মসজিদে গিয়ে মহিলাদের জামায়াতে নামায পড়ার বিষয়ে নিষেধাজ্ঞা সর্বোচ্চ স্থান থেকেই এসেছে
, ০৫ রমাদ্বান শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ১৭ আশির, ১৩৯১ শামসী সন , ১৬ মার্চ, ২০২৪ খ্রি:, ০২ চৈত্র, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) মহিলাদের পাতা
عَنْ حَضْرَتْ اِبْنِ عُمَرَ رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ عَنِ النَّبِىِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ صَلَاةُ الْمَرْاَةِ تَفْضُلُ عَلٰى صَلَاتِهَا فِى الْجَمْعِ خَمْسًا وَّعِشْرِيْنَ دَرَجَةً
অর্থ: হযরত আব্দুল্লাহ্ ইবনে উমর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার থেকে বর্ণনা করেছেন যে, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেছেন, মহিলাদের মসজিদে জামায়াতে নামায পড়ার চেয়ে ঘরে একা নামায পড়ায় ২৫ গুণ বেশী ফযীলত রয়েছে।” (ফিরদাউস লিদ্ দাইলামী ২য় খ- ৩৮৯ পৃষ্ঠা)
যেখানে মহিলাদের জন্য ঘরে একাকি নামায পড়ায় ২৫ গুণ ফযীলত, সেখানে মসজিদে গিয়ে জামায়াতে নামায পড়ার হেতু কি? বিদ্য়াতীদের কাছে এর জবাব আছে কি? নিশ্চয়ই নেই। পর্দার গুরুত্ব ও মহিলাদের ঘরে নামায পড়ার উৎসাহ ও ফযীলতপূর্ণ হাদীছ শরীফের দিকে লক্ষ্য রেখে আমীরুল মু’মিনীন সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম তিনি ইজতিহাদ করতঃ মহিলাদেরকে মসজিদে এসে জামায়াতে নামায পড়তে নিষেধ করে দেন। মহিলারা সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছাহ ছিদ্দীক্বাহ আলাইহাস সালাম উনার নিকট গিয়ে এ ব্যাপারে অভিযোগ করেন, তখন সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছাহ ছিদ্দীক্বাহ আলাইহাস সালাম তিনি বলেন, “যদি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আপনাদেরকে এ অবস্থায় পেতেন, যে অবস্থায় সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম তিনি পেয়েছেন, তবে অবশ্যই তিনিও আপনাদেরকে মসজিদে যেতে নিষেধ করতেন।”
সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছাহ ছিদ্দীক্বাহ আলাইহাস সালাম উনার এ কথার আসল অর্থ হলো, আমীরুল মু’মিনীন সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম তিনি যা করেছেন, ঠিকই করেছেন। অর্থাৎ আমি এটাকে পূর্ণ সমর্থন করি। আর সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছাহ ছিদ্দীক্বাহ আলাইহাস সালাম উনার সমর্থন বা সত্যায়িত করার অর্থই হলো, মহিলাদের মসজিদে যাওয়া নিষেধ।
আর সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম উনার ফাযায়িল-ফযীলত যেটা বলার অপেক্ষাই রাখেনা। উনার সম্পর্কে পবিত্র হাদীছ শরীফে উল্লেখ করা হয়েছে-
اَفْضَلُ اُمَّةِ النَّبِىِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بَعْدَهٗ اَبُوْ بَكْرٍ عَلَيْهِ السَّلَامُ ثُمَّ عُمَرُ عَلَيْهِ السَّلَامُ ثُمَّ عُثْمَانُ عَلَيْهِ السَّلَامُ
অর্থ: (হযরত ইবনে উমর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বলেছেন,) নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার উম্মতের মধ্যে উনার পরে সর্বোচ্চ মর্যাদাসম্পন্ন ব্যক্তি হলেন সাইয়্যিদুনা হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম, তারপর সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম, তারপর সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম। (আবূ দাউদ শরীফ, মিশকাত শরীফ)
পবিত্র হাদীছ শরীফে আরো উল্লেখ আছে-
لَوْ كَانَ بَعْدِىْ نَبِىٌّ لَكَانَ عُمَرُ الْفَارُوْقُ عَلَيْهِ السَّلَامُ.
অর্থ: নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, যদি আমার পরে কেউ নবী হতেন তবে সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম তিনি নবী হতেন।” (তিরমিযী শরীফ, মিশকাত শরীফ)
অন্য পবিত্র হাদীছ শরীফে উল্লেখ আছে-
اِنَّ اللهَ تَعَالٰى جَعَلَ الَحَقَّ عَلٰى لِسَانِ عُمَرَ عَلَيْهِ السَّلَامُ وَقَلْبِهٖ.
অর্থ: স্বয়ং মহান আল্লাহ্ পাক তিনি সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম উনার জবানে এবং অন্তরে হক কথা রেখে দিয়েছেন। (তিরমিযী শরীফ, আবূ দাউদ শরীফ, মিশকাত শরীফ)
বর্ণিত রয়েছে, সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম উনার কথার সমর্থনে মহান আল্লাহ পাক তিনি ২২ খানা আয়াত শরীফ নাযিল করেছেন। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আরো বলেন, “শয়তান সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম উনাকে দেখলে, তার মাথা খারাপ হয়ে যেত, কোন্ রাস্তা দিয়ে পালাবে।”
আর সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছাহ ছিদ্দীক্বাহ আলাইহাস সালাম উনার ফাযায়িল, ফযীলত মুবারক সম্পর্কে তো বলার অপেক্ষা রাখে না। কোন জিন-ইনসান, কোন ফেরেশ্তা এককথায় সৃষ্টি রাজীর কেউই হযরত উম্মুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের মর্যাদাতুল্য নেই।
এতদ্ব্যতীত পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে উল্লেখ রয়েছে, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেছেন-
خُذُوْا نِصْفَ دِيْنِكُمْ مِنْ هٰذِهِ الْحُمَيْرَةِ
অর্থ: তোমরা অর্ধেক দ্বীন গ্রহণ করবে সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছাহ ছিদ্দীক্বাহ আলাইহাস সালাম উনার কাছ থেকে। (মিশকাত শরীফ)
অতএব, যিনি আমিরুল মু’মিনীন, খলীফাতুল মুসলিমীন, সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম তিনি যেখানে মহিলাদের জামায়াত বন্ধ করে দিলেন। এবং উম্মুল কায়িনাত, সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছাহ ছিদ্দীক্বাহ আলাইহাস সালাম তিনি তা পূর্ণভাবে সমর্থন ও সত্যায়ন করলেন এবং সমস্ত হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা সেটা মেনে নিলেন সেখানে উনাদের বিরোধিতা করে এবং উনাদের ফায়ছালাকে উপেক্ষা করে মহিলাদের জামায়াতকে জায়িয বলা ও মহিলা জামায়াত পুনরায় চালু করা সম্পূর্ণই পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র সুন্নাহ শরীফ উনাদের খিলাফ। যা স্পষ্ট কুফরীর অন্তর্ভুক্ত। কেননা পবিত্র কুরআন শরীফ ও হাদীছ শরীফে হযরত উম্মুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম এবং হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদেরকে অনুসরণ করার জন্য আদেশ দেয়া হয়েছে এবং উনাদের বিরোধিতা করতে নিষেধ করা হয়েছে।
-আল্লামা মুফতী সাইয়্যিদ খুবাইব।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
সন্তানদের ও পরিবারের সকলকে সালাম দেয়া শিক্ষা দান করুন
২৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের বেমেছাল দানশীলতা মুবারক (৪)
২৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
কাফের বিশ্বে নারীরা শুধু কি এখন নির্যাতনের শিকার হচ্ছে?
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
একজন দ্বীনদার পরহেযগার আল্লাহওয়ালী মহিলা উনার পর্দা পালনের বেমেছাল দৃষ্টান্ত
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
প্রসঙ্গ মহিলা জামাত নাজায়িজ
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
পিতা-মাতার প্রতি সন্তানের দায়িত্ব-কর্তব্য
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
শৈশবকাল থেকেই সন্তানকে দ্বীনদার হওয়ার শিক্ষা দান করতে হবে
২০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
সম্মানিতা মহিলা আউলিয়া-ই কিরাম উনাদের পরিচিতি
১৯ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
স্বচক্ষে দেখা কিছু কথা
১৯ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
পারিবারিক তা’লীমের গুরুত্ব ও তারতীব
১৮ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
সুন্নতী খাবার সম্পর্কিত হাদীছ শরীফ : মেথি
১৮ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
খাবার বিষয়ে মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন
১৮ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার)