নছীহতে কায়িম মাকামে উম্মাহাতুল মু’মীনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল উমাম আলাইহাস সালাম
মহান আল্লাহ পাক উনার নিকট দুনিয়া ও আখিরাতের কল্যাণ চাইতে হবে-২
, ২০ জুমাদাল উলা শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ০৬ সাবি’ ১৩৯১ শামসী সন , ০৫ ডিসেম্বর, ২০২৩ খ্রি:, ১৯ অগ্রহায়ণ, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) মহিলাদের পাতা
مَنْ جَاءَ بِالْـحَسَنَةِ فَـلَهٗ عَشْرُ أَمْثَالـِهَا ﴿১৬০﴾ سورة الأنعام
যে ব্যক্তি একটি নেকী নিয়ে আসলো তার জন্য তার অনুরূপ দশটি নেকী রয়েছে অর্থাৎ যে একটি নেক কাজ করবে তার জন্য দশটি নেকী থাকবে। (সূরা আনআম শরীফ: ১৬০)
এ জন্য আমি নিশ্চিত ছিলাম যে ২টি রুটি দান করলে ২০টি রুটি আসবে এবং আপনাদেরকে উত্তমভাবে মেহমানদারী করা যাবে। তাই রুটিগুলো গুণে দেখলাম ২০টি আছে কিনা।
যেহেতু মহান আল্লাহ পাক তিনি বলেছেন যে, যারা ছবর করবে এবং উনার প্রতি তাওয়াক্কুল করবে তিনি তাদেরকে কুদরতী রিযিক দান করবেন। তাই হযরত রাবেয়া বছরী রহমাতুল্লাহি আলাইহা তিনি ছবর করেছেন এবং তাওয়াক্কুল করেছেন। যার কারণে মহান আল্লাহ পাক তিনি উনাকে কুদরতী রিযিক দান করেছেন। সুবহানাল্লাহ!
যে ব্যক্তি পরকালের কল্যাণ হাছিলের উদ্দেশ্যে নেক কাজ করবে তার জন্য দুনিয়ার কাজটাও সহজ হয়ে যাবে। তবে এর জন্য ধৈর্যধারণ করতে হবে এবং মহান আল্লাহ পাক উনার প্রতি তাওয়াক্কুল করতে হবে। আর শুধু দুনিয়া চাইলে দুনিয়াই পাওয়া যাবে, পরকাল পাওয়া যাবে না। যেমন পবিত্র হাদীছ শরীফে বর্ণিত আছে,
عَنْ اَنَسِ ابْنِ مَالِكِ رَضِىَ اللهُ تَـعَالٰـى عَنْهُ أنَّ النَّبِـىَّ صَلَّى اللّٰهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ مَنْ كَانَتْ نِـيَّــتُهٗ طَلَبُ الْاٰخِرَةِ جَعَلَ اللهُ غِنَاهُ فِـىْ قَـلْبِهٖ وَ جَـمَعَ لَهٗ شَـمْلَـهٗ وَ اَتَــتْهُ الدُّنْــيَا جَعَلَ اللهُ الْفَقْرَ بَــيْـنَ عَـيْـنَــيْـهِ وَ شَتَّتَ عَلَـيْهِ اَمْرَهٗ وَ لَا يَأْتِـيْهِ مِنْـهَا اِلاَّ مَا كُـتِبَ لَهٗ. (رواه الترمذى و احمد و دارمى)
হযরত আনাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, যে ব্যক্তির পরকাল তালাশ করার নিয়ত থাকে, মহান আল্লাহ পাক তিনি তার অন্তরকে মানুষ থেকে অমুখাপেক্ষী করে দেন (অর্থাৎ সে মানুষের মুহতাজ হবে না) সুবহানাল্লাহ! এবং তার বিক্ষিপ্ত কাজগুলোকে গুছিয়ে দেন এবং দুনিয়া তার কাছে লাঞ্ছিত অবস্থায় আসবে (অর্থাৎ সে দুনিয়াকে উপেক্ষা করবে) আর যে ব্যক্তির নিয়ত থাকবে দুনিয়া তালাশ করার, মহান আল্লাহ পাক তিনি দরিদ্রতাকে তার চক্ষুর সম্মুখে করে দিবেন (অর্থাৎ সে ব্যক্তি অভাবগ্রস্ত হয়ে যাবে) এবং তার কাজগুলো এলোমেলো হয়ে যাবে। আর তার জন্য যা নির্ধারিত তা ব্যতীত দুনিয়া থেকে কোনো কিছুই আসবে না অর্থাৎ মহান আল্লাহ পাক তিনি তার জন্য যতটুকু নির্ধারণ করেছেন তাই সে পাবে। (তিরমিযী, আহমাদ ও দারিমী শরীফ)
এজন্য আমাদের উচিত পরকাল তালাশ করা। পরকাল তালাশ করলে মানুষের মুহতাজ হতে হবে না। এলোমেলো কাজগুলো সহজ হয়ে যাবে। আর দুনিয়া তালাশ করলে, যতই আমরা সুশৃঙ্খল ভাবে কাজ করার চেষ্টা করি ততই দেখা যাবে কাজগুলো এলোমেলো হয়ে যাচ্ছে। কাজে কোনো বরকত পাওয়া যাবে না। চোখের সামনে অভাবটাই প্রকাশ পাবে।
যে পরকাল তালাশ করবে সে দুনিয়াতে ক্ষতিগ্রস্ত হবে অর্থাৎ তাকে দুনিয়া ত্যাগ করতে হবে। আর দুনিয়া যে তালাশ করবে সে পরকালে ক্ষতিগ্রস্ত হবে অর্থাৎ শাস্তির সম্মুখীন হতে হবে।
পবিত্র হাদীছ শরীফে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
عَنْ أَبـِيْ مُوْسَى الْأَشْعَرِي رَضِىَ اللهُ تَـعَالٰـى عَنْهُ أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ مَنْ أَحَبَّ دُنْــيَاهُ أَضَرَّ بِآخِرَتِهٖ وَمَنْ أَحَبَّ آخِرَتَهٗ أَضَرَّ بِدُنْــيَاهُ فَآثِـرُوْا مَا يَـبْـقٰى عَلٰى مَا يَـفْنٰى. (رواه أحـمد)
হযরত আবূ মুসা আশয়ারী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে বর্ণিত। নিশ্চয়ই নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, যে ব্যক্তি তার দুনিয়াকে মুহাব্বত করলো, সে তার আখিরাত বা পরকালে ক্ষতিগ্রস্ত হলো। আর যে ব্যক্তি তার পরকালকে মুহাব্বত করলো, সে তার দুনিয়াতে ক্ষতিগ্রস্ত হলো। তবে তোমরা যা ধ্বংস হবে তার উপর যা স্থায়ীত্ব লাভ করবে তাকে প্রাধান্য দাও। (আহমাদ শরীফ)
অর্থাৎ ক্ষণস্থায়ী দুনিয়ার উপর চিরস্থায়ী পরকালকে প্রাধান্য দিতে হবে। আমাদের উচিত হবে মহান আল্লাহ পাক উনাকে হাক্বীক্বীভাবে বিশ্বাস করে উনার উপর তাওয়াক্কুল করা, পরকাল তালাশ করা এবং পরকালের জন্য দুনিয়ার অংশও মহান আল্লাহ পাক উনার নিকট চেয়ে নেয়া। তাহলে দুনিয়ার সমস্ত কাজ সহজ হয়ে যাবে। মহান আল্লাহ পাক ও উনার হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের সন্তুষ্টি-রেযামন্দি মুবারক অর্জন করাও সহজ হয়ে যাবে।
মহান আল্লাহ পাক তিনি যেন আমাদেরকে দ্বীনের ছহীহ সমঝ দান করেন এবং সর্বাবস্থায় মহান আল্লাহ পাক উনার প্রতি পরিপূর্ণভাবে তাওয়াক্কুল করার ও হক্বের উপর ইস্তেক্বামত থাকার তাওফীক্ব দান করেন। (আমীন)
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
নিষিদ্ধ মহিলা জামায়াত নিয়ে ধর্মব্যবসায়ী উলামায়ে ছু’দের বিভ্রান্তিকর ও জিহালতী বক্তব্যের জবাব (১)
১০ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
সাইয়্যিদাতুনা হযরত নূরুর রবিয়াহ যাহরা আলাইহাস সালাম উনার মহাপবিত্র শান মুবারক উনার খিলাফ বুখারী শরীফে বর্ণিত জাল হাদীছের খন্ডন (১)
১০ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
কুফরী আক্বীদা পরিহার না করলে চির জাহান্নামী হতে হবে
০৯ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
যার-তার থেকে দ্বীনি ইলিম গ্রহণ করা যাবে না
০৯ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
পিতা-মাতার প্রতি সন্তানের দায়িত্ব-কর্তব্য
০৯ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আদেশ মুবারক বাস্তবায়নে হযরত মহিলা ছাহাবী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুন্না উনাদের বেনযীর দৃষ্টান্ত
০৮ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের যারা অনুসরণ করবেন উনারাও হাছিল করবেন সর্বোচ্চ সন্তুষ্টি মুবারক
০৮ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
ইলমে তাসাউফ অর্জন করা ব্যতীত ইবাদত মূল্যহীন
০৮ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
সুলত্বানুল হিন্দ হযরত খাজা ছাহেব রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার স্মরণে এই উপমহাদেশের সরকারগুলোর উদ্যোগ কোথায়?
০৭ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সুলত্বানুল হিন্দ হযরত খাজা হাবীবুল্লাহ চীশতি রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার উসীলায় এক কোটিরও বেশি বিধর্মী পবিত্র ঈমান লাভ করেন
০৭ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
হযরত খাজা হাবীবুল্লাহ চিশতী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি পবিত্র সুন্নত যিন্দাকারী অর্থাৎ মুহ্ইউস সুন্নাহ
০৭ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
আফসুস! পাঠ্যবইয়ে ‘স্বাস্থ্য শিক্ষার’ নামে শিশুদের লজ্জাহীনতার শিক্ষা দেয়া হচ্ছে!
০৬ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার)