প্রায় ৬০ শতাংশ মা বুকের দুধের পাশাপাশি শিশুকে কৌটার দুধ খাওয়ান। ২৫ শতাংশ মা শুধু কৌটার দুধ খাওয়ান।
গুঁড়া দুধ কোম্পানি ও বিপণন প্রতিষ্ঠানগুলোর এ তৎপরতা মাতৃদুগ্ধ বিকল্প আইন, ২০১৩-এর সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। মায়ের দুধ পানের হার বৃদ্ধিতে পবিত্র কুরআন শরীফ উনার এ চেতনা প্রতিফলনের কোনো বিকল্প নেই।
, ২৭ যিলক্বদ শরীফ, ১৪৪৪ হিজরী সন, ১৮ আউওয়াল, ১৩৯১ শামসী সন , ১৭ জুন, ২০২৩ খ্রি:, ০২ আষাঢ়, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) সম্পাদকীয়

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও ইউনিসেফের একটি জরিপে অংশ নেওয়া ৫২ শতাংশ অভিভাবক ও সন্তানসম্ভবা নারী বলেছেন, ফর্মুলা দুধ কোম্পানিগুলো তাদের বিপণন ব্যবস্থার মাধ্যমে লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, প্রায় ৬০ শতাংশ মা বুকের দুধের পাশাপাশি শিশুকে কৌটার দুধ খাওয়ান। ২৫ শতাংশ মা শুধু কৌটার দুধ খাওয়ান।
চিকিৎসকরা জানান, শিশুর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি করে অধিক প্রোটিন ও ভিটামিনসমৃদ্ধ মায়ের শালদুধ। এতে শিশুদের মানসিক ও শারীরিক পরিপূর্ণ বিকাশ ঘটে। মায়ের দুধে প্রায় ২০০টি উপাদান আছে, যা অন্য দুধে নেই । ছয় মাস পর্যন্ত শিশুকে মায়ের দুধ পান করালে পানি খাওয়ানোরও প্রয়োজন হয় না। এ ছাড়া শিশুকে বুকের দুধ পান করালে মায়ের স্তন ও জরায়ু ক্যান্সারের ঝুঁকি কমে।
জাতিসংঘের জরুরি শিশু তহবিল-ইউনিসেফের তথ্য বলছে, মায়ের দুধ যথাযথ পরিমাণে পান না করায় বিশ্বে প্রতিবছর অন্তত ছয় লাখ শিশু মারা যায়। আর প্রায় এক লাখ মা মারা যান অপর্যাপ্ত স্তন্যদানের কারণে সৃষ্ট অসুস্থতায়। এতে বছরে ৩৪০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের মতো আর্থিক ক্ষতি হয়।
পুষ্টিসেবা কার্যক্রমের আওতায় ডাক্তার-নার্সদের নানা পুরস্কার, উপহার এবং কোনো কোনো চিকিৎসক-নার্স মাসিক, আবার কেউ বছরে আর্থিক সুবিধা পান বিভিন্ন গুঁড়া দুধ কোম্পানি ও বিপণন প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে। কোম্পানিগুলো প্রকাশ্যেই আয়োজন করে বিভিন্ন প্রতিযোগিতার। তাদের দিবসকেন্দ্রিক বিভিন্ন আয়োজনেও বুঝে বা না বুঝে সরকারি-বেসরকারি চিকিৎসক-নার্সরা অংশ নেন। অভিযোগ রয়েছে, কোম্পানির মাধ্যমে অনুপ্রাণিত হয়েই ব্যবস্থাপত্রে শিশুকে কৌটার দুধ খাওয়ার নির্দেশনা দেন চিকিৎসকদের অনেকেই।
গত ২১ এপ্রিল থেকে ২১ মে পর্যন্ত মাত্র এক মাসে রাজধানীর সুপারশপ প্রিন্স বাজারের শ্যামলী শাখাতেই শিশুখাদ্য হিসেবে ৯৩ হাজার ফর্মুলা দুধের কৌটা বিক্রি হয়েছে। এর মধ্যে ল্যাকটোজেন ৩ বিআইবি বিক্রি হয় ১৩ হাজার, নান অপটিপরো ২ বিক্রি হয় ৯ হাজার কৌটা, ল্যাকটোজেন ২ বিআইবি বিক্রি হয় ৭ হাজার কৌটা, সেরেলাক ফ্রুটস মাল্টিগ্রেইনস বিক্রি হয় ৫ হাজার কৌটা।
‘মাতৃদুগ্ধ আইন’-এর ধারা ৪-এর (১) উপধারায় বলা হয়েছে, ‘কোনো ব্যক্তি মায়ের দুধের বিকল্প, শিশুখাদ্য, বাণিজ্যিকভাবে প্রস্তুতকৃত শিশুর বাড়তি খাদ্য বা এসব ব্যবহারের সরঞ্জামাদির আমদানি, স্থানীয়ভাবে উৎপাদন, বিপণন, বিক্রয় বা বিতরণের উদ্দেশ্যে বিজ্ঞাপন মুদ্রণ, প্রদর্শন, প্রচার বা প্রকাশ করবেন না বা অনুরূপ কাজে নিজেকে নিয়োজিত করবেন না।’ একই ধারার (২) উপধারা অনুযায়ী, অন্যান্য বিষয়ের মধ্যে- (ক) জনগণের, বিশেষত স্বাস্থ্য, পুষ্টি বা শিক্ষা ক্ষেত্রের সঙ্গে জড়িত কোনো ব্যক্তি, ছাত্রছাত্রী বা তাদের পরিবারের কোনো সদস্যের কাছে এমন কোনো লিফলেট, হ্যান্ডবিল বা অনুরূপ কোনো দলিল বিতরণ করা যাবে না; যাতে মায়ের দুধের বিকল্প, শিশুখাদ্য, বাণিজ্যিকভাবে প্রস্তুতকৃত শিশুর বাড়তি খাদ্য বা এসব ব্যবহারের সরঞ্জামের বিজ্ঞাপন রয়েছে।
খ) মায়ের দুধের বিকল্প, শিশুখাদ্য, বাণিজ্যিকভাবে প্রস্তুতকৃত শিশুর বাড়তি খাদ্য বা এসব ব্যবহারের সরঞ্জামের বিক্রয় উৎসাহিত বা প্রলুব্ধ করার লক্ষ্যে- (অ) কোনো ব্যক্তিকে উপহারসামগ্রী, ডিসকাউন্ট কুপন, মূল্যহ্রাস বা বিনামূল্যে কোনো সামগ্রী দেওয়া বা দেওয়ার প্রস্তাব করা, (আ) এসবের প্রস্তুতকারকের আয়োজিত বা তাদের সহায়তায় আয়োজিত সেমিনার-কনফারেন্স, সিম্পোজিয়াম, কর্মশালা, প্রশিক্ষণ, বৈজ্ঞানিক সভা, শিক্ষা সফর বা আন্তর্জাতিক সম্মেলনে যোগদানসহ উচ্চ শিক্ষায় বা গবেষণামূলক কর্মকা-ে অংশ নেওয়ার জন্য কোনো ব্যক্তি বা স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রের কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারী বা স্বাস্থ্যকর্মীকে আর্থিক বা অন্য কোনো সুবিধা দেওয়া, (ই) কোনো স্বাস্থ্যকর্মী বা তার পরিবারের কোনো সদস্যকে আর্থিক প্রলোভন বা উপহার দেওয়া, (ঈ) কোনো স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র বা ওষুধ বিক্রয়কেন্দ্র ব্যবহার করা, (গ) শিশুদের জন্য কোনো ধরনের প্রতিযোগিতা বা অনুষ্ঠানের আয়োজন বা অন্য কোনো সহায়তা দেওয়া।
এই চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলার জন্য, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এবং ইউনিসেফ এবং অংশীদাররা সরকার, স্বাস্থ্যকর্মী এবং শিশুখাদ্য তৈরি খাতের প্রতি আক্রমণাত্মক উপায়ে ফর্মুলা দুধ বিপণন বন্ধ করতে এবং এ সংশ্লিষ্ট কোড বা নীতিমালা সম্পূর্ণরূপে বাস্তবায়ন ও মেনে চলার আহ্বান জানিয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে পুষ্টি ও স্বাস্থ্য বিষয়ে ফর্মুলা দুধ উৎপাদন খাতের দাবি নিষিদ্ধ করাসহ ফর্মুলা দুধ উৎপাদন খাতের প্রচারণা ঠেকাতে আইন পাস, পর্যবেক্ষণ ও প্রয়োগ করা। শিশুকে ভালোভাবে মায়ের দুধ খাওয়াতে সহায়তা করতে নীতিমালা ও প্রকল্পগুলোতে বিনিয়োগ করা।
লেখাবাহুল্য, ৯৮ ভাগ মুসলমানের দেশে মায়ের দুধ খাওয়ানোর জন্য আলাদাভাবে প্রচারণা চালানোর অপেক্ষা রাখেনা। কারণ পবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে- “আর সন্তানবতী নারীরা তাদের সন্তানদেরকে পূর্ণ দু’বছর দুধ খাওয়াবে, যদি দুধ খাওয়াবার পূর্ণ মেয়াদ সমাপ্ত করতে চায়।”
পবিত্র সূরা বাক্বারা শরীফ উনার ২৩৩তম এই আয়াত শরীফ উনার তাফসীরে বলা হয়েছে, শিশুকে স্তন্যদান মাতার উপর ওয়াজিব। কোন অসুবিধা ব্যতীত ক্রোধের বশবর্তী হয়ে বা অসন্তুষ্টির দরুন স্তন্যদান বন্ধ করলে গুণাহ হবে এবং স্তন্যদানের জন্য স্ত্রী স্বামীর নিকট থেকে কোন প্রকার বেতন বা বিনিময় নিতে পারবে না, যতক্ষণ পর্যন্ত বিবাহবন্ধন বিদ্যমান থাকে।
পবিত্র কুরআন শরীফ উনার এ পবিত্র আয়াত শরীফ উনার যদি আমল থাকতো তাহলে মায়েরা শিশুদের সন্দেহযুক্ত গুড়ো দুধ পান করাতো না, মায়ের দুধ পানের হারও হ্রাস পেতো না এবং দেশকে প্রতি বছর গুঁড়াদুধ আমদানির পেছনে হাজার হাজার কোটি টাকার বেশি ব্যয় করতে হতো না, বরং এ টাকা মা ও শিশুর অধিকতর কল্যাণে ব্যয় করা যেত।
মূলতঃ এসব অনুভূতি ও দায়িত্ববোধ আসে পবিত্র ঈমান ও পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনাদের অনুভূতি ও প্রজ্ঞা থেকে। আর তার জন্য চাই নেক ছোহবত তথা মুবারক ফয়েজ, তাওয়াজ্জুহ।
ছহিবে সাইয়্যিদি সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ, রাজারবাগ শরীফ উনার মামদূহ মুর্র্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার নেক ছোহবত মুবারক-এ কেবলমাত্র তা লাভ করা সম্ভব। খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাদেরকে তা নছীব করুন। (আমীন)
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
বর্তমান সরকারের অরাজকতায় মধ্যবিত্তরাও এখন পুষ্টি সঙ্কটে ভুগছে মহান আল্লাহ পাক উনার রহমতমূখী প্রবণতার অভাবই এর মূল কারণ কেবলমাত্র খিলাফত আলা মিনহাজিন নুবুওওয়াহ্র পরিক্রমায় খোদায়ী রহমতে সব কিছুতে সচ্ছলতা হাছিল সম্ভব। ইনশাআল্লাহ!
২৪ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
নাটক-সিনেমার মাধ্যমে মুসলিম প্রজন্মকে দ্বীন ইসলাম থেকে দূরে সরিয়ে দেয়া হচ্ছে। পরকালের কথা স্বরণ করে মুসলিম উম্মাহকে বিধর্মীদের এসব ষড়যন্ত্র থেকে বের হয়ে আসতে হবে।
২৪ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
‘শয়তানের নিঃশ্বাস’ নামের ভয়ঙ্কর ড্রাগ আতঙ্কে সারাদেশ একান্ত আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর বিশেষ তৎপরতা এবং জনগণের সচেতনতা দরকার
২৩ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
কৃষি যান্ত্রিকীকরণের মাধ্যমে আরো সোনালী সমৃদ্ধি সম্ভব ইনশাআল্লাহ
২৩ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
ভাষা আন্দোলনের সাত দশক এবং স্বাধীনতার ৫৪ বছর পরও বাংলা ভাষার মর্যাদা প্রতিষ্ঠিত হয়নি। উর্দূকে বাদ দিয়ে হিন্দি বা ইংরেজির প্রাধান্য ভাষা দিবসের চেতনা নয়। পাশাপাশি বাংলা ভাষা চর্চা মানে বিজাতীয় ও বিধর্মীয় সংস্কৃতির অনুকরণ ও অনুশীলন নয়। পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার আঙ্গিকে ভাষা দিবস পালন করলেই ভাষা আন্দোলন সার্থক হবে।
২১ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
নগরের সুবিধা বিকেন্দ্রীকরণ করতে পারলেই কেবল নগরমুখী জনস্রোত ঠেকানো যাবে
২০ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
জনসংখ্যা বোঝা নয় বরং জনসম্পদ জনশক্তিকে আরও দক্ষ করতে হবে।
২০ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সুদ ব্যয়ের কারণে আকার বাড়লেও সুফল নেই বাজেটের। সরকারের উচিত, ঋণের ধারা থেকে সরে এসে আভ্যন্তরীণ আয়ের দিকে গুরুত্ব দিয়ে বাজেটকে গণমুখী করা।
১৯ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
দুরাবস্থায় ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের উদ্যোক্তারা অন্যসব সরকারের মত বর্তমান উপদেষ্টারাও গুরুত্ব দিচ্ছে না
১৯ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
হিমাগারের ভাড়া বাড়ায় আলু এখন ‘গলার কাঁটা’ আসন্ন জুলাই-নভেম্বরে আলুর দাম ১০০ টাকা পর্যন্ত উঠতে পারে বিপর্যয় ঠেকাতে এখনই ব্যবস্থা নিন
১৮ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
পবিত্র রমাদ্বান শরীফে দ্রব্যমূল্যের দাম স্থিতিশীল থাকবে- অন্তর্বর্তী সরকারের এ প্রতিশ্রুতি যেনো পতিত জালিম সরকারের মত কথার ফুল ঝুড়িতেই পর্যবসিত না হয়
১৮ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
আজ মহিমান্বিত পবিত্র ১৭ই শা’বান শরীফ। সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মু’মিনীন আল হাদিয়াহ আশার আলাইহাস সালাম উনার পবিত্র বিছালী শান মুবারক প্রকাশ দিবস। সুবহানাল্লাহ!
১৭ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার)