সরু চোখে...
প্রসঙ্গ: প্রয়োজনে ছবি তোলার ফতওয়া
, ২৬ যিলক্বদ শরীফ, ১৪৪৪ হিজরী সন, ১৭ আউওয়াল, ১৩৯১ শামসী সন , ১৬ জুন, ২০২৩ খ্রি:, ০১ আষাঢ়, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) মহিলাদের পাতা
অর্থ: “যে ফতওয়া চেয়েছে এবং যারা ফতওয়া দিয়েছে উভয়ই কাফির হয়ে গেছে।”
মোল্লা জিউন রহমতুল্লাহি আলাইহি জানতেন, বাদশাহের চুলকানি হয়েছে এটা ঠিক, কিন্তু সেই চুলকানির প্রয়োজন এত বেশি নয়, যে চুলকানিতে বাদশাহের মৃত্যু হবে। এছাড়া চুলকানি রোগের আরো হালাল ওষুধ আছে। হালাল বাদ দিয়ে কেন হারামকে গ্রহণ করতে হবে?
বিষয়টি যদি আপনারা ছবির ফতওয়ার সাথে মিলান, তবে একই বিষয় দেখবেন।
অসংখ্য হাদীছ শরীফে প্রাণীর ছবিকে কঠিন কবীরাহ গুনাহ বলা হয়েছে। প্রাণীর ছবি নিয়ে যত এবং যত কঠিন হুঁশিয়ারী দেয়া হয়েছে, অন্য কোন হারাম বিষয় সম্পর্কে ততবার এবং ততো হুশিয়ারি উচ্চরিত হয়নি।
তারপরও বর্তমানে কতিপয় মাওলানার ‘প্রয়োজনে ছবি তোলা জায়েয” ফতওয়া দিয়েছে। তাদের এ ফতওয়া নিয়ে যদি একই প্রশ্ন করেন, তবে বলতে হবে-
১. এই প্রয়োজন কেমন প্রয়োজন? ছবি না তুললে কি কেউ মারা যাবে?
২. শনাক্তকরণের ক্ষেত্রে ছবির বিকল্প হালাল কি কিছু আছে?
দুই ক্ষেত্রে উত্তর হচ্ছে-
ছবি না তুললে কেউ মারা যাবে না এবং শনাক্তকরণে ছবির থেকে উন্নত ও নির্ভুল পদ্ধতি ফিঙ্গারপ্রিন্ট আছে। সুতরাং প্রয়োজনে ছবি তোলা জায়েয এই ফতওয়া কখনই গ্রহণযোগ্য নয়।
হয়ত বলতে পারেন, রাষ্ট্র তো ছবি তুলতে বাধ্য করছে। নয়ত অনেক অধিকার থেকে বঞ্চিত করছে।
এর উত্তর হচ্ছে-
রাষ্ট্র হারামে বাধ্য করতেই পারে এটা স্বাভাবিক। কিন্তু আপনি আলেম-ওলামা হয়ে কি সেই হারামের বিরুদ্ধে কোন প্রতিবাদ করেছেন?
অথবা, রাষ্ট্র যেসব ক্ষেত্রে আপনাকে বাধ্য করেনি সেসব ক্ষেত্রে কি আপনি নিজে ছবি/ভিডিওমুক্ত থেকেছেন?
বর্তমানে অধিকাংশ আলেম-ওলামা শেষ দুটি প্রশ্নে মহা অভিযুক্ত হয়ে যাবে।
কারণ- রাষ্ট্র হারাম ছবিতে বাধ্য করলেও তারা ছবির বিরুদ্ধে কখনই প্রতিবাদ করেনি। এবং
নিজেরাও ব্যক্তি পর্যায়ে সেই হারামে লিপ্ত হয়েছে। ফেসবুকে, ইউটিউবে তারা তাদের অসংখ্য ছবি ভিডিও ছেড়েছে। নিজেই পোজ দিয়ে ছবি তুলেছে। নিজেই ক্যামেরাম্যান ভাড়া করে মসজিদের মিম্বরের সামনে স্টুডিও বানিয়েছে। শুধু তাই নয়, মাদ্রাসার শিক্ষক যার কাজ হচ্ছে ছাত্রদের কুরআন শরীফ হাদীছ শরীফ শিক্ষা দেয়া, সেই শিক্ষক নাবালেক ছাত্রের হারাম ভিডিও করে, সেই ভিডিও ফেসবুকে আপলোড করে লাইক কামাচ্ছে। কোন জঘন্য পর্যায়ে চলে গেছে কথিত মাওলানা-হুজুরদের অবস্থান। আসতাগফিরুল্লাহ! নাউযুবিল্লাহ!
এজন্য যারা শুরুতে ক্ষমতাসীনদের সন্তুষ্ট করতে পলিটিকাল ফতওয়া (ধর্মীয় ফতওয়া নয়) দিয়েছিলো- ‘প্রয়োজনে ছবি তোলা জায়েজ’ সমস্যাটা আসলে তাদের। বন্দুকের নিশানায় চুল পরিমাণে ফাক হয়েছে, গুলি লক্ষ্য বস্তু থেকে ১০০ হাত দূরে সরে গেছে। শুরুতে কতিপয় মাওলানা ভুল ফতওয়া দিয়েছে, আর পুরো সমাজ ছবি/ভিডিওর কঠিন গুনাহে লিপ্ত হয়ে গেছে। চলতে, ফিরতে, ঘুমাতে, বেডরুমে, টয়লেটে সর্বত্র তারা ছবি নিয়ে এসেছে। শুধু তাই নয়, যে সব পর্দানশীন নারী নিজেদের চেহারা কারো সামনে উন্মুক্ত করতে চান না বেপর্দার ভয়ে, তাদেরকেও সেই ফতওয়াকে পূঁজি করে জোর করে ছবি তুলানো হচ্ছে। নাউযুবিল্লাহ!
-উম্মু আমিম
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
কাফের বিশ্বে নারীরা শুধু কি এখন নির্যাতনের শিকার হচ্ছে?
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
একজন দ্বীনদার পরহেযগার আল্লাহওয়ালী মহিলা উনার পর্দা পালনের বেমেছাল দৃষ্টান্ত
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
প্রসঙ্গ মহিলা জামাত নাজায়িজ
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
পিতা-মাতার প্রতি সন্তানের দায়িত্ব-কর্তব্য
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
শৈশবকাল থেকেই সন্তানকে দ্বীনদার হওয়ার শিক্ষা দান করতে হবে
২০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
সম্মানিতা মহিলা আউলিয়া-ই কিরাম উনাদের পরিচিতি
১৯ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
স্বচক্ষে দেখা কিছু কথা
১৯ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
পারিবারিক তা’লীমের গুরুত্ব ও তারতীব
১৮ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
সুন্নতী খাবার সম্পর্কিত হাদীছ শরীফ : মেথি
১৮ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
খাবার বিষয়ে মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন
১৮ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
জন্মের প্রথম মাস
১৭ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের অনুসরণে মু’মীনদের জীবন গড়ে তোলা দায়িত্ব-কর্তব্য
১৭ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার)