বাংলার যমীনে বীর মুজাহিদ হযরত শাহ সুলতান মাহিসওয়ার রহমাতুল্লাহি আলাইহি উনার ইতিহাস
, ১৯ ফেব্রুয়ারী, ২০২৩ ১২:০০:০০ এএম ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) ইতিহাস
ইসলাম উনার প্রচার-প্রসারে নিবেদিত হযরত আউলিয়া কিরাম রহমাতুল্লাহি আলাইহিম উনাদের মধ্যে অন্যতম এবং মশহুর হলেন হযরত শাহ সুলতান মাহিসওয়ার রহমাতুল্লাহি আলাইহি তিনি। উনার মাজার শরীফ বগুড়া জেলার মহাস্থানে অবস্থিত।
প্রচলিত ইতিহাস অনুযায়ী, হযরত শাহ সুলতান মাহিসওয়ার রহমাতুল্লাহি আলাইহি তিনি তৎকালীন বলখ অঞ্চলের সুলতানের আওলাদ বা পুত্র ছিলেন। এজন্য তিনি বলখী নামেও পরিচিত। হযরত শাহ সুলতান মাহিসওয়ার রহমাতুল্লাহি আলাইহি তিনি সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার খিদমত মুবারকের উদ্দেশ্যে উত্তরাধিকারসূত্রে পাওয়া সুলতানি ত্যাগ করে দামেস্ক এসে বিখ্যাত ওলীআল্লাহ হযরত শায়েখ তৌফিক রহমাতুল্লাহি আলাইহি উনার মুরীদ হন। তখন হযরত শায়েখ তৌফিক রহমাতুল্লাহি আলাইহি তিনি উনার মুরীদ হযরত শাহ সুলতান মাহিসওয়ার রহমাতুল্লাহি আলাইহি উনাকে বাংলায় গিয়ে সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার দাওয়াত দেয়ার নির্দেশ মুবারক প্রদান করেন। তিনি সমুদ্রপথে বাংলা অভিমুখে যাত্রা করেন এবং গঙ্গা নদীর মোহনায় অবস্থিত সন্দ্বীপে পৌঁছেন। সেখান থেকে তিনি হরিরামনগরে আসেন। জায়গাটি সম্ভবত সমুদ্র উপকূলে অবস্থিত ছিল এবং অত্যাচারী শাসক বলরামের শাসন ছিলো। হযরত শাহ সুলতান মাহিসওয়ার রহমাতুল্লাহি আলাইহি যখন সেখানে দ্বীন ইসলাম উনার প্রচারকার্য শুরু করে তখন বলরাম তাতে বাধা দেয়। তখন যুদ্ধে অবতীর্ন হন হযরত শাহ সুলতান মাহিসওয়ার রহমাতুল্লাহি আলাইহি। যাতে শোচনীয়ভাবে পরাজিত ও নিহত হয় অত্যাচারী শাসক বলরাম। তবে তার মন্ত্রী তিনি সম্মানিত দ্বীন ইসলাম গ্রহন করেন। সন্দ্বীপ বিজয়ের পর তিনি বগুড়ার মহাস্থান গড়ের দিকে অগ্রসর হন। স্থানীয় রাজা পরশুরাম খবর পেয়ে হযরত শাহ সুলতান মাহিসওয়ার রহমাতুল্লাহি আলাইহি উনাকে বাধা দেয়। ফলে দুপক্ষে যুদ্ধ হয়। যুদ্ধে পরশুরাম নিহত হয়।
হযরত শাহ সুলতান মাহিসওয়ার রহমাতুল্লাহি আলাইহি উনার আগমন এবং বলরাম ও পরশুরামের সঙ্গে উনার জিহাদের ইতিহাস মতে, তিনি মাহিসওয়ার (মাছের পিঠে আরোহী) নামে সমধিক পরিচিত। কারণ তিনি মাছের পিঠে আরোহন করে বাংলার যমীনে আগমন করেন। উল্লেখ্য, মুঘল শাসক হযরত আওরঙ্গজেব রহমাতুল্লাহি আলাইহি উনার শাসনামলে সাইয়্যিদ মুহম্মদ তাহির, সাইয়্যিদ মুহম্মদ আব্দুর রহমান এবং সাইয়্যিদ মুহম্মদ রেজা নামক তিন ব্যক্তির নামে এক সনদ জারি করা হয়। এই সনদ বলে উনারা স্থায়ীভাবে দরগাহ সংলগ্ন লাখেরাজ ভূমির (রাজস্ব-মুক্ত জমি) অধিকার পান। সনদে কুকুলতাশ মুজাফ্ফর জঙের সিলমোহর অঙ্কিত আছে এবং এটি সরকার বাজুহার অন্তর্গত সিলবারী পরগনার মুৎসদ্দি, চৌধুরী, কানুনগো প্রভৃতি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিকট নির্দেশ হিসেবে পাঠান হয়। দলিলের মালিকরা যাতে দরবেশের লাখেরাজ সম্পত্তি ভোগ দখল করতে পারে তা নিশ্চিত করার জন্য কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেওয়া হয়। এই সনদে পূর্ববর্তী শাসকদের প্রদত্ত অনুরূপ সনদ ও ফরমানের উল্লেখ আছে এ থেকে বোঝা যায়, উনার মাজার শরীফ অত্যন্ত সুপ্রাচীন এবং তৎকালীন সব মুসলিম শাসকই উনার পবিত্র মাজার শরীফ উনাকে সম্মান করতেন।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
পবিত্র আযানের জন্য ২২ জন মুসলমানের শহীদ হওয়ার ঈমানদীপ্ত ঘটনা
১২ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
সুলতান আব্দুল হামিদ ছানী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার ইহুদীবাদী ইসরাইলের বিরুদ্ধে দৃঢ়চিত্ততা (বিস্তারিত)
০৯ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
যুগে যুগে পবিত্র সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ পালনের ইতিহাস (২)
২৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
যুগে যুগে পবিত্র সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ পালনের ইতিহাস (১)
২৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
নেপোলিয়নের সম্মানিত দ্বীন ইসলাম গ্রহণ এবং ১২ই শরীফ পালন নিয়ে ঐতিহাসিক তথ্য
২৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
বাংলার ইতিহাসের স্বর্ণপাতায় মহাপবিত্র সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ পালন
১৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ সংক্রান্ত ঐতিহাসিক একটি ঘটনা
১২ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
বাংলাদেশে দ্বীন ইসলাম উনার আগমন ও মুসলিম শাসনের ইতিহাস (৪)
২৯ আগস্ট, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
বাংলাদেশে দ্বীন ইসলাম উনার আগমন ও মুসলিম শাসনের ইতিহাস (৩)
২৮ আগস্ট, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
বাংলাদেশে দ্বীন ইসলাম উনার আগমন ও মুসলিম শাসনের ইতিহাস (২)
২৭ আগস্ট, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
বাংলাদেশে দ্বীন ইসলাম উনার আগমনের ইতিহাস (১)
২৪ আগস্ট, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
দ্বীন ইসলাম উনার ঈমানদীপ্ত ঐতিহ্য (৩৮)
২৪ আগস্ট, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার)