প্রকল্পের সুবিধা প্যাকেটবন্দি, বাস্তবায়ন হয়নি অর্ধেকও
, ১০ছফর শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ২৮ ছালিছ, ১৩৯১ শামসী সন , ২৭ আগস্ট, ২০২৩ খ্রি:, ১২ ভাদ্র, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) দেশের খবর
নিজস্ব প্রতিবেদক:
মেধাবী জাতি গঠন, নাগরিকদের সুস্বাস্থ্য ও খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রায় মানসম্পন্ন প্রাণিসম্পদ গড়ে তুলতে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের। এর অংশ হিসেবে প্রাণিসম্পদে টেকসই প্রবৃদ্ধি অর্জনের লক্ষ্যে পাঁচ বছর আগে সোয়া ৪ হাজার কোটি টাকার একটি প্রকল্প নিয়েছিল সরকার। ‘প্রাণিসম্পদ ও ডেইরি উন্নয়ন প্রকল্পটি’ (এলডিডিপি) বাস্তবায়িত হলে প্রাণিজাত পণ্যের উৎপাদন বৃদ্ধি, মার্কেট লিংকেজ ও ভ্যালুচেইন সৃষ্টি, ক্ষুদ্র ও মাঝারি খামারিদের পানিবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা উন্নয়ন, নিরাপদ প্রাণিজ খাদ্য উৎপাদন, প্রক্রিয়াজাত ও বিপণন এবং বেসরকারি উদ্যোক্তাদের সক্ষমতা বৃদ্ধি করা যেত। কিন্তু এমন গুরুত্বপূর্ণ একটি প্রকল্প গত পাঁচ বছরে অর্ধেকও বাস্তবায়িত হয়নি। যেটুকু বাস্তবায়িত হয়েছে, তাতে কাজের সুফল ও অর্থ ব্যয় নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। খামারিদের প্রশিক্ষণ না দেওয়ায় কেনা যন্ত্রপাতি অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে আছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, প্রকল্পটির মেয়াদ আর মাত্র ৪ মাস বাকি আছে। ২০১৮ সালের মে মাসে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় ৪ হাজার ২৮০ কোটি ৩৬ লাখ ৪৮ হাজার টাকা ব্যয়ে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অধীনে প্রকল্পটি অনুমোদন দেওয়া হয়। এর বাস্তবায়নে মেয়াদ হচ্ছে ২০১৯ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২৩ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত। এ সময় প্রকল্পের বাস্তব অগ্রগতি হয়েছে ৪৭.০৮ শতাংশ এবং আর্থিক অগ্রগতি আরও কম ৪২.৬১ শতাংশ। আর্থিক ব্যয়ের পরিমাণ ১ হাজার ৮২৩ কোটি ৮৯ লাখ টাকা।
সূত্র জানায়, সম্প্রসারিত অ্যাক্সেস প্রোগ্রামের (ইএপি) আওতায় লকডাউনকালীন প্রণোদনায় ব্যয় (৭৫২ কোটি ৮৪ লাখ ৫৬ হাজার টাকা) বাদ দিলে প্রকল্পের আর্থিক অগ্রগতি মাত্র ২৫.০৩ শতাংশ। ডিপিপি অনুযায়ী প্রকল্পের শুরু থেকে জুন ২০২২ পর্যন্ত প্রকল্পের ক্রমান্বয়ে জমে থাকা ব্যয়ের পরিকল্পনা ছিল ২ হাজার ৮৭৫ কোটি ৯৫ লাখ ৯১ হাজার টাকা, যা মোট প্রকল্প ব্যয়ের ৬৭.১৯ শতাংশ। এর বিপরীতে এডিপি ও আরএডিপি (সংশোধিত বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি) বরাদ্দ ছিল ১ হাজার ৬৩২ কোটি ৬৮ লাখ টাকা, যা ব্যয় পরিকল্পনার ৫৬.৭৭ শতাংশ। কিন্তু জুন ২০২২ পর্যন্ত অর্থ ব্যয় হয়েছে এর ১ হাজার ৪৫২ কোটি ১৪ লাখ টাকা, যা আরএডিপি বরাদ্দের ৮৮.৯৪ শতাংশ। ২০২২-২৩ অর্থবছরের আরএডিপি বরাদ্দের (৭০৭ কোটি) বিপরীতে মে ২০২৩ পর্যন্ত ব্যয় হয়েছে ৩৭১ কোটি ৭৫ লাখ ২১ হাজার টাকা, যা বরাদ্দের তুলনায় ৫২.৫৮ শতাংশ।
প্রকল্পের সার্বিক দিক নিয়ে আলোচনা করতে প্রকল্প পরিচালক মুহম্মদ আব্দুর রহিম বলেন, প্রকল্পের সময় বাড়ানোর জন্য পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে।
তবে প্রকল্পের নানা অনিয়ম নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগ (আইএমইডি)। প্রতিষ্ঠানটি বলছে, প্রকল্পের অধীনে উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিসে যেসব যন্ত্রপাতি সরবরাহ করা হয়েছে তার বেশির ভাগ প্যাকেটজাত ও অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে আছে। প্রকল্পের শুরু থেকে এপ্রিল ২০২৩ পর্যন্ত মাত্র ৮টি পিআইসি সভা এবং মাত্র ৬টি পিএসসি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। পরিপত্র অনুযায়ী ২৬টি পিআইসি ও ১৭টি পিএসসি সভা করার কথা। গত ৪ অর্থবছরে প্রকল্পের অডিটে মোট ২৮টি অডিট আপত্তি উত্থাপিত হয়, যার মধ্যে দুটি আপত্তির নিষ্পত্তি হয়েছে এবং বাকি ২৬টি এখনো অনিষ্পন্ন অবস্থায় রয়েছে। ২৬টি অডিট আপত্তির মোট আর্থিক সংশ্লিষ্টতা ১৩৫ কোটি ১৬ লাখ ৬৬ হাজার টাকা।
জানা গেছে, কঠোর লকডাউনকালে মাঠপর্যায়ে কাজ চলাচলে সীমাবদ্ধতা এবং কিছু প্রশিক্ষণ মডিউল সময়মতো তৈরি না হওয়ায় প্রশিক্ষণ কার্যক্রম শুরু করতে বিলম্ব হয়। যথাসময়ে আন্তর্জাতিক পরামর্শক সংস্থা নিয়োগ না দেওয়ায় এবং বিভিন্ন ধরনের উপকরণ মাঠপর্যায়ে সময়মতো সরবরাহ না করা ও প্রশিক্ষণ প্রদান না করায় যন্ত্রপাতি অব্যবহৃত থেকে যায়। প্রকল্পের পরামর্শক এবং প্রকল্প ব্যবস্থাপনা পর্যায়ে কিছুটা সমন্বয়হীনতা এবং কেন্দ্রীয় পর্যায় থেকে প্রয়োজনীয় মনিটরিংয়ের অভাবে প্রকল্পের কাঙ্খিত অগ্রগতি হয়নি।
আইএমইডির প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রকল্পের ক্রয় কার্যক্রমে কিছু প্যাকেজ বিভক্ত হওয়ায় ক্রয় পরিকল্পনায় অতিরিক্ত কিছু নতুন প্যাকেজ সংযুক্ত হয়, যা অনুমোদিত ডিপিপির তালিকাভুক্ত প্যাকেজ সংখ্যার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়। এ ছাড়া কোভিডকালীন সময়ে জরুরি কর্মপরিকল্পনার আওতায় ২০২০-২১ অর্থবছরে ৭টি পণ্য ও ৮টি সেবা প্যাকেজ বার্ষিক ক্রয় পরিকল্পনায় অন্তর্ভুক্ত হয়। কিছুসংখ্যক প্যাকেজের ক্ষেত্রে ডিপিপিতে উল্লিখিত ক্রয় পদ্ধতি এবং চুক্তি অনুমোদনকারী কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বাস্তবিক ক্রয় প্রক্রিয়ার পরিবর্তন পরিলক্ষিত হয়। জরিপকৃত খামারিদের মধ্যে ৮ শতাংশ ‘ক্রিম সেপারেটর’ মেশিন পেয়েছেন, যেগুলোর বেশিরভাগ প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণের অভাবে এখনো ব্যবহার করতে পারেননি উপকারভোগীরা।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
বিএনপি ক্ষমতায় গেলে কী করবে, জানালেন তারেক রহমান
১৫ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
মানহীন বিদেশি পণ্যের কাস্টমস ক্লিয়ারেন্স নিয়ে প্রশ্ন
১৫ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
আওয়ামী লীগ নেতা বাচ্চুকে আটকের পর ছেড়ে দিলো ডিবি
১৫ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
টেলিকম খাতেও সালমান সিন্ডিকেট, লুটে নেয় সাড়ে ৭ হাজার কোটি টাকার সুবিধা
১৫ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
জাতীয় নির্বাচন নির্ভর করছে সংস্কারের গতির ওপর -ড. ইউনূস
১৫ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
এখনো ফ্যাসিবাদী গোষ্ঠী কিভাবে রাজনীতি করার কথা বলে বুঝি না -সালাহউদ্দিন
১৫ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
-‘নতুন সংস্কার প্রস্তাবের সঙ্গে বিএনপির ৩১ দফা মিলবে’
১৫ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
ভারতে বসে শেখ হাসিনার বক্তব্য-বিবৃতিতে অসন্তুষ্ট ঢাকা
১৫ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
ভারতীয় গণমাধ্যম প্রতিনিয়ত মিথ্যাচার করছে -স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
১৫ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
কুইক রেন্টালে দায়মুক্তি দেয়া অবৈধ ছিল -হাইকোর্ট
১৫ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
সূর্যের ভেতরটা কেমন, দেখুন বাংলাদেশি পদার্থবিদের তোলা ছবিতে
১৫ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
রাজধানীতে মাস্ক পরার পরামর্শ
১৫ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার)