মারাত্মক গ্যাস সংকটে মানুষের খাওয়া-দাওয়া বন্ধ। গ্যাস অনুসন্ধানে সক্রিয় পদক্ষেপে সহজেই সমাধান সম্ভব।
, ০৯ রজবুল হারাম শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ২৪ সামিন, ১৩৯১ শামসী সন , ২২ জানুয়ারি, ২০২৪ খ্রি:, ০৭ মাঘ, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) সম্পাদকীয়
দেশে তীব্র গ্যাস সংকট চলছে। সংকটের কারণে অনেক শিল্পপ্রতিষ্ঠানের উৎপাদন বন্ধ হয়ে গেছে। গত পরশু শুক্রবার বন্দরনগরী চট্টগ্রামে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ হয়ে গেছে। ঢাকার কোনো কোনো এলাকার বাসিন্দারা কিছু গ্যাস পেলেও অনেক এলাকার পাইপলাইনে গ্যাস মিলছে না। ঢাকার বাইরেও কিছু এলাকায় গত কয়েকদিনে গ্যাস সংকট তীব্র আকার ধারন করেছে। ফলে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন গ্রাহকরা। হোটেলে গিয়েও খাবার পাচ্ছে না তারা।
সংকটের কারণ সম্পর্কে তিতাসের কর্মকর্তারা জানায়, এখন ৩৮০ কোটি ঘনফুট গ্যাসের চাহিদা রয়েছে। গত বছরের শেষ দিকে পাওয়া যেতো ২৮০ কোটি ঘনফুট গ্যাস। পরবর্তী সময়ে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৩০০ থেকে ৩২০ কোটি ঘটফুট। কিন্তু এতেও প্রয়োজন মেটানো সম্ভব হয়নি। এখন সরবরাহ আবারো ২০০ কোটি ঘনফুটের নিচে নেমে এসেছে। সরবরাহ কম থাকায় গ্রাহকদেরও নিরবচ্ছিন্নভাবে সব জায়গায় গ্যাস সরবরাহ করা সম্ভব হচ্ছে না। এর প্রধান কারণ হচ্ছে- তিতাস পেট্রোবাংলার কাছ থেকে যে পরিমাণ গ্যাস পাওয়া যায় তা ঢাকা ও আশেপাশের এলাকায় সরবরাহ করে। তিতাস নিজে গ্যাস উৎপাদন করে না। যে পরিমাণ গ্যাস পেট্রোবাংলার কাছ থেকে পাওয়া যায় তা থেকে অগ্রাধিকারভিত্তিতে শিল্প-কারখানায় গ্যাস সরবরাহ করতে হয়। তখন বাসাবাড়িতে গ্যাস সরবরাহ কমিয়ে দিতে হয়। যখন সিএনজি স্টেশনগুলোতে গ্যাস সরবরাহ করা হয়, তখনো কোনো কোনো এলাকার আবাসিক গ্রাহকদের লাইনে গ্যাসের চাপ কমে যায়।
কর্মকর্তারা আরো বলে, তিতাসের জরুরি অভিযোগ কেন্দ্রে প্রতিদিন অসংখ্য ফোন কল রিসিভ করা হয়। অভিযোগের শেষ নেই। গত নভেম্বর মাস থেকেই গ্যাসের সরবরাহ কম পাওয়ায় তিতাসের গ্যাসের চাপ কম।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশের মাটির নিচে প্রচুর ভূসম্পদ রয়েছে। বিদেশি প্রতিষ্ঠানগুলোও নিশ্চিত করেছে যে, দেশে কী পরিমাণ গ্যাসের সম্ভাবনা রয়েছে।
বিশ্বের অন্যান্য যেসব দেশে গ্যাসের সম্ভাবনা আমাদের মতো, তারা অনেক দূর এগিয়ে গেছে। কারণ, তারা আমাদের মতো মাটির নিচে সম্পদ রেখে আমদানিতে ঝুঁকে যায়নি। সাগরের তলদেশে জ্বালানির সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও আমরা তার যথাযথ ব্যবহার করতে পারছি না। কিন্তু অতীত থেকে বর্তমান কোনো সরকারই বিষয়টিকে গুরুত্বসহকারে নেয়নি।
বাংলাদেশে গ্যাসকূপ অনুসন্ধানের হার প্রতি বছরে ১টা। এটা খুবই নিম্নমানের। এটা কোনো জোরালো অনুসন্ধানের ধারেকাছেও নেই। প্রতি বছর যদি ৫-৬টা করে গ্যাসের অনুসন্ধান চালানো হয়, তাহলে আমার মতে পাঁচ বছরের মধ্যে দেশে গ্যাস সম্পদের অভাব থাকবে না।
দেশে মোট গ্যাসক্ষেত্র আছে ২৮টি। এর মধ্যে ২১টি থেকে বর্তমানে উৎপাদন করা হচ্ছে। দেশে গ্যাসের মোট মজুদ ২৮ টিসিএফ। এর মধ্যে প্রায় ১৯ টিসিএফ উৎপাদন করা হয়েছে। মজুদ বাকি আছে আর ৯ টিসিএফ। বছরে প্রায় ১ টিসিএফের মতো উৎপাদন করা হচ্ছে। এতে নতুন গ্যাস যুক্ত না হলে ২০২৫ সালের পর থেকে উৎপাদন অনেক কমে যাবে।
২০১০ সালে মার্কিন প্রতিষ্ঠান গুস্তাভসন অ্যাসোসিয়েটসের সমীক্ষা অনুযায়ী, দেশে গ্যাস পাওয়ার সম্ভাবনা ৯০ শতাংশ-এমন অনাবিষ্কৃত গ্যাসক্ষেত্রগুলোয় গ্যাস সম্পদের সম্ভাব্য মজুদের পরিমাণ ৩৮ টিসিএফের কিছু বেশি। ৫০ শতাংশ সম্ভাবনার গ্যাসক্ষেত্রগুলোয় সম্ভাব্য মজুদ প্রায় ৬৩ দশমিক ১৯ টিসিএফ। গুস্তাভসনসহ একাধিক প্রতিষ্ঠান সমীক্ষা চালিয়ে গ্যাস পাওয়ার সম্ভাবনার কথা বললেও সংশ্লিষ্টরা কোনো উদ্যোগ নেয়নি। এ কাজের জন্য নিজের তহবিল থাকলেও পেট্রোবাংলা গ্যাসের মজুদ সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের উদ্যোগ নেয়নি। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অনেক আগেই যা করার উচিত ছিল, তা অনেক পানিঘোলা করে করা হচ্ছে। স্থানীয় উৎস থেকে আমাদের তেল-গ্যাস পাওয়ার প্রচুর সম্ভাবনা রয়েছে, সেগুলো উত্তোলনের উদ্যোগ অনেক আগেই নেওয়া দরকার ছিল। আমদানি নির্ভরতা থেকে বেরিয়ে না এলে এবং নতুন নতুন ক্ষেত্র আবিষ্কারের মাধ্যমে অভ্যন্তরীণ চাহিদা মেটানোর সক্ষমতা তৈরি করা না গেলে আগামীতে আরও সঙ্কটে পড়বে জ্বালানি খাত।
আমাদের দেশের অর্থনীতির জন্য সবচেয়ে বড় ঝুঁকির কারণ জ্বালানিস্বল্পতা। কয়েক বছর ধরে সিরামিক, ইস্পাত, টেক্সটাইল প্রভৃতি গ্যাসনির্ভর শিল্প খাতের উৎপাদন প্রায় ৫০ শতাংশে নেমে এসেছে। গ্যাসের স্বল্পতা থাকায় শিল্পকারখানায় রেশনিং করা হচ্ছে। এতে রপ্তানিমুখী শিল্পগুলো গ্যাস পেলেও স্থানীয়, বিশেষ করে এসএমই বা ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পগুলো চাহিদামতো গ্যাস পাচ্ছে না। এই পরিস্থিতি শিল্পের জন্য ক্ষতির কারণ হয়ে উঠছে। সরকার গ্যাসের দাম অনেকটা বাড়িয়েও সরবরাহ নিশ্চিত করতে পারছে না, যদিও দাম বাড়ানোর সময় বলা হয়েছিল যে গ্যাসের নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহ নিশ্চিত করা হবে।
বাস্তবতা হলো, গ্যাসের নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহ নিশ্চিত করা যায়নি। বিশ্লেষকরা বলছেন, অতিরিক্ত আমদানিনির্ভরতাই দেশের বিদ্যুৎ ও জ্বালানিসংকটের বড় কারণ। প্রাকৃতিক গ্যাসের সরবরাহে সমস্যা এবং এর মূল্য বৃদ্ধির কারণেই বিশ্বব্যাপী এখন জ্বালানিসংকট দেখা দিয়েছে। ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে এ সংকট আরও প্রকট হয়েছে। তবে বাংলাদেশে তেল না থাকলে গ্যাস আছে। অথচ গ্যাস উত্তোলনে মনোযোগ না দিয়ে সরকার দেশের জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আমদানির ওপরই নির্ভরশীল থেকেছে। জ্বালানি হচ্ছে বিশ্বের সবচেয়ে বেশি অনির্ভরযোগ্য পণ্য। এর দর একই রকম থাকবে, এ দৃষ্টান্ত নেই। কিন্তু সরকার থেকে গেছে ঝুঁকিপূর্ণ আমদানির ভরসায়ই। ফলে যখন বিশ্বব্যাপী গ্যাসের সংকট দেখা দিয়েছে, তখন আর কম দামে এলএনজি পাচ্ছে না বাংলাদেশ। এতেই বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে, ঘনঘন লোডশেডিংয়ের অভিজ্ঞতা নিতে হচ্ছে সারাদেশের মানুষকে, ব্যাহত হচ্ছে শিল্প উৎপাদন।
সমস্যা-সংকট জীবন চলার অবিচ্ছেদ্য অংশ। সমস্যা থাকবেই। প্রয়োজন হচ্ছে সমস্যাকে যথার্থভাবে চিহ্নিত করা এবং তাকে আন্তরিকভাবে আমলে নিয়ে সমাধানের পথ খোঁজা। আমাদের শাসকগোষ্ঠীর দুর্বলতা হলো, কোনো সমস্যা চিহ্নিত ও প্রকাশ করার কাজটিকে তারা সরকারবিরোধিতা মনে করে। এটি মোটেও কাম্য নয়। আমরা আশা করব, সরকার গ্যাস সরবরাহের সংকটকে অধিকতর গুরুত্বের সঙ্গে চিহ্নিত করে এর সমাধানে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণে উদ্যোগী হবে ইনশাআল্লাহ।
ছহিবে সাইয়্যিদি সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ, রাজারবাগ শরীফ উনার মামদূহ মুর্র্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার নেক ছোহবত মুবারক-এ কেবলমাত্র তা লাভ করা সম্ভব। খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাদেরকে তা নছীব করুন। (আমীন)
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
দ্রব্যমূল্যের আগুনে ঝলসে যাচ্ছে মানুষ। মূল্যস্ফীতির চাপে পিষ্ট হচ্ছে জনসাধারণ। সরকারের কর্তাব্যক্তিদের রকমফের চটকদার কথার পরিবর্তে এক্ষনি মূল্যস্ফীতিকে সংকুচিত করে দেশবাসীকে বাঁচাতে হবে ইনশাআল্লাহ।
০৫ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
৭ হাজার ৮০০ মিলিয়ন টন কয়লা মজুদের দেশে কয়লার ঘাটতিতে বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র বন্ধ কেন? বিগত মাফিয়া সরকারের পথ থেকে সরে এসে কয়লা উত্তোলন শুরু করুন।
০৫ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
প্রসঙ্গঃ মোবাইল ফোনের ব্যবহার ও অপব্যবহার।
০৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
হোল্ডিং ট্যাক্স ছাড়, তাপ মুক্তি নিরাপদ ফল-সবজি প্রাপ্তি, পরিবেশ উন্নয়ন প্রক্রিয়ায় শহরের প্রতিটি বাড়ির ছাদ হোক একটুকরো বাগান
০৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
৪০ শতাংশের বেশি ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প বন্ধ হয়েছে যথাযথ পৃষ্ঠপোষকতা করলে ইনশাআল্লাহ ঘুরে দাঁড়াবে ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প
০৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
মুদি দোকান, স্টেশনারি দোকান, শপিং মল, পার্লার, সুপার শপ সবখানেই ভেজাল কসমেটিক্স। মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে ব্যবহারকারীরা। সরকারের কঠোর নজরদারী ও নিয়ন্ত্রণ প্রয়োজন।
০২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
দেশের ৪ কোটি মানুষ না খেয়ে থাকে। অথচ দেশে মাথাপিছু খাদ্য অপচয় হয় প্রায় ৯০ কেজি। বছরে ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ৩৫ হাজার কোটি টাকা।
০২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
আজ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ২৮শে রবীউছ ছানী শরীফ! সাইয়্যিদাতুনা উম্মুর রদ্বাআহ আল ঊলা আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত আওলাদ, আখু রসূলিল্লাহ মিনার রদ্বাআহ সাইয়্যিদুনা হযরত মাসরূহ্ আলাইহিস সালাম উনার বিছালী শান মুবারক প্রকাশ দিবস। সুবহানাল্লাহ!
০১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
শিক্ষা খাতে পতিত সরকারের বাজেটে নিম্নবিত্ত-মধ্যবিত্তদের স্বার্থ সংরক্ষিত হয়নি শিক্ষার্থীরা যাতে ঝরে না পড়ে- শিক্ষা উপকরণের দাম কমিয়ে বর্তমান সরকারকে তা নিশ্চিত করতে হবে ইনশাআল্লাহ
৩১ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
শব্দ দূষণ এখন শব্দ সন্ত্রাস ও নীরব ঘাতকে পরিণত হয়েছে। নারিকেল দ্বীপ নয় শব্দ দূষণে বিপর্যস্থ ঢাকাকে উপযোগী করার জন্য ঢাকার জনযট সারাদেশে ছড়িয়ে দিতে হবে।
৩১ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
‘২০৪১ সালে মাছ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ৮৫ লাখ মেট্রিক টন’ ৩৯ বছরের ব্যবধানে মাছের উৎপাদন বেড়েছে ৬ গুণ উৎপাদন বাড়ছে মাছের, তবুও নাগালে নেই দাম
৩০ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
নাটক-সিনেমার মাধ্যমে মুসলিম প্রজন্মকে দ্বীন ইসলাম থেকে দূরে সরিয়ে দেয়া হচ্ছে। পরকালের কথা স্বরণ করে মুসলিম উম্মাহকে বিধর্মীদের এসব ষড়যন্ত্র থেকে বের হয়ে আসতে হবে।
৩০ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার)