বাদশাহ মুহিউদ্দিন মুহম্মদ আওরঙ্গজেব আলমগীর রহমাতুল্লাহি আলাইহি গুজরাটের সুবেদারী এবং বলখ-বাদাখশানযুদ্ধের সেনাপতি
, ০৩ যিলহজ্জ শরীফ, ১৪৪৪ হিজরী সন, ২৩ আউওয়াল, ১৩৯১ শামসী সন , ২২ জুন, ২০২৩ খ্রি:, ০৮ আষাঢ়, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) ইতিহাস
তদানীন্তন সময়ে গুজরাট ছিলো চোর-ডাকাত আর বিদ্রোহীদের আখড়া। এরা জনসাধারণের জীবন দুর্বিষহ করে তুলেছিলো। দিন দিন তাদের দৌরাত্ম বেড়ে চলছিলো এবং দূরদূরান্তে ছড়িয়ে পড়েছিলো। তাদের নিয়ন্ত্রন করা দুরূহ হয়ে উঠেছিলো। সবকিছু বিবেচনা রেখেই বাদশাহ শাহ জাহান আওরঙ্গজেব আলমগীর রহমতুল্লাহি আলাইহি উনাকে গুজরাটের সুবেদারি প্রদান করেন। তিনি বুঝতে পেরেছিলেন, গুজরাটের শান্তি শৃঙ্খলা একমাত্র উনার মাধ্যমেই আনা যাবে। আওরঙ্গজেব রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি নিজেও এর গুরুত্ব উপলব্ধি করতে পেরেছিলেন।
গুজরাট এসেই তিনি কৌশল ও বিচক্ষণতার সঙ্গে পরিকল্পনা সাজাতে শুরু করেন। প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে প্রতিটি ডাকাত ও বিদ্রোহী দলের তথ্য সংগ্রহ করেন। প্রথমে ডাকাত দলগুলোতে শায়েস্তা করেন। পাশাপাশি একটি সুশৃঙ্খল ও শক্তিশালী বাহিনী গড়ার লক্ষ্যে সেনাবাহিনীতে সদস্য ভর্তিও বেগবান করেন। কয়েক মাস বিরতি দিয়ে তিনি সদ্যগঠিত শক্তিশালী বাহিনী নিয়ে পুরোদমে মাঠে নামেন। এরপর অবশিষ্ট ডাকাত ও বিদ্রোহী দলগুলোর মূলোৎপাটন করে জনজীবনে শান্তি ফিরিয়ে আনতে সক্ষম হন। উনার এই কার্যকরী পদক্ষেপ জনসাধারণের মন থেকে সব ধরণের শঙ্কা দূর করে দেয়। রাস্তাঘাটও নিরাপদ হয়ে যায়। সর্বোপরি আওরঙ্গজেব আলমগীর রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি সাধারণ মানুষের অত্যন্ত শ্রদ্ধাভাজন ব্যক্তিতে পরিণত হন। গুজরাটের সাধারণ মানুষ উনাকে সুবেদার হিসেবে পেয়ে অত্যন্ত খুশি হয়েছিলো। কারণ তিনি অত্যন্ত দয়ালু ব্যক্তি ছিলেন। তিনি অত্যন্ত সাধারণ জীবনযাপন করতেন-চলতেন। সব সময় মানুষের কল্যাণের চিন্তা করতেন।
তবে গুজরাটে তিনি বেশিদিন সুবেদার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেননি। কারণ সুবেদারি লাভের কিছুদিন পরই উনাকে সেখান থেকে প্রত্যাহার করে শায়েস্তা খানকে সেখানকার সুবেদার দেয়া হয় এবং উনাকে তখন চলমান বলখ ও বাদাখশানযুদ্ধের সেনাপতির দায়িত্ব দেয়া হয়। কাবুলের উত্তরে হিন্দুকুশ পর্বতমালার ওপারের শহর বলখ ও বাদাখশান ছিল তখন বুখারার করদরাজ্য। সেখানকার সুলতান নজর মুহম্মদ খান ছিলো একজন অযোগ্য ও অথর্ব শাসক। ফলে তার এলাকায় বিভিন্ন জায়গায় বিদ্রোহ মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে। তাই বাদশাহ শাহ জাহান ওই অঞ্চল মুঘল সালতানাতের অধীনে নিয়ে আসতে আওরঙ্গজেব রহমতুল্লাহি আলাইহি উনাকে প্রেরণ করেন।
উজবেকদের সাথে এক অসময় যুদ্ধে আওরঙ্গজেব আলমগীর রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলখ বিজয় করতে সক্ষম হন। এ যুদ্ধ ছিল ১ লাখ ২০ হাজারেরও অধিক উজবেক সেনাদের বিরুদ্ধে মাত্র ৩০-৩৫ হাজার মুঘল সেনাদের কৌশলের যুদ্ধ। তবে আওরঙ্গজেব আলমগীর রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি এমনভাবে উজবেকদের পরাজিত করেন যে, উনার সামরিক কৌশল দেখে উজবেক সেনারা নিরাশ ও ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে নিজেদের ঘোড়াগুলো মুঘল সেনাদের কাছে বিক্রি করে বাড়ি ফিরতে শুরু করেন।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
আজকের নগরসভ্যতার জনক মুসলমানগণই
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
আফগানিস্তানেও উগ্রতাবাদী ওহাবী-সালাফীদের অনুপ্রবেশের অপচেষ্টা
২৮ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
ঐতিহাসিক হেজাজ রেলওয়ে” যে রেলপথকে বলা হয় ‘বিশ্বের সব মুসলমানের সম্পত্তি’
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
মুসলমানগণই আধুনিক কাগজ শিল্পের প্রতিষ্ঠাতা
১৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
ইতিহাস চর্চা ও সংরক্ষণে মুসলমানদের অবদান
১০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে যেসব পদক্ষেপ নিয়েছিলেন সুলতান আলাউদ্দিন খিলজি
০৭ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
মুসলিম সোনালী যুগের পাঠাগার
০৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
আগলাবী সালতানাতের মুসলিম নৌবহর (১)
৩১ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
কায়রোর ঐতিহাসিক আল আযহার জামে মসজিদ ও বিশ্ববিদ্যালয়
২৯ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
স্বর্ণালী যুগে মুসলমানদের বিজয় রহস্য এবং বিধর্মীদের স্বীকারোক্তি (১)
২৯ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
পারস্যের এক গভর্নরের সম্মানিত দ্বীন ইসলাম গ্রহণের ঘটনা
২৩ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
পবিত্র আযানের জন্য ২২ জন মুসলমানের শহীদ হওয়ার ঈমানদীপ্ত ঘটনা
১২ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার)