বর্তমানে পিতা-মাতারা কী তাদের সন্তানদেরকে জাহান্নামের ইন্ধন হিসেবে তৈরি করছে না?
, ০৬ এপ্রিল, ২০২৫ ১২:০০:০০ এএম ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) মহিলাদের পাতা

খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক ফরমান, “তোমরা তোমাদের সবচেয়ে বড় শত্রু হিসেবে পাবে ইহুদীদেরকে, অতঃপর মুশরিকদের। ” (পবিত্র সূরা মায়িদা : আয়াত শরীফ ৮২)
অন্যত্র আরো ইরশাদ মুবারক ফরমান, “হে ঈমানদারগণ! তোমরা ইহুদী-নাছারাদের বন্ধুরূপে গ্রহণ করো না। তারা একে অপরের বন্ধু। তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি তাদেরকে মুহব্বত করবে সে তাদেরই দলভুক্ত হবে। ” (পবিত্র সূরা মায়িদা : আয়াত শরীফ ৫১)
উপরোক্ত পবিত্র আয়াত শরীফদ্বয় উনাদের মধ্যে মহান আল্লাহ পাক তিনি সকল ঈমানদার মুসলমান উনাদের সবেচেয়ে বড় শত্রু সম্পর্কে অবহিত করেছেন, ইহুদী মুশরিক তোমাদের সবচেয়ে বড় শত্রু। এছাড়া সমস্ত কাফিররাই মুসলমানদের শত্রু। তোমরা তাদের বন্ধুরূপে গ্রহণ করো না, কারণ তারা মুসলমানদের শত্রু। তোমরা তাদের দিকে রুজু হয়ো না ও তাদেরকে অনুসরণ-অনুকরণও না। আর যে ব্যক্তি তাদেরকে মুহব্বত করবে, তাদের দিকে রুজু হবে এবং তাদের অনুসরণ-অনুকরণ করবে সে তাদেরই দলভুক্ত হবে।
আর পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে, “যে ব্যক্তি যে সম্প্রদায়ের সাথে মিল রাখে সে তাদেরই অন্তর্ভুক্ত হবে। ”
কিন্তু খুবই আফসুসের সাথে বলতে হয়, বর্তমানে পিতা-মাতা বা বাবা-মায়েরা তাদের সন্তানদেরকে ইহুদী-নাছারা, কাফির-মুশরিকদের অনুসরণ করতে বেশি উৎসাহিত করে। নাউযুবিল্লাহ! এবং শিশুদের যখন একটু বুঝ হয় তখনই তাকে শিখিয়ে দেয় কোন হাতে বল ধরতে হয়, আর কোন হাতে ব্যাট ধরতে হয়। নাউযুবিল্লাহ!
অথচ মহান আল্লাহ পাক তিনি পবিত্র সূরা আম্বিয়া শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক করেন, “আমি আসমান-যমীনের মধ্যে কোনো কিছুই খেলাচ্ছলে সৃষ্টি করিনি। ”
আর পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক করেন, “সমস্ত প্রকার খেলাধুলাই হারাম। ”
অপরদিকে যারা মুসলমানদের চিরশত্রু তারা তাদের সন্তানদেরকে শিশু বয়স থেকেই পরিচয় করিয়ে দেয় যে, মুসলমানরা তোমাদের শত্রু। অর্থাৎ মুসলমান উনাদেরকে শত্রু হিসেবে তাদের (শিশুদের) নিকট পরিচয় দিয়ে থাকে। নাউযুবিল্লাহ!
অথচ মুসলমানগণ আজ কাফির-মুশরিকদের প্রবর্তিত খেলার জন্য হিসেব ব্যতীত সময় ব্যয় করতেছে। নাউযুবিল্লাহ!
প্রকৃতপক্ষে ইহুদী-নাছারা, কাফির-মুশরিকরা মুসলমানদের ঈমান, আমল নষ্ট করে কাফির বানানোর চেষ্টায় সর্বদা লিপ্ত থাকে। এ বিষয় মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “ইহুদী-নাছারারা তোমাদেরকে ঈমান আনার পর কাফির বানিয়ে দিতে চায়। ” (পবিত্র সূরা বাক্বারা : আয়াত শরীফ ১০৯)
মূলত যখন কাফির-মুশরিকরা বুঝতে পারলো যে, মুসলমানরা সব অবস্থায়ই জয়ী হচ্ছেন উনাদের ঈমানী শক্তির জোরে, উনাদেরকে পরাস্ত করা কস্মিনকালেও তাদের (ইহুদী-নাছারা তথা তাবৎ কাফিরদের) পক্ষে সম্ভব হবে না, তখন তারা মুসলমানদের ঈমান নষ্ট করে দেয়ার জন্য হারাম খেলাধুলায় মশগুল করে দিলো ও হারাম খেলাকে তাদের নিকট আকর্ষণীয় করে তুললো এবং অপপ্রচার করতে থাকলো- খেলাধুলা শরীর সুস্থ রাখার জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। নাউযুবিল্লাহ! যার ফলশ্রুতিতে, বর্তমান যামানার মুসলমানগণ তাদের মুসলমানিত্বকে ভুলে যাচ্ছে এবং মহান আল্লাহ পাক উনার ও মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের আদেশ-নিষেধ মুবারক অমান্য করার মাধ্যমে উনাদের অবাধ্য হিসেবে গণ্য হয়েছে। নাউযুবিল্লাহ! আর যে ব্যক্তি উনাদের অবাধ্য হবে ও উনাদের সাথে নাফরমানী করবে তাদের ভয়াবহ শাস্তি সম্পর্কে মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “যে ব্যক্তি মহান আল্লাহ পাক উনার ও উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের অবাধ্য হবে অথবা উনাদের নাফরমানী করবে এবং মহান আল্লাহ পাক উনার নির্ধারিত সীমালঙ্ঘন করবে তাকে জাহান্নামে প্রবেশ করানো হবে এবং সে সেখানে চিরকাল থাকবে এবং তার জন্য রয়েছে লাঞ্ছনাদায়ক শাস্তি। ” (পবিত্র সূরা নিসা : আয়াত শরীফ ১৪)
আর মহান আল্লাহ পাক তিনি জাহান্নামের আগুন সম্পর্কে বলেন, “তোমরা জাহান্নামের আগুনকে ভয় করো, যার ইন্ধন হবে মানুষ এবং যা তৈরি করা হয়েছে কাফিরদের জন্য। ” (পবিত্র সূরা বাক্বারা : আয়াত শরীফ ৫৪)
সুতরাং বর্তমানে সকল মুসলমান পিতা-মাতার উচিত হবে, তাদের সন্তানদেরকে ইহুদী-নাছারা, কাফির-মুশরিকদের চিরশত্রু হিসেবে বুঝানো এবং তাদের অনুসরণ করা থেকে বিরত থাকতে বলা এবং জাহান্নামের ইন্ধন হিসেবে তাদেরকে গড়ে না তোলা।
মহান আল্লাহ পাক তিনি যেন আমাদের সবাইকে জাহান্নামের আগুন থেকে হিফাযত করেন। আমীন।
-মুহম্মদ রুকাইয়া।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
ভোট, নির্বাচন, পদপ্রার্থী হওয়া ইত্যাদি কোনটিই জায়িয নেই
১৪ এপ্রিল, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
কথিত আহলে হাদীছ বা লা-মাযহাবীদের উৎপত্তি এবং কুফরী আক্বীদাসমূহ (৫)
১৪ এপ্রিল, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
সম্মানিত ইসলামী শরীয়তে রজম বা ছঙ্গেছারের বিধান (২)
১৩ এপ্রিল, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
নববর্ষ তথা পহেলা বৈশাখ উদযাপনকারীরা মূলত পবিত্র ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আদ্বহা অস্বীকারকারী
১৩ এপ্রিল, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
দুনিয়ার লোভ মানুষকে ধ্বংস করে দেয়
১৩ এপ্রিল, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
সম্মানিত ইসলামী শরীয়তে রজম বা ছঙ্গেছারের বিধান (১)
১২ এপ্রিল, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
মহিলাদের জন্য হাত, পা ও চেহারা আবৃত করে ঘর থেকে বের হওয়া ফরজ। খোলা রেখে বের হওয়া হারাম, জায়েয বলা কুফরী (৮)
১২ এপ্রিল, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
মহিলাদের সুন্নতী লিবাস, অলংকার ও সাজ-সজ্জা
১১ এপ্রিল, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
বেগানা নারীর প্রতি দৃষ্টি দেয়ার কঠিন শাস্তি...
১১ এপ্রিল, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
পিতা-মাতার প্রতি সন্তানের দায়িত্ব-কর্তব্য
১০ এপ্রিল, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
তিন ধরণের লোক বেহেশতে প্রবেশ করবে না
১০ এপ্রিল, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
মহান আল্লাহ পাক উনার ওলী, হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আসলাম তূসী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার দানশীলতা ও বুযূর্গী
০৮ এপ্রিল, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার)