মহিলাদের জন্য মসজিদে গিয়ে জামায়াতে নামায পড়া জায়িয নয়
, ১৯ রবীউছ ছানী শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ০৬ সাদিস ১৩৯১ শামসী সন , ০৪ নভেম্বর, ২০২৩ খ্রি:, ১৯ কার্তিক, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) মহিলাদের পাতা
মূল কথা হলো, মহিলাদের মসজিদে যাওয়া হারাম হওয়ার উপর উম্মতের ইজমা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে এবং যুগ যুগ ধরে সারা বিশ্বে তা অনুসৃত হয়ে আসছে। সম্মানিত ইজমা ও সম্মানিত ক্বিয়াস যেহেতু পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র হাদীছ শরীফেরই অন্তর্ভুক্ত ও সমর্থিত, সেহেতু উক্ত ইজমাকে অস্বীকার করা বা মু’মিনদের প্রচলিত পথের বিরোধিতা করা পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র হাদীছ শরীফের দৃষ্টিতে প্রকাশ্য গোমরাহী।
নিম্নে আম ফতওয়া মুতাবিক মহিলাদের জামায়াতের জন্য মসজিদ ও ঈদগাহে যাওয়া হারাম বা নিষিদ্ধ হওয়ার দলীলসমূহ পেশ করা হলো- আম ফতওয়া মুতাবিক মহিলাদের জামায়াতের জন্য মসজিদে যাওয়া হারাম বা নিষিদ্ধ হওয়ার অকাট্য দলীলসমূহ:
قال صاحب الهداية ويكره لهن حضور الجماعات يعنى الشواب منهن وقوله الجماعة يتناول الجمع والاعياد والكسوف والاستسقاء قال اصحابنا لان فى خروجهن خوف الفتنة وهو سبب للحرام وما يقضى الى الحرام فهو حرام فعلى هذا قولهم يكره مرادهم يحرم.
অর্থ: “হিদায়ার লেখক বলেন, যুবতী মহিলাদের জামায়াতে যাওয়া মাকরূহ্ তাহরীমী। তিনি আরো বলেন, জামায়াত বলতে এখানে (পাঁচ ওয়াক্তসহ) জুমুয়া, ঈদাইন, কুসূফ, ইস্তিস্কা ইত্যাদি সবই অন্তর্ভুক্ত। আমাদের হানাফী ফকীহগণ বলেন, কেননা তাদের (মহিলাদের) জামায়াতের জন্য বের হওয়ায় ফিৎনার আশঙ্কা রয়েছে, আর ফিৎনা হারামের অন্তর্ভুক্ত। আর যা হারাম কাজে সহায়তা করে তাও হারাম। এ কারণেই মাকরূহ্ তাহরীমীর দ্বারা মূলতঃ মহিলাদের জামায়াতে যাওয়া সম্পূর্ণ হারাম হওয়াই উদ্দেশ্য।” (উমদাতুল ক্বারী শরহে বুখারী ৫ম খ- ১৫৬ পৃষ্ঠা, ফতহুল মুলহিম, শরহে মুসলিম ২য় খ- ৪২৮পৃষ্ঠা, তাফহীমুল মুসলিম ১৪ খ- ২১পৃষ্ঠা, হিদায়াহ)
ইমাম ত্বহাবী রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন, মহিলাদের ইসলামের প্রথম যুগে জামায়াতে যাওয়ার অনুমতি প্রদান করার কারণ হলো বেদ্বীনদের সম্মুখে মুসলমানদের জনসংখ্যা ও জনশক্তি বৃদ্ধি করা। হযরত ইমাম আইনী রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন, সে যুগ ফিৎনা ফাসাদ থেকে সম্পূর্ণ নিরাপদ ছিল। কিন্তু বর্তমানে তা একেবারেই বিপরীত। বাদায়িউছ্ ছানায়ে-এর লিখক বলেন, যুবতী মহিলাদের (পাঁচ ওয়াক্তসহ) জুমুয়া, ঈদাইন ইত্যাদিতে যোগদান করার অনুমতি নেই বা জায়িয নেই অর্থাৎ হারাম। কেননা মহান আল্লাহ্ পাক বলেন, (হে মহিলাগণ!) তোমরা ঘরের মধ্যে আবদ্ধ থাক। এ ছাড়াও মহিলাদের ঘর হতে বের হওয়ার মধ্যে ফিৎনার আশঙ্কা রয়েছে।” (মায়ারিফে মাদানিয়াহ শরহে তিরমিযী ৮ম খ- ১০৮পৃষ্ঠা, আল বাদায়িউছ্ ছানায়ে)
وجب على الامام اونائبه منعهن من ذالك قال المظهر فيه دليل على جواز خروجهن الى المساجد للصلاة لكن فى زماننا مكروه عمم المتأخرون المنع للعجائز والشواب فى الصلوات كلها.
অর্থ: ইমাম অথবা তার প্রতিনিধির জন্য জরুরী যে, তারা যেন মহিলাদেরকে জামায়াতের জন্য মসজিদে আসতে নিষেধ করে। হযরত মাযহার রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন, যদিও হাদীছ শরীফ দ্বারা মহিলাদের (প্রথম যুগে) মসজিদে যাওয়া প্রমাণিত কিন্তু আমাদের সময়ে তা মাকরূহ্ তাহরীমী বা নিষিদ্ধ। (কেননা) উলামায়ে মুতায়াখ্খিরূন রহমতুল্লাহি আলাইহিমগণ যুবতী ও বৃদ্ধা মহিলাদের যে কোন নামাযের জন্য মসজিদে যাওয়া নিষেধ বা হারাম হওয়ার ব্যাপারে একমত পোষণ করেছেন। (সুনানুন নাসাঈ শরহে ইমামুস সুয়ুতী ২য় খ- ২৮২পৃষ্ঠা, মেরকাত শরহে মেশকাত ৩য় খ- ৫৭, ৬৭পৃষ্ঠা)
“বর্তমান ফিতনা-ফাসাদের সময়ে মহিলাদের জামায়াতের জন্য মসজিদে যাওয়া মাকরূহ্ তাহরীমী বা নিষিদ্ধ। মহিলাদের সর্ব অবস্থায় পর্দায় (ঘরে) থাকা সর্বোত্তম তথা ফরযে আইন।” (আশয়াতুল লুময়াত শরহে মিশকাত ১ম খ- ৪৬২পৃষ্ঠা, মুযাহিরে হক্ব, লুময়াত শরহে মেশকাত)
জুমহূর উলামায়ে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিমগণের নিকট যুবতী মহিলাদের যেমনিভাবে পাঁচ ওয়াক্ত নামাযের জন্য মসজিদে যাওয়া নিষিদ্ধ, তদ্রুপ জুমুয়া ও ঈদাইনেও নিষিদ্ধ। কেননা মহান আল্লাহ্ পাক তিনি বলেন, তোমরা মহিলাগণ ঘরের মধ্যে আবদ্ধ থাক। শুধু তাই নয়, তাদের বের হওয়ার মধ্যে ফিৎনার আশঙ্কা রয়েছে। তাই উলামায়ে মুতায়াখ্খিরীনগণের ফতওয়া হলো মহিলাদের জামায়াতের জন্য মসজিদে যাওয়া নাজায়িয বা হারাম।” (দরসে তিরমিযী ২য় খ- ৩২১ পৃষ্ঠা, মায়ারিফে সুনান ৪র্থ খ- ৪৪৫পৃষ্ঠা)
“যুবতী মহিলাদের জামায়াতে যাওয়া মাকরূহ্ তাহরীমী বা নিষিদ্ধ। উলামায়ে মুতায়াখ্খিরীনগণের ফতওয়া হলো বৃদ্ধাদেরও যুবতী মহিলাদের ন্যায় মসজিদে যাওয়া নিষিদ্ধ বা হারাম, যে কোন নামাযেই হোক না কেন।” (আওজাযুল মাসালিক শরহে মুয়াত্তায়ে মালিক ৪র্থ খ- ১০৬ পৃষ্ঠা, আল বুরহান, নাইলুল মায়ারিব, শরহুল কবীর, আত্তাওশীহ্)
دل الحديثان الاولان على كون صلوة المرأة فى غير المسجد افضل منها فى المسجد ويكره لهن حضور الجماعة يعنى الشواب منهن واختار المتأخرون كراهة خروج العجائز ايضا ليلا اوكان نهارا.
অর্থ: “প্রথমোক্ত হাদীছ শরীফদ্বয় দ্বারা এটাই প্রমাণিত হয় যে, মহিলাদের মসজিদে নামায পড়ার চেয়ে ঘরে নামায পড়া সর্বোত্তম। (কেননা) মহিলাদের (যুবতী) জামায়াতের জন্য মসজিদে যাওয়া মাকরূহ্ তাহরীমী যা নিষিদ্ধ। আর উলামায়ে মুতায়াখ্খিরীনদের ফতওয়া হলো বৃদ্ধাদের জন্যও রাতে হোক অথবা দিনে হোক মসজিদে যাওয়া মাকরূহ্ তাহরীমী বা নিষিদ্ধ।” (ই’লাউস সুনান ৪র্থ খ- ২৪১পৃষ্ঠা, মাজমাউয্ যাওয়ায়িদ)
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আদেশ মুবারক বাস্তবায়নে হযরত মহিলা ছাহাবী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুন্না উনাদের বেনযীর দৃষ্টান্ত
০৮ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের যারা অনুসরণ করবেন উনারাও হাছিল করবেন সর্বোচ্চ সন্তুষ্টি মুবারক
০৮ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
ইলমে তাসাউফ অর্জন করা ব্যতীত ইবাদত মূল্যহীন
০৮ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
সুলত্বানুল হিন্দ হযরত খাজা ছাহেব রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার স্মরণে এই উপমহাদেশের সরকারগুলোর উদ্যোগ কোথায়?
০৭ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সুলত্বানুল হিন্দ হযরত খাজা হাবীবুল্লাহ চীশতি রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার উসীলায় এক কোটিরও বেশি বিধর্মী পবিত্র ঈমান লাভ করেন
০৭ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
হযরত খাজা হাবীবুল্লাহ চিশতী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি পবিত্র সুন্নত যিন্দাকারী অর্থাৎ মুহ্ইউস সুন্নাহ
০৭ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
আফসুস! পাঠ্যবইয়ে ‘স্বাস্থ্য শিক্ষার’ নামে শিশুদের লজ্জাহীনতার শিক্ষা দেয়া হচ্ছে!
০৬ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
সম্মানিত ‘মাহে রজব’ উনার মর্যাদা মর্তবার অন্যতম কারণ ‘পবিত্র লাইলাতুর রগায়িব শরীফ’
০২ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি সম্মানিত গায়িবী নিদা মুবারক
০২ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
‘শীতকাল মু’মিনদের জন্য বসন্ত’
০১ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
পবিত্র রজবুল হারাম মাসে রোযা রাখার ফযীলত
৩১ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
নফসের অনুসরণকারী ধর্মব্যবসায়ীদের অনুসরণ করা জায়েজ নেই
৩১ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার)