বিশ্বজুড়ে ভয়ংকর মাদক আইস এখন রাজধানী থেকে গ্রামেও ছড়িয়েছে
অতি মূল্যের উচ্চবিত্তের এই মাদক ডার্কনেটের মাধ্যমে আসে ভারত ও মিয়ানমার থেকে। সরকারকে সর্বোচ্চ সক্রিয় হয়ে আইসসহ সব ধরনের মাদকের বিরুদ্ধে জিহাদ ঘোষণা করতে হবে।
, ১৪ রমাদ্বান শরীফ, ১৪৪৪ হিজরী সন, ০৬ হাদি ‘আশির, ১৩৯০ শামসী সন , ০৬ এপ্রিল, ২০২৩ খ্রি:, ২৪ চৈত্র, ১৪২৯ ফসলী সন, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) সম্পাদকীয়
সব প্রশংসা মুবারক খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার জন্য; যিনি সকল সার্বভৌম ক্ষমতার মালিক। সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নবী আলাইহিমুস সালাম উনাদের নবী, রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি অফুরন্ত দুরূদ শরীফ ও সালাম মুবারক।
৯০ দশকের শেষ দিকে দেশে মাদক হিসেবে ইয়াবা সেবন চললেও ২০০২ সালের দিকে তা ধরা পড়ে। যদিও শুরুর দিকে এ নিয়ে মাথাব্যাথা ছিল না প্রশাসনের। সেই ইয়াবাই এখন মাথাব্যাথার বড় কারণ। ২০১৯ সালের শুরুর দিকে দেশে আরেক ভয়ংকর মাদক আইস’ বা ক্রিস্টাল মেথ’-এর অস্তিত্ব মিলে।
ঢাকা থেকে মাত্র পাঁচ গ্রাম ক্রিস্টাল মেথসহ (আইস) তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছিল মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর (ডিএনসি)। বিশ্বজুড়ে ভয়ংকর এই মাদক নিয়ে তখন তোলপাড় শুরু হয়। এরপর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ড্রাগ এনফোর্সমেন্ট এজেন্সি এই বিষয়ে তথ্যও চায়। মরণঘাতী এ মাদক নিয়ে ওই সময় উদ্বেগ ছড়ালেও বন্ধ হয়নি এর ছড়াছড়ি। এখন রাজধানী থেকে গ্রামেও ছড়িয়েছে তা, উদ্ধার হচ্ছে কেজিতে কেজিতে।
অবৈধ এই মাদকের কোনো বাজারমূল্য না থাকলেও কারবারিরা তা প্রতি কেজি দুই থেকে আড়াই কোটি টাকায় বিক্রি করছে বলে বিভিন্ন সময়ে গ্রেপ্তার কারবারিদের কাছ থেকে তথ্য মিলেছে।
মাদক হিসেবে আইস ইয়াবার চেয়ে কমপক্ষে বহুগুণ বেশি ক্ষতিকর। একবার আইস সেবন শুরু করলে এ মাদকে নির্ভরতা চলে আসে। বেশি সেবন করতে ইচ্ছে করে সেবনকারীর। ইয়াবার চেয়ে দামও বেশি আইসের। এরইমধ্যে বাংলাদেশে ছোট আকারের একটি ক্রেতা শ্রেণীও তৈরি হয়েছে। পুরোটাই অ্যামফিটামিন হওয়ায় এটি সেবনের পর মানবদেহে অতি অল্প সময়ে তীব্র উত্তেজনা সৃষ্টি করতে পারে। এই মাদক সেবনে মস্তিস্কের রক্তনালি ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং এ থেকে রক্তক্ষরণ হতে পারে। এটি হৃদযন্ত্র, কিডনি ও লিভারেরও ভয়াবহ ক্ষতি করতে পারে। পাশাপাশি তরুনদের বিকলাঙ্গতার পথেও ধাবিত করে। এক কথায় এটি দ্রুত মানুষকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেয়।
দেশের কথিত উচ্চবিত্ত নামধারী উশৃঙ্খল যুবসমাজের মাধ্যমেই মূলত আইসসহ নিত্যনতুন মাদকের অনুপ্রবেশ ঘটছে দেশে। রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন শহরের নাইট ক্লাব ও আবাসিক হোটেলগুলোতে লুকিয়ে এটি সেবন করা হচ্ছে। এটা গ্রহণ করে সাধারণত হোটেল বা ডিজে পার্টিতে সম্ভ্রমহরণের মতো ঘটনা ঘটছে।
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশে এই আইস প্রস্তুত ও বিস্তারের পেছনে বৈদেশিক শক্তি পরোক্ষভাবে জড়িত। বাংলাদেশ ভারতসহ সার্কভুক্ত দেশে এখনো আইসের উপর কোনো নিয়ন্ত্রণ বা আইনি নজরদারি নেই। ফলে ভারত হয়ে উঠেছে আইসের অন্যতম প্রধান উৎস দেশ। মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোও নিয়ন্ত্রণের বাইরে। ফলে মাদক পাচারকারীরা ভারত ও মিয়ানমার থেকে আইস আমদানি করে বাংলাদেশ দিয়ে মধ্যপ্রাচ্যসহ বিভিন্ন দেশে পাঠায়। এখানে বাংলাদেশকে মাদকের ট্রানজিট রূট হিসেবে ব্যবহার করছে ভারত ও মায়ানমার। এতে করে ভারতের উপর কোন চাপ প্রয়োগ হচ্ছেনা। কিন্তু কৌশলের ফাঁদে পড়ে দুর্নাম হচ্ছে বাংলাদেশের।
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সূত্রগুলো বলছে, মূলত মিয়ানমার থেকে নৌপথে আইস বা ক্রিস্টাল মেথ দেশে ঢুকছে। মিয়ানমারের মাদক কারবারিরা মাছ ধরার ট্রলারে বা আচারসহ অন্যান্য পণ্যের সঙ্গে এই মাদক টেকনাফে পাচার করছে। সেখান থেকে তা রিসিভ করছে টেকনাফের চিহ্নিত কারবারিরা। রোহিঙ্গাদের একটি অংশও এই কাজ করছে। তাদের মাধ্যমে তিন হাত ঘুরে তা চলে যাচ্ছে মাদকসেবীদের কাছে।
এ ছাড়াও বিমানে মালয়েশিয়া ও থাইল্যান্ড থেকে বিভিন্ন পণ্যের ভেতর এই মাদক আসার তথ্য রয়েছে গোয়েন্দাদের কাছে।
টেকনাফকেন্দ্রিক পুরোনো ইয়াবা কারবারিরাই আইস সিন্ডিকেটে রয়েছে। ইয়াবা উদ্ধারে তৎপরতার ফাঁকে এরা ভিন্ন দিকে অপতৎপরতা শুরু করেছে। তবে এই আইস কারবারিদের লাগাম টেনে ধরতে ডিএনসি ছাড়াও অন্যান্য সংস্থা দায়িত্ব পালন করছে। সাম্প্রতিক সময়ে আইসের চালানও কমে এসেছে।
সূত্র বলছে, তিন সিন্ডিকেটের হাত ঘুরে মাদকসেবীদের কাছে যায় এই আইস। এর মধ্যে প্রথম স্তরে রয়েছে টেকনাফের স্থানীয় মাদক কারবারি ও রোহিঙ্গা। তাদের কাছ থেকে দ্বিতীয় স্তরের হাতে যায় এই মাদক। এই চক্রের সদস্যরা ঢাকা-কক্সবাজার রুটের যাত্রীবাহী বাস এবং নানা পণ্যের আড়ালে ঢাকায় পৌঁছে দেয়। তৃতীয় স্তরে থাকা চক্রের সদস্যরা ঢাকায় এই মাদকের চালান রিসিভ করে। এরা মূলত পাইকারি বিক্রেতা। এই চক্রের হাত ঘুরে তা ছড়িয়ে পড়ছে সারা দেশে।
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের এক কর্মকর্তা বলেন, তারা মাঝেমধ্যে বাহককে ধরতে পারলেও নেপথ্যে থাকা লোকজনের নাগাল পাচ্ছেন না। কারণ ধরা পড়া ব্যক্তি তার আগে-পরের দুই স্তরের কাউকে চেনে না বলে দাবি করে থাকে।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, বাংলাদেশে ১৯৯০ সালের মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন, ১৯৯৯ সালের মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ বিধিমালা, ২০০১ সালের মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ বোর্ড বিধিমালাসহ ভূরি ভূরি মাদক আইন রয়েছে। কিন্তু সেগুলো কাগুজেই রয়ে গেছে। তার সঠিক কোনো বাস্তবায়ন হচ্ছে না। মাদক দেশের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম এবং দেশের ভাবমুর্তির উপর আঘাত হেনেছে সেক্ষেত্রে সরকারের উচিত ছিলো মাদকের প্রসার রোধকল্পে কঠিন নজরদারি এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতা ব্যাপক করা। দুঃখজনক হলেও সত্য তার সিকিভাগও হচ্ছে না। আর আমরা মনে করি, শুধু আইন-কানুন কিংবা নজরদারিতে দেশে আইসসহ নতুন মাদকের প্রবেশ কিংবা ইয়াবার আগ্রাসন নির্মূল করা সম্ভব নয়। এর জন্য প্রয়োজন নৈতিকতা ও মাদকবিরোধী অনুভূতি ও চেতনা। যা সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার মধ্যেই নিহিত রয়েছে। যা দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীও খোদ স্বীকার করেছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন যে “আইন করে অপরাধ নির্মূল সম্ভব নয়”। আমরা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কথার সাথে একমত পোষণ করে বলতে চাই যে “আইন নয় বরং ইসলামী অনুশাসনই পারে এই আইসসহ দেশের সকল প্রকার মাদকের বিস্তার নির্মূল করতে, অনুপ্রবেশ রুখতে”। সম্মানিত ইসলামী অনভূতির প্রচার ও প্রসারের মাধ্যমে মানুষের মধ্যে মাদকবিরোধী অনভূতি প্রকট হয়ে উঠবে। তখন দেখা যাবে যে, জনগণই দেশ-বিদেশের সব মাদক প্রতিরোধ করছে। ইনশাআল্লাহ!
ছহিবে সাইয়্যিদি সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ, রাজারবাগ শরীফ উনার মামদূহ মুর্র্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার নেক ছোহবত মুবারক-এ কেবলমাত্র তা লাভ করা সম্ভব। খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাদেরকে তা নছীব করুন। (আমীন)
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
দেশে সাড়ে ৩ কোটি শুধু শিশুই সিসার বিষক্রিয়ায় আক্রান্ত এবং সব প্রাপ্ত বয়স্করাও ক্ষতিগ্রস্থ সিসার ক্ষতি থেকে বাঁচতে সুন্নতী তৈজসপত্র ব্যবহার এবং আন্তর্জাতিক সুন্নত প্রচার কেন্দ্রের জিনিস ক্রয়ে নিবেদিত হতে হবে ইনশাআল্লাহ
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে মহাব্যার্থ অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সশস্ত্র বাহিনীকে আরো ক্ষমতা দিয়ে প্রতিকার পাওয়া যেতে পারে
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
জ্বালানী তেলের দাম এক্ষুনি কমাতে হবে ইনশাআল্লাহ
২০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
অনেক কিছু করার প্রচারনা চালালেও জিডিপি এবং দেশের উন্নয়নের মূল ভিত্তি অর্থনীতির লাইফ লাইন এসএমই উদ্যোক্তাদের জন্য অন্তর্বর্তী সরকার কিছুই করছে না
২০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
প্রসঙ্গ: রাষ্ট্রদ্বীন ইসলাম, মুসলমানের দ্বীনি অধিকার, পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনাকে পালনের আবহ এবং রাষ্ট্রযন্ত্রের দায়।
১৯ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সিঙ্গাপুর, রাশিয়াসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে সন্ত্রাসী সংগঠন ইসকন নিষিদ্ধ বাংলাদেশেও বিভিন্ন মহলে ইসকন নিষিদ্ধের দাবী জোরদার হচ্ছে, সংস্কারের দাবীদার সরকার কী করে নির্বিকার থাকতে পারে?
১৯ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
ব্যাপকভাবে বাড়ছে সাইবার নিরাপত্তা ঝুঁকি ও হয়রানী জান-মাল এবং সম্মান হিফাজতে সরকারকে এক্ষুনি পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নিতে হবে ইনশাআল্লাহ
১৮ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
পাচারকৃত ১৭ লাখ কোটি টাকা ফেরত আনতে শামুকের মত ধীর গতি বরদাশতের বাইরে
১৮ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
সোনার বাংলার আরেক সোনালী অর্থনীতি- মৎস্য সম্পদ এর সমৃদ্ধির সুফল জনগণের হাতে যথাযথভাবে তুলে দিতে হবে ইনশাআল্লাহ
১৭ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
ছুটির দিনেও ঢাকার বাতাস এখন জীবনের জন্য হুমকিস্বরূপ নারিকেল দ্বীপ বাঁচানোর মিথ্যা প্রচারণার আগে সত্যিকার অর্থে ঢাকাকে বাঁচাতে হবে। ইনশাআল্লাহ!
১৭ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
সরকারের নির্দেশ আর হাইকোর্টের নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও কমানো হচ্ছে না শিশুর কাধে ১২ কেজির বইয়ের বোঝা সংস্কারের দাবীদার- নতুন সরকার কী নতুন বছরে শিশুর কাধে বইয়ের বোঝা কমাবে?
১৬ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
বীজ আইন সংস্কার করে শস্যের বীজে কৃষকের আসার নিশ্চিত করতে হবে।
১৬ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার)