মহান আল্লাহ পাক উনার পবিত্র আদেশ ‘শরয়ী পর্দা’ মেয়েদের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে এবং ত্বককে সুরক্ষা করে
, ০৫ ছফর শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ২৩ ছালিছ, ১৩৯১ শামসী সন , ২২ আগস্ট, ২০২৩ খ্রি:, ০৭ ভাদ্র শ্রাবণ, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) মহিলাদের পাতা
পর্দা মহান আল্লাহ পাক উনার পবিত্র হুকুম। পর্দা মেয়েদেরকে গৃহে বন্দি করেনি বরং পর্দাই মেয়েদেরকে মর্যাদাম-িত করেছে, রক্ষা করছে সম্ভ্রমহরণ এবং পুরুষের কুনজর থেকে। সর্বোপরি জাহান্নামের পথ থেকে জান্নাতের পথে নিয়ে যাচ্ছে। পর্দা নারী পুরুষ উভয়ের দৃষ্টিকে সংযত ও নিরাপদ করেছে। করেছে মেয়েদের আতœবিশ্বাসী। দিয়েছে সম্মান। এবং এসকল কিছুর সাথে সাথে মেয়েদের সৌন্দর্য বৃদ্ধিতেও পর্দা সাহায্য করে।
১. পর্দা উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করে:
সকল মানুষের ইচ্ছা তার ত্বকটি যেন একটু উজ্জ্বল হয় লাবণ্যময়ী হয়। কিন্তু বেপর্দা যারা বাইরে ঘোরাঘুরি করে তাদের ক্ষেত্রে ত্বকের সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্য নানান প্রসাধনী ব্যবহার করে থাকে। অনেক সময় প্রসাধনী ব্যবহার করে ও ত্বক উজ্জ্বল হয় না বরং প্রসাধনী ত্বকে আরো ক্ষতি করে দেয়। প্রসাধনী ব্যবহার করেও শরীর ও মুখ উজ্জ্বল হয় না। রোদে বাইরে চলা ফেরার জন্য মুখ, হাত, পা ইত্যাদি কোথাও উজ্জ্বল হয়, কোথাও অনুজ্জ্বল হয় যার ফলে শরীরে বিভিন্ন শেড দেখা যায়। শরীরের একই রং ধরে রাখার জন্য বেহিসেবী অর্থ ব্যয় করে অনেকেই।
কিন্তু পর্দা একজন পর্দানশীল নারীর ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করে দেয়। বোরকা দিয়ে আবৃত থাকায় সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মি থেকে শরীর রক্ষা পায়। ফলে ত্বক পুড়ে যায় না, উজ্জ্বলতা নষ্ট হয় না। হাত, পা, মুখ বোরকা দিয়ে ঢাকার ফলে শরীরের বিভিন্ন শেড হয় না, একই উজ্জ্বলতা অটল থাকে। এতে সৌন্দর্য আরো বৃদ্ধি হয়। কাজেই পর্দা উজ্জ্বলতা বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। পর্দাশীল বোনেরা সব সময় পর্দায় থাকার ফলে তাদের ত্বক লাবণ্যময়ী উজ্জ্বল হয়ে থাকে।
২. ব্রণ থেকে মুক্তি:
ব্রণ কি জন্য হয়? ব্রণ মুলত ত্বকে জমে থাকা ধুলো ময়লা, জীবাণু, তেল ইত্যাদি থেকে ব্রণের বিস্তার ঘটে। প্রতিদিনই মানুষের ত্বক ময়লা হয়। বেশি ময়লা হয় বাইরে চলাচল করলে। রাস্তার ধুলো, ময়লা, ধোঁয়া, ইত্যাদি ত্বকে বসে যায়। যার ফলে জীবাণুর সৃষ্টি হয়। জীবাণু ত্বকের লোমকূপে বসে প্রোটেকশন হীন বংশ বিস্তার করতেই থাকে। ফলে ত্বকে সৃষ্টি হয় ব্রণ, দাগসহ নানান জটিল সমস্যা। পর্দা ব্রণের মূল বিস্তার থেকে রক্ষা করে। বোরকা দ্বারা মুখ ঢাকা থাকায় ত্বকে ধুলো ময়লা জমে না। বোরকা আবৃত থাকায় জীবাণু ত্বকে প্রবেশ করতে পারে না। ফলে ত্বক সুরক্ষিত থাকে। ব্রণ হওয়া রোধ করে। ত্বক হয় দাগহীন ও সুন্দর।
৩. চুল ভালো করে:
অনেকেই বলে পর্দা করার ফলে মাথা ঢেকে থাকতে হয় সারাক্ষণ এর ফলে মাথা ঘেমে যায়, চুল পড়ে প্রচুর। চুলে খুশকি হয়। চুলের গোড়া দূর্বল হয়। পর্দা করলে শরীর ঘামবেই। আর এই ঘাম খারাপ কিছুনা। কাপড় দিয়ে চুল ঢেকে রাখার ফলে বাহিরের দূষিত ময়লা সরাসরি চুলের ত্বকে বসে না। কাপড় থাকায় ময়লা মাথার ত্বকে জমতে পারে না। ঘামের মাধ্যমে শরীর থেকে বিষাক্ত উপাদান লোম কূপ ও চুলের কূপ দিয়ে বের হয় যার ফলে চুলের গোড়ায় জমে থাকা ময়লা বের করে দেয়। এতে চুলের গোড়ায় ময়লা ও জীবাণু বসতে পারে না এতে চুলও পড়ে না। ফলে খুশকিও হয় না।
বাসায় এসে মাথার কাপড় খুলে চুল বাতাসে শুকিয়ে নিয়ে ধুয়ে ফেললে মাথার ত্বকে কোনো সমস্যা হয় না। নিয়মিত মাথা ঘামার কারণে ত্বকে স্থায়ীভাবে ময়লা জমে না। কিন্তু! যারা বেপর্দা হয়ে বাহিরে চুল খুলে বের হয় তাদের চুলে ডিরেক্টলি ময়লা জমে যায়। বাহিরের বাতাস বা সূর্যের তাপে মাথার ত্বক ঘামেও না। ফলে কোষে জীবাণু ময়লা বসে যায়। ত্বক না ঘামার ফলে সেই ময়লা জীবাণু চুলের গোড়ায় বসে চুলের গোড়া দূর্বল করে দেয়, এতে প্রচুর চুল পড়ে।
৪. ত্বকের লাবন্য বৃদ্ধি করে:
পর্দাশীল বোনেরা নিয়মিত নামাজ আদায় করে। যার ফলে তাদের মুখে ওযূর সময় নিয়মিত কমপক্ষে ৫ বার পানি দিয়ে ধৌত করে। নিয়মিত ৫ বার ধোয়ার ফলে ত্বকে ময়লা পরিষ্কার হয়। ত্বকে ময়লা বসে যাওয়ার চাঞ্জ থাকে না। মুখ বোরকার আড়ালে থাকায় রোদে পুড়ে না, ধুলো ময়লা লাগে না, কাপড় আবৃত থাকায় ত্বক ঘেমে ময়লা কোষ, লোম কূপ থেকে বের হয়, এতে ব্রণ হয়না। বোরকা দিয়ে ঢাকার ফলে ত্বকের রং উজ্জ্বল হয়। এতে মুখ হয় লাবণ্যময়। ত্বকের যতেœ আলাদা কিছু ব্যবহার করতে হয় না।
৫. হাত-পা সুন্দর হয়:
সাধারণভাবেই আমরা জানি, ছায়া বা ঢাকা অবস্থায় কোনো কিছু থাকলে তার রং উজ্জ্বল হয়। একটি গাছকে আলো থেকে ছায়াতে নিয়ে আসুন দেখবেন তা শ্বেত বর্ণ ধারণ করেছে।
আধুনিক এ যুগে সবাই ফর্সা হতে চায়। ফর্সা হতে গিয়ে মুখে নানান কেমিক্যাল লাগিয়ে ফেলেন। এতে মুখ আপাত ফর্সা হলেও পরিণতিতে আরো কালো হয়। যা দেখতে একদম বাজে লাগে। কিন্তু যখন আপনার হাত পা সব সময় পা মোজা, হাত মোজা দিয়ে ঢাকা থাকবে তখন তা এমনিতেই আলাদা উজ্জল ফর্সা হয়ে যাবে। ময়লাও জমে না।
পর্দা করার ফলে আপনার মুখ, চুল, হাত, পা, পুরো শরীর মহান আল্লাহ পাক উনার রহমতেই উজ্জ্বল ও সুন্দর হয়ে যাবে। আপনার চেহারা আলাদা নূরানী আভায় আলোকিত হবে। যা যে কোন দুনিয়াবী সৌন্দর্য্যকে হার মানাবে। আপনাকে আলাদা করে কোনো প্রডাক্ট ব্যবহার বা সময় নষ্ট করতে হবেনা। সুবহানাল্লাহ!
মহান আল্লাহ পাক উনার প্রতিটি পবিত্র হুকুমের মত পবিত্র পর্দার হুকুমও জ্বিন ইনসান সবার জন্যই সীমাহীন রহমত বরকত নিয়ামত প্রাপ্তির কারণ। পর্দা যেমন রূপকে ঢেকে রাখে তেমনি রূপকে বৃদ্ধি করে।
মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাদের সবাইকে শরয়ী পর্দা যথাযথভাবে করার তাওফিক দান করুন। আমীন!
-তাসনীম আহমদ খান
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
ইলিম চর্চায় কতবেশি মনোযোগ!
০৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
শিশু সন্তান জন্ম গ্রহণের ৭ম দিনে সুন্দর অর্থবোধক নাম রাখা
০৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
দেনমোহর নিয়ে কিছু কথা.... (১)
০২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের বেমেছাল দানশীলতা মুবারক (১)
০২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
ইতিহাস কথা বলে: নারী নির্যাতনের সাথে বিধর্মীদের সম্পৃক্ততার অনুসন্ধানে
০১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
হাত-পা, চেহারা খোলার মাধ্যমে অবশ্যই সৌন্দর্য প্রকাশ পায়
০১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
ইতিহাস কথা বলে- ‘বোরকা’ বাঙালি মুসলমানদের আদি সংস্কৃতি
৩১ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
পিতা-মাতার প্রতি সন্তানের দায়িত্ব-কর্তব্য
৩১ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
আপনি চান, আপনার সন্তান সুশ্রী এবং সুন্দর হয়ে জন্মগ্রহণ করুক?
৩০ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
শৈশবকাল থেকেই সন্তানকে ব্যক্তিত্ব বা আত্মসম্মানবোধ সম্পন্ন হওয়ার শিক্ষা দান করতে হবে
৩০ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
‘শরয়ী পর্দা’ মেয়েদের অন্তরের পবিত্রতার সাথে সাথে বাহ্যিক সৌন্দর্য্য ও পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখে
২৯ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সম্মানিতা মহিলা আউলিয়া-ই কিরাম উনাদের পরিচিতি মুবারক
২৯ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার)