সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল উমাম আলাইহাস সালাম উনার নছীহত মুবারক:
মহান আল্লাহ পাক তিনি তওবাকারীকে পছন্দ করেন
, ১১ রবীউছ ছানী শরীফ, ১৪৪৬ হিজরী সন, ১৭ খ্বমিস , ১৩৯২ শামসী সন , ১৫ অক্টোবর , ২০২৪ খ্রি:, ৩০ আশ্বিন, ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) মহিলাদের পাতা
মহান আল্লাহ পাক তিনি মহাসম্মানিত সূরা যারিয়াত শরীফ উনার ৫৬নং আয়াত শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক করেন-
وَمَا خَلَقْتُ الْجِنَّ وَالْإِنْسَ إِلَّا لِيَعْبُدُونِ
অর্থ মুবারক: আমি জ্বিন এবং ইনসানকে একমাত্র আমার ইবাদত-বন্দেগী করার জন্য অর্থাৎ মুহাব্বত-মা’রিফত অর্জন করার জন্য সৃষ্টি করেছি।
এই মহাসম্মানিত আয়াত শরীফ উনার মাধ্যমে স্পষ্টভাবে বুঝা যাচ্ছে, মহান আল্লাহ পাক তিনি উনার মুহাব্বত-মা’রিফত মুবারক অর্জন করার জন্য বান্দাদেরকে সৃষ্টি করেছেন। কিন্তু শয়তান ও নফসের ওয়াসওয়াসার কারণে মহান আল্লাহ পাক উনার সৃষ্টির উদ্দেশ্য পূরণ করা আমাদের জন্য কঠিন হয়ে যায় এবং ইচ্ছায়-অনিচ্ছায় প্রতিনিয়ত গুনাহ্র কাজ সংঘটিত হয়।
মূলত: শয়তান নিজে বিভ্রান্ত এবং সে মানুষকেও বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করে। এ প্রসঙ্গে মহান আল্লাহ পাক তিনি মহাসম্মানিত সূরা হিজর শরীফ উনার ৩৯, ৪০নং আয়াত শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক করেন-
قَالَ رَبِّ بِمَا أَغْوَيْتَنِي لَأُزَيِّنَنَّ لَهُمْ فِي الْأَرْضِ وَلَأُغْوِيَنَّهُمْ أَجْمَعِينَ إِلَّا عِبَادَكَ مِنْهُمُ الْمُخْلَصِينَ
অর্থ মুবারক: সে (শয়তান) বলে, হে আমার রব! যেহেতু আমি গোমরাহ্ হয়ে গিয়েছি সেহেতু আমি অবশ্যই দুনিয়াতে মানুষের জন্য মন্দ কাজগুলোকে সৌন্দর্যমন্ডিত করবো এবং অবশ্যই তাদের সকলকে বিভ্রান্ত করবো। আপনার মুখলিছ বান্দাগণ ব্যতীত (আর সবাইকে বিভ্রান্ত করবো)। নাউযুবিল্লাহ!
এই মহাসম্মানিত আয়াত শরীফ উনার মাধ্যমে বোঝা যাচ্ছে, শয়তান মানুষকে বিভ্রান্ত করার কসম করেছে এবং সে অবশ্যই মানুষদেরকে বিভিন্নভাবে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করবে। কিন্তু সে মুখলাছ অর্থাৎ যাদের অন্তর পবিত্র, গাইরুল্লাহ মুক্ত এবং অন্তরে যিকির থাকবে উনাদেরকে বিভ্রান্ত করতে পারবে না।
উল্লেখ্য যে, শয়তানের ওয়াসওয়াসার কারণে কোনো গুনাহ্র কাজ সংঘটিত হলে তৎক্ষনাৎ মহান আল্লাহ পাক উনার নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করতে হবে।
কেননা মহান আল্লাহ পাক সূরা হিজর শরীফ উনার ৪৯নং আয়াত শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক করেন-
نَبِّئْ عِبَادِي أَنِّي أَنَا الْغَفُورُ الرَّحِيمُ
অর্থ মুবারক: আমার বান্দাদেরকে জানিয়ে দিন, নিশ্চয়ই আমি ক্ষমাপরায়ণ, পরম দয়ালু।
শয়তান যে মানুষকে ওয়াসওয়াসা দেয়ার কসম করেছে সে সম্পর্কে পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যেও ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
إِنَّ الشَّيْطَانَ قَالَ : وَعِزَّتِكَ يَا رَبِّ لاَ أَبْرَحُ أُغْوِي عِبَادَكَ مَا دَامَتْ أَرْوَاحُهُمْ فِي أَجْسَادِهِمْ
অর্থ মুবারক: হযরত আবু সাঈদ খুদরী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “নিশ্চয়ই শয়তান বলে, হে আমার রব! আপনার ইজ্জত-সম্মানের কছম! আমি আপনার বান্দাদেরকে বিভ্রান্ত করতে ক্ষান্ত হব না, ছেড়ে দিব না, যতক্ষণ পর্যন্ত তাদের দেহে প্রাণ থাকে। (অর্থাৎ যতক্ষণ পর্যন্ত তাদের দেহে প্রাণ থাকবে ততক্ষণ পর্যন্ত আমি তাদেরকে বিভ্রান্তÍ করতেই থাকব)।
শয়তানের এই কথার পরিপ্রেক্ষিতে মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
قَالَ الرَّبُّ تَبَارَكَ وَتَعَالَى : وَعِزَّتِي وَجَلاَلِي لاَ أَزَالُ أَغْفِرُ لَهُمْ مَا اسْتَغْفَرُونِي.
অর্থ মুবারক “মহান আল্লাহ পাক তিনি বলেন, আমার ইজ্জত-সম্মান, জালালিয়াতের কছম এবং উচ্চ মর্যাদার কসম! আমিও তাদেরকে ক্ষমা করতেই থাকব যতক্ষণ পর্যন্ত তারা তওবা-ইস্তেগফার করতে থাকবে। ” (আহমদ শরীফ)
মূলত: মহান আল্লাহ পাক তিনি বান্দাদের প্রতি অত্যন্ত ক্ষমাশীল। বান্দা যদি যমিন থেকে আসমান পরিমাণ গুনাহ করে তারপর মহান আল্লাহ পাক উনার নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করে মহান আল্লাহ পাক তিনি তাকে ক্ষমা করে দেন।
এ প্রসঙ্গে মহাসম্মানিত পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে- হযরত আনাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, মহান আল্লাহ পাক তিনি বলেন, “হে ইবনে আদম! তুমি যদি দোয়া করো এবং আশা করো আমি তোমাকে ক্ষমা করব তাহলে আমি কাউকে পরওয়া করি না। তোমার গুনাহ যদি আকাশ পরিমাণ হয় তারপরেও তুমি যদি ক্ষমা চাও, আমি তোমাকে ক্ষমা করব। আমি কাউকে পরওয়া করি না। আর যদি তুমি যমীন পরিপূর্ণ গুনাহ নিয়ে আমার সাথে অন্য কাউকে শরীক না করে সাক্ষাৎ করতে আস, আমি যমীন পরিপূর্ণ ক্ষমা নিয়ে তোমার কাছে উপস্থিত হবো। ” (তিরমিযী শরীফ) সুবহানাল্লাহ!
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
প্রসঙ্গ মহিলা জামাত নাজায়িজ
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
পিতা-মাতার প্রতি সন্তানের দায়িত্ব-কর্তব্য
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
শৈশবকাল থেকেই সন্তানকে দ্বীনদার হওয়ার শিক্ষা দান করতে হবে
২০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
সম্মানিতা মহিলা আউলিয়া-ই কিরাম উনাদের পরিচিতি
১৯ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
স্বচক্ষে দেখা কিছু কথা
১৯ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
পারিবারিক তা’লীমের গুরুত্ব ও তারতীব
১৮ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
সুন্নতী খাবার সম্পর্কিত হাদীছ শরীফ : মেথি
১৮ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
খাবার বিষয়ে মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন
১৮ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
জন্মের প্রথম মাস
১৭ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের অনুসরণে মু’মীনদের জীবন গড়ে তোলা দায়িত্ব-কর্তব্য
১৭ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের বেমেছাল দানশীলতা মুবারক (৩)
১৬ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
নারীবাদী বলে কথা........
১৫ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার)