সম্পাদকীয় (২)
মরণ ফাঁদ ফারাক্কার বিরুদ্ধে তীব্র জনমত ও জাতীয় ঐক্য তৈরী করে ফারাক্কা বাধ ভেঙ্গে ফেলার জন্য কার্যকর কর্মপন্থা গ্রহণ করতে হবে ইনশাআল্লাহ
, ২৩ ছফর শরীফ, ১৪৪৬ হিজরী সন, ০১ রবি , ১৩৯২ শামসী সন , ২৯ আগষ্ট, ২০২৪ খ্রি:, ১৪ ভাদ্র , ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) সম্পাদকীয়
সব প্রশংসা মুবারক খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার জন্য; যিনি সকল সার্বভৌম ক্ষমতার মালিক। সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি অফুরন্ত দুরূদ শরীফ ও সালাম মুবারক।
বাংলাদেশের অবস্থান ভাটি অঞ্চলে হওয়ায় উজানে যেকোনো ধরনের পানি নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থার প্রত্যক্ষ নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। ভারত কর্তৃক গঙ্গা নদীতে ফারাক্কা বাঁধের কারণে মারাত্মক ক্ষতির মুখে পড়েছে বাংলাদেশ। ভারত কর্তৃক ফারাক্কা বাঁধের মাধ্যমে শুষ্ক মৌসুমে গঙ্গার পানির ব্যাপক প্রত্যাহার বাংলাদেশের জনগণের জীবনে মারাত্মক প্রভাব ফেলেছে। মানবসৃষ্ট এ দুর্বিপাকে বাংলাদেশের কৃষি, মৎস্য, বনজ, শিল্প, নৌ-পরিবহন, পানি সরবরাহ ইত্যাদি ক্ষেত্রে ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছে।
বাংলাদেশে বন্যা একটি প্রাকৃতিক ঘটনা, যা প্রধানত বর্ষাকালে ঘটে। কিন্তু ফারাক্কা বাঁধের প্রভাবে এই বন্যার মাত্রা ও ব্যাপকতা বেড়ে গেছে। বাঁধের কারণে গঙ্গার প্রধান শাখা পদ্মার পানিপ্রবাহ কমে গেছে, যার ফলে নদীর তলদেশ ভরাট হয়ে যাচ্ছে। অন্যদিকে, বর্ষার সময় অতিরিক্ত পানির চাপে বাঁধের গেট খুলে দেওয়া হয়, যা বাংলাদেশের নদীগুলোতে অতিরিক্ত পানি প্রবাহিত করে। ফলে নিম্নাঞ্চলগুলো প্লাবিত হয়।
ভারতের ফারাক্কা বাঁধের সব গেট খুলে দেয়ার ফলে পদ্মা নদীর পানি প্রবাহ উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে করে বাংলাদেশের উত্তর ও মধ্যাঞ্চলে ব্যাপক বন্যার সৃষ্টি হয়েছে। হাজার হাজার হেক্টর কৃষি জমি পানিমগ্ন হয়ে পড়েছে, ফলে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। পাকা ঘরবাড়ি, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং স্বাস্থ্য কেন্দ্রসহ অন্যান্য অবকাঠামোও পানির নিচে চলে যাচ্ছে।
আন্তর্জাতিক পানি বিশেষজ্ঞ বলেছেন, ফারাক্কা বাঁধ ভেঙে দেয়ার সময় এসেছে। এই বাঁধ ভারতেরও কোনো উপকারে আসেনি, বাংলাদেশের তো নয়ই। ভারতের লোকজনই এখন বলছে বাঁধটি ভেঙে দিতে। তা ছাড়া একটি বাঁধ নির্মাণের ৪০ বছর পার হলে সেটি নিয়ে পর্যালোচনা করতে হয়। কিন্তু ফারাক্কা বাঁধের বয়স ৫০ বছর হয়ে গেছে। ফারাক্কা বাঁধের বিরূপ প্রভাব নিয়ে এখনই আন্তর্জাতিক পর্যায়ে আমাদের জোরদার প্রতিবাদ তুলতে হবে এবং ফারাক্কা বাঁধের কারণে আমাদের বাংলাদেশের যে ক্ষতি হয়েছে এখনই তা প্রকটভাবে তুলে ধরতে হবে। জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক বিচারালয়ের ব্যবস্থা নিতে হবে।
উজানের কোন দেশের ভাটির দেশকে না জানিয়ে আন্তর্জাতিক নদীর পানি প্রত্যাহার করা জাতিসংঘ কনভেনশন ও আন্তর্জাতিক রীতি-নীতির সুস্পষ্ট লংঘন। অথচ ভারত প্রথম থেকেই ছলচাতুরির আশ্রয় নিয়ে বিশ্বকে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে এ কাজটি করে যাচ্ছে সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা নিয়ে। এত্থেকে উত্তরণের জন্য সার্বিক সক্রিয় ও সমন্বিত কর্মসূচী গ্রহণ করতে হবে ইনশাআল্লাহ।
প্রথমে ফারাক্কার অশুভ প্রভাব সম্পর্কে তীব্র জনমত এবং কঠিন জাতীয় ঐক্য গড়ে তোলার উপর জোর দিতে হবে।
পাশাপাশি ফারাক্কার কারণে বাংলাদেশের ক্ষয়-ক্ষতির কথা বিশ্বের দরবারে তুলে ধরে বিশ্ব জনমত গড়ে তুলতে হবে।
এজন্য ‘আঞ্চলিক নদী কমিশন’ গঠন ও আন্তর্জাতিক নদীর পানি ব্যবহারের নিয়ম-নীতির বাস্তব প্রয়োগ ঘটানো ও তদারকি করার ব্যবস্থা রাখতে হবে।
আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে কূটনৈতিক তৎপরতা জোরদার করতে হবে। মেকং নদী কমিশনের মতো বাংলাদেশও একটি কূটনৈতিক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারে। মেকং নদীর পানি কম্বোডিয়া, থাইল্যান্ড, লাওস ও ভিয়েতনাম সুষ্ঠুভাবে বণ্টন করে নিচ্ছে। ইউরোপের দানিয়ুব নদীর পানি পারস্পরিক সমঝোতার ভিত্তিতে ১২টি দেশ ভোগ করছে। নীল নদের পানি ভোগ করছে মিশর, সূদান ও ইথিওপিয়া। এমনকি ‘চিরশত্রু’ পাকিস্তানের কাছ থেকে সিন্ধু নদীর পানি ভারত ভোগ করছে ৩০ বছর আগ থেকে। এ অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগাতে হবে।
গঙ্গা নদীর উপর ফারাক্কা ছাড়াও তিস্তা নদীর উপর গজলডোবা বাঁধ ভেঙ্গে ফেলা ও সুরমা-বরাকের উপর ‘টিপাইমুখ বাঁধ’ নির্মাণ বন্ধ করার জন্য কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
এক্ষেত্রে পতিত সরকারের বিরুদ্ধে ছাত্র জনতার আন্দোলনের মত ফারাক্কার বিরুদ্ধে দেশব্যাপী জোরদার আন্দোলন তৈরী করতে হবে। ফারাক্কা বাধ ভেঙ্গে ফেলার জন্য ফারাক্কা অভিমুখে সর্বস্তরের জনতার শক্তিশালী অগ্রযাত্রার উদ্যোগ নিতে হবে ইনশাআল্লাহ।
ছহিবে সাইয়্যিদি সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ, রাজারবাগ শরীফ উনার মামদূহ মুর্র্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার নেক ছোহবত মুবারক-এ কেবলমাত্র তা লাভ করা সম্ভব। খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাদেরকে তা নছীব করুন। আমীন!
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
দেশে সাড়ে ৩ কোটি শুধু শিশুই সিসার বিষক্রিয়ায় আক্রান্ত এবং সব প্রাপ্ত বয়স্করাও ক্ষতিগ্রস্থ সিসার ক্ষতি থেকে বাঁচতে সুন্নতী তৈজসপত্র ব্যবহার এবং আন্তর্জাতিক সুন্নত প্রচার কেন্দ্রের জিনিস ক্রয়ে নিবেদিত হতে হবে ইনশাআল্লাহ
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে মহাব্যার্থ অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সশস্ত্র বাহিনীকে আরো ক্ষমতা দিয়ে প্রতিকার পাওয়া যেতে পারে
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
জ্বালানী তেলের দাম এক্ষুনি কমাতে হবে ইনশাআল্লাহ
২০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
অনেক কিছু করার প্রচারনা চালালেও জিডিপি এবং দেশের উন্নয়নের মূল ভিত্তি অর্থনীতির লাইফ লাইন এসএমই উদ্যোক্তাদের জন্য অন্তর্বর্তী সরকার কিছুই করছে না
২০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
প্রসঙ্গ: রাষ্ট্রদ্বীন ইসলাম, মুসলমানের দ্বীনি অধিকার, পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনাকে পালনের আবহ এবং রাষ্ট্রযন্ত্রের দায়।
১৯ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সিঙ্গাপুর, রাশিয়াসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে সন্ত্রাসী সংগঠন ইসকন নিষিদ্ধ বাংলাদেশেও বিভিন্ন মহলে ইসকন নিষিদ্ধের দাবী জোরদার হচ্ছে, সংস্কারের দাবীদার সরকার কী করে নির্বিকার থাকতে পারে?
১৯ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
ব্যাপকভাবে বাড়ছে সাইবার নিরাপত্তা ঝুঁকি ও হয়রানী জান-মাল এবং সম্মান হিফাজতে সরকারকে এক্ষুনি পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নিতে হবে ইনশাআল্লাহ
১৮ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
পাচারকৃত ১৭ লাখ কোটি টাকা ফেরত আনতে শামুকের মত ধীর গতি বরদাশতের বাইরে
১৮ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
সোনার বাংলার আরেক সোনালী অর্থনীতি- মৎস্য সম্পদ এর সমৃদ্ধির সুফল জনগণের হাতে যথাযথভাবে তুলে দিতে হবে ইনশাআল্লাহ
১৭ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
ছুটির দিনেও ঢাকার বাতাস এখন জীবনের জন্য হুমকিস্বরূপ নারিকেল দ্বীপ বাঁচানোর মিথ্যা প্রচারণার আগে সত্যিকার অর্থে ঢাকাকে বাঁচাতে হবে। ইনশাআল্লাহ!
১৭ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
সরকারের নির্দেশ আর হাইকোর্টের নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও কমানো হচ্ছে না শিশুর কাধে ১২ কেজির বইয়ের বোঝা সংস্কারের দাবীদার- নতুন সরকার কী নতুন বছরে শিশুর কাধে বইয়ের বোঝা কমাবে?
১৬ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
বীজ আইন সংস্কার করে শস্যের বীজে কৃষকের আসার নিশ্চিত করতে হবে।
১৬ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার)