বিভাগ: মহিলা ছাহাবী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুন্না উনাদের আত্মত্যাগ
বীরাঙ্গনা ছাহাবী সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মে উমারা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা
, ২৪ যিলক্বদ শরীফ, ১৪৪৪ হিজরী সন, ১৫ আউওয়াল, ১৩৯১ শামসী সন , ১৪ জুন, ২০২৩ খ্রি:, ৩১ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) মহিলাদের পাতা
পুরুষ ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমগণ উনারা যেভাবে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার এবং হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের সন্তুষ্টি মুবারক হাছিলের জন্য জান-মাল সবকিছু বিলীন করে দিয়েছেন, অনুরূপভাবে হযরত মহিলা ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুন্নাগণ উনারা নিজ আহাল (স্বামী), সন্তান-সন্ততি, ধন-সম্পদ, ঘরবাড়ী সবকিছু বিলীন করে দিয়েছেন। উনাদের প্রতি মহান আল্লাহ পাক তিনি এমন সন্তুষ্ট যে, স্বয়ং মহান আল্লাহ পাক তিনি ঘোষণা করেছেন, উনাদেরকে উত্তম জীবন দান করবেন এবং উত্তম পুরস্কার প্রদান করবেন। উনাদের নজীরবিহীন আত্মত্যাগের কতিপয় ঘটনা আলোচ্য কলামে ধারাবাহিকভাবে তুলে ধরা হবে ইনশাআল্লাহ!
নাসীবা বিনতে কা’ব আল মাযেনিয়্যা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা তিনি সবার কাছে পরিচিত ছিলেন হযরত উম্মে উমারা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা নামে। তিনি ছিলেন একজন আনছারী ছাহাবী। তিনি বনূ নজ্বর গোত্রের বাসিন্দা ছিলেন। উনার ভাই আবদুল্লাহ ইবনে কা’ব রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে বদর যুদ্ধের সঙ্গী ছিলেন। উনার দুই পুত্র হযরত হাবীব রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু ও হযরত আব্দুল্লাহ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার জন্য শহীদ হন। যুদ্ধের ময়দানে তিনি অসীম সাহসের জন্য সুপরিচিত ছিলেন।
হিজরতের পূর্বে হজ্জের মৌসুমে আইয়্যামে তাশরীকের মাঝামাঝি রাতের প্রথম প্রহরের শেষ মুহূর্তে মিনা প্রান্তরের আকাবা উপত্যকায় কুরাইশদের সম্পূর্ণ অগোচরে ৭২ জন পুরুষ ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার খিদমতে এগিয়ে এলেন, উনারা প্রত্যেকে, একে একে উনার নূরুল মাগফিরাত মুবারক বা দু’হাত মুবারকে নিজেদের হাত রেখে বাইয়াত মুবারক গ্রহণ করলেন। যা ইতিহাসে বাইয়াতে আক্বাবা নামে পরিচিত।
বাইয়াত মুবারক শেষ হলে এগিয়ে এলেন দুইজন মহিলা। পুরুষদের মতো উনারাও বাইয়াত মুবারক গ্রহণ করলেন। এই দুই মহিলার একজন পরিচিত ছিলেন উম্মে হানী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা নামে আর দ্বিতীয় জন ছিলেন নাসীবা বিনতে কা’ব আল মাযেনিয়্যা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা, যিনি পরিচিত উম্মে উমারা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা নাম মুবারকে। বাইয়াত শেষে হযরত উম্মে উমারা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা তিনি ফিরে আসলেন পবিত্র মদীনা শরীফে। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ছোহবত মুবারক লাভের চরম সৌভাগ্য বুকে নিয়ে বাইয়াতে আক্বাবার শর্তসমূহ পূরণ করার দৃঢ় সংকল্প নিয়ে।
উহুদের যুদ্ধের ঘটনা। সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মে উমারা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা তিনি উহুদের ময়দানের উদ্দেশ্যে বের হলেন নিজের পানির পাত্রটি নিয়ে, উনার উদ্দেশ্য মহান আল্লাহ পাক উনার রাস্তায় জিহাদকারীদের তৃষ্ণা নিবারণ করা। আরও নিয়েছিলেন আহতদের জন্য একগুচ্ছ পট্টি বা ব্যান্ডেজের প্যাকেট। উহুদের যুদ্ধে সাইয়্যিদাতুনা উম্মে উমারা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা নিজের দু’চোখে দেখছিলেন কীভাবে মুসলিম বাহিনীর বিজয় সাময়িক বিপর্যয়ে রূপান্তরিত হলো।
তিনি দেখলেন, মুসলিম বাহিনী নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নিকট থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়লেন। মাত্র দশজনের বেশি কাউকেই উনার পাশে দেখা গেল না। যা দেখে এক কাফির চিৎকার করে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার শাহাদাত মুবারকের মিথ্যা গুজব ছড়াতে লাগল। এমন মুহূর্তে হযরত উম্মে উমারা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা উনার পানির পাত্র ছুঁড়ে ফেলে, ক্ষিপ্র গতিতে ময়দানের দিকে ছুটে গেলেন। তিনি বলেন, আমি তখন যুদ্ধে নেমে পড়লাম। তরবারী দিয়ে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নিরাপত্তা বিধান করছিলাম আর তীর ছুড়ছিলাম। (সীরাতে ইবনে হিশাম ৩/৪৫)
সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মে উমারা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা তিনি বলেন ‘খুব সকালে আমি উহুদের ময়দানে গেলাম, আমার হাতে ছিল একটি পানির মশক, যা থেকে আমি মুজাহিদ ভাইদের পানি পান করাব। একসময় আমি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার কাছাকাছি পৌঁছে গেলাম। শক্তি, বিজয় ও সাহায্যের পাল্লা তখন আমাদের দিকে ঝুঁকে ছিল। একটু পরেই মুসলিম বাহিনী; নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নিকট থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়লেন। ফলে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার খিদমত মুবারকে সামান্য কয়েকজন প্রহরায় রইলেন। যাদের সংখ্যা দশের উপরে নয়। ফলে আমি, আমার আহাল (স্বামী) ও পুত্র দ্রুত এগিয়ে গেলাম উনার নিকট। হাতের বালা যেমন কবজিকে ঘিরে রাখে আমরা ঠিক সেভাবেই নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে ঘিরে রাখলাম। আর আমাদের সকল শক্তি ও অস্ত্র দিয়ে উনার উপর থেকে আক্রমণ প্রতিরোধ করতে থাকলাম। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আমার দিকে তাকিয়ে দেখলেন মুশরিকদের আক্রমণ থেকে নিজেকে রক্ষা করার কোন ঢাল আমার কাছে নেই। এরপর উনার দৃষ্টি পড়ল পলায়নপর একজনের প্রতি যার নিকট ছিল একটি ঢাল। তিনি তাকে ডেকে বললেন, “তোমার ঢালটি এমন কাউকে দিয়ে যাও যে লড়াই করছে। লোকটি নিজের ঢাল ফেলে দিয়ে চলে গেল আমি সেটা তুলে নিলাম এবং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি আক্রমণ ঠেকাতে লাগলাম।’
‘আমি নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতিরক্ষায় তরবারি চালিয়ে, তীর ছুঁড়ে আমার সর্বশক্তি ব্যয় করতে করতে এক পর্যায়ে অক্ষম হয়ে পড়লাম। আমার শরীরের গভীর ক্ষতগুলো আমাকে অপারগ করে দিল। এমন এক কঠিন মুহূর্তে উত্তেজিত উটের মত চিৎকার করে মুশরিক ইবনে কামিয়া নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে খুজতে লাগলো।
‘আমি আর মুছ’আব রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনিসহ আমরা দু’জনে মুশরিক ইবনে উমায়েরের পথ আগলে দাঁড়ালাম তখন সে তরবারির আঘাতে মুছআব রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনাকে ভূপাতিত করল, আরেক আঘাতে উনাকে শহীদ করে ফেলল। এরপর ভয়াবহ আঘাত করল আমার কাঁধে, যাতে সৃষ্টি হল গভীর ক্ষত। তারপরও আমি তার উপর উপর্যুপরি আঘাত করলাম, কিন্তু মহান আল্লাহ পাক উনার দুশমনের গায়ে ছিল দুইটি বর্ম।’
হযরত উম্মে উমারা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা তিনি আরও বলেন, ‘যে মুহূর্তে আমার পুত্র হযরত আব্দুল্লাহ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার উপর থেকে অবিরাম আক্রমণ প্রতিহত করে যাচ্ছিলেন হঠাৎ উনাকে ভীষণ আঘাত করে বসল এক মুশরিক, যাতে উনার বাহু কেটে বিছিন্ন হবার উপক্রম হল, ফিনকি দিয়ে রক্ত বের হতে থাকল। আমি উনার কাছে এগিয়ে গেলাম, সেখানে ব্যান্ডেজ বেঁধে দিলাম। কোমল সূরে উনাকে বললাম, “হে আমার বৎস! মহান আল্লাহ পাক উনার জন্য উঠে পড়, মহান আল্লাহ পাক উনার দুশমনদের খতম করতে এগিয়ে যাও, উঠ বৎস উঠ!!” সুবহানাল্লাহ!
মায়ের এই উৎসাহ বিপুল প্রাণশক্তি সঞ্চার করেছিল পুত্র হযরত আব্দুল্লাহ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার মনে। মা-ছেলের কথোপকথনের এই দৃশ্য দেখে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বলেছিলেন- “হে হযরত উম্মে উমারা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা! আপনি যা পেরেছেন তা আর কে পারবে! (তবাকাতে ইবনে সাদ ১০/৩৮৫; সিয়ারু আলামিন নুবালা ৩/৫১৬)
এরপর সেখানে এগিয়ে আসতে লাগল সেই লোকটি যে আমার পুত্রকে আঘাত করেছিল, তাকে দেখে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আমাকে ডেকে বললেন, হে উম্মে উমারা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা! এই দেখুন, এটাই আপনার পুত্রের ঘাতক। দৌড়ে আমি এক লাফে তার সামনে গিয়ে দাঁড়ালাম, তরবারি দিয়ে সজোরে আঘাত করলাম তার পায়ের নলায়, ধপাস করে পড়ে গেল সে মাটিতে। আমি তার কাছে এগিয়ে গেলাম, তরবারি ও বর্শার উপর্যুপরি আঘাতে তাকে শেষ করে দিলাম। নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আমার দিকে তাকিয়ে মুচকি হেসে বললেন, আপনি তো তার কেছাছ নিয়ে ফেললেন, হে উম্মে উমারা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা! মহান আল্লাহ পাক উনারই প্রশংসা করছি যিনি আপনাকে কেছাছ গ্রহণে সফল করলেন, আপনাকে নিজের চোখেই তার পতন দেখিয়ে দিলেন।’ সুবহানাল্লাহ!
উহুদ যুদ্ধের দিন সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মে উমারা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা যুদ্ধাংদেহী ছূরত মুবারক ধারণ করেছিলেন। সাইয়্যিদুনা দামরা ইবনে সা’ঈদ উনার দাদা ছিলেন উহুদের একজন যোদ্ধা; তিনি বলেছেন, ‘উম্মে উমারা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা সেদিন কোমরে কাপড় পেঁচিয়ে শত্রুদের ওপর প্রচন্ড আক্রমণ চালান। সেদিন তিনি মোট ১৩টি স্থানে আঘাতপ্রাপ্ত হন এবং উনার ঘাড়ে মারাত্মক ক্ষতের সৃষ্টি হয় যা ভালো হতে প্রায় ১ বছর সময় লাগে। যুদ্ধ শেষে উনাকে আহত ও অজ্ঞান অবস্থায় পাওয়া যায়। জ্ঞান ফেরার পরও উনার প্রথম বাক্য ছিল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি কেমন আছেন!’ (সীরাতে হালাবিয়া ২/২৩১; তাবাকাত ৮/৪১৩)
যুদ্ধ শেষ হলো। মুজাহিদগণ ঘরে ফিরতে লাগলেন। নূূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আব্দুল্লাহ ইবনে কা’ব মাযিনী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনাকে পাঠিয়ে সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মে উমারা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা উনার অবস্থা সম্পর্কে ওয়াকিফহাল না হয়ে ঘরে ফিরলেন না। সুবহানাল্লাহ!
যুদ্ধ শেষ হওয়ার কিছুদিন পর। নূূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি পবিত্র মদিনা শরীফ উনার মুজাহিদদের ‘হামরাউল আসাদ’ নামক এলাকায় যুদ্ধের জন্য বেরিয়ে পড়ার নির্দেশ দেন। নির্দেশ মুবারক শুনে সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মে উমারা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা তিনি সেখানে যাওয়ার জন্য কোমরে কাপড় পেঁচিয়ে প্রস্তুত হয়ে যান। কিন্তু ক্ষত থেকে রক্ত ক্ষরণের কারণে সক্ষম হননি। (তাবাকাত-৮/৪১৩)
উহুদ যুদ্ধ ছাড়াও তিনি আরো অনেক যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। ইবনে সা’দের বর্ণনা মতে, তিনি উহুদ, হুদাইবিয়া, খায়বার, কাজা উমরা আদায়, হুনাইন ও ইয়ামামার যুদ্ধ ও অভিযানে যোগ দেন। হাকেম ও ইবনে মুন্দার মতে, তিনি বদরের যুদ্ধেও যোগ দিয়েছিলেন। তবে একমাত্র ইয়ামামার যুদ্ধ ছাড়া অন্য কোনো যুদ্ধে ও অভিযানে উনার অংশগ্রহণের কোনো বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যায় না। (ইবন হিশাম-১/৪৬৬)
খলীফাতুল মুসলিমীন, আমীরুল মু’মিনীন সাইয়্যিদুনা হযরত ফারুকে আ’যম আলাইহিস সালাম তিনি সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মে উমারা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা উনাকে অত্যন্ত সম্মান ও মর্যাদার দৃষ্টিতে দেখতেন। উনার খিলাফতকালে একবার গনীমতের মালের মধ্যে কিছু চাদর আসে। তার মধ্যে একটি চাদর ছিল খুবই সুন্দর ও দামি। অনেকে বললেন, চাদরখানা খলিফা তনয় হযরত আবদুল্লাহ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার আহলিয়াকে দেয়া হোক। অনেকে সাইয়্যিদুনা হযরত ফারুকে আ’যম আলাইহিস সালাম উনার আহলিয়া সাইয়্যিদাতুনা হযরত বিনতু ছালিছাহ লি- ইমামিল আউওয়াল আলাইহাস সালাম উনাকে দেয়ার কথা বললেন। খলীফাতুল মুসলিমীন, আমীরুল মু’মিনীন সাইয়্যিদুনা হযরত ফারুকে আ’যম আলাইহিস সালাম তিনি কারো কথা শুনলেন না। তিনি বললেন, আমি এ চাদরের সবচেয়ে বেশি হকদার সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মে উমারা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা উনাকে মনে করি। এটি উনাকেই দিব। কারণ আমি উহুদের দিন উনার সম্পর্কে নূূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে বলতে শুনেছি, ‘আমি যে দিকেই দৃষ্টিপাত করছিলাম, শুধু সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মে উমারা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা উনাকেই লড়তে দেখছিলাম।’ সুবহানাল্লাহ! সুতরাং তিনি চাদরটি উনার কাছে পাঠিয়ে দেন। (তাবাকাত-৮/৪১৫; সিয়ারু আ’লামিন নুবালা ২/২৮১; আনসাব আল-আশরাফ-১/৩২৬) (পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় থাকুন)
-উম্মু ফারজানা
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
কাফের বিশ্বে নারীরা শুধু কি এখন নির্যাতনের শিকার হচ্ছে?
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
একজন দ্বীনদার পরহেযগার আল্লাহওয়ালী মহিলা উনার পর্দা পালনের বেমেছাল দৃষ্টান্ত
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
প্রসঙ্গ মহিলা জামাত নাজায়িজ
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
পিতা-মাতার প্রতি সন্তানের দায়িত্ব-কর্তব্য
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
শৈশবকাল থেকেই সন্তানকে দ্বীনদার হওয়ার শিক্ষা দান করতে হবে
২০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
সম্মানিতা মহিলা আউলিয়া-ই কিরাম উনাদের পরিচিতি
১৯ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
স্বচক্ষে দেখা কিছু কথা
১৯ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
পারিবারিক তা’লীমের গুরুত্ব ও তারতীব
১৮ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
সুন্নতী খাবার সম্পর্কিত হাদীছ শরীফ : মেথি
১৮ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
খাবার বিষয়ে মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন
১৮ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
জন্মের প্রথম মাস
১৭ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের অনুসরণে মু’মীনদের জীবন গড়ে তোলা দায়িত্ব-কর্তব্য
১৭ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার)