মহিলাদের জন্য মসজিদে গিয়ে জামায়াতে নামায পড়া জায়িয নয় (পর্ব-২৩)
, ২৬শে রজবুল হারাম শরীফ, ১৪৪৪ হিজরী সন, ২০ তাসি, ১৩৯০ শামসী সন , ১৮ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ খ্রি:, ০৪ ফাল্গুন, ১৪২৯ ফসলী সন, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) মহিলাদের পাতা
খাছ ফতওয়া হচ্ছে, মহিলাদের জামায়াতে নামায পড়ার জন্য মসজিদ ও ঈদগাহে যাওয়া কুফরী। কারণ এর দ্বারা সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন, উম্মুল কায়িনাত সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছাহ ছিদ্দীক্বাহ আলাইহাস সালাম উনার বিরোধিতা করা হয় এবং হযরত খুলাফায়ে রাশিদীন আলাইহিমুস সালাম উনাদের দ্বিতীয় ব্যক্তিত্ব আমীরুল মু’মিনীন খলীফাতুল মুসলিমীন সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম উনার বিরোধিতা করাসহ সকল হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদেরও বিরোধিতা করা হয়। নাঊযুবিল্লাহ!
আর আম বা সাধারণ ফতওয়া হচ্ছে, মহিলাদের জামায়াতে নামায পড়ার জন্য মসজিদ ও ঈদগাহে যাওয়া মাকরূহ তাহরীমী। নিম্নে মহিলাদের জামায়াতের জন্য মসজিদ ও ঈদগাহে যাওয়া মাকরূহ্ তাহরীমী হওয়ার দলীলসমূহ ধারাবাহিকভাবে পেশ করা হচ্ছে-
মায়ারিফে মাদানিয়াহ, শরহে তিরমিযী ৮ম খণ্ড ১০৮ পৃষ্ঠায় বর্ণিত হয়েছে-
امام حضرت طحاوی رحمۃ اللہ علیہ کھتے ھین کہ یہ حکم ابتداء اسلام مین دشمنون کی نظر مین مسلمانون کی کثرت وشوکت کے اظھار کیلنے تھا- عینی گھتے ھین کہ اس وقت فتنون سے امن بھی تھا اب یہ بات نھھین
অর্থ: ইমাম তাহাবী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, ইসলাম উনার প্রথম যুগে মহিলাদের জামায়াতে যাওয়ার অনুমতি প্রদান করার কারণ হলো বেদ্বীনদের সম্মুখে মুসলমানদের জনসংখ্যা ও জনশক্তি বৃদ্ধি করা। হযরত আইনী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, সে যুগ ফিৎনা ফাসাদ থেকে সম্পূর্ণ নিরাপদ ছিল। কিন্তু বর্তমানে তা একেবারেই বিপরীত। ‘বাদায়’ কিতাবের লেখক বলেন, যুবতী মহিলাদের (পাঁচ ওয়াক্তসহ) জুমুয়া, ঈদাইন ইত্যাদিতে যোগদান করার অনুমতি নেই, কেননা মহান আল্লাহ পাক তিনি বলেন, (হে মহিলাগণ!) তোমরা ঘরের মধ্যে আবদ্ধ থাক। এ ছাড়াও মহিলাদের ঘর হতে বের হওয়ার মধ্যে ফিৎনার আশঙ্কা রয়েছে।”
সুনানে নাসাই শরহে ইমামুস সুইয়ুতী ২য় খ- পৃঃ ২৮২, মিরকাত শরহে মিশকাত ৩য় খ- ৫৭ ও ৬৭ পৃষ্ঠায় বর্ণিত হয়েছে-
وجب على الامام اونائبه منعهن من ذالك- قال المظهر- فيه دليل على جواز خروجهن الى المساجد للصلاة- لكن فى زماننا مكروه- عمم المتأخرون المنغ للعجائز والشراب فى الصلوات كلها
অর্থ: ইমাম এবং উনার স্থলাভিষিক্ত প্রতিনিধির জন্য জরুরী উনারা যেন মহিলাদেরকে জামায়াতের জন্য মসজিদে আসতে নিষেধ করে। হযরত মাযহার রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, যদিও পবিত্র হাদীছ শরীফ দ্বারা মহিলাদের (প্রথম যুগে) মসজিদে যাওয়া প্রমাণিত কিন্তু আমাদের সময়ে তা মাকরূহ্ তাহরীমী, (কেননা) যুবতী ও বৃদ্ধা মহিলাদের যে কোন নামাযের জন্য মসজিদে যাওয়া নিষেধ হওয়ার ব্যাপারে একমত পোষণ করেছেন।
আশয়াতুল লুময়াত শরহে মিশকাত ১ম খ-, পৃঃ ৪৬২, মোযাহেরে হক্ব, লোময়াত শরহে মিশকাত কিতাবে বর্ণিত হয়েছে-
ودرين زمان مكروه است برامدن زنان برائى جماعت ازجهت فساد زمان- وتستر بجال زنان اولى است.
অর্থ: বর্তমান সময়ে মহিলাদের জামায়াতের জন্য মসজিদে যাওয়া মাকরূহ্ তাহরীমী, সময়ের পরিবর্তনের কারণে। মহিলাদের সর্ব অবস্থায় পর্দায় (ঘরে) থাকা সর্বোত্তম।
দরসে তিরমিযী ২য় খ-, পৃঃ ৩২১, মায়ারিফে সুনান ৪র্থ খ-, ৪৪৫ পৃষ্ঠায় বর্ণিত হয়েছে-
بھر حال جمھور کے نزدیک شابہ کو نہ ھی جمعہ و عیدین کیلنے خروج کی اجازت ھے اور نہ ھی کسی اور نماز کیلئے- لقو لہ تعالی و قرن فی بیوتکن- وجہ یھی ھے کہ انکا خروج فتنہ کا سبب ھے چنا نچہہ علماء متاخرین کا فتوی اسی پر ھے کہ اس زمانہ مین انکا مساجد کی طرف نکلنا درست نھین-
অর্থ: জুমহুর ওলামায়ে কিরামদের নিকট যুবতী মহিলাদের যেমনিভাবে পাঁচ ওয়াক্ত নামাযের জন্য মসজিদে যাওয়া নিষিদ্ধ, তদ্রূপ জুমুয়া ও ঈদাইনে ও নিষিদ্ধ, কেননা মহান আল্লাহ্ পাক তিনি বলেন, তোমরা মহিলাগণ ঘরের মধ্যে আবদ্ধ থাক। শুধু তাই নয়, তাদের বের হওয়ার মধ্যে ফিৎনার আশঙ্কা রয়েছে। তাই ওলামায়ে মুতাআখ্খেরীনগণের ফতওয়া হলো মহিলাদের জামায়াতের জন্য মসজিদে যাওয়া নাজায়েয (হোক যুবতী অথবা বৃদ্ধা)।
আওযাযুল মাসালিক শরহে মুয়াত্বায়ে মালিক ৪র্থ খ-, পৃঃ ১০৬, আল বুরহান, নাইলুল মায়ারিব, শরহুল কবীর, আত্তাওশীহ ইত্যাদি কিতাবে বর্ণিত হয়েছে-
ويكره لهن حضور الجاعة بعنى الشواب منهن- وافتى المشائخرون بمنعها اى العجوز من حضور الصلوات كلها كالشابة
অর্থ: যুবতী মহিলাদের জামায়াতে যাওয়া মাকরূহ্ তাহরীমী। উলামায়ে মুতাআখখীরীনগণ উনাদের ফতওয়া হলো বৃদ্ধাদেরও যুবতী মহিলাদের ন্যায় মসজিদে যাওয়া নিষিদ্ধ যে কোন নামাযেই হোক না কেন।
ইকদুস সুনান ৪র্থ জিঃ পৃঃ ২৪১, মাজমাউয্ যাওয়ায়েদ কিতাবে বর্ণিত হয়েছে-
دل الحديثان الاولان على كون صلوة المرأة فى غير المسجد افضل منها فى المسجد- وبكره لهن حضور الجماعة يعنى الشواب منهن واختار المتاخرون كراهن خروج العجائز ايضا ليلا اوكان نهارا=
অর্থ: প্রথমোক্ত পবিত্র হাদীছ শরীফদ্বয় দ্বারা এটাই প্রমাণিত হয় যে, মহিলাদের মসজিদে নামায পড়ার চেয়ে ঘরে নামায পড়া সর্বোত্তম। (কেননা) মহিলাদের (যুবতী) জামায়াতের জন্য মসজিদে যাওয়া মাকরূহ্ তাহরীমী। আর উলামায়ে মুতাআখখীরীনগণ উনাদের ফতওয়া হলো বৃদ্ধাদের জন্যও রাত্রে হোক অথবা দিনে মসজিদে যাওয়া মাকরূহ্ তাহরীমী। (চলবে)
-আল্লামা সাইয়্যিদ আবূ খুবাইব।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
প্রসঙ্গ মহিলা জামাত নাজায়িজ
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
পিতা-মাতার প্রতি সন্তানের দায়িত্ব-কর্তব্য
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
শৈশবকাল থেকেই সন্তানকে দ্বীনদার হওয়ার শিক্ষা দান করতে হবে
২০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
সম্মানিতা মহিলা আউলিয়া-ই কিরাম উনাদের পরিচিতি
১৯ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
স্বচক্ষে দেখা কিছু কথা
১৯ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
পারিবারিক তা’লীমের গুরুত্ব ও তারতীব
১৮ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
সুন্নতী খাবার সম্পর্কিত হাদীছ শরীফ : মেথি
১৮ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
খাবার বিষয়ে মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন
১৮ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
জন্মের প্রথম মাস
১৭ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের অনুসরণে মু’মীনদের জীবন গড়ে তোলা দায়িত্ব-কর্তব্য
১৭ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের বেমেছাল দানশীলতা মুবারক (৩)
১৬ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
নারীবাদী বলে কথা........
১৫ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার)