কারণে কেউ মুরগি পালন করতে সাহস পাচ্ছে না। কারণ সব খামারি মুরগি করলে দাম দ্রুত কমে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। করপোরেটরা সিন্ডিকেট করে।
জানা যায়, কন্ট্রাক্টে প্রতিষ্ঠানগুলো একই সঙ্গে মুরগির বাচ্চা, খাবার ও ওষুধ খামারিদের সরবরাহ করে। এসব কোম্পানি খামারিদের কাছে মুরগির বাচ্চা বিক্রি করে এই শর্তে যে শুধু তাদের কাছ থেকেই খাবার ও ওষুধ কিনতে হবে। খামারিরা শর্তে রাজি না হলে মুরগির বাচ্চা দেওয়া হয় না। ফলে কোম্পানির বেঁধে দেওয়া দামেই নিতে হচ্ছে বাচ্চা, খাবার ও ওষুধ। বিক্রিও হয় কোম্পানির নির্ধারিত দামে। সেক্ষেত্রে শুধু লালন-পালনের জন্য খরচ পায় খামারিরা।
খামারিরা বলছে, পোল্ট্রি শিল্পে নতুন এ ব্যবস্থা খামারি ও কোম্পানিগুলোর মধ্যে ‘চুক্তি’ হিসেবে পরিচিত। এতে লাভের গুড় খায় কোম্পানি। খামারি পায় বাচ্চা লালন-পালনের মজুরি মাত্র। সেজন্য কোনো খামারির শুধু মুরগি লালন-পালনের ঘর থাকতে হবে। বাকি অন্য সব কিছু যেমন মুরগির বাচ্চা, ফিড, টিকা, ওষুধ- সবই সরবরাহ করবে সংশ্লিষ্ট করপোরেট কোম্পানি। খামারিকে শুধু মুরগির লালন-পালন করে বড় করে তুলতে হবে। এরপর কেজিপ্রতি ১০ টাকা লাভ দিয়ে মুরগি নিয়ে যায় কোম্পানি। সেখানে খামারির কিছু করার থাকে না।
সুমন হাওলাদার জানান, দেশে কোম্পানির সঙ্গে চুক্তিভিত্তিক খামার আছে পাঁচ হাজারের মতো।
কন্ট্রাক্ট ছাড়া দাম বেশি বাচ্চা-ফিড-ওষুধের:
স্বতন্ত্র খামারিদের অভিযোগ, কন্ট্রাক্টে না গেলে তাদের কাছে খাবার, বাচ্চা বা ওষুধ বাড়তি দামে বিক্রি করা হয়। খোঁজ নিয়েও বিষয়টির প্রমাণ মিলেছে। মঙ্গলবার (২২ মার্চ) বাজারে কন্ট্রাক্ট ও স্বতন্ত্র খামারিদের বাচ্চার দামে পার্থক্য ছিল দ্বিগুণ। কয়েকজন খামারি জানান, কন্ট্রাক্টে প্রতিটি বাচ্চা এখন ৩৫ টাকা দর ধরা হচ্ছে, যেখানে ওইদিন স্বতন্ত্র খামারিদের জন্য প্রতিটি বাচ্চার দাম ছিল ৬৫ থেকে ৮০ টাকা পর্যন্ত।
একইভাবে খাবারের দাম কন্ট্রাক্টে দুই হাজার ৬শ টাকা ধরা হলেও সাধারণ খামারিরা কিনছেন তিন হাজার ৪শ থেকে তিন হাজার ৭৫০ টাকায়।
এসব বিষয়ে ভোক্তা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ এইচ এম সফিকুজ্জামান বলেন, একচেটিয়াভাবে মুরগির বাজার কারও দখলে চলে যাচ্ছে কি না, বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশনকে তা খতিয়ে দেখতে বলেছি। আগেও বলা হয়েছে। প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরকে কার্যকর দর নির্ধারণে বলা হচ্ছে বারবার।
পোল্ট্রি পণ্যের দাম সহনীয় রাখতে ২০১০ সালে প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় একটি কমিটি গঠন করেছিল। কমিটির একটি কৌশলপত্র তৈরি করার কথা ছিল। ওই সময় কমিটিকে একদিনের বাচ্চার দাম নির্ধারণ এবং বাজার মনিটর করে ডিম-মুরগির দাম নির্ধারণে সরকারকে সহায়তা করার দায়িত্বও দেওয়া হয়। কিন্তু গত এক যুগেরও বেশি সময় এই কমিটি ডিম-মুরগির দাম নির্ধারণ বা নিয়ন্ত্রণে কোনো ভূমিকা রাখেনি।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
অন্তর্র্বতী সরকারের অধীনে স্থানীয় সরকার নির্বাচন -ভিন্নমত বিএনপিসহ বেশিরভাগ দলের
১০ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
অনির্দিষ্টকালের জন্য সারা দেশে রেস্তোরাঁ বন্ধের হুঁশিয়ারি
১০ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
সীমান্তে অতন্দ্র প্রহরী জনগণ, রাজনৈতিক দলের কোনো ভূমিকা নেই
১০ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
রেস্টুরেন্টের খাবারসহ প্রায় ১০০ পণ্যে খরচ বাড়ছে
১০ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
ঢামেকের মর্গে আন্দোলনের সময় নিহত বেওয়ারিশ ৬ লাশ
১০ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
দ্বীন ইসলাম অবমাননা করায় শ্রীলঙ্কার এক সন্ন্যাসীর জেল
১০ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
সরকারের ঋণ ১৮ লাখ ৩২ হাজার কোটি টাকা
১০ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
সরকারি গুদামে ধান বিক্রিতে কৃষকের অনীহা, লক্ষ্যমাত্রা পূরণে শঙ্কা
১০ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
শেখ হাসিনা ১২ জানুয়ারি ভার্চুয়াল বৈঠকে ভাষণ দিবেন, এনিয়ে আওয়ামী লীগে যা চলছে
১০ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে অ্যালার্ম ও নাইট ভিশন ক্যামেরা বসাল বিএসএফ
১০ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
‘হুথির ক্ষেপণাস্ত্র আটকানোর সক্ষমতা ইসরাইলের নেই’
১০ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
ভারতীয় আগ্রাসনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে রাজধানীর রাজারবাগ শরীফে প্রতিবাদ মিছিল
১০ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার)