বহুমুখী সমস্যায় পতিত দেশের আগর-আতর শিল্প
পৃষ্ঠপোষকতার অভাবে আতর শিল্পে নেই আধুনিক প্রযুক্তির সন্নিবেশ সঙ্কট ও সমস্যা সমাধান করে আগর-আতর শিল্প থেকে ইনশাআল্লাহ রফতানি হতে পারে ৩৫ হাজার কোটি টাকা।
, ২৫শে জুমাদাল ঊখরা শরীফ, ১৪৪৪ হিজরী সন, ২১ সামিন, ১৩৯০ শামসী সন, ১৯ই জানুয়ারি, ২০২৩ খ্রি:, ০৪ মাঘ, ১৪২৯ ফসলী সন, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) সম্পাদকীয়

আতর ভেষজ উৎস থেকে উৎপাদিত সুগন্ধী। আতর শব্দটি ফারসি শব্দ ‘ইতির’ থেকে এসেছে যার অর্থ সুগন্ধী। বিভিন্ন গাছপালা এবং ফুলের নির্যাস থেকে বিভিন্ন তেলের সাথে মিশিয়ে আতর তৈরী করা হত। বর্তমানে আতর শিল্পেও এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ।
আতর শিল্পের মূল নিয়ামক হচ্ছে আগর। আগর গাছ থেকে তৈরি হয় মূল্যবান আতর। এক কেজি আগর তেলের মূল্য কয়েক লাখ টাকা। আতর শিল্পেও বাংলাদেশে সম্ভাবনার সৃষ্টি হয়েছে। সিলেটের মৌলভীবাজারের বড়লেখা উপজেলাকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশে গড়ে উঠেছে আতর শিল্প। সেখানে আগর চাষের পাশাপাশি ২০০টির মতো ছোট-বড় কারখানা রয়েছে। ভারত, সিঙ্গাপুর, মধ্যপ্রাচ্যসহ বিশ্বের অনেক দেশেই রপ্তানি হচ্ছে বাংলাদেশে উৎপাদিত আগর থেকে তৈরী আতর। ২০১৩ সালে আগর-আতরকে শিল্প হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। কিন্তু বিশেষজ্ঞরা বলছে, বাংলাদেশে আগর চাষ কিংবা আতর শিল্পের যে সম্ভাবনা রয়েছে তার তুলনায় খুব কম পরিমাণেই উৎপাদন ও রফতানি হচ্ছে। যার পেছনে জড়িত এ খাতের অনেক সমস্যা ও সরকারী পৃষ্ঠপোষকতার অভাব।
মৌলভীবাজারে আগর গাছ থেকে তৈরি সুগন্ধি শিল্পের বিপুল সম্ভাবনা থাকলেও রপ্তানিতে বৈধ সনদপ্রাপ্তির জটিলতায় ভুগছে ব্যবসায়ীরা। উৎপাদনে আধুনিক পদ্ধতি ও পরীক্ষাগার না থাকায় এর মান নিয়ে সমস্যা, এইচএস কোডসহ বিমানবন্দরে নানা জটিলতায় রপ্তানি বাধাগ্রস্থ হচ্ছে। আগর রপ্তানির ক্ষেত্রে অন্যতম প্রতিবন্ধকতা হল সাইটিস (কনভেনশন অন ইন্টারন্যাশনাল ট্রেড ইন এনডেঞ্জারড অব ওয়াইল্ড ফনা অ্যান্ড ফ্লোরা) এবং এনওসি (নো অবজেকশন সার্টিফিকেট) সনদ পাওয়া। এ সব শর্তের বেড়াজালে অনেক আতর ব্যবসায়ী আটকা পড়ে। ফলে অনেকে বাধ্য হচ্ছে চোরাই পথে আতর রপ্তানি করতে। ফলে বৈধ পথে রপ্তানি না হয়ে বিকল্প পথে তা চলে যাচ্ছে দেশের বাইরে। আর সরকার হারাচ্ছে বিপুল অংকের রাজস্ব।
আগর শিল্পে নানাবিধ সমস্যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি সমস্যা হলো আধুনিক কারিগরি জ্ঞানের অভাব। পুরনো চাষ পদ্ধতি ও নিম্ন মানের পণ্য। একটি বিষয় উল্লেখ করার মতো তা হলো, বাংলাদেশে উৎপাদিত আগর আতর তেল রিফাইনিং (পরিশোধিত) করার ব্যবস্থা নাই। অপরিশোধিত আগর আতর অপেক্ষাকৃত কম মূল্যে বিক্রি করতে হয় এবং এই সুবিধাটুকু মধ্যপ্রাচ্যের অনেক প্রতিষ্ঠান কাজে লাগিয়ে শুধু রিফাইনিং করেই কয়েকগুণ বেশি অর্থ আয় করে নিচ্ছে। এক্ষেত্রে আগর আতর রিফাইনিং ব্যবস্থাপনার অভাব একটা বড় সমস্যা। এছাড়া কারখানাগুলোয় গ্যাস সরবরাহ সমস্যার কারণে তাদের উৎপাদনও বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। ২০০ কারখানার মধ্যে অর্ধেকের বেশি কারখানায় গ্যাস সংযোগ নেই। আর যেসব কারখানায় গ্যাস সংযোগ রয়েছে, সেগুলোতে গ্যাসের চাপ কম থাকায় আগুনের তাপমাত্রা কমে যাওয়ায় ঠিকমতো আতর উঠে না।
প্রসঙ্গত, কৃষি প্রধান বাংলাদেশে আগর একটি অত্যন্ত সম্ভাবনাময় অথচ অবিকশিত শিল্প। সরকারি পলিসি প্লানিং এর আওতায় সম্ভাব্য এলাকায় এর চাষ সম্প্রসারণ, চাষ ব্যবস্থা ও প্রক্রিয়াজাতকরণ কার্যক্রমকে আধুনিক ব্যবস্থাপনার আওতায় নিয়ে আসলে এবং ব্যক্তির পরিবর্তে সরকারি উদ্যোগে প্রধান প্রধান আগর রপ্তানিকারক দেশে বাংলাদেশের আগরজাত পণ্য প্রবেশের অনুকূল পরিবেশ তৈরির মাধ্যমে এ শিল্পের বদ্ধ জানালা খুলে দিলে আগর-আতর বাংলাদেশের একটি প্রিমিয়াম পণ্য হতে পারে। বিশ্ববাজারে এর চাহিদা আরও বাড়ানোর সুযোগ রয়েছে। বাংলাদেশের সিলেট, চট্টগাম ও পার্বত্য চট্টগ্রামে আগর চাষের জন্য উপযোগী ভূমি রয়েছে এবং বর্তমানে সেখানে আগরের আবাদ হচ্ছে। পুরনো পদ্ধতির পরিবর্তে কৃত্রিম উপায়ে আগর গাছে সংক্রমণের আধুনিক প্রযুক্তির প্রবর্তন করা গেলে এবং আগর তেলসহ অন্যান্য আগরজাত পণ্য প্রক্রিয়াজাতকরণের উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করা সম্ভব হলে আগর শিল্পে বাংলাদেশ অভাবনীয় সাফল্য অর্জন করতে পারে। উন্নত প্রযুক্তির বিষয়ে থাইল্যান্ড, ভিয়েতনাম, মালয়েশিয়া, ভারত প্রভৃতি দেশের দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা কাজে লাগানো যেতে পারে। উন্নত পদ্ধতিতে আগর চাষ অত্যন্ত লাভজনক বিধায় সরকারি পলিসি সাপোর্ট ও পৃষ্ঠপোষকতা পাওয়া গেলে এ খাতে বিনিয়োগের অপার সম্ভাবনাকে কাজে লাগানো সম্ভব হবে। ফলে আগর শিল্প বাংলাদেশে একটি অন্যতম বৈদেশিক মূদ্রা অর্জনকারী খাত হিসেবে স্থান করে নিবে। উৎপাদকদের সুত্রে, দেশে উৎপাদিত প্রতি তোলা আতরের দাম ৭ হাজার টাকা। যার প্রতি লিটারের মূল্য প্রায় ৭ লাখ টাকা। বর্তমানে সারাবিশ্বে প্রায় ১০ হাজার লিটার আতরের চাহিদা রয়েছে। যার আর্থিক মূল্য দাড়ায় প্রায় ৩৫ হাজার কোটি টাকা। আর উপযুক্ত পৃষ্ঠপোষকতা পেলে এই বিশাল আতরের বাজার ধরার পূর্ণ সক্ষমতা ও আবহাওয়াগত সুবিধা বাংলাদেশের রয়েছে।
সঙ্গতকারণেই তাই আমরা মনে করি, সরকার সংশ্লিষ্টদের দেশের আগর-আতর শিল্পের উন্নয়নে সরকারিভাবে আগর চাষীদের প্রশিক্ষণের সুবিধা সৃষ্টি করা এবং আগর থেকে বিশ্বমানের বহুবিধ পন্য উৎপাদনের বিষয়ে তাদের দক্ষ করে তোলা। আগরজাত পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে বর্তমান অনানুষ্ঠানিক বাণিজ্যের পরিবর্তে আনুষ্ঠানিক বাণিজ্যে চালু করা। আগর রপ্তানীর ক্ষেত্রে উচ্চ শুল্ক বাঁধা অপসারণ করা। সরকারী বনের আগর গাছ বিক্রির ক্ষেত্রে স্থানীয় প্রক্রিজাতকরণ শিল্পের স্বার্থ সংরক্ষণের মাধ্যমে এই শিল্পের ফরোয়ার্ড লিংকেজকে শক্তিশালী করে কর্মসংস্থান সৃষ্টিসহ বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের পথ প্রশস্ত করা। প্রতিযোগিতামূলক বিশ্ব বাজারে স্থান করে নেওয়ার জন্য আগর চাষীদের জন্য প্রণোদনার ব্যবস্থা করা।
ছহিবে সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ, রাজারবাগ শরীফ উনার মামদূহ মুর্র্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার নেক ছোহবত মুবারক-এ কেবলমাত্র তা লাভ করা সম্ভব। খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাদেরকে তা নছীব করুন। (আমীন)
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
আহলান-সাহলান সুমহান পহেলা শাওওয়াল শরীফ। মুবারক হো ঈদে বিলাদতে- ত্বাহিরাহ, তাইয়্যিবাহ, মাহবুবাহ, ফাক্বীহা, মাশুক্বাহ, তাওশিয়াহ, নূরে হাবীবা, লখতে জিগারে ইমামুল উমাম, উম্মু আবিহা, ক্বায়িম-মাক্বামে হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম, সাইয়্যিদাতুন নিসা, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, হযরত নাক্বীবাতুল উমাম আলাইহাস সালাম
৩০ মার্চ, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
প্রসঙ্গ: রাষ্ট্রদ্বীন ইসলাম মুসলমানের দ্বীনি অধিকার, পবিত্র দ্বীন ইসলাম পালনে আবহ এবং রাষ্ট্রযন্ত্রের দায়
২৯ মার্চ, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
বাংলাদেশে মিডিয়াগুলো ইহুদীদের অদৃশ্য ইশারায় দেশে পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার বিরূপ পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে চাইছে। বাংলাদেশের মুসলমানদের উচিত- দেশের সব মিডিয়া বর্জন করে রাজারবাগ শরীফের প্রকাশনার প্রচার-প্রসার করা।
২৯ মার্চ, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
মুবারক হো ২৫শে রমাদ্বান শরীফ! সাইয়্যিদাতু নিসায়ি আহলিল জান্নাহ, আল মুত্বহহারাহ, আল মুত্বহহিরাহ, মালিকাতুল জান্নাহ, মালিকাতুল কায়িনাত সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মু’মিনীন আল আশিরাহ আলাইহাস সালাম উনার পবিত্র বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ দিবস। সুবহানাল্লাহ! অতএব, প্রত্যেকের উচিত- ব্যাপক যওক-শওকের মাধ্যমে এ মহিমান্বিত দিনখানি যথাযথ মর্যাদায় পালনের ব্যবস্থা করা।
২৬ মার্চ, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
ব্যাপকভাবে বাড়ছে সাইবার নিরাপত্তা ঝুঁকি ও হয়রানী জান-মাল এবং সম্মান হিফাজতে সরকারকে এখনি পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নিতে হবে। ইনশাআল্লাহ!
২৫ মার্চ, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
ঈদকে সামনে রেখে মুদি দোকান, স্টেশনারি দোকান, শপিং মল, পার্লার, সুপার শপ সবখানেই ভেজাল কসমেটিক্স। মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে ব্যবহারকারীরা। সরকারের কঠোর নজরদারী ও নিয়ন্ত্রণ প্রয়োজন।
২৫ মার্চ, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
মুবারক হো পবিত্র ২৩শে রমাদ্বান শরীফ! আজ সাইয়্যিদাতু নিসায়ি আহলিল জান্নাহ, আল মুত্বহহারাহ, আল মুত্বহহিরাহ, মালিকাতুল জান্নাহ, মালিকাতুল কায়িনাত সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মু’মিনীন আল আশিরাহ আলাইহাস সালাম উনার পবিত্র বিছালী শান মুবারক প্রকাশ দিবস। সুবহানাল্লাহ!
২৪ মার্চ, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
যে সমাজ ব্যবস্থায় সার্বভৌম ক্ষমতার মালিক, প্রজাতন্ত্রের মালিক ‘জনগণকে’ করা হয় সে সমাজব্যবস্থায়, অপরাধীরা নিয়ন্ত্রিত হয়না ও অপরাধ নির্মূল হয়না। সার্বভৌম ক্ষমতার মালিক মহান আল্লাহ পাক তিনি এবং ভয় করার মালিক মহান আল্লাহ পাক তিনি। কেবলমাত্র এই অনুভূতি সমাজ থেকে সব অপরাধ নির্মূল করতে পারে।
২৩ মার্চ, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
নাটক-সিনেমার মাধ্যমে মুসলিম প্রজন্মকে দ্বীন ইসলাম থেকে দূরে সরিয়ে দেয়া হচ্ছে। পরকালের কথা স্মরণ করে মুসলিম উম্মাহকে বিধর্মীদের এসব ষড়যন্ত্র থেকে বের হয়ে আসতে হবে।
২৩ মার্চ, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
আজ মহিমান্বিত সুমহান ২১ই রমাদ্বান শরীফ। যা ইমামুল আউলিয়া, হাবীবে ওয়া মাহবুবে রহমান, আওলাদে রসূল, সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছামিন মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহিমান্বিত বিছালী শান মুবারক প্রকাশ দিবস। সুবহানাল্লাহ!
২২ মার্চ, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
দৈনন্দিন ৩২ বার পবিত্র সূরা ফাতিহা শরীফ পাঠ করলেও মুসলমান কি পবিত্র সূরা ফাতিহা শরীফ শুধু পাঠের মধ্যেই আবদ্ধ থাকবে? ফিকির আর আমল কী অধরাই থাকবে?
২১ মার্চ, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
সরকার ঘোষিত মৎস্য আহরণ নিষেধাজ্ঞায় মরার উপর খাড়ার ঘা অবস্থা হয় দেশের জেলেদের। নিভৃতেই চলছে জেলেদের নীরব কান্না। দেখার কেউ নেই।
২১ মার্চ, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার)