বন্যায় ফেনী ও নোয়াখালীর ৯০ শতাংশের বেশি মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত
, ২৯ ছফর শরীফ, ১৪৪৬ হিজরী সন, ০৭ রবি , ১৩৯২ শামসী সন , ০৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রি:, ২০ ভাদ্র , ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) দেশের খবর
বন্যায় সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ফেনী ও নোয়াখালী জেলা। দুই জেলার ৯০ শতাংশেরও বেশি মানুষ বন্যায় মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। ধ্বংস হয়েছে ৪৮ শতাংশ বাড়ি-ঘর। এছাড়াও দুই জেলার স্যানিটেশন ব্যবস্থা ও সুপেয় পানির সুবিধা শতভাগ অচল হয়েছে। চলমান বন্যা নিয়ে অক্সফ্যাম ইন বাংলাদেশের প্রকাশিত জরুরি চাহিদা নিরূপণ প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে।
প্রতিবেদন বলছে, বন্যার পানি ধীরে ধীরে নামতে শুরু করায় বন্যাকবলিত এলাকাগুলোর ক্ষতচিহ্ন ক্রমশ স্পষ্ট হয়ে উঠছে। দুর্গতদের মধ্যে জীবিকা হারানো এবং খাদ্য নিরাপত্তাহীনতা বড় উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এছাড়াও ডায়রিয়া ও কলেরার মতো রোগের ঝুঁকি বাড়চ্ছে। এসব রোগে অনেকেই আক্রান্ত হচ্ছেন।
লক্ষ্মীপুরে ভারী বৃষ্টিপাতে বন্যার পানির উচ্চতা বেড়েছে:
বন্যাকবলিত এলাকার বাসিন্দারা জানান, লক্ষ্মীপুরে গত কয়েকদিন ধরে খুব ধীরগতিতে পানি নামা শুরু করে। এতে দিনে এক-দুই ইঞ্চি পানির উচ্চতা কমছে। কিন্তু সোমবার রাতে ভারী বৃষ্টিতে পানির উচ্চতা আরও দুই ইঞ্চির মতো বেড়েছে। বন্যার পানি বাড়ায় দুর্ভোগ আরও বাড়বে।
তারা আরও জানান, বন্যার পানি মেঘনা নদীতে নামার জন্য যেসব খাল ব্যবহার হয়, তাতে নানা প্রতিবন্ধকতা থাকায় পানি নামছে না। জেলাতে হু হু করে বন্যার পানি নামলেও কমছে অল্প অল্প করে। তার ওপর মাঝে মধ্যে বৃষ্টিপাত হওয়ায় পানির উচ্চতা বাড়ে। ফলে বন্যার সময়কাল দীর্ঘস্থায়ী হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
মিরসরাইয়ে ধানবীজের জন্য কৃষকের হাহাকার:
চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে ভয়াবহ বন্যায় টানা সাতদিন নিমজ্জিত ছিল রোপা আমন ও ধানের বীজতলা। পানিতে ডুবে নষ্ট হয়ে গেছে বীজতলা। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন শত শত কৃষক। পানি নেমে যাওয়ায় এখন বীজ ও ধানের চারা নিয়ে কৃষকদের মধ্যে হাহাকার দেখা দিয়েছে। সময় মতো চারা লাগাতে না পারলে উপজেলায় ধানের উৎপাদন কমে যাওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, টানা বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে মহুরী নদীর তীরবর্তী করেরহাট, হিঙ্গুলী, ধুম, জোরারগঞ্জ, ওচমানপুর, ইছাখালী, কাটাছরাসহ মিরসরাইরে ১১টি ইউনিয়ন বন্যার কবলে পড়ে। এতে টানা সাতদিন ডুবে ছিল মিরসরাই উপজেলার বেশির ভাগ এলাকা। কৃষিজমি, মাছের ঘের ডুবে যায়। বন্যার পানি কমতেই দেখা দিতে থাকে ফসলি জমির ক্ষতির চিহ্ন।
উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, বীজতলা পচে গেছে। নষ্ট হয়ে গেছে ধানের চারা। জমিতে আগাম লাগানো চারাও পচে নষ্ট হয়ে গেছে। অনেক কৃষক চারার জন্য পার্শ্ববর্তী উপজেলাগুলোতে খোঁজ নিচ্ছেন। উপজেলার সব জায়গায় দেখা গেছে একই দৃশ্য। মাথায় হাত দিয়ে আছেন কৃষকরা।
অন্যদিকে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের জন্য বীজতলা প্রস্তুত করছেন উপজেলার অন্যতম সামাজিক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন দূর্বার। চারা পেলে ঘুরে দাঁড়াতে পারবেন বলে বলছেন কৃষকরা।
উপজেলার ওয়াহেদপুর ইউনিয়নের কৃষক আব্দুল হান্নান বলেন, ৫০ শতক জমির জন্য বীজতলা প্রস্তুত করেছিলাম। কয়েক শতক জমিতে রোপণ করতে পারলেও অর্ধেক জমি খালি পড়ে থাকবে।
বন্যায় চাঁদপুরে দেড়শ কোটি টাকা ক্ষতির শঙ্কা :
চাঁদপুর জেলায় বন্যায় শাহরাস্তি, কচুয়া ও হাজীগঞ্জ উপজেলায় বেশ কয়েকটি ইউনিয়নে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ফসল ও গবাদি পশু। এতে অন্তত দেড়শ কোটি টাকার ক্ষতির আশঙ্কা করছেন কৃষকরা। এর মধ্যে ৪৭ হাজার ৬৮৬ জন কৃষকের ফসলের ক্ষতি হয়েছে ৮৬ কোটি ৬৬ লাখ ২ হাজার ২০০ টাকা।
ফরিদগঞ্জ উপজেলাসহ ৬২ ইউনিয়নে ১৬ কোটি টাকার মাছ নদীতে ভেসে গেছে। যদিও প্রাণিসম্পদ বিভাগ এখন পর্যন্ত গবাদি পশু ও হাঁস মুরগির ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণ করতে পারেনি। এছাড়া হাইমচরে ১০০ হেক্টর জমির পানের বরজ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
গত কয়েকদিনে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে। জেলা কৃষি বিভাগের তথ্য বলছে, এ বছর জেলায় রোপা আমন আবাদ ব্যাহত হবে। বানের পানিতে তলিয়ে গেছে শাহরাস্তি উপজেলার ৩৪১ হেক্টর ফসলি জমি।
শাহরাস্তি রায়শ্রী উত্তর ইউনিয়নের সীমান্ত এলাকা উনকিলা গ্রামের কৃষক কেরামত আলী বলেন, এক একর জমিতে আউশের আবাদ আছে। ধান কাটার সময় হয়েছে। কিন্তু এখন সবই শেষ। বসতঘর ও রাস্তায় পানি। আমাদের এই ক্ষতির কী হবে বলতে পারছি না।
শাহরাস্তি উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আয়শা আক্তার বলেন, গত প্রায় ১০ দিনে উপজেলার বন্যা কবলিত ইউনিয়নের মাঠ জরিপে আমরা ক্ষতিগ্রস্ত সাড়ে ৪ হাজার কৃষকের তথ্য পেয়েছি। রোপা আউশসহ বিভিন্ন ফসলে ৬ কোটি ৪০ লাখ ৫০ হাজার টাকার প্রাথমিক ক্ষতির আশঙ্কা করছি।
এদিকে হাইমচর ও ফরিদগঞ্জ উপজেলার সেচ প্রকল্প এলাকায় ১০০ হেক্টর জমির পানের বরজ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকের সংখ্যা ১০৭২ জন। এতে অন্তত ১০ কোটি টাকার পানের বরজ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
চাঁদপুর জেলা মৎস্য কর্মকর্তা গোলাম মেহেদী হাসান বলেন, বানের পানিতে এ বছর বহু খামারি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আমাদের মাঠ জরিপ চলমান। প্রাথমিকভাবে আমরা জেলার ৬২টি ইউনিয়নের ১০ হাজার ৮০১ জন খামারির তথ্য পেয়েছি। তাদের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ১৬ মোট ৬৯ লাখ টাকা।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
রাজনৈতিক দল গঠনে ‘সহায়তা’ চাওয়া নিয়ে বিতর্ক
২০ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
রাজশাহীতে কথা রাখেননি আলুর পাইকাররা
২০ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি: স্বস্তি ফিরছে না জনমনে -থামছে না খুন, ডাকাতি, ছিনতাই, চুরি, মারামারি
২০ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
হঠাৎ কেজিতে ২০-৩০ টাকা বেড়েছে মুরগির দাম
২০ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
‘টুকরি’তে বাঁধা পড়া টুকরো জীবন
২০ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
ভারতের মিডিয়ার কা- বাংলাদেশবিরোধী প্রোপাগান্ডা, গুজবের ফ্যাক্টরি ‘ময়ূখ’
২০ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
বাংলাদেশে সাজার নথি নেই, ভারতে জামিন পেলো পিকে হালদার
২০ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
দেশের ৯৮ ভাগ মানুষ মুসলমান, ২ ভাগ অন্য ধর্মাবলম্বী -বিশ্ব জরিপ সংস্থা
২০ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
১৬ হাজারেরও বেশি হত্যাকাণ্ড-ঘটেছে হাসিনার শেষ ৫ বৃছরে
২০ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
রাষ্ট্রীয় বর্ণবাদের কারণে ব্যাপকহারে বাড়ছে ইসরাইল ত্যাগ
২০ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
দ্বীন ইসলাম অবমাননাকারীদের মৃত্যুদ-, ইসকন এবং উগ্র হিন্দু সন্ত্রাসীদের মৃত্যুদ-, ওলামায়ে ছূ’দের সমাজচ্যূতকরণের দাবীতে রাজারবাগ শরীফে প্রতিবাদ মিছিল
২০ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
আদানির বিরুদ্ধে চুক্তি লঙ্ঘনের অভিযোগ, পর্যালোচনার দাবি বাংলাদেশের
২০ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার)