মহিলাদের জন্য মসজিদে গিয়ে জামায়াতে নামায পড়া জায়িয নয়
, ০৩ ফেব্রুয়ারী, ২০২৪ ১২:০০:০০ এএম ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) ফতওয়া বিভাগ
ولقد نهى عمر الفاروق عليه السلام النساء عن الخروج الى المساجد فشكون الى ام المؤمنين الثالثة الصديقة عليها السلام فقالت لو علم النبى صلى الله عليه وسلم مما علم عمر عليه السلام ما اذن لكن فى الخروج.
অর্থ: হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম তিনি মহিলাদেরকে মসজিদে যেতে নিষেধ করেন, তখন মহিলারা হযরত উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছাহ ছিদ্দীক্বাহ আলাইহাস সালাম উনার নিকট এ ব্যাপারে অভিযোগ করলেন। তখন হযরত উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছাহ ছিদ্দীক্বাহ আলাইহাস সালাম তিনি বললেন, হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম তিনি তোমাদেরকে এখন যে অবস্থায় দেখছেন, এরূপ অবস্থায় যদি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি দেখতেন, তবে তোমাদেরকে মসজিদে যাওয়ার অনুমতি দিতেন না।” (ফতহুল ক্বদীর ১ম জিল্দ ৩১৪ পৃষ্ঠা, ফতওয়ায়ে দেওবন্দ, ফতওয়ায়ে রহিমীয়া, গায়াতুল আওতার ১ম খন্ড ২৩৬ পৃষ্ঠা, তাহ্তাবী, শামী, দুররুল মুখতার, রদ্দুল মুহতার, আইনুল হিদায়া, ফতওয়ায়ে হিন্দীয়া, হিদায়া, নিহায়া)
আর হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম উনার নিষেধাজ্ঞাকে যে হযরত উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছাহ ছিদ্দীক্বাহ আলাইহাস সালাম তিনি পূর্ণ সমর্থন করেছেন, তা হাদীছ শরীফেও উল্লেখ আছে। যেমন পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
لو ان رسول الله صلى الله عليه وسلم رأى ما احدثت النساء لمنعهن. (بخارى شريف، مسلم شريف، ابو دؤد شريف)
অর্থ: “যদি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামতিনি মহিলাদের বর্তমান অবস্থা দেখতেন, তবে অবশ্যই নিষেধ করতেন।” (বুখারী শরীফ, মুসলিম শরীফ, আবু দাঊদ)
সুতরাং উপরোক্ত কিতাব সমূহের বর্ণনা দ্বারা এটা স্পষ্টই প্রমাণিত হলো যে, হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম তিনি মহিলাদেরকে মসজিদে যেতে নিষেধ করেন এবং হযরত উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছাহ ছিদ্দীক্বাহ আলাইহাস সালাম তিনি তা পূর্ণ সমর্থন করেন। এর দ্বারা এটাও প্রমাণিত হলো যে, যারা বলে হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম তিনি নিষেধ করেননি, তারা হয় অজ্ঞ, জাহিল অথবা চরম মিথ্যাবাদী। সাথে সাথে এটাও প্রমাণিত হলো যে, বর্তমানে মহিলাদের জামায়াতের জন্য মসজিদ বা ঈদগাহে যাওয়া বা এটাকে জায়িয বলার অর্থই হলো, হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম ও হযরত উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছাহ ছিদ্দীক্বাহ আলাইহাস সালাম উনাদের আদেশকে অমান্য করা বা উনাদের বিরুদ্ধাচরণ করা যা কাট্টা কুফরী। আর পরবর্তীতে ইমাম, মুজতাহিদ রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনারা পর্দার গুরুত্ব, মহিলাদের ঘরে নামায পড়ার উৎসাহ, ফযীলতপূর্ণ হাদীছ শরীফ, হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম উনার নিষেধাজ্ঞা ও হযরত উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছাহ ছিদ্দীক্বাহ আলাইহাস সালাম উনার সমর্থনের ভিত্তিতে ইজতিহাদ করতঃ মাকরূহ্ তাহরীমী ফতওয়া দেন এবং উক্ত ফতওয়ার উপর উম্মতের ইজমা বা ঐক্যমত প্রতিষ্ঠা লাভ করে, বিশেষ করে হানাফী মাযহাবের ইমাম-মুজতাহিদ রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনাদের মধ্যে। যেমন, কিতাবে উল্লেখ করা হয়েছে-
قد اجمعت الامة على كرأهة خروج النساء الى الجمعة. (امداد الاحكام)
অর্থ: “মহিলাদের জামায়াতের জন্য মসজিদে যাওয়া নিষেধ হওয়ার ব্যাপারে উম্মতের ইজমা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।” (ইমদাদুল আহ্কাম)
কাজেই যেখানে অনুসরণীয় ইমাম-মুজতাহিদ উনারা মহিলাদের মসজিদে যাওয়া নাজায়িয অর্থাৎ হারাম ফতওয়া দেন, সেখানে এর বিরোধিতা করে এটাকে জায়িয বলা গোমরাহী ছাড়া কিছুই নয়। আর এদের ব্যাপারে মহান আল্লাহ পাক তিনি পবিত্র কালামুল্লাহ্ শরীফে ইরশাদ মুবারক করেন-
ومن يشاقق الرسول من بعد ما تبين له الهدى ويتبع غير سبيل المؤمنين نوله ما تولى.
অর্থ: “কারো নিকট হিদায়েত বিকশিত হবার পর যে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিরুদ্ধাচরণ করবে, আর মু’মিনদের পথ রেখে ভিন্ন পথের অনুসরণ করবে, আমি তাকে সেদিকেই ফিরাবো যেদিকে সে ফিরেছে।” (সূরা নিসা শরীফ: ১১৫ নং আয়াত শরীফ)
হযরত শায়েখ আহমদ ইবনে আবু সাঈদ মোল্লা জিউন রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি এ আয়াতের তাফসীরে উল্লেখ করেছেন-
فجعلت مخالفة المؤمنين مثل مخالفة الرسول فيكون اجماعهم كخبر الرسول حجة قطعية. (نور الانوار)
অর্থ: “এ আয়াত শরীফে মু’মিনদের বিরোধিতাকে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিরোধিতা হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়েছে। অতএব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র হাদীছ শরীফের মতো উম্মতের ইজমাও অকাট্য এবং প্রামাণ্য দলীল বলে পরিগণিত হবে। (নূরুল আনওয়ার)
উপরোক্ত আয়াত শরীফ ও তার তাফসীর দ্বারা এটাই প্রমাণিত হলো যে, ইমাম-মুজতাহিদগণের মতের বিরোধিতা করার অর্থ হলো, মহান আল্লাহ্ পাক উনার ও উনার রসূল নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিরোধিতা করা, যা স্পষ্টই গোমরাহী।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
দাড়ি ও গোঁফের আহকাম ও সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (৩৯)
১৮ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
দাড়ি ও গোঁফের আহকাম ও সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (৩৮)
১১ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
দাড়ি ও গোঁফের আহকাম ও সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (৩৭)
১০ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
দাড়ি ও গোঁফের আহকাম ও সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (৩৬)
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
দাড়ি ও গোঁফের আহকাম ও সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (৩৫)
২৯ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
দাড়ি ও গোঁফের আহকাম ও সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (৩৪)
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
দাড়ি ও গোঁফের আহকাম ও সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (৩৩)
১৫ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
দাড়ি ও গোঁফের আহকাম ও সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (২৯)
০২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
দাড়ি ও গোঁফের আহকাম ও সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (২৮)
০১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
দাড়ি ও গোঁফের আহকাম ও সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (২৫)
১৭ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
দাড়ি ও গোঁফের আহকাম ও সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (২৪)
১৪ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
দাড়ি ও গোঁফের আহকাম ও সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (২৩)
১০ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার)