প্রসঙ্গঃ স্বদেশের প্রতি মুহব্বত দাবিদার মুসলমান এবং স্বদেশের প্রতি আঘাত।
, ০৪ যিলক্বদ শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ১৪ ছানী আশার, ১৩৯১ শামসী সন , ১৩, মে, ২০২৪ খ্রি:, ৩০ বৈশাখ, ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) সম্পাদকীয়
সব প্রশংসা মুবারক খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার জন্য; যিনি সকল সার্বভৌম ক্ষমতার মালিক। সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নবী আলাইহিমুস সালাম উনাদের নবী, রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি অফুরন্ত দুরূদ শরীফ ও সালাম মুবারক।
স্বদেশের প্রতি মুহব্বত শুধু মহানই নয়; বরং অনিবার্য একটি গুণ। এই গুণের অধিকারী ছিলেন হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনারা ও হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা। উনাদের দেশাত্মবোধে উদ্বুদ্ধ হয়ে আমাদেরকেও উনাদের দৃষ্টান্ত অনুসরণ করা উচিত।
স্বদেশকে মুহব্বত করা ও দেশের কল্যাণ কামনা করা মুসলিম মিল্লাতের পিতা হযরত ইবরাহীম খলীলুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার আদর্শ ছিল। পবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে মহান আল্লাহ পাক তিনি হযরত খলীলুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার কল্যাণ কামনাকে এভাবে প্রকাশ করেছেন, “স্মরণ করুন, যখন হযরত খলীলুল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি বলেছিলেন যে, হে আমার প্রতিপালক, এ ভূখ-কে নিরাপদ শহরে পরিণত করুন এবং অধিবাসীদেরকে নানাবিধ ফলমুল দ্বারা জীবিকা দান করুন। (পবিত্র সূরা বাক্বারা শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ২৬)
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি স্বদেশের প্রতি মুহব্বতকে গ্রহণ করেছেন বলেই মহান আল্লাহ পাক তিনি পবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে নিজেও দেশের শপথ করেছেন। পবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে, “আমি শপথ করছি সে নগরীর, যে নগরীর আপনি অধিবাসী। ” (পবিত্র সূরা বালাদ শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ১-২)
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি স্বীয় মাতৃভূমির মুহব্বতকে বিশেষভাবে গ্রহণ করেছিলেন। একারণে ঐতিহাসিক হিজরত মুবারকের প্রাক্কালে তিনি বিশেষ রহমতভরে স্বদেশকে সম্বোধন করে বলেছেন, “কত চমৎকার শহর আপনি, হে পবিত্র মক্কা শরীফ, আমি আপনাকে কত মুহব্বত করি। ” সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ!
এই মুহব্বতের প্রতি সম্মান জানিয়ে মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “যিনি আপনার জন্য পবিত্র কুরআন শরীফ উনাকে বিধান করেছেন, তিনি (মহান আল্লাহ পাক) আপনাকে অবশ্যই স্বদেশে (পবিত্র মক্কা শরীফ উনার মধ্যে) ফিরিয়ে আনবেন। ” (পবিত্র সূরা কাসাস শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ৮৫)
স্বদেশের প্রতি মুহব্বত মানুষকে দায়িত্ব সচেতন করে তোলে, স্বদেশের উন্নতি সাধনে সজাগ রাখে, দেশের জাতীয় সম্পদ সংরক্ষণে উদ্বুদ্ধ করে। স্বদেশের প্রতি মুহব্বতে উদ্বুদ্ধ হয়ে যারা দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষা করবে এবং দেশের সার্বিক তত্ত্বাবধানে নিয়োজিত থাকবে, তাদের প্রতি বিশেষ পুরস্কারের আশ্বাসবাণী ও প্রতিশ্রুতি রয়েছে। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, ‘এক দিন এক রাতের প্রহরা ক্রমাগত এক মাসের নফল রোজা এবং সারা রাত ইবাদতে কাটিয়ে দেয়া অপেক্ষাও উত্তম। ’ (মুসলিম শরীফ)
স্বদেশের প্রতি মুহব্বত বা স্বদেশের সম্পদ ও সার্বভৌমত্ব রক্ষাকারী তথা সীমান্ত প্রহরায় নিয়োজিত ব্যক্তিদের পরকালীন অশেষ প্রতিদান সম্পর্কে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “মৃত ব্যক্তির সব আমল বন্ধ হয়ে যায়, ফলে তার আমল বৃদ্ধি পেতে পারে না। তবে ওই ব্যক্তির কথা ভিন্ন, যে ব্যক্তি কোনো ইসলামী সাম্রাজ্যের সীমান্ত প্রহরায় নিয়োজিত থাকা অবস্থায় মৃত্যুবরণ করে, তার আমল কিয়ামত পর্যন্ত বৃদ্ধি পেতে থাকবে এবং কবরের প্রশ্নোত্তর থেকেও সে বেঁচে থাকবে। ” সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ! (তিরমিজি শরীফ ও আবু দাউদ শরীফ)
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অনুসরণে স্বদেশের প্রতি মুহব্বত একধরনের পরিশুদ্ধ ভাবাবেগ, যা মুসলমানদের কর্তব্যপরায়ণ ও দায়িত্বসচেতন করে তোলে। দেশের স্বাধীনতা ও সম্পদ সুরক্ষায় যেকোনো ত্যাগ স্বীকারে উদ্বুদ্ধ করে দেশের স্বার্থবিরোধীদের সর্বশক্তি দিয়ে প্রতিহত করতে নিবেদিত করে।
প্রসঙ্গত আমরা মনে করি, সাংবিধানিকভাবে স্বীকৃত রাষ্ট্রদ্বীন ইসলাম উনার এই দেশের সরকার নাগরিকদের মাঝে স্বদেশের প্রতি মুহব্বতের ক্ষেত্রে পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার শিক্ষা নাগরিকদের দেয়নি এবং এ ধরনের কোনো তৎপরতাও সরকারের কর্মকা-ে নেই। যা অতীব দুঃখজনক। তবে মুসলমান হিসেবে দেশের ৯৮ ভাগ জনগোষ্ঠী মুসলমানরা তাদের ঈমান রক্ষার্থে স্বদেশের প্রতি মুহব্বত তথা দায়িত্ব-কর্তব্যকে অস্বীকার করে মুসলমান থাকতে পারে না।
দেশের দুটি বৃহৎ রাজনৈতিক দলের নেত্রীই পরস্পর পরস্পরের বিরুদ্ধে দেশের সম্পদ বিদেশীদের হাতে তুলে দিয়ে আঁতাতের অভিযোগ করেছে। দেখা যাচ্ছে, রাজনীতির শীর্ষ পর্যায়েই স্বদেশের প্রতি মুহব্বতের ঘাটতির অভিযোগ গুরুতর। তবে এ অভিযোগ থেকে রেহাই নেই সাধারণ মানুষেরও। কারণ পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার ভাষ্যানুযায়ী ঈমানদার তথা মুসলমান থাকতে হলে কোনো অন্যায় দেখলে তথা স্বদেশের প্রতি কোনো অবিচার দেখলে, স্বদেশের সম্পদ ও সার্বভৌমত্বের প্রতি কোনো অনাচার দেখলে হাত দিয়ে বাঁধা দিতে হবে। মুখে বলতে হবে।
কিন্তু এদেশের ৯৮ ভাগ জনগোষ্ঠী মুসলমান বাংলাদেশের প্রতি যেসব অন্যায় করা হচ্ছে তার বিরুদ্ধে গর্জে উঠছে কি? অথচ তারা দাবি করছে তারা মুসলমান। কিন্তু স্বদেশের প্রতি মুহব্বত তথা হক আদায় না করা পর্যন্ত কেউই পাক্কা মুসলমান হতে পারে না। থাকতে পারে না। দাবি করতে পারে না। এখন দেশের সব মুসলমানকে ঠিক করতে হবে- তারা কি ঈমান বিসর্জন দিবে? নাকী ঈমান রক্ষার্থে স্বদেশের প্রতি মুহব্বতে সক্রিয় ও সোচ্চার হবে।
ছহিবে সাইয়্যিদি সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ, রাজারবাগ শরীফ উনার মামদূহ মুর্র্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার নেক ছোহবত মুবারক-এ কেবলমাত্র তা লাভ করা সম্ভব। খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাদেরকে তা নছীব করুন। আমীন!
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
আজ যিকরুল্লাহ, খইরু খলক্বিল্লাহ, আস সিরাজুম মুনীর, সাইয়্যিদুল আরব, মালিকুল জান্নাহ, যাবীহুল্লাহ, সাইয়্যিদুনা হযরত আবূ রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে সাইয়্যিদাতুল উম্মাহাত, সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন, সাইয়্যিদাতু নিসায়ি আহলিল জান্নাহ, হাবীবাতুল্লাহ সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সুমহান বরকতময় আযীমুশ শান নিসবাতুল আযীম শরীফ দিবস এবং লাইলাতুর রগাইব শরীফ।
০২ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
আজ সুমহান ও বরকতময় পবিত্র ২৯ জুমাদাল উখরা শরীফ! সাইয়্যিদাতুনা হযরত সিবত্বতু রসূলিল্লাহ আছ ছালিছাহ আলাইহাস সালাম উনার পবিত্র বিছালী শান মুবারক দিবস এবং সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুল আশির মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র বিছালী শান মুবারক প্রকাশ দিবস। সুবহানাল্লাহ!
৩১ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
শুধুই সমালোচনা? পতিত সরকারের সমালোচিত পন্থা দ্বৈত নাগরিকত্ব বাতিলে কোন উদ্যোগ ও তৎপরতা নেই কেন? দ্বৈত নাগরিকত্বের সুবিধা নিয়ে যে অবাধ অর্থপাচার হয়েছে অবিলম্বে তা ফিরিয়ে আনা হোক ইনশাআল্লাহ
৩১ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
বাজারের ৯৮ ভাগ শাকসবজি ও ৭০ ভাগ খাবারে কীটনাশক ডিজিটাল বা স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে চাইলে আগে স্মার্ট খাবারের ব্যবস্থা করতে হবে
৩১ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
প্রসঙ্গঃ স্বদেশের প্রতি মুহব্বত দাবিদার মুসলমান এবং স্বদেশের প্রতি আঘাত।
৩০ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
দেশে মারাত্মকভাবে বাড়ছে বিষন্নতা তথা আত্মহত্যার প্রবণতা প্রতিরোধে ইসলামী মূল্যবোধের বিস্তারে বিকল্প নেই
৩০ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
দেশের ৪ কোটি মানুষ না খেয়ে থাকে। অথচ দেশে মাথাপিছু খাদ্য অপচয় হয় প্রায় ৯০ কেজি। বছরে ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ৩৫ হাজার কোটি টাকা। খাদ্য অপচয় রোধ করতে ‘নিশ্চয়ই অপব্যয়কারীরা শয়তানের ভাই’- পবিত্র কুরআন শরীফ উনার এই নির্দেশ সমাজের সর্বাত্মক প্রতিফলন ব্যতীত কোনো বিকল্প নেই।
২৯ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
‘কবর’ ‘জাহান্নাম’ ‘জান্নাত’ ইত্যাদি ইসলামী শব্দের কথা বললেই শুধু হবেনা। শুধুমাত্র প্রসঙ্গ টানলেই হবেনা। এখন দেশে ইসলামী আবহের বাস্তবায়ন ঘটিয়ে বিশেষত মহাসমারোহে সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ পালন করে মুসলমানদের জান্নাতে ভালো জায়গায় থাকার ব্যবস্থা করতে হবে। ইনশাআল্লাহ!
২৯ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
প্রসঙ্গঃ ভেষজ উদ্ভিদ ও রফতানী
২৮ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
বাংলাদেশী শিশু-কিশোরদের মধ্যে প্রায় ৭৭ শতাংশ পর্নো আসক্ত। পর্নো দেখতে তারা ব্যয় করছে শত শত কোটি টাকা। এখনই সরকার সতর্ক না হলে পর্ণোগ্রাফিতে পশ্বাধম জাতিতে পরিণত হবে পরবর্তী প্রজন্ম। +
২৮ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
হাড় কাঁপানো শীতে বাড়ছে আগুনে দগ্ধদের সংখ্যা দগ্ধ রোগীর চাপ সামাল দিতে পারছে না জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট জেলা পর্যায়ের হাসপাতালগুলোয় দগ্ধ রোগীদের সুচিকিৎসা নিশ্চিত করতে হবে। ইনশাআল্লাহ!
২৭ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
দশ বর্গকিলোমিটার নারিকেল দ্বীপ রক্ষায় মিথ্যার বেসাতির বিপরীতে ৩ লাখ একর বেদখল বনভূমির প্রতি নিস্ক্রীয় দর্শকের ভূমিকা বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের সাথে সাংঘর্ষিক।
২৭ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার)