বিচ্ছিন্নতাবাদী-সন্ত্রাসবাদী সংগঠনের উত্থান, পাহাড়ে বাড়ছে প্রাণহানি
, ২৫ শা’বান শরীফ, ১৪৪৪ হিজরী সন, ১৮ ‘আশির, ১৩৯০ শামসী সন , ১৮ মার্চ, ২০২৩ খ্রি:, ০৪ চৈত্র, ১৪২৯ ফসলী সন, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) দেশের খবর
উগ্রতাবাদী সন্ত্রাসবাদীদের পাশাপাশি উপজাতি পাহাড়ি বিচ্ছিন্নতাবাদী সন্ত্রাসী সংগঠনগুলোর নানা সমীকরণে জটিল হয়ে উঠেছে বান্দরবান পার্বত্য জেলার পরিস্থিতি। গোষ্ঠীভিত্তিক দ্বন্দ্বের জেরে পাহাড়ে একের পর এক উত্থান হচ্ছে নতুন নতুন আঞ্চলিক সংগঠনের। তারা আধিপত্য বিস্তারের জেরে খুন, গুম, চাঁদাবাজিসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গেও সংঘর্ষে লিপ্ত হচ্ছে।
এছাড়া সন্ত্রাসী সংগঠন কুকিচিন দুর্গম পাহাড়ে মিয়ানমার ও ভারতের বিচ্ছিন্নতাবাদীদের কাছ থেকে প্রশিক্ষণ নিচ্ছে। আবার টাকার বিনিময়ে তারা বাংলাদেশি সন্ত্রাসবাদীদের প্রশিক্ষণ দিচ্ছে বলেও অভিযোগ রয়েছে। এসব ঘটনায় স্থানীয়দের মধ্যে দেখা দিয়েছে উৎকণ্ঠা। অবনতি হচ্ছে ব্যবসা-বাণিজ্য এবং পিছিয়ে যাচ্ছে পর্যটন খাত।
কেএনএফের সাথে সন্ত্রাসবাদী কানেকশন:
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বান্দরবানের রোয়াংছড়ি-রুমা-থানচি-লামা-আলীকদমের পাশাপাশি রাঙ্গামাটির বাঘাইছড়ি-বরকল-জুড়াছড়ি এবং বিলাইছড়ি নিয়ে কথিত স্বাধীন কুকিল্যান্ড প্রতিষ্ঠার কথা বলে গোপন সামরিক প্রশিক্ষণ শুরু করে পাহাড়ি সন্ত্রাসী সংগঠন কুকিচিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট-কেএনএফ।
এই কুকিচিনের কাছে নিষিদ্ধ সন্ত্রাসবাদী সংগঠন হরকাতুল জেহাদ হুজি-আনসার আল ইসলাম এবং জেএমবি’র সমন্বয়ে গঠিত জামায়াতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়ার সদস্যরাও প্রশিক্ষণ নিয়েছে। পাশাপাশি কুকিচিন ন্যাশনাল ফ্রন্টকে অন্যান্য পাহাড়ি সন্ত্রাসী সংগঠনগুলোও মদত দিচ্ছে বলে তথ্য পেয়েছেন গোয়েন্দারা।
উপজাতি সন্ত্রাসী নাথান বমের নেতৃত্বে ২০১৮ সাল থেকে কেএনএফ সন্ত্রাসী সংগঠনটি গড়ে ওঠে। পরে সংগঠনটির সদস্যরা মিয়ানমারের কোচিন ইন্ডিপেন্ডন্ট আর্মি এবং ভারতের মনিপুরী কুকি ন্যাশনাল অর্গানাইজেশনের কাছে সামরিক প্রশিক্ষণ নিয়েছে বলে চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে।
গত বছরের শেষের দিকে বাংলাদেশের ৫৫ জন তরুণ কথিত হিজরতের নামে বান্দরবানের দুর্গম পাহাড়ে আত্মগোপনে গেলে বের হয়ে আসে কেএনএফের নানা তথ্য।
র্যাব-১১ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল তানভীর মাহমুদ পাশা বলেন, কুকিচিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট বাহিনীর সঙ্গে তরুণরা সংগঠিত হয় প্রশিক্ষণের জন্য। কেএনএফ অর্থের বিনিময়ে প্রশিক্ষণসহ অন্যান্য সহায়তা দেয় তাদের।
গত বছরের অক্টোবর থেকে কথিত হিজরতে যাওয়া তরুণদের খোঁজে বান্দরবানের দুর্গম পাহাড়ে অভিযান শুরু করে র্যাব। ধর্মীয় কিংবা মতাদর্শের ভিন্নতা থাকলেও প্রতি মাসে নগদ তিন লাখ টাকার পাশাপাশি খাদ্য সহায়তা দেয়ার চুক্তিতে বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন কুকিচিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করে সন্ত্রাসবাদী সংগঠন হিন্দাল শারক্বীয়ার।
অভিযানের মুখে বেপরোয়া বিচ্ছিন্নতাবাদীরা:
এ পর্যন্ত সন্ত্রাসবাদী সংগঠন হিন্দাল শারক্বীয়ার সামরিক প্রধানসহ ৬৮ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। একইসঙ্গে গ্রেফতার হয়েছে সন্ত্রাসবাদীদের প্রশিক্ষক হিসেবে কাজ করা কুকিচিনের ১৭ জন সক্রিয় সদস্য।
পাহাড়ে র্যাবের অভিযান যতো জোরালো হচ্ছে, ততোই আগ্রাসী হয়ে উঠছে কুকিচিনের সদস্যরা। এরইমধ্যে সেনাবাহিনীর টহল টিমের ওপর তারা হামলা চালিয়েছে। আর বিস্ফোরক দিয়ে সেতু উড়িয়ে দেয়ার চেষ্টাও চালিয়েছে তারা।
র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক খন্দকার আল মঈন বলেন, কুকিচিনের সদস্যরা বিচ্ছিন্নভাবে বিভিন্ন হামলা চালাচ্ছে। বিশেষ করে যারা উন্নয়ন কাজের সঙ্গে সম্পৃক্ত এবং সেনা সদস্যসহ মেডিকেল টিমের সদস্যদের ওপর বিভিন্ন সময় হামলার ঘটনা ঘটেছে।
স্থানীয়রা বলছেন, শান্তিচুক্তির পর দীর্ঘদিন পাহাড় শান্ত থাকলেও গোষ্ঠীভিত্তিক দ্বন্দ্বের জেরে পার্বত্যাঞ্চলে একের পর এক উত্থান হয়েছে নতুন নতুন আঞ্চলিক দলের। গেল এক দশকে পার্বত্য জেলা বান্দরবানে আত্মপ্রকাশ ঘটেছে জেএসএস সংস্কার, ইউপিডিএফ, ইউপিডিএফ সংস্কার, মগ লিবারেশন পার্টি ও কুকিচিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট নামে বেশ কয়েকটি আঞ্চলিক সংগঠনের। এসব সংগঠনের সন্ত্রাসবাদী কানেকশন পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলছে।
এছাড়া সংগঠনগুলোর সদস্যদের মধ্যে ভ্রাতৃঘাতী আধিপত্য বিস্তারের জেরে বেড়েছে প্রাণহানি। নিজেদের অন্তর্কোন্দল ও সংঘাতে গেল দুই বছরে পাহাড়ি জনপদ বান্দরবানে ২৩ জনের প্রাণ গেছে। বাড়ছে গুম ও অপহরণের মতো ঘটনা।
সম্প্রতি পাহাড়ের আঞ্চলিক সংগঠন কেএনএফের হামলায় প্রাণ হারান সেনাবাহিনীর এক সদস্য। এর ফলে আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে পাহাড়ের পরিবেশ। এসব কারণে ভয় ও উৎকণ্ঠায় দিনযাপন করছেন পাহাড়ে বসবাসকারী বাসিন্দারা।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তথ্যমতে, কুকিচিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের কাছে বর্তমানে একে-৪৭ এবং একে-২২ রাইফেলের মতো কয়েক ধরনের অত্যাধুনিক অস্ত্র রয়েছে। অভিযান জোরদার হলেই তারা সীমান্ত অতিক্রম করে আশ্রয় নিচ্ছে প্রতিবেশী দেশ ভারতে। সংগঠনটির প্রধান নাথান বমেরও অবস্থান সেখানে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
পাহাড়ের অস্থিতিশীল এ পরিস্থিতির কারণে দফায় দফায় নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হচ্ছে। অস্থিরতা ঠেকাতে পাহাড়ি অঞ্চলে সাঁড়াশি অভিযানের কোনো বিকল্প দেখছেন না নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
উগ্রতাবাদী ইসকন এবং হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ নিষিদ্ধ করার দাবি
২০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
১০ মাসে ৪৮২ শিশু নিহত, নির্যাতনের শিকার ৫৮০
২০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
টাঙ্গাইলে বাস-পিকআপভ্যান সংঘর্ষে চারজন নিহত
২০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
দুধ দিয়ে গোসল করে ‘চাকরিতে ৩৫’ আন্দোলনের কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা
২০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
কারাগারেও তৎপর সালফান এফ রহমান!
২০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
পাশের দেশের মিডিয়া মিথ্যা প্রচার করে বেশি -স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
২০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
সংস্কারের কথা যারা বলেছেন আন্দোলনে তাদের অনেককে দেখি নাই -ড. মঈন
২০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
ভয়াবহ চ্যালেঞ্জের মুখে দেশের আর্থিক খাত -অর্থ উপদেষ্টা
২০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
নির্বাচিত হয়ে এলে জাতীয় সরকার গঠন করবো -ফখরুল
২০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
অতি প্রয়োজনীয় কিছু সংস্কার করে যতদ্রুত সম্ভব নির্বাচন দেবো -আইন উপদেষ্টা
২০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
শেখ হাসিনাকে ফিরিয়ে না দিলে ভারতের সঙ্গে খুব একটা সুখের সম্পর্ক হবে না
২০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
কবে ফিরবে রোহিঙ্গারা
২০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার)