মহিলা অধিকার আদায়ে ৮ই মার্চের কার্যকারিতা
, ২৭ শা’বান শরীফ, ১৪৪৪ হিজরী সন, ২০ ‘আশির, ১৩৯০ শামসী সন , ২০ মার্চ, ২০২৩ খ্রি:, ০৬ চৈত্র, ১৪২৯ ফসলী সন, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) মহিলাদের পাতা
মহিলাদের অধিকার নিয়ে আন্দোলন হয় প্রথমত ১৭৫৭ সালে। আমেরিকার নিউইয়র্কে। এ আন্দোলনের পিছনে কারণ ছিলো মূলত মহিলাদের সে সময় সংসারের পাশাপাশি বাইরে কাজ করতে হতো ১৫ ঘণ্টা। কিন্তু তাদের কাজ অনুযায়ী যেমন পেতো না উপযুক্ত পারিশ্রমিক এবং সেই সাথে খাটতে হতো অমানবিক পরিশ্রম। শুধু তাই নয়, অমুসলিম দেশগুলোতে মহিলাদের অধিকার, তাদের মর্যাদা এতো হীন ছিলো যে, তাদের সাথে পশুর মতো আচরণ করা হতো। যার পরিপ্রেক্ষিতে শুরু হয় নারীর অধিকার নিয়ে আন্দোলন। এরপর ক্রমে সেটা ১৯০৮ সালে জার্মানে হয়। ধারাবাহিকভাবে ১৯১০ সালের ৮ই মার্চ মহিলা আন্দোলন করে। ১৯১১ সালে প্রথমে ২৫টা দেশ এবং পরে ১৯৭৫ সাল থেকে ৮ই মার্চ নারী দিবস হিসেবে পালিত হয়ে আসছে। মূলত ৮ই মার্চের আন্দোলনে অংশগ্রহণ করা প্রতিটি নারীর হৃদয়ের ধ্বনি ছিলো শান্তি, মহিলা হিসেবে তাদের পূর্ণ মর্যাদা। এখন জানা কর্তব্য, এই আন্দোলনে কারা অংশগ্রহণ করেছিলো। আর আজকের প্রেক্ষাপটে মুসলমান মহিলাগণকে মাঠে দেখা যায়, তাদেরও একই দাবি শান্তি। মহিলাদের অধিকার, স্বাধীনতা, মর্যাদা। মূলত শান্তি, রহমত, স্বাধীনতা, মর্যাদা তাদের মাঝেই বিদ্যমান। শুধুমাত্র খুঁজে বের করা। মহান আল্লাহ পাক এবং উনার রসূল, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনারা দুটি পথ দিয়েছেন। একটি হচ্ছে নাজাতের অর্থাৎ ইহকালে ও পরকালে শান্তি, স্বাধীনতা, পূর্ণ অধিকার, পূর্ণ মর্যাদা আর অপরটি হচ্ছে কঠিন আযাব বা উভয় জিন্দেগীতে অশান্তি, অত্যাচার, জুলুম, লাঞ্চনা-বঞ্চনা। যা কারো কাম্য নয়, যে যেটা চাবে তাকে সেটাই দেয়া হবে। সুতরাং মহিলাদের হাতেই আছে মহিলাদের মুক্তির চাবিকাঠি। কারণ দেখা গেছে, বহু আগে চলে আসা মহিলা দিবস মহিলাদের কিছুই দিতে পারেনি। যারা মহিলাবাদী, মহিলা অধিকার নিয়ে কাজ করে, তারা খুব ভালো করে জানে, মহিলা দিবস বা মহিলা আন্দোলন মহিলাদের অধিকার বাস্তবায়ন করতে পারবে না, পারেওনি। শুধু পেরেছে অশান্তি, লাঞ্চনা-বঞ্চনা তৈরি করতে। মূলত অমুসলিম মহিলারা যখন দেখলো মুসলমান মেয়েরা শান্তিতে অবস্থান করছেন আর তারা ছন্নছাড়া, তখন তাদের পাঁয়তারা মুসলমান মেয়েদের তাদের কাতারে নিয়ে যাওয়া। এ জন্য কিছু কথিত মহিলাবাদী তৈরি করে মুসলমান মহিলাদের মহিলার ক্ষমতায়ন, মহিলাদের অধিকার বাস্তবায়নের মিছে আশায় তাদের শান্তি, মর্যাদা অর্থাৎ পর্দা থেকে বের করে মাঠে নামায়। এছাড়া লাক্স চ্যানেল আই সুপার স্টার, তোমাকেই খুঁজছে বাংলাদেশসহ অন্যান্য নানান রকম নামে মুসলমান মহিলাগণের লজ্জা-শরম নষ্ট করে বিভিন্ন পণ্য সামগ্রীর মতো ব্যবহার করা হয়ে থাকে এবং হতে থাকে চরম বেহায়াপনার প্রতিযোগিতা। হারিয়ে ফেলে নিজস্ব স্বকীয়তা। মিথ্যার আশ্রয়ে সম্মানিতা ভাবে, পরাধীনতার শিকলে নিজেকে মুক্ত ভাবে। শুরু হয় এলোমেলো, খোলামেলা চলাফেরা। বাড়তে থাকে প্রতিনিয়ত খুন, সম্ভ্রমহরণ, নারী টিজিং, এসিড সন্ত্রাস। রহমত চলে গিয়ে যহমত বেড়ে যায়। যদি বলা হয়, ইজ্জত-আব্রু হিফাজত করে, সৌন্দর্য প্রদর্শন না করে বের হও। তখন মহিলাবাদীদের মাথা চাড়া দিয়ে উঠে। মহিলাদের অধিকার হরণ, মহিলা অবরোধ বলা হয়। হায় আফসুস! অথচ হিন্দু ধর্মে মহিলাদের এতো অবমাননা, নির্যাতন সর্বোপরি মেয়েদের জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলা হয় তাকে মহিলা নির্যাতন বলা হয় না। মূলত হিন্দু, খ্রিস্টান, বৌদ্ধ কোনো ধর্মেই নারীর অধিকার তো নেই, বরং অধিকার থেকে বঞ্চিত করে চলে নানান রকম জুলুম-নির্যাতন। আর তাই শুরু হয়েছিলো মহিলা আন্দোলন। কিন্তু তাদের দাবি আজো পূরণ হয়নি। মূলত নারীর প্রকৃত মর্যাদা দিয়েছেন পবিত্র দ্বীন ইসলাম। উনাতেই আছে মহিলাদের পূর্ণ স্বাধীনতা, অধিকার, সম্মান, মর্যাদা। যেমন পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে, “সন্তানের জান্নাত মায়ের কদম তলে।” আরো বর্ণিত হয়েছে, “তোমাদের মধ্যে সেই ব্যক্তি উত্তম, যে তার আহলিয়ার বা স্ত্রীর নিকট উত্তম।” কতটুকু মহিলা অধিকার দেয়া হয়েছে প্রথমত তার প্রতি দায়িত্ব পালন করবেন পিতা। অতঃপর স্বামী, তারপর সন্তান। আর মহিলাদের দায়িত্ব-কর্তব্য সম্পর্কে বলা হয়েছে, ফরয কাজসমূহের পর ফরয হচ্ছে পর্দা পালন করা। যার কারণে যেমন বাস্তবায়িত হবে তাদের অধিকার, স্বাধীনতা তদ্রুপ কমে যাবে সমাজের অধিকাংশ ফিতনা-ফাসাদ, প্রয়োজনে মেয়েরা পর্দা মাঝে থেকেও হালাল উপার্জন করতে পারে। তাতে তো কোনো নিষেধ নেই।
কাজেই আজকে সময় এসেছে, মহিলা অধিকার পুনর্জারণের, স্বাধীনতা, মর্যাদা ফিরে পাবার। আর সেই জন্য প্রয়োজন, মহিলাদের মুক্তির দিশারী, মহিলাদের জন্য পরম নিয়ামত, রহমত সাইয়্যিদাতুন নিসা, সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল উমাম আলাইহাস সালাম উনার ছোহবত মুবারক, রূহানী নিছবত মুবারক, ফায়িয-তাওয়াজ্জুহ মুবারক। মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাদের সকলকেই সেই নিয়ামত নছীব করুন। আমীন।
আহমদ মুসতামিয়া রহমান।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
প্রসঙ্গ মহিলা জামাত নাজায়িজ
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
পিতা-মাতার প্রতি সন্তানের দায়িত্ব-কর্তব্য
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
শৈশবকাল থেকেই সন্তানকে দ্বীনদার হওয়ার শিক্ষা দান করতে হবে
২০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
সম্মানিতা মহিলা আউলিয়া-ই কিরাম উনাদের পরিচিতি
১৯ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
স্বচক্ষে দেখা কিছু কথা
১৯ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
পারিবারিক তা’লীমের গুরুত্ব ও তারতীব
১৮ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
সুন্নতী খাবার সম্পর্কিত হাদীছ শরীফ : মেথি
১৮ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
খাবার বিষয়ে মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন
১৮ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
জন্মের প্রথম মাস
১৭ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের অনুসরণে মু’মীনদের জীবন গড়ে তোলা দায়িত্ব-কর্তব্য
১৭ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের বেমেছাল দানশীলতা মুবারক (৩)
১৬ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
নারীবাদী বলে কথা........
১৫ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার)