মহিলারা নিজেরাই জানে না পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার মধ্যে মহিলাদের মর্যাদা ও অধিকার কি?
, ০৬ শা’বান শরীফ, ১৪৪৪ হিজরী সন, ২৯ তাসি, ১৩৯০ শামসী সন , ২৭শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ খ্রি:, ১৩ই ফাল্গুন, ১৪২৯ ফসলী সন, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) মহিলাদের পাতা
পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার আগমনে মহিলাদের প্রতি এ জঘন্য অত্যাচারের অবসান ঘটে, জীবনে আসে অনেক পরিবর্তন। মহান আল্লøাহ পাক তিনি পবিত্র কালামুল্লাহ শরীফ উনার মাধ্যমে নারীর প্রতি সম্মান প্রদর্শনের ঘোষণা দেন। এভাবে পবিত্র দ্বীন ইসলাম সর্বপ্রথম মহিলাদের সমাজে স্বাধীন, সুস্থ ও সুন্দরভাবে বেঁচে থাকার পথ প্রদর্শন করে।
পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত হয়েছে- যখন কন্যা সন্তান ভূমিষ্ট হয় তখন মহান আল্লাহ পাক তিনি ফেরেশতাদের প্রেরণ করেন। উনারা এসে বলেন, পরিবারের সকলের ওপর শান্তি বর্ষিত হোক। অতঃপর উনারা উনাদের বাহু দিয়ে কন্যা সন্তানটিকে আগলে রাখে এবং তার মাথায় হাত রেখে বলেন এক অবলা হতে আর এক অবলা বের হয়েছে। যে ব্যক্তি এর রক্ষনাবেক্ষণে মনোযোগী হবে সে কেয়ামত পর্যন্ত সাহায্য পাবে। সুবহানাল্লাহ! (আবূ দাউদ শরীফ)
কন্যা সন্তানের ব্যাপারে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আরো বলেন, যে লোক দুটি কন্যা সন্তানকে যথাযথভাবে প্রতিপালন করবে সে ব্যক্তি শেষ বিচারের দিন আমার সাথে অবস্থান করবে (পাশাপাশি একই হাতের দু’টি আঙ্গুলের মতো)। (মুসলিম শরীফ)
আহলিয়া বা স্ত্রী হিসাবে পবিত্র দ্বীন ইসলাম মহিলাদের মর্যাদা দিয়েছেন। পবিত্র কালামুল্লাহ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছেন- তারা তোমাদের পরিচ্ছেদ বা আবরণ এবং তোমরাও তাদের পরিচ্ছেদ বা আবরণ। (পবিত্র সূরা বাকারাহ শরীফ, আয়াত শরীফ ১৮৭)
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেছেন- “মহিলাগণ পুরুষদেরই সহোদর। (আবূ দাউদ শরীফ)
সম্মানিত দ্বীন ইসলাম সবচেয়ে মায়ের মর্যাদা দিয়েছে। এত মর্যাদা অন্য কাউকে দেয়া হয়নি। নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ঘোষণা মুবারক- “মায়ের পায়ের নিচে সন্তানের বেহেশত” মহিলাদেরকে আরো মর্যাদাবান করেছে। একজন ছাহাবী নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নিকটে এসে প্রশ্ন করলেন আমার নিকট খেদমত পাওয়ার বেশী হকদার কে? জবাবে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বললেন- আপনার মা, দ্বিতীয়ত বললেন, আপনার মা, তৃতীয়ত বললেন, আপনার মা, অতঃপর বললেন, আপনার পিতা। (সহীহ বুখারী শরীফ)
একাধিকবার মায়ের কথা বলে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মহিলা জাতিকে সমাজে সম্মান দিয়েছেন।
পবিত্র দ্বীন ইসলাম মহিলাদের প্রকৃত অধিকার দিয়েছেন। সুন্দরভাবে সমাজে আত্মসম্মানের সাথে বেঁচে থাকার অধিকার দিয়েছেন। অমর্যাদা আর গ্লানির হাত থেকে রক্ষা করে শ্রদ্ধার সর্বোচ্চ আসন দান করেছেন। পারিবারিক, সামাজিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সব ক্ষেত্রেই পবিত্র দ্বীন ইসলাম মহিলাদের নায্য অধিকার প্রতিষ্ঠিত করেছে। ইসলাম নারীদের অর্থনৈতিক স্বাধীনতা দিয়েছে। মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন- “পিতামাতা ও আত্মীয় স্বজনের পরিত্যক্ত সম্পত্তিতে পুরুষদের যেমন অংশ আছে মহিলাদেরও তেমনি অংশ আছে। (পবিত্র সুরা নিসা শরীফ, আয়াত শরীফ ৭)
আহলিয়া বা স্ত্রীরা তার আহাল বা স্বামীর কাছ থেকে দেনমোহর পেয়ে থাকে। পক্ষান্তরে পুরুষকে দেনমোহর পরিশোধ করতে হয় এবং এটা আহাল বা স্বামীর ওপর ফরয। পবিত্র কালামুল্লাহ শরীফ উনার মধ্যে মহান আল্লাহ পাক বলেন- তোমরা স্বতঃপ্রবৃত্ত হয়ে আহালিয়া বা স্ত্রীকে তাদের দেনমোহর প্রদান কর। (পবিত্র সূরা নিসা শরীফ, আয়াত শরীফ ৪)
তাছাড়া আহালিয়া বা স্ত্রীর ভরণপোষণ, বাসস্থান, চিকিৎসা, সন্তান সন্ততির যাবতীয় ব্যয়ভার বহন, বাবা মা ও ভাইবোনদের দায়িত্ব অপরিহার্যভাবে পালন করতে হয়। অর্থাৎ আহলিয়া বা স্ত্রীকে কোন প্রকার আর্থিক দায়িত্ব পালন করতে হয় না। একজন নারী তার পিতার পরিত্যক্ত সম্পদ থেকে তার ভাইয়ের তুলনায় অর্ধেক পেলেও দাদা, আহাল বা স্বামী ও বৈপিত্রেয় ভাই থেকে সম্পদ লাভ করে থাকে, যা একত্র করলে ভাইয়ের তুলনায় অনেক বেশী হয়।
সুতরাং তথাকথিত নারীবাদীরা কি চায়? মহিলাদেরকে বিনোদনের সামগ্রী বানাতে চায়? ভোগের বস্তুতে পরিণত করতে চায়? না আবার জাহিলী সমাজের সেই নির্যাতিতা নারীর করুণ আর্তনাদ শুনাতে চায়? সেটাই আমাদের প্রশ্ন? পবিত্র দ্বীন ইসলাম মহিলাদের যে সম্মান মর্যাদা ও অধিকার দিয়েছে যা অন্য কোন ধর্মে দেয়নি। সুতরাং মহিলা সমাজ এ বিধানের বিধানাবলী মেনে জীবন পরিচালনা করলে দুনিয়া আখিরাত উভয় জগতে কল্যাণকামী হবে।
-০-
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
প্রসঙ্গ মহিলা জামাত নাজায়িজ
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
পিতা-মাতার প্রতি সন্তানের দায়িত্ব-কর্তব্য
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
শৈশবকাল থেকেই সন্তানকে দ্বীনদার হওয়ার শিক্ষা দান করতে হবে
২০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
সম্মানিতা মহিলা আউলিয়া-ই কিরাম উনাদের পরিচিতি
১৯ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
স্বচক্ষে দেখা কিছু কথা
১৯ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
পারিবারিক তা’লীমের গুরুত্ব ও তারতীব
১৮ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
সুন্নতী খাবার সম্পর্কিত হাদীছ শরীফ : মেথি
১৮ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
খাবার বিষয়ে মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন
১৮ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
জন্মের প্রথম মাস
১৭ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের অনুসরণে মু’মীনদের জীবন গড়ে তোলা দায়িত্ব-কর্তব্য
১৭ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের বেমেছাল দানশীলতা মুবারক (৩)
১৬ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
নারীবাদী বলে কথা........
১৫ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার)