ফল আমদানীর নামে পাচার হচ্ছে টাকা।
অথচ বিদেশি ফলের রাসায়নিক বাড়াচ্ছে স্বাস্থ্যঝুঁকি। মৌসুমী ও বারোমাসি ফল উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ বাংলাদেশ। সরকারের উচিত, ফল উৎপাদনে গবেষণা এবং রফতানিতে নজর দেয়া।
, ২৬শে জুমাদাল ঊখরা শরীফ, ১৪৪৪ হিজরী সন, ২২ সামিন, ১৩৯০ শামসী সন, ২০ই জানুয়ারি, ২০২৩ খ্রি:, ০৫ মাঘ, ১৪২৯ ফসলী সন, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) সম্পাদকীয়

সব প্রশংসা মুবারক খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার জন্য; যিনি সকল সার্বভৌম ক্ষমতার মালিক। সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নবী আলাইহিমুস সালাম উনাদের নবী, রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি অফুরন্ত দুরূদ শরীফ ও সালাম মুবারক।
শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতর সূত্র জানিয়েছে- ফল আমদানির ঘোষণায় অর্থ পাচার থামছে না। একটি এলসিতে ঘোষণা ছিল ফল আমদানির, আমদানি হয়েছে সিগারেট। এলসি খোলা হয়েছে ৩ হাজার ডলারের (প্রায় ২ লাখ ৪০ হাজার টাকা), কিন্তু আমদানি করা হয়েছে প্রায় ৩ কোটি টাকার। সংযুক্ত আরব আমিরাতে পাচার হয়েছে সেই টাকা। নামসর্বস্ব প্রতিষ্ঠানের নামে ব্যাংক কোনো ঠিকানা যাচাই ছাড়াই খুলেছে হিসাব। আর সেই হিসাব থেকে একে একে চারবার এলসি করে পাঠানো হয়েছে টাকা। প্রতিবারই ফল আমদানির নাম করে পাঠানো হয়েছে টাকা। আর আমদানি করা হয়েছে সিগারেট। কখনো পোশাক আমদানি-রপ্তানিকারক, কখনো ডাটা ম্যানেজমেন্ট আবার কখনো কার্গো ক্লিয়ারিং অ্যান্ড ফরোয়ার্ডিং প্রতিষ্ঠান থেকে ফল আমদানি দেখানো হয়েছে। এলসিতে যেই মূল্য দেখানো হতো, হুন্ডি বা নন-ব্যাংকিং চ্যানেলে পাঠানো হতো কয়েক গুণ বেশি টাকা।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, একদিকে জনস্বাস্থ্যের ক্ষতি, অন্যদিকে অর্থনৈতিক ঝুঁকি- এমন পরিস্থিতি তৈরি করেছেন অন্য ফল আমদানিকারকরা।
২০২১ সালের তুলনায় ২০২২ সালে ফল আমদানি বেড়েছে প্রায় ৯৭ শতাংশ। ২০২২ সালে ৫ হাজার ১৭ কোটি টাকার ফল আমদানি হয়েছে। যা ২০২১ সালে ছিল ছিল ২ হাজার ৫৫০ কোটি টাকা।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড-এনবিআর সূত্র বলছে, বিদেশি ফল আমদানির আড়ালে অর্থ পাচারের রেকর্ড তৈরি করেছে একশ্রেণি অসাধু ব্যবসায়ীরা। কড়া সতর্কতার মধ্যেও গত বছর রেকর্ড পরিমাণ ফল আমদানির তথ্য মিলেছে। যা আগের বছরের চেয়ে প্রায় ৯৭ শতাংশ বেশি।
অভিজ্ঞমহল মনে করেন, বাংলাদেশে বিদেশি ফল আমদানির দরকার নেই। এটা নিরুৎসাহিত করা দরকার। এফবিসিসিআই থেকে ফল আমদানিতে শুল্ক বাড়ানোর প্রস্তাব দেয়া হয়েছে। কারণ, আমদানিতে মিথ্যা ঘোষণা দিয়ে বিপুল পরিমাণে ফল আসছে। অথচ বিদেশি ফল না হলেও আমাদের চলবে। এটা বন্ধ করতে হবে। দেশীয় ফল দিয়েই আমাদের অভ্যন্তরীণ চাহিদা পূরণ হবে।
ফল কোনো নিত্যপণ্য নয়। ফলে বিদেশ থেকে ফল আমদানির প্রয়োজন নেই। বিদেশি ফলে ফরমালিন যুক্ত থাকায় তা জনস্বাস্থ্যের জন্য হুমকি। আবার ফল আমদানির মধ্য দিয়ে অর্থ পাচারও হচ্ছে। এমনকি বিদেশ থেকে যেসব ফল আমদানি করা হচ্ছে, তার অনেক দেশেও উৎপাদন হচ্ছে। আরও কিছু ফল আছে দেশে উৎপাদন সম্ভব।
বাংলাদেশে ব্যাপক সম্ভাবনা থাকার পরও বাংলাদেশের ১২ মাসে ফলের বাজারে আধিপত্য বিস্তার করে রাখে বিদেশি ফল। প্রতি বছর প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকারও বেশি বিদেশি ফল বাংলাদেশে আমদানি হয়ে বাংলাদেশের বাজার সয়লাব করে রাখে। বর্তমানে আপেল আমদানিতে বিশ্বে বাংলাদেশের অবস্থান এখন সপ্তম এবং ‘ফ্রেশ অরেঞ্জ’ বা মাল্টা আমদানিতে অষ্টম। সমুদ্রবন্দর, স্থলবন্দর ও বিমানবন্দর দিয়ে প্রতিদিন ১৫ লাখ ৭৭ হাজার কেজি বিদেশি ফল দেশে ঢুকছে। ফলে দেশের ফলের বাজারের দাম পড়ে যাচ্ছে। সরকারের উপযুক্ত পৃষ্ঠপোষকতা না থাকার কারণে দেশীয় ফল ব্যবসায়ী ফলের ন্যায্য দাম থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। বিপরীতে নাগরিকরা উচ্চমূল্যের বিদেশি রাসায়নিকযুক্ত ফল খেয়ে স্বাস্থ্যঝুঁকিতে রয়েছে।
একটি মহল প্রচার করছে যে ‘বাংলাদেশে ফলের উৎপাদন কমে আসছে। আর এর ফলে দেশের মানুষের দৈনিক ফল খাওয়ার চাহিদা পূরণ হচ্ছে না। এই অযুহাতে তারা বিদেশ থেকে ফল আমদানি করছে। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে এটি একটি মিথ্যা প্রচারণা। বরং প্রতিবছরই দেশের ফলের উৎপাদন বৃদ্ধিই পাচ্ছে। বিশ্বে মৌসুমী ফল উৎপাদনে বাংলাদেশের অবস্থান ১০ম। বাংলাদেশ এখন বিশ্বে দ্বিতীয় বৃহত্তম কাঠাল উৎপাদনকারী দেশ, আমে সপ্তম ও পেয়ারা উৎপাদনে অষ্টম। গত ১০ বছরে দেশের আমের উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে দ্বিগুন, পেয়ারা দ্বিগুনেরও বেশি, পেপে আড়াই গুন এবং লিচু উৎপাদন ৫০% বেড়েছে। বাড়ছে ফল চাষের জমির পরিমাণও। বাণিজ্যিকভাবে ফল চাষের পাশাপাশি বাড়ির আঙ্গিনা ও সড়কের পাশে ফল গাছ রোপণ দিন দিন বাড়ছে। বছরে ১০% হারে ফল চাষের জমি বাড়ছে। এর সঙ্গে উৎপাদন বেড়েছে ১১% হারে। দেশে বর্তমানে ৭০ প্রজাতির বেশি ফল চাষ হচ্ছে। এর মধ্যে বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদিত হচ্ছে ৪৫ প্রজাতির ফল।
ফল শুধু মৌসুমই নয় বরং বাংলাদেশে শত শত ফল বারোমাসই উৎপাদন হচ্ছে। বৈশাখ-জৈষ্ঠ্যের আম এখন বছরে ৭ মাসই পাওয়া যায়। বারো মাস থাই পেয়ারা উৎপাদন এর উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। আধুনিক প্রযুক্তি তথা হরমোন ব্যবস্থা করে বারো মাস আনারস উৎপাদন সম্ভব হচ্ছে। কিন্তু এরপরও প্রতিবছরই ফল আমদানির উৎপাদন বেড়েই চলেছে। অর্থাৎ ফল আমদানির মূল কারণ স্বল্পতা নয় বরং দেশকে আমদানিনির্ভর করার একটি ষড়যন্ত্র। উদাহরণস্বরূপ: বাংলাদেশ মাল্টা আমদানিতে বিশ্বে ৮ম। বাংলাদেশে বিদেশ থেকে আমদানি করা মাল্টার চেয়ে অধিক উন্নত বারি-১ জাতের মাল্টা বাংলাদেশে বাণিজ্যিকভাবে চাষ হচ্ছে। ফলনও প্রচুর। কিন্তু এরপরও আমদানিই যেন মুখ্য।
প্রসঙ্গত, দেশের তাপমাত্রা, আদ্রতা, আবহাওয়া, মাটি, পানিবায়ু পরিবেশ বিভিন্ন ধরণের ফল চাষের উপযোগী। কিন্তু বাংলাদেশে ফল-ফলাদি নিয়ে গবেষণা কম হয়। যার কারণে বাংলাদেশে সম্ভাবনা থাকার পরও ফল-ফলাদির নতুন নতুন জাত সৃষ্টির প্রক্রিয়া খুবই ধীর গতিতে চলছে। যদিও এই মøান গতিতেই এবং অপৃষ্ঠপোষকতার মধ্যেই দেশের বিজ্ঞানীরা আম, পেয়ারা, কুল, মাল্টার বেশ কয়েকটি নতুন জাত উদ্ভাবন করেছে। কিন্তু নামমাত্র গবেষণা কোনোসময় দেশের সার্বিক ফল-ফলাদি উৎপাদন, মান নিয়ন্ত্রণে ভূমিকা রাখবেনা। এর জন্য প্রয়োজন গবেষণা খাতে পর্যাপ্ত বাজেট বরাদ্দ।
সঙ্গতকারণেই সরকারের উচিত, বিদেশ থেকে ফল আমদানি কমিয়ে সারাবছর শত শত জাতের সুমিষ্ট এবং তরতাজা ফলের বাজার বিকশিত করা। এজন্য সরকারের উচিত, বিদেশি ফল আমদানির সিন্ডিকেট নির্মূল, দেশীয় ফল রফতানিতে প্রণোদনা প্রদান করা। পাশাপাশি ফলের বাগান তৈরীতে বিশেষ ঋণ সরবরাহ করা। দেশীয় ফলের গুনগত মানের প্রচারণা চালানো এবং সর্বোপরি সার্বিক পৃষ্ঠপোষকতা প্রদান কর দেশীয় ফলের সুফল দেশবাসীর কাছে তুলে দেয়া।
ছহিবু সাইয়্যিদি সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ, রাজারবাগ শরীফ উনার মামদূহ মুর্র্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার নেক ছোহবত মুবারক-এ কেবলমাত্র তা লাভ করা সম্ভব। খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাদেরকে তা নছীব করুন। (আমীন)
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
বর্তমান সরকারের অরাজকতায় মধ্যবিত্তরাও এখন পুষ্টি সঙ্কটে ভুগছে মহান আল্লাহ পাক উনার রহমতমূখী প্রবণতার অভাবই এর মূল কারণ কেবলমাত্র খিলাফত আলা মিনহাজিন নুবুওওয়াহ্র পরিক্রমায় খোদায়ী রহমতে সব কিছুতে সচ্ছলতা হাছিল সম্ভব। ইনশাআল্লাহ!
২৪ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
নাটক-সিনেমার মাধ্যমে মুসলিম প্রজন্মকে দ্বীন ইসলাম থেকে দূরে সরিয়ে দেয়া হচ্ছে। পরকালের কথা স্বরণ করে মুসলিম উম্মাহকে বিধর্মীদের এসব ষড়যন্ত্র থেকে বের হয়ে আসতে হবে।
২৪ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
‘শয়তানের নিঃশ্বাস’ নামের ভয়ঙ্কর ড্রাগ আতঙ্কে সারাদেশ একান্ত আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর বিশেষ তৎপরতা এবং জনগণের সচেতনতা দরকার
২৩ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
কৃষি যান্ত্রিকীকরণের মাধ্যমে আরো সোনালী সমৃদ্ধি সম্ভব ইনশাআল্লাহ
২৩ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
ভাষা আন্দোলনের সাত দশক এবং স্বাধীনতার ৫৪ বছর পরও বাংলা ভাষার মর্যাদা প্রতিষ্ঠিত হয়নি। উর্দূকে বাদ দিয়ে হিন্দি বা ইংরেজির প্রাধান্য ভাষা দিবসের চেতনা নয়। পাশাপাশি বাংলা ভাষা চর্চা মানে বিজাতীয় ও বিধর্মীয় সংস্কৃতির অনুকরণ ও অনুশীলন নয়। পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার আঙ্গিকে ভাষা দিবস পালন করলেই ভাষা আন্দোলন সার্থক হবে।
২১ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
নগরের সুবিধা বিকেন্দ্রীকরণ করতে পারলেই কেবল নগরমুখী জনস্রোত ঠেকানো যাবে
২০ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
জনসংখ্যা বোঝা নয় বরং জনসম্পদ জনশক্তিকে আরও দক্ষ করতে হবে।
২০ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সুদ ব্যয়ের কারণে আকার বাড়লেও সুফল নেই বাজেটের। সরকারের উচিত, ঋণের ধারা থেকে সরে এসে আভ্যন্তরীণ আয়ের দিকে গুরুত্ব দিয়ে বাজেটকে গণমুখী করা।
১৯ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
দুরাবস্থায় ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের উদ্যোক্তারা অন্যসব সরকারের মত বর্তমান উপদেষ্টারাও গুরুত্ব দিচ্ছে না
১৯ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
হিমাগারের ভাড়া বাড়ায় আলু এখন ‘গলার কাঁটা’ আসন্ন জুলাই-নভেম্বরে আলুর দাম ১০০ টাকা পর্যন্ত উঠতে পারে বিপর্যয় ঠেকাতে এখনই ব্যবস্থা নিন
১৮ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
পবিত্র রমাদ্বান শরীফে দ্রব্যমূল্যের দাম স্থিতিশীল থাকবে- অন্তর্বর্তী সরকারের এ প্রতিশ্রুতি যেনো পতিত জালিম সরকারের মত কথার ফুল ঝুড়িতেই পর্যবসিত না হয়
১৮ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
আজ মহিমান্বিত পবিত্র ১৭ই শা’বান শরীফ। সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মু’মিনীন আল হাদিয়াহ আশার আলাইহাস সালাম উনার পবিত্র বিছালী শান মুবারক প্রকাশ দিবস। সুবহানাল্লাহ!
১৭ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার)