মাটি ও মানুষ বাঁচাতে এবং কমপক্ষে ১০ হাজার কোটি টাকার সমৃদ্ধি আনতে কেঁচো সারের দিকে যথাযথ দৃষ্টি দিতে হবে ইনশাআল্লাহ
, ১৩ ছফর শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ০১ রবি’ ১৩৯১ শামসী সন , ৩০ আগস্ট, ২০২৩ খ্রি:, ১৬ ভাদ্র, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) সম্পাদকীয়
খাদ্যে স্বয়ম্ভরতা অর্জনের জন্য প্রাকৃতিক ভূমিকে অধিক কর্ষণ আর অধিক রাসায়নিক সার ব্যবহার করতে করতে এক সময় মাটি তার উর্বরতা শক্তি হারিয়ে ফেলবে। তখন মাটি আর ফসল ফলাতে পারবে না।
মাটি বিশেষজ্ঞরা বলেন, উর্বর মাটিতে ৫ শতাংশ জৈব পদার্থ থাকা প্রয়োজন। এতে মাটিতে পানির ধারণক্ষমতা যেমন থাকে, এতে বাতাস চলাচলেরও সুযোগ থাকে। কিন্তু বর্তমানে সমস্যাটা দাঁড়িয়েছে, আমাদের দেশের বেশির ভাগ এলাকার মাটিতে জৈব পদার্থের পরিমাণ মাত্র ১ শতাংশ।
নদীবিধৌত বাংলাদেশে বন্যার একটা উপকারী দিক ছিল বন্যা বয়ে নিয়ে আসত পলিমাটি। বন্যা প্লাবিত অঞ্চলে বন্যা নেমে গেলে পলি জমা উর্বর মাটিতে চাষ হতো সোনার ফসল। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে আমরা মাটিকেও দূষিত করে ফেলেছি চরমভাবে। মাটির বুক থেকে অধিক ফসল ফলিয়ে নিতে যথেচ্ছ রাসায়নিকের প্রয়োগ, মাত্রাতিরিক্ত কর্ষণ, মাটির উপরিভাগ কেটে নিয়ে ইট তৈরি... বিভিন্নভাবে আমরা মাটিকে নির্যাতন করে এর উর্বরা শক্তিকে বিনষ্ট করে দিচ্ছি। বর্তমানের সাময়িক লাভে ধ্বংস করে দিয়ে যাচ্ছি ভবিষ্যৎকে।
মাটির গুণাগুণ ফিরিয়ে আনতে জৈবসারের কোনো বিকল্প নেই। টেকসই উন্নয়ন ভাবনায় জৈবকৃষির যেমন গুরুত্ব রয়েছে। সেই গুরুত্বের সঙ্গে সমান গুরুত্ব বহন করে কেঁচোও। উন্নত বিশ্বে এ সত্য অনুধাবন করেছেন অনেকেই। নেদারল্যান্ডসের জৈবকৃষি নিয়ে গবেষণাকারী প্রতিষ্ঠান রয়্যাল আইকোলকাম্প মাটিতে কেঁচো সারের ব্যবহারকে সবচেয়ে গুরুত্ব দিচ্ছে। এক্ষেত্রে ‘ভার্মি-রিমেডিয়েশন’ বেশ আলোচিত একটি টার্ম। গ্যাসোলিন, ডিজেল, পেট্রোলিয়াম কিংবা ভারী ধাতু লেড, ক্রোমিয়াম, ক্যাডমিয়াম, মার্কারিসম্পন্ন মাটিতে চাষযোগ্য উর্বরতা ফিরিয়ে আনতে কেঁচো ব্যবহার করার পদ্ধতিকে বলা হচ্ছে ভার্মি রিমেডিয়েশন।
কেঁচো কম্পোস্টে অন্যান্য কম্পোস্টের চেয়ে প্রায় ৭ থেকে ১০ শতাংশ পুষ্টিমান বেশি থাকে।
একটি আদর্শ ভার্মি কম্পোস্টে শতকরা ১.৫৭ ভাগ নাইট্রোজেন, ১.২৬ ভাগ ফসফরাস, ২.৬০ ভাগ পটাশ, ০.৭৪ ভাগ সালফার, ০.৬৬ ভাগ ম্যাগনেসিয়াম, ০.০৬ ভাগ বোরন, ১৮ ভাগ জৈব কার্বন, ১৫ থেকে ২৫ ভাগ পানি ও সামান্য পরিমাণ হরমোন রয়েছে।
ভার্মি কম্পোস্ট বা কেঁচো সার মাটির পানি ধারণ করার ক্ষমতা এবং বায়ু চলাচল বৃদ্ধি করে। ফলে মাটির উর্বরতা শক্তি বৃদ্ধি পায়। এক মাসের বাসি গোবরে কেঁচো সার ভালো হয়।
জৈবসার-এর উৎকৃষ্ট উদাহরণ কেঁচো কম্পোস্ট সার। ভার্মি কম্পোস্ট সারে গাছের অত্যাবশ্যকীয় ১৬টি খাদ্য উপাদানের ১০টিই বিদ্যমান।
কেঁচো ভূমির অন্ত্র এবং পৃথিবীর বুকে উর্বর মাটি তৈরি করার ক্ষেত্রে প্রধান ভূমিকা পালন করে, যার ওপর ফসল উৎপাদন করি। যে কেঁচোকে আমরা প্রাকৃতিক লাঙল হিসেবে চিনে আসছি, সেটা শুধু লাঙল নয়, মাটির জৈব উপাদান বৃদ্ধির কারখানাও। কেঁচো খাদ্য গ্রহণের পর যে পাচ্য পদার্থ মল হিসেবে নির্গত করে তাকে বলে কাস্ট। দেখা গেছে, এ কাস্টের ভিতর থাকে অসংখ্য জীবাণু। সাধারণ মাটির তুলনায় কাস্টের মধ্যে জীবাণু সংখ্যা প্রায় হাজারগুণ বেশি। এদের মাঝে উপকারী ব্যাকটেরিয়াও রয়েছে হাজার হাজার। ফলে মাটিতে নাইট্রোজেন, ফসফরাস, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম ইত্যাদি উপাদান জৈবিক উপায়ে বৃদ্ধি পায়।
কেঁচো কমপোস্ট সার তৈরির কার্যক্রমটি সারা দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। দেশের নানা জায়গায় তৈরি হয়েছে জৈবগ্রাম।
পরিবেশবান্ধব কেঁচো সার যারা ব্যবহার করছেন, তারা ইতিমধ্যে নানা সুফল পেয়েছেন। ফলন তাদের ভালো হচ্ছে। জমিতে রাসায়নিক সারের ব্যবহার কমেছে, সার বাবদ খরচও কমেছে। জনসংখ্যা বৃদ্ধির সঙ্গে কৃষি উৎপাদন বাড়ানো একটা বড় চ্যালেঞ্জ। এ ক্ষেত্রে জমির উর্বরতা বাড়াতে সার ব্যবহারের বিকল্প নেই। কিন্তু রাসায়নিক সারের ওপর নির্ভরশীলতা দীর্ঘ মেয়াদে জমির উর্বরতা কমিয়ে ফেলে। নীরাশয়সহ প্রকৃতির দূষণ ঘটায়। সে ক্ষেত্রে কেঁচো সার কৃষি ও পরিবেশ রক্ষায় ভালো বিকল্প হতে পারে।
জৈবসার হিসেবে কেঁচো সার আদর্শ। সন্দেহ নেই নিরাপদ খাদ্যের প্রশ্নে সারা পৃথিবীতে ইকোলজিক্যাল অ্যাগ্রিকালচার জনপ্রিয় হয়ে উঠবে। ভবিষ্যতের জন্য সুন্দর ও বাসযোগ্য বাংলাদেশ তৈরি করতে আমাদেরও জৈবকৃষির তথা জৈব সার বা কেঁচো সারের দিকে এগোতে হবে। পাশাপাশি কৃষক সমাজের পুরোটাকেই বিশেষ সচেতন ও অনুপ্রানিত করতে হবে যে মাটিতে জৈবসার প্রয়োগ করলে ফসল ফলাতে রাসায়নিক সারের চেয়ে বেশি সুফল পাওয়া সম্ভব।
বর্তমানে ৩০ হাজার কোটি থেকে ৫০ হাজার কোটি টাকার কেমিক্যাল সার ও কীটনাশকের বাজার আছে আমাদের। সরকার যদি যথাযথ পদক্ষেপ নেয় তাহলে এ মুহুর্তেই কম হলেও ১০ হাজার কোটি টাকার জৈবসারের বাজার তৈরি করা সম্ভব ইনশাআল্লাহ।
তাই সরকারকে সজীব মাটি, সুস্থ মানুষ ও সমৃদ্ধ দেশ গড়তে কেঁচো সারের বিষয়ে সর্বাত্মক প্রচারণা, সক্রিয় প্রচেষ্টা, সর্বোচ্চ প্রনোদনা এবং পূর্ণ পৃষ্ঠপোকতা করতে হবে ইনশাআল্লাহ।
ছহিবে সাইয়্যিদি সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ, রাজারবাগ শরীফ উনার মামদূহ মুর্র্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার নেক ছোহবত মুবারক-এ কেবলমাত্র তা লাভ করা সম্ভব। খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাদেরকে তা নছীব করুন। (আমীন)
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
বাংলাদেশে মিডিয়াগুলো ইহুদীদের অদৃশ্য ইশারায় দেশে পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার বিরূপ পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে চাইছে। বাংলাদেশের মুসলমানদের উচিত- দেশের সব মিডিয়া বর্জন করে আলাদাভাবে সম্মানিত ইসলামী মিডিয়া গঠন করা।
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
বাংলাদেশের জন্য মারাত্মক হুমকী স্বরূপ আরাকান আর্মিকে এক্ষুনি প্রতিহত করতে হবে ইনশাআল্লাহ
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
দেশে সাড়ে ৩ কোটি শুধু শিশুই সিসার বিষক্রিয়ায় আক্রান্ত এবং সব প্রাপ্ত বয়স্করাও ক্ষতিগ্রস্থ সিসার ক্ষতি থেকে বাঁচতে সুন্নতী তৈজসপত্র ব্যবহার এবং আন্তর্জাতিক সুন্নত প্রচার কেন্দ্রের জিনিস ক্রয়ে নিবেদিত হতে হবে ইনশাআল্লাহ
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে মহাব্যার্থ অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সশস্ত্র বাহিনীকে আরো ক্ষমতা দিয়ে প্রতিকার পাওয়া যেতে পারে
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
জ্বালানী তেলের দাম এক্ষুনি কমাতে হবে ইনশাআল্লাহ
২০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
অনেক কিছু করার প্রচারনা চালালেও জিডিপি এবং দেশের উন্নয়নের মূল ভিত্তি অর্থনীতির লাইফ লাইন এসএমই উদ্যোক্তাদের জন্য অন্তর্বর্তী সরকার কিছুই করছে না
২০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
প্রসঙ্গ: রাষ্ট্রদ্বীন ইসলাম, মুসলমানের দ্বীনি অধিকার, পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনাকে পালনের আবহ এবং রাষ্ট্রযন্ত্রের দায়।
১৯ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সিঙ্গাপুর, রাশিয়াসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে সন্ত্রাসী সংগঠন ইসকন নিষিদ্ধ বাংলাদেশেও বিভিন্ন মহলে ইসকন নিষিদ্ধের দাবী জোরদার হচ্ছে, সংস্কারের দাবীদার সরকার কী করে নির্বিকার থাকতে পারে?
১৯ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
ব্যাপকভাবে বাড়ছে সাইবার নিরাপত্তা ঝুঁকি ও হয়রানী জান-মাল এবং সম্মান হিফাজতে সরকারকে এক্ষুনি পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নিতে হবে ইনশাআল্লাহ
১৮ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
পাচারকৃত ১৭ লাখ কোটি টাকা ফেরত আনতে শামুকের মত ধীর গতি বরদাশতের বাইরে
১৮ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
সোনার বাংলার আরেক সোনালী অর্থনীতি- মৎস্য সম্পদ এর সমৃদ্ধির সুফল জনগণের হাতে যথাযথভাবে তুলে দিতে হবে ইনশাআল্লাহ
১৭ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
ছুটির দিনেও ঢাকার বাতাস এখন জীবনের জন্য হুমকিস্বরূপ নারিকেল দ্বীপ বাঁচানোর মিথ্যা প্রচারণার আগে সত্যিকার অর্থে ঢাকাকে বাঁচাতে হবে। ইনশাআল্লাহ!
১৭ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার)