মহিলাদের জন্য মসজিদে গিয়ে জামায়াতে নামায পড়া জায়িয নয়
, ২৭ যিলক্বদ শরীফ, ১৪৪৪ হিজরী সন, ১৮ আউওয়াল, ১৩৯১ শামসী সন , ১৭ জুন, ২০২৩ খ্রি:, ০২ আষাঢ়, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) মহিলাদের পাতা
পবিত্র হাদীছ শরীফে আরো ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
عن حضرت ام حميد رضى الله تعالى عنها قالت يا رسول الله صلى الله عليه وسلم انا نحب الصلاة معك فيمنعنا ازواجنا فقال رسول الله صلى الله عليه وسلم صلاتكن فى بيوتكن خير من صلاتكن فى دوركن وصلاتكن فى دوركن افضل من صلاتكن فى مسجد الجماعة. (سنن الكبرى للبيهقى، الجوهرالنقى)
অর্থ: হযরত উম্মু হুমাইদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা উনার থেকে বর্ণিত। তিনি আরজ করলেন, ইয়া রসূলাল্লাহ্ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আমরা মহিলারা আপনার সাথে নামায পড়তে ইচ্ছুক কিন্তু আমাদের আহাল বা স্বামীরা আমাদেরকে নিষেধ করেন। অতঃপর সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “তোমাদের জন্য সাধারণ ঘরে নামায পড়ার চেয়ে, খাছ ঘরে নামায পড়া উত্তম এবং সাধারণ ঘরে নামায পড়া জামে মসজিদে জামায়াতে নামায পড়ার চেয়ে উত্তম।” (সুনানুল কুবরা লিল বাইহাক্বী, জাওহারুন নক্বী)
এ সমস্ত পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার বর্ণনা দ্বারা স্পষ্টই প্রতীয়মান হয় যে, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আহাল বা স্বামী কর্তৃক মহিলাদের মসজিদে যাওয়ার নিষেধকে সমর্থন করেছেন। যদি তিনি সমর্থন না করতেন, তবে অবশ্য তিনি বলতেন, বাধা দেওয়া ঠিক হবে না। এর দ্বারা এটাই প্রমাণিত হয় যে, মহিলাদের মসজিদে যেতে নিষেধ করা নাজায়িয নয় বরং জায়িয।
এ প্রসঙ্গে পবিত্র হাদীছ শরীফে আরো ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
عن حضرت ام حميد رضى الله تعالى عنها انها جائت الى النبى صلى الله عليه وسلم فقالت يا رسول الله صلى الله عليه وسلم انى احب الصلاة معك فقال النبى صلى الله عليه وسلم قد علمت انك تحبين الصلاة معى وصلاتك فى حجرتك وصلاتك فى ججرتك خير من صلاتك فى دارك وصلاتك فى دارك خير من صلاتك فى مسجد قومك وصلاتك فى مسجد قومك خير من صلاتك فى مسجدى. (احمد، ابن حبان، طبرانى)
অর্থ: হযরত উম্মু হুমাইদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা হতে বর্ণিত। তিনি সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নিকট এসে বললেন, ইয়া রসূলাল্লাহ্ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আমি আপনার সাথে নামায পড়তে অধিক আগ্রহী। অতঃপর সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বললেন, “অবশ্যই আমি জানি আপনি আমার সাথে নামায পড়তে পছন্দ করেন বা অধিক আগ্রহী। কিন্তু আপনার, আমার মসজিদে নামায পড়ার চেয়ে আপনার গোত্রের মসজিদে নামায পড়া উত্তম এবং গোত্রের মসজিদে নামায পড়ার চেয়ে হুজরায় নামায পড়া আরো উত্তম এবং হুজরায় নামায পড়ার চেয়ে ঘরে নামায পড়া উত্তম।” (আহমদ, ইবনে হাব্বান, ত্ববারানী)
এ হাদীছ শরীফে সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মসজিদে নামায পড়ার চেয়ে ঘরে নামায পড়া উত্তম বলা হয়েছে। যেখানে মহিলাদের জন্য ঘরে নামায পড়া মহান আল্লাহ পাক উনার রসূল, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে নামায পড়ার চেয়ে উত্তম, সেখানে অন্য মসজিদে নামায পড়তে যাওয়া কি করে ফযীলতের আশা করা যায়? অথচ মহান আল্লাহ পাক উনার রসূল, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে এক রাকায়াত নামায পড়া লক্ষ-কোটিগুণ রাকায়াত নামাযের চেয়েও শ্রেষ্ঠ। কাজেই যদি জামায়াতের ফযীলতের জন্য মহিলাদের মসজিদে আসার অনুমতি দেওয়া হতো, তবে ঘরে নামায পড়া সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে নামায পড়ার চেয়ে উত্তম বলা হতো না। মূলতঃ এর দ্বারা এটাই সাব্যস্ত হয় যে, মহিলাদের মসজিদে বা ঈদগাহে যাওয়ার অনুমতি ইলিম অর্জনের জন্যই দেওয়া হয়েছিল। নামাযের জন্য নয়।
পবিত্র হাদীছ শরীফে আরো ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
عن حضرت ابى عمرو شيبانى رضى الله تعالى عنه انه رأى عبد الله يخرج النساء من المسجد يوم الجمعة ويقول اخرجن الى بيوتكن خيرلكن
অর্থ: হযরত আবূ আমর শাইবানী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, তিনি দেখেছেন হযরত আব্দুল্লাহ্ ইবনে মাসঊদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনাকে জুমুআর দিন তিনি মহিলাদেরকে মসজিদ হতে এ কথা বলে বের করে দিতে যে, “হে মহিলারা! তোমরা তোমাদের ঘরে চলে যাও, কারণ নামাযের জন্য তোমাদের ঘরই উত্তম।” (ত্ববারানী শরীফ)
উপরোক্ত পবিত্র হাদীছ শরীফসমূহের আলোচনা দ্বারা এটা স্পষ্টই প্রমাণিত হয় যে, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনিই শুধু মহিলাদের ঘরে নামায পড়ার জন্য কার্যতঃ উৎসাহ প্রদান করেননি বরং ঘরে নামায পড়ার বহু ফযীলতও বর্ণনা করেছেন।
-আল্লামা মুফতী সাইয়্যিদ মুহম্মদ আবূ সাফওয়ান
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
সন্তানদের ও পরিবারের সকলকে সালাম দেয়া শিক্ষা দান করুন
২৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের বেমেছাল দানশীলতা মুবারক (৪)
২৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
কাফের বিশ্বে নারীরা শুধু কি এখন নির্যাতনের শিকার হচ্ছে?
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
একজন দ্বীনদার পরহেযগার আল্লাহওয়ালী মহিলা উনার পর্দা পালনের বেমেছাল দৃষ্টান্ত
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
প্রসঙ্গ মহিলা জামাত নাজায়িজ
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
পিতা-মাতার প্রতি সন্তানের দায়িত্ব-কর্তব্য
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
শৈশবকাল থেকেই সন্তানকে দ্বীনদার হওয়ার শিক্ষা দান করতে হবে
২০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
সম্মানিতা মহিলা আউলিয়া-ই কিরাম উনাদের পরিচিতি
১৯ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
স্বচক্ষে দেখা কিছু কথা
১৯ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
পারিবারিক তা’লীমের গুরুত্ব ও তারতীব
১৮ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
সুন্নতী খাবার সম্পর্কিত হাদীছ শরীফ : মেথি
১৮ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
খাবার বিষয়ে মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন
১৮ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার)